Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

রতন থিয়াম: থিয়েটার, সময় আরও অনেক কথা

বাংলালাইভ

জুলাই ২৯, ২০২৫

Ratan Thiyam
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
(Ratan Thiyam)

‘ইন্টেলেকচুয়ালি আমি জীবনে তেমন বড়ো কিছু করিনি।
আমি বড়ো হয়েছি, খুব ছোটবেলা থেকে নাচগানের আবহে। আমার বাবা-মা ছিলেন ডান্সার। ওঁরা থিয়েটার করতেন। আমার শৈশব ঘিরে ছিল শিল্প-সংস্কৃতির বাতাবরণ। আমি খুব ছোট তখন, অনেক কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। আমি সবকিছু অনুভব করতে শুরু করলাম অনেক পরে। তখন ম্যাট্রিক শেষ করেছি। আমি আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা করছি।’ (Ratan Thiyam)

আরও পড়ুন: ‘পথের পাঁচালী’ দেখতে এসে, উপন্যাসের লাইন বলে উঠলেন এক বিহারি ভদ্রলোক

আপনার তো বাবা-মা’র সঙ্গে প্রায়ই ঘুরতে হত। একটা মাল্টিকালচারাল আবহে ছোটবেলায় নিশ্চয় অসুবিধে হত?

আমি জন্ম হওয়ার পর থেকেই ঘুরছি। বাবা মা ট্যুর করছেন, অল ইন্ডিয়া। আজ এখানে, কাল সেখানে, বিরামহীন। আমার স্কুল জীবন ছিল সেরকম। এক জায়গায় এডমিশন নিচ্ছি, ছ-মাস বাদে আমায় আবার আরেকটা শহরে চলে যেতে হল। আবার নতুন স্কুল, অচেনা পরিবেশ, নতুন ভাষা, নতুন আবহ! (Ratan Thiyam)

আমি খুব ছোট তখন। একজন শিশুর পক্ষে খুব কঠিন। আমি বাবাকে বললাম, তখন একটু বড়ো হয়েছি- আমার এভাবে স্কুল করা সম্ভব নয়। আবদার করলাম তুমি একটা কিছু ভাবো। তুমি আমায় ইমফল-এ রেখে যাও। আমি এখানে থেকে পড়াশুনো করব। বাবা বুঝল। অনেক, অনেক স্কুল- অহমিয়া, বাংলা, মিশন স্কুল, পুরোদস্তুর ইংলিশ স্কুল। ক্লাস সেভেন। আমি ইমফল এ স্কুলে এডমিশন নিলাম। জন স্টোন হাই স্কুল। মা-বাবা ঘুরে বেড়াচ্ছেন নাচের দল নিয়ে, এদিক ওদিক। কিন্তু বাবা-মা ছাড়া, তাদের আদর ভালবাসার বাইরে থাকা সেটাও আরেকটা সমস্যা! যদিও আমি ওঁর ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে ছিলাম। (Ratan Thiyam)

Ratan Thiyam

একটা নতুন স্বাদ এল আমার জীবনে। নাচ, বাজনা, সংগীত, লাইট, ব্যাকস্টেজে ঘুমিয়ে পড়া, মেক-আপ… এর বাইরে ধুলো-মাখা, দানাময়, স্পর্শ কামনা-করা একটা রং-বেরঙের জীবন। আমি রাস্তায় রাস্তায়, জনপদে মানুষের খুব কাছে চলে গেলাম। আরেকটা সময়-পাল্টানো ঘটনা ঘটল এরপর। ইমফল টকিজ তখন এই শহরের মানুষের জন্য অবাক এক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। Cinema Hall! নতুন নতুন অবাক করা সিনেমা। স্যামসন আন্ড দিলেলা, ভিক্তর… জন ওয়েন, ওয়েস্টার্ন— আচ্ছন্ন ম্যাজিক আর গল্প; এক নতুন পৃথিবীর স্বাদ। একটা নতুন স্বাদ, ন্যারাটিভ-এর স্বাদ, গল্পের ভুবন। নতুন নতুন গল্প, নতুন স্টোরি স্পেস, নতুন মানুষ। আমার কাছে অনেক গুলো জানালা খুলতে লাগল। এগুলো সত্যিকারের আমার কাজে লাগল। পর্দার গল্প ছাপিয়ে আমার কাছে প্রিয় হয়ে উঠল পর্দা-কে কেন্দ্র করে চলমান বহুবর্ণের জীবন। পর্দার সময়, ইন্দ্রজাল, মানুষ… হাতছানি দিয়ে নিয়ে এল আমাদের গ্রাম, শহর, মাসিমা, বৌদি, মায়াবী তরুণ, রুজি-রুটি, দোকান-পাট, স্কুল-পালানো প্রেমিক, সঙ্গে তার লাজুক বান্ধবী। ইমফল টকিজ-এর চারপাশে একটা গাছের মতো বেড়ে উঠছে মিশ্র জীবন। (Ratan Thiyam)

শুধুই ম্যাজিক, নাকি তার ভেতর থেকে অন্য এক ডাক আপনাকে মুগ্ধ করেছিল?

আমার সাথে শুরু হল এই জীবনের এক অন্তরঙ্গ আলাপচারিতা। আমি লুব্ধ, নিমগ্ন …একটা কনভার্সেশন শুরু হল। বাবার সাথে ঘুরতে ঘুরতে অনেক মানুষ দেখেছি, তারপরে নানান স্কুল, মাস্টারমশাই, বন্ধু। কিন্তু এটা আমার কাছে স্কুল জীবনের এক অন্য স্বাধীনতা, যেখানে আমি মনের মতো করে মানুষের খুব কাছে গিয়ে অনেক কিছু দেখতে পাচ্ছি। আমি ভুলতে পারব না- আমাদের মাস্টারমশাই। দুপুরে স্কুল পালিয়ে আমরা পর্দার মধ্যে অবাক ডুবে আছি। কিন্তু ভেতরে একটা ভয়। স্যার না আবার এসে যায়। এই ভয় থেকে বেরিয়ে আমরা প্রাণ খুলে সিনেমা দেখব এটা আমাদের মনের সবচেয়ে প্রিয় ইচ্ছে ছিল। কিন্তু আমাদের কপাল আমাদের সাথে ছিল না। (Ratan Thiyam)

হঠাৎ লম্বা একটা বেত নিয়ে আমাদের খুঁজতে লাগল স্যার, হলে’র মধ্যে। সেখানেই দড়াম, দড়াম বেতের বারি। আমরা রুদ্ধশ্বাস দৌড়ে আবার ক্লাসরুম-এ। আমি শিক্ষকের এই দায়বদ্ধতা এবং ভালবাসার কথা কিছুতেই সারাজীবন ভুলতে পারিনি। এখনকার দিনে কেউ করবে? ওঁর ভয় ছিল ছেলে গুলো সব বখে যাচ্ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে! একজন টিচার সিনেমা হল থেকে রোজ পালা করে ছাত্র খুঁজে আনছে। আমার কাছে এটা একটা গ্রেট লেসন! আমি কিন্তু এর থেকে ভালবাসার, স্নেহের, দায়বদ্ধতার এক সুন্দর মানবিক অভ্যাসের ইঙ্গিত পাই। এটা একটা অসামান্য অভিজ্ঞতা। (Ratan Thiyam)

কিছুটা বিশৃঙ্খল, কিন্তু স্বাধীন এক কথোপথন’র দরজা খুলে যাচ্ছে?

এসব এক্সপেরিয়েন্স অসম্ভব কাজে লেগেছে। ম্যাটরিকুলেশন এর পর আমি লেখালেখি শুরু করি… এসব বিচিত্র অভিজ্ঞতা আর মানুষ নিয়ে। আমি আমার সব টুকরো অভিজ্ঞতা আমার লেখায়, ছবিতে নিয়ে এসেছি। এই এক্সপেরিয়েন্স আমার স্টিমুলেশন, আমার মধ্যে তৈরি করেছে কৌতূহল। (Ratan Thiyam)

এই কৌতূহল আপনার এক্সপ্রেশনকে রিফাইন করেছে…

অবশ্যই! আমি সেগুলো আমার পড়াশুনো আর চর্চার মধ্যে নিয়ে গেছি, আরও ভেতরে গিয়ে মানুষ, তার বাঁচা, ব্যক্তিকে বুঝতে চেষ্টা করেছি। (Ratan Thiyam)

আপনার রিয়েল লাইফ এক্সপেরিয়েন্স, তার স্টিমুলেশন আপনাকে একটা বড় প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে… আর আপনি তার উত্তর খুঁজতে সিস্টেমাটিক একটা পড়াশুনো মধ্যে দিয়ে গেছেন?

আমি সব পড়তে শুরু করি। সামান্য যা-কিছু আমায় আশ্চর্য করেছে, তার অসামান্য মাত্রাগুলো আমি খুঁজতে শুরু করলাম। একটা ডেফিনিটিভ ইনকোয়ারি নিয়ে। আমি মণিপুরী সাহিত্য পড়তে শুরু করি, খুব নিবিড়ভাবে। একজন খুব ভাল কবি ছিলেন- পদ্মকুমার। উনি তখন গুয়াহাটি ইউনিভার্সিটিতে MA করছেন, ইংলিশ নিয়ে। উনি আমায় পড়তে দিলেন The Canterbury Tales, Chaucer এর, সঙ্গে বোধিকা, টিকা, নোটস, ব্যাখ্যা, সম্প্রসারণ… আমি তখন ম্যাট্রিক-এ। আমার কিন্তু মনে হল, না বোধিকায় যেভাবে লেখা আছে, চরিত্রগুলো অন্যরকমভাবে আমাদের দেখতে হবে। আমি Chaucer অন্দরমহলের নানা ঘুপচি, আলোআঁধারিতে আসক্ত বোধ করলাম… নিজের ব্যাখ্যা লিখতে শুরু করলাম। ম্যাট্রিক-এ the মার্চেন্ট অফ ভেনিস, পোর্শিয়াকে নিয়ে দীর্ঘ লেখা লিখি… একটা নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে। লিখলাম পোর্টিয়া ব্লসমড লাইক এ হোয়াইট লিলি ইন শেক্সপীয়ার ড্রামা। (হা হা করে হেসে ফেললেন)। (Ratan Thiyam)

গ্রাজুয়েশন এর পর ঘুরতে শুরু করলাম শুরু করলাম, স্টাডি টুর। একটা দুটো ওয়ার্কশপ করে কিছু রোজগার হত। সেই টাকায় ঘুরতে শুরু করলাম। (Ratan Thiyam)

সাউথ ইন্ডিয়া- কর্ণাটক, কেরালা, তামিলনাড়ু, গুজরাট, রাজস্থান। সেখানকার থিয়েটার, ফোকলোর, মানুষজন, ট্রেডিশন, জীবন যাপন।
বাবা তখন মণিপুর চলে এলেন, জায়ারলাল ডান্স একাডেমীর টিচার হিসেবে।
আমার মনে হল আমার নিজের সংস্কৃতি, ট্রেডিশন নিয়ে, আরও জানতে হবে, বুঝতে হবে… নাট sankeertan, রাশা বাবা বললো, NSD থেকে পড়াশুনা করে আবার তুমি এসবের মধ্যে যাচ্ছ কেন?
আমি বললাম ওঁকে যে আমার ট্রাডিশনাল আর্ট প্রাকটিস এর আরও গভীরে ঢুকতে চাই। এর উৎস কি? এর ফর্মাল এক্সপ্রেসেন, জীবন-কে কীভাবে সেলেব্রেট করে… আমি বুঝতে চাইছিলাম, আরও কাছ থেকে।
‘আমি কোথাও যাব না, এখানেই থাকব। তুমি ব্যবস্থা করো’
বাবা 5/6 জন টিচারকে ঠিক করে দিল।
চার বছর আমি টানা সব শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের থেকে শিখতে শুরু করলাম। আমি নিজে বুঝতে শুরু করেছি ট্রেডিশন, কন্টেমপোরারিনেস, সামাজিক, আর্থিক এম্বিয়েন্স, ডাইনামিক্স… এসবের সঙ্গে আর্ট প্র্যাক্টিসের নিবিড় সম্পর্ক।
আমার থিয়েটার কীভাবে প্রকাশ করবে নিজের ভাষা খুঁজে নিতে, তার রেলিভ্যান্স কোথায়… আমার নিজের সাংস্কৃতিক ভাবপ্রকাশের ধারা কীভাবে একটা বিবর্তন এর মধ্যে দিয়ে ভিশন অফ লাইফকে প্রপোজ করছে…
এই আর কী। আমার মতো একজন তুচ্ছ আর্টিস্ট, আর কী বা করবো।
জানতে চাওয়া, কিছুটা বুঝতে পারা ছাড়া!
আমার কী করার আছে? এর থেকে বেশি তো আমার কিছু করার নেই। মানুষের এন্ডেভার-এর কোনও সীমা নেই।
আমি প্রায়শই নিজেকে জিজ্ঞেস করি, আমি কে? বহুবার এই প্রশ্ন আমায় ভাবিয়েছে। (Ratan Thiyam)

Ratan Thiyam

পেরুর লিমায় সান টেম্পলে-এ বসে আছি। সেই মায়া, ইনকা… সময় যেন সীমাহীন, ইউনিভার্সাল টাইম… একদিকে ডেসার্ট, অন্য দিকে সমুদ্র। মানুষকে একবারে পাগল করে দেয়। আমি সেখানে বসে, ভাবছি, আমি কে? এই প্রশ্ন বার বার ঘুরে আসে- আমি কে? (Ratan Thiyam)
ঠিক ইংমার্গ বার্গম্যান এর সেভেন্থ সীল! সেই দাবা খেলা, সেই আশচর্য বাতাবরণ। ভূত আর একজন সৈন্য!
মানুষের ভাবনা কী অসীম আর অপরূপ! কতদূর ভাবতে পারে। আর্ট সেই কারণে যে-কোনও সময়, যে-কোনও স্থানে সবকিছু সহজে ব্যাখ্যা করে… তাৎক্ষণিকতার মধ্যে আটকে রাখা যায় না। তুমি অনুভব করছ রং, একটা পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্স হচ্ছে। লিরিক, একটা শব্দ, শব্দগুচ্ছ এসব নানান অর্থ বহন করে। এস্থেটিক্স… ভাব প্রকাশের এই শৃঙ্খলা, দৃষ্টিভঙ্গি, অন্য মাত্রায় তা এক্সপ্রেস করে। মানুষের সাথে সংযোগ করে, এভোক করে। এই এভোকেশন অতন্ত্য সাবলাইম কিন্তু অসম্ভব এলকোয়েন্ট। যে কোনও সিস্টেম এর তীব্র সমালোচক। ইট প্লেজ দি রোলে অফ এ প্রটেস্ট। কিন্তু এটা চিৎকার নয়, নির্জনে। সৃষ্টি একটা প্রতিবাদ। আর্টিস্টস তার স্বকীয় ভাবনায় যে সত্যকে দেখেছে, তাকে ওঙ্গুলি নির্দেশ করছে। এই প্রদিবাদ ছাড়া কোনও নতুন ব্যবস্তাহাপনা’র কথা ভাবা জায় না। এটা একটা প্রসেস… ইন্ডিপেন্ডেন্ট থিঙ্কার, প্রতিবাদের মধ্যে সংশধোন করে যায় তার সময়কে। (Ratan Thiyam)

এ ছাড়া আমরা তো কোনও কন্ট্রিবিউশন রেখে যাই না… উঁই নিড টু কন্ট্রিবিউট টুওয়ার্ডস দি গ্রোথ অফ দিজ প্ল্যানেট। আমি আমার মতো করে আমার এক্সপেরিয়েন্স থেকে একটা ইনপুট দিতে চাই। এইভাবে আমি আমার যোগদান নিশ্চিন্ত করি। অভিজ্ঞতা আমার সম্পূর্ণ পার্সোনাল এনকাউন্টার… আর এই অভিজ্ঞতাকে ভাগ করে নেওয়া, শেয়ার করা এক্সট্রেমলি ডেলাইটফুল অ্যাক্ট। (Ratan Thiyam)

তখনই সেটা অন্য স্তরে, অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। তা না হলে তো রবীন্দ্রনাথ হত না। আর্ট এন্ড এসথেটিক্স এর মধ্যে গভীরতর জার্নি দরকার, সেটাই আমার সমাজ, আমার উপলব্ধ জীবনে আমার সামান্য একটা যোগদান নিশ্চিন্ত করবে। এই জার্নি যে কোনও আর্টকে অন্য এক মনস্তরে নিয়ে যায়। এটা রেয়ার এলিভেশন। আমার কাছে এক আশ্চর্য জিজ্ঞাসা নিয়ে সব কিছু আবির্ভাব হয়। রবীন্দ্রনাথকে আশ্চর্য লাগে… তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী… ভেরি প্রোফাউন্ড এন্ড পার্সোনাল প্রশ্ন। কী গভীর এক ব্যক্তিগত অনুভব, আমায় খুব ভাবায়। (Ratan Thiyam)

এটা একধরনের পজিটিভ মুভমেন্ট, আপনি আপনার প্রোটেস্ট এর মধ্যে দিয়ে একটা অনুভব, একটা সত্যকে তুলে ধরছেন। সে অর্থে আপনি আপনার সিস্টেম কে আরও সংবেদনশীল, আরও পরিণত হতে সাহায্য করছেন

হাঁ, আপনি প্রতিবাদ করছেন, আবার তাকে সুন্দর করে, আরও সেন্সিবিলি বেড়ে উঠতে সাহায্য করছেন। (Ratan Thiyam)

আপনি উপন্যাস লিখেছেন। আপনি একজন লেখক হিসেবে আপনাকে দেখতে চেয়েছিলেন, আপনার কথা হবে সাহিত্যের ভাষা।

না না, আমি ছবি আঁকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে সময় ছবি আঁকা খুব খরচ সাপেক্ষ। ক্যানভাস, রং, তুলি… সহজ ছিল না। আমি চাইছিলাম আমার সময়কার জীবন যাপনের কথা আমায় বলতে হবে। লিখতে শুরু করলাম। কবিতা। আমি কখনও পারফরমিং আর্ট-এ যেতে চাইনি। (Ratan Thiyam)
আমার কাছে সেটা একটা দুঃস্বপ্ন। বাবা, মা কী কষ্ট করেছিলেন। অসম্ভব একটা লড়াই। নিজেদের শুধু নয়, দলের অন্য সবাইকে রোজগারের ব্যবস্থা করে দেওয়া, তাঁদের দায়িত্ব, প্রোডাকশন, ইনভেস্টমেন্ট! আমি দেখেছি সেই একটা লড়াই, সে স্ট্রাগল… বিরাট একটা রেসপনসিবিলিটি। নট ফর ইয়রসেল্ফ… টুওয়ার্ডস এ কালেকটিভ। আমি খুব ছোট। সব বুঝতে পারিনি। কিন্তু অনুভব করতাম, সেই যন্ত্রণা। আমি জানি আমি ওপথে যাচ্ছি না। লিখতে শুরু করলাম, পুরোদমে। বই প্রকাশিত হতে শুরু করল। (Ratan Thiyam)

আপনার প্রথম উপন্যাস কবে প্রকাশিত হয়েছিল?

ছোট গল্পের সংকলন লনা হাইগে তুমিননা তাও (১৯৬৫) প্রথম উপন্যাস- উনসাডা নুংশিবা সেই সময় আমার বন্ধুরা একটা থিয়েটার গ্রুপ রেজিস্টার করেছে। একদিন কয়েকজন বাড়িতে এল। একটা উপন্যাস-এর নাট্যরূপ দিতে হবে। নবাব নন্দিনী, দামোদর বিদ্যানন্দ’র। বাংলা উপন্যাস। যেহেতু আমি ভাল বাংলা জানি, দায়িত্ব আমার। আমি রাজি হইনি প্রথমে। নাট্যরূপ? কিছুই জানি না! শেষ অব্দি করলাম। তখনকার খুব নামকরা একজন ডিরেক্টর নির্দেশনার কাজ করবেন। ওঁর খুব পছন্দ হল। আমি খুশি। (Ratan Thiyam)

রিহের্সাল শুরু হল, আমার রিহার্সাল-এ থাকার কথা নয়। শুনতাম পুরোদমে চলছে। ডিরেক্টর আমায় অনুরোধ করলেন আমি যেন রিহার্সাল-এ থাকি। থাকো, তুমি থাকো। তাহলে বুঝতে পারবে আমরা কী করছি। দরকার মতো ইম্প্রোভইস করা যাবে। তোমার মতো করে আরও ইমঞ্চভ করতে পারবে। তুমি সাজেস্ট করতে পারবে কোথায় আরও নুআন্সেস অ্যাড করা যায়। কারণ, সুন্দর লিখেছ। কিন্তু কোথাও কোথাও ইমপ্যাক্ট আসছে না। তোমায় কিছু কিছু সিন রিওয়ার্ক করতে হবে। উনি আমায় গাইড করতেন, এবং আমরা রিহার্সাল এর সময় আলোচনা করে সিন রিওয়ার্ক করতাম। বিশেষ করে সংলাপ আরও এফেক্টিভলি কীভাবে লেখা যায় উনি আমায় অনেক ইনপুট দিয়েছিলেন। অনেকদিন ধরে চলতে লাগল। এবং একদিন উনি বললেন তুমি সহকারী ডিরেক্টরের কাজ করো। আমি যখন রিহার্সাল এ থাকব না, তুমি অভিনেতাদের গাইড করো। আমি একদম রাজি নই। উনি বোঝালেন: তুমি লিখেছো, তুমি সব খুঁটিনাটি জান। গল্পের নাটক, মোচড় তোমার কাছে জানা, সব সংলাপ তোমার মুখস্ত… এতে ভালই হবে। আমি রিহার্সাল শুরু করলাম, সহকারী পরিচালক হিসেবে। (Ratan Thiyam)

Ratan Thiyam

সব ঠিকঠাক। নাটক মঞ্চস্থ হবে, টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। হঠাৎ গন্ডগোল। দুই অভিনেতার ঝগড়া। দ্বিতীয় যে চরিত্র, সে বেঁকে বসল। কাজ করবে না। ‘আমার ভাল্লাগছে না এসব, আমি চললাম’ বলে বেরিয়ে গেল, আর ফেরানো গেল না। সবার মধ্যে একটা টেনশন, কী করে হবে। ডিরেক্টর আমায় বললেন, তুমি করো! এবার আমি ঘাবড়ে গেলাম। না না, অসম্ভব। আমায় পাল্লা দিতে হবে একজন এক্সপেরিয়েন্স প্রফেশনাল অভিনেত্রী’র সাথে!’ আমি বলছি তুমি করো, তুমি পারবে… ভাল ভাবেই পারবে। তোমার সংলাপ মুখস্ত। বন্ধুরা সবাই আমায় খুব করে ধরল, তুই কর। (Ratan Thiyam)
এভাবেই আমার প্রথম স্টেজ-এ যাওয়া।
ডায়লগ বলছি, জলের মতো মুখস্ত। তকানকার দিনে প্রম্পট নিতে হত। অভিনেত্রী, কান খাড়া করে প্রমটরকে শুনছেন। আমি তো গড়গড় করে ডায়লগ বলছি। সাবলীল, স্বচ্ছন্দ। উনি আস্তে আস্তে শুনে শুনে বলছেন। তাল কেটে গেল। দুটো চরিত্রের ডায়ালগ এর মধ্যে ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে গেল। উনি খুব নার্ভাস হয়ে গেলেন। আমার পারফর্মেন্স নিয়ে তো সবাই মুগ্ধ! হৈ চৈ, রাতে প্রচুর খাওয়া দাওয়া হল।
তারপর আমায় বিভিন্ন গ্রুপ, ক্লাব, আমন্ত্রণ জানাতে শুরু করল, অভিনয় করতে।
আমি খুব উপভোগ করতে শুরু করলাম!
তখন আমি কালচারাল ফোরাম-এর অ্যাসোসিয়েট এডিটর হয়ে গেছি, খুব ব্যস্ত। আমরা প্রকাশ করতাম ফোরাম থেকে ‘রিতু’। খুবই সুবনাম ছিল রিতু’র। ভাল সার্কুলেশন, রেস্পেক্টেড। আমার হাতে সময় কম। তবু আমন্ত্রণ উপেক্ষা করতে পারতাম না। আমার ভাল লাগতে শুরু করেছে, বুঝতে পারলাম। কিন্তু মনে হল, অভিনয়-এর আরও গভীরে গিয়ে বোঝা দরকার, আরও পড়াশুনো করা দরকার।
ভেতরের সেই ডাক, আরও ভাল করে বুঝতে হবে, একেবারে গভীরে গিয়ে, মানুষকে।
আরও জানতে চাই, এতে হবে না। আমার পড়াশুনো করা দরকার।
আমি পড়তে শুরু করলাম, থিয়েটার, হিস্ট্রি অফ অ্যাক্টিং, স্কুল অফ থটস, ফর্ম, মুভমেন্ট এন্ড টেকনিক… পড়তে পড়তে আমার কাছে একটা অন্য জগৎ খুলে গেল। (Ratan Thiyam)

আমার মাথায় সারাক্ষণ ঘুরছে মানুষের মুখ, নানান মুহূর্ত, সিনেমার গল্প, পাড়ার ঘটনা, টুকরো টাকরা পরিপার্শ্ব… একটা টোটাল অ্যাটমোস্ফিয়ার, রেনসা পেইন্টিং’এর সেই আলো, রং, স্টোরিটেলিং, মোমেন্টস। আমার মধ্যে একটা কনসার্ট শুরু হয়ে গেল। ‘রিতু’তে আমি নাট্যসমালোচনা করতে শুরু করে দিলাম। (Ratan Thiyam)

সেই মাল্টিডিসিপ্লিনারারি প্রাকটিস…

না, আমার কোনও গভীর যাত্রা ছিল না, খুব ভেতরে যেতে পারিনি। সব কিছুই একটু একটু, একটা এক্সপোজার বলতে পারো।
কিন্তু থিয়েটার আমায় টানতে শুরু করল। বন্ধুরা বলল, এবার থিয়েটার কিন্তু সিরিয়াসলি নেওয়ার সময় হয়েছে তোর!
আমার মধ্যে একটা দন্দ্ব তৈরি হল। সিনেমা না থিয়েটারে। আমি কিন্তু সিনেমার মধ্যে স্টোরি-টেলিং, ভিজ্যুয়াল ম্যাজিক, খুবই আকর্ষণ বোধ করতাম। কিন্তু থিয়েটার-এর ভেতরে অন্য ভাবে ঢুকে গেছি, মনে হল নাটক আমার খুব কাছের, নিজের। আমি ভেতরের ডাক পেলাম। থিয়েটার আমায় স্পিরিচুয়ালি কানেক্ট করছে… একটা অন্য জগৎ, অনেক মানুষ নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করা যাবে, একটা অন্য সেন্সিবিলিটি’, অর্গানিক, রিয়েল এন্ড ইন্সপায়ারিং রক্তমাংসের শরীরের সাথে মনের এক অপূর্ব সংযোগ। কিন্তু স্টেজে অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা কখনোই ছিল না।
১৯৭১, NSD তে অ্যাপলাই করলাম।
ইব্রাহিম আলকাজি তখন ডিরেক্টর। উনি নিজে ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন। পেইন্টিং, কবিতা, সাহিত্য সব নিয়েই প্রশ্ন করল। আমি আমার প্রিয় কবির নাম বললাম রবার্ট ফ্রস্ট। উনি একটু অবাক হলেন। সবাই তো বলে এলিয়ট বা এজরা পাউন্ড; রবার্ট ফ্রস্ট কী কারণে তোমার এত প্রিয়?
আমার সিলেকশন হয়ে গেল। আমার কাছে একটা বিরাট ব্যাপার। ভাবতেই পারিনি। একটা বিরাট জগৎ আমার সামনে খুলে গেল। NSD তে তিনটে লাইব্রেরি। সারা পৃথিবীর চিন্তা-ভাবনা আমার হাতের কাছে চলে এল। আমি সব কিছু পড়তে শুরু করলাম।
আবার পড়াশুনো শুরু… Music, নাটক, NSD, পাশে সাহিত্য আকাদেমি… সব পড়তে শুরু করলাম। আমার সামনে যেন সারা পৃথিবীর ঐশ্বর্য খুলে গেল। সব কিছু নিয়ে ডুবে রইলাম। পয়সা ছিল না, কোথায় পাব! কিন্তু বেগম আখতার গাইছে, গান শুনতে হবে… গালিব আকাদেমিতে, সারা রাত গান। পাঁচিল টপকে ঢুকলাম, রাতে। ৫০ টাকার টিকিট কাটব কী করে? (Ratan Thiyam)

‘কোরাস’ এর ভাবনা কি করে এলো?

আমার মনে হয়েছিল একটা নিজস্ব স্পেস দরকার। যেখানে নিজের মতো করে সব কিছু গড়ে তোলা যাবে, নিজের কাজ করা যাবে। আমি কখনো ‘থিয়েটার অ্যাস এমেচার ওয়েস অফ লাইফ’ হিসেবে বিশ্বাস করিনি। আমি সবসময় ভেবেছি থিয়েটার করব অ্যাজ প্রফেশনাল কোম্পানি! বড় স্কেল-এ। তার জন্য দরকার নিজস্ব একটা স্পেস!
কিন্তু আছে তো মাত্র ২৫০০ টাকা। বাবা হাসলেন। আমরা দুটো সাইকেল এ উঠলাম। বাবা বললো চল, আমার বন্ধুর কাছে যাই! কোনও রাস্তা ছিল না, জলা জমি! বাবা থামলেন। কাঁটা ঝোপ! কয়েকজন এনক্ৰোচৰ ছিল! দাম বলল ৫০০০। আছে মাত্র ২৫০০। আরেকজন ৪০ বাই ৬০, দাম বলল ৩০০০। এই আছে, নিয়ে নাও বলে ২৫০০ দিয়ে জমিটা নিলাম।
একটু একটু করে শুরু করলাম। জল-কাদায় ভরা, কাজ হচ্ছে। আমার কাছে দশ বারো জন ছেলে পিলে এল! সারাদিন সবাই কাজ করছে। ডাল হচ্ছে, ভাত হচ্ছে। রাত হয়ে আসছে। একটু একটু করে তৈরি হচ্ছে কোরাস। (Ratan Thiyam)

Ratan Thiyam

৪/৫ বছর নিশ্চই লেগেছে।

আরে, না না, কুড়ি বছর লেগেছে।

আপনার পেইন্টিংস, ট্রাডিশনাল আর্ট, লোকশিল্পের অন্তমুখী আবেগ, একটা জীবন চিন্তার ধারাবাহিকতা থেকে এতগুলো এলিমেন্ট আপনি আপনার কাজের মধ্যে কী রসায়নে ব্লেন্ড করলেন? কীভাবে আপনি নিজের ভাষা খুঁজে পেলেন? একটা তো মোটিভেশন ছিল, শেষ অব্দি আপনার মনের মতো আপনার স্বর খুঁজে পাওয়া!

আমার ভাবনায়, এভরিথিং ইস অ্যারাউন্ড! সব কিছু আছে, আমাদের চারপাশে। হোয়াট ইস মাই চয়েস? যখন কথা বলছি, আমি ভাবি আমার ভাষা, আমার নিজের স্বর কী হবে? আমার আইডেন্টিটি? আমি কেমন মানুষ? আমার আর্ট আমার সেই অনন্য অবস্থানকেই এম্পলিফায় করবে। (Ratan Thiyam)

আরও পড়ুন: নারী দিবসে বিশেষ আলাপচারিতা: মুখোমুখি বাণী বসু

শেষ অব্দি আপনি তো আপনার নিজের ভাষায় আরেকটি মানুষের সাথে অর্থবহ কনভার্সেশন এ অংশ নিচ্ছেন?

আমি বিশ্বাস করি না যে আমি অন্যের জন্য সৃষ্টি করছি। পৃথিবীর কারও জন্য নয়। আমি আমার জন্য তৈরি করছি আমার শিল্প। আমার সাথে আমার কাজের একটা কথোপকথন চলছে, আমার ভেতর জারিত হচ্ছে। আমি আমাকে দেখাচ্ছি। একটা বিতর্ক আর সংশোধন চলছে। আমার সাথে আমার। প্রথম খসড়া থেকে… (Ratan Thiyam)

সাক্ষাৎকারটি ‘অনুবাদ’ পত্রিকা থেকে পুনর্মুদ্রিত
বিশেষ কৃতজ্ঞতা- বিতস্তা ঘোষাল

Banglalive.com Logo

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।

Picture of বাংলালাইভ

বাংলালাইভ

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।
Picture of বাংলালাইভ

বাংলালাইভ

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়
সপ্তর্ষি রায় বর্ধন
অভিরূপ মুখোপাধ্যায়

সংস্কৃতি

আহার

অমৃতা ভট্টাচার্য
অমৃতা ভট্টাচার্য
শমিতা হালদার

বিহার

রমেশ দাস
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

নির্মাল্য চ্যাটার্জি

উপন্যাস

মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়
মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়
মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com