
সঞ্জয় রায়চৌধুরী পেশায় উদ্যোগপতি। কনসালট্যান্ট-ও বটে। কিন্তু শিল্প তাঁর রক্তে। সেই অমোঘ টানে সাড়া না-দিয়ে তাঁর উপায় নেই। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই রংতুলির নেশায় পেয়ে বসে সঞ্জয়কে। ১৯৯০-তে প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াকালীন তার সঙ্গে যোগ হয় এক নতুন খ্যাপামি! কাগজ কেটে ছবি তৈরি, যাকে শুদ্ধ ইংরিজিতে বলে কোলাজ। একটি আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতায় তাঁর প্রথম কোলাজটি তৈরি করেন সঞ্জয়। একেবারে আচমকাই। কিন্তু তারপর থেকে কাটা কাগজের টুকরোর মতোই তিনি উড়ে বেড়াতে থাকেন কোলাজের আঙিনায়। কলেজের প্রায় সমস্ত প্রতিযোগিতাতেই কাঁচি-আঠা-কাগজ নিয়ে বসে পড়তেন সঞ্জয় এবং পুরস্কার ছিল বাঁধা। স্বাভাবিক ভাবেই কলেজের পর কর্পোরেটের উঠোনে পা দিয়ে কোলাজের নেশা খানিক ব্যাকফুটে চলে যায় ঠিকই, তবে অফিসেও সকলে জানতেন, যে কোনও নকশা বা ছবির দরকারে গন্তব্য একটিই। সঞ্জয় রায়চৌধুরী।
ট্রাইব ক্যাফের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সম্প্রতি সেই কোলাজেরই একটি প্রদর্শনী করলেন সঞ্জয়। এখানে যে কাজগুলি প্রদর্শিত হয়েছে, তার সবই নয়ের দশকে করা, অর্থাৎ প্রায় ত্রিশ বছর আগেকার। কোলাজগুলি মূলত ল্যান্ডস্কেপ বা নিসর্গচিত্র, যদিও কিছু ফিগার-ও রয়েছে। যে ব্যাপারটা নজর কাড়ে সেটা হল, সমস্ত কাজই করা হয়েছে খবরের কাগজ ও পত্রপত্রিকার পাতা কেটে আঠা দিয়ে সেঁটে। কোনও আর্ট পেপার, মার্বেল কাগজ বা শৌখিন কাগজের ব্যবহার নেই এখানে। তার চেয়েও বড়ো কথা, পত্রিকার যেসব পাতায় শুধুই বিজ্ঞাপন ছাপা হত, কেবলমাত্র সেগুলিকেই কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতেন সঞ্জয়, যাতে কোনও লেখা নষ্ট না হয়। এরকম পাতা খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। কিন্তু সঞ্জয় হাল ছাড়তেন না। বেছে বেছে এমন পাতাই খুঁজে আনতেন যাতে কোনও লেখা কাটা না যায়।
সঞ্জয়ের কাজের ধরনটিও অদ্ভুত। গোড়ায় কোনও পেন্সিল ড্রইং বা স্কেচ করে নেন না। স্রেফ সাদা ক্যানভাসের উপর একটি একটি করে কাগজ সেঁটে সেঁটে কাজ শুরু করেন আর তারপর নিজের মনে এগতে থাকে সেই ছবি। এ ভাবেই কাগজের উপর কাগজ আটকে গিয়ে হয়ে ওঠে পাহাড়-নদী-গিরিখাত-ঝরনা। সঞ্জয়ের কল্পনার রং মিশে যেতে থাকে বিজ্ঞাপনের পাতার রংয়ে।
বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।
Notifications