(Hilsa)
“রাত্রি শেষে গোয়ালন্দে অন্ধ কালো মালগাড়ি ভরে
জলের উজ্জ্বল শষ্য, রাশি-রাশি ইলিশের শব,
নদীর নিবিড়তম উল্লাসে মৃত্যুর পাহাড়।
তারপর কলকাতার বিবর্ণ সকালে ঘরে ঘরে
ইলিশ ভাজার গন্ধ; কেরানীর গিন্নির ভাঁড়ার
সরস সর্ষের ঝাঁজে। এলো বর্ষা, ইলিশ-উৎসব”। ইলিশ – বুদ্ধদেব বসু (Hilsa)
আরও পড়ুন: শ্রদ্ধাভরে শেষকৃত্য করান ‘শ্মশান বন্ধু’ টুম্পা দাস
জীবন বাজি রেখে বিশাল ঢেউয়ের ভিতর বড় বড় ইলিশ মাছ শিকার। অপেক্ষার পালা শেষ, এবার বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে ইলিশের জোগান দিতে গভীর সমুদ্রে পাড়ি জমাচ্ছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীরা৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল তীরবর্তী ডায়মন্ড হারবার, কুলপি, ফলতা, কাকদ্বীপ, নামখানা, বকখালি, পাথরপ্রতিমা ও রায়দিঘির বিভিন্ন এলাকায় এখন এই নিয়ে ব্যস্ততা চরমে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে মৎস্যজীবীরা ব্যস্ত নিজেদের মাছ ধরার সরঞ্জাম গোছাতে, তার পরেই রুপোলি শস্যের খোঁজে মৎস্যজীবীরা পাড়ি দেবেন গভীর সমুদ্রে। ট্রলারে মজুত করা হচ্ছে খাবার, জ্বালানি, বরফ ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রি মজুত করছেন তাঁরা৷ লাইফ জ্যাকেট, লগবুক-সহ সমস্ত নথি ট্রলারে মজুত করতে নির্দেশ দিয়েছে মৎস্য দফতর৷ (Hilsa)





সেইসব নির্দেশ অক্ষরে-অক্ষরে মানা হচ্ছে৷ অন্যদিকে, গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের সুরক্ষার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসনও৷ রাজ্য মৎস্য দপ্তর এক নির্দেশে জানিয়েছে, সমুদ্রে পাড়ি দেওয়া প্রতিটি ট্রলারে বিপৎসংকেত প্রেরণ যন্ত্র বা ‘ড্যাট’ রাখতে হবে। প্রতিটি ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট, লাইফ বয়ার সঙ্গে পর্যাপ্ত জ্বালানি তেল, ওষুধপত্র ও খাবার রাখতে হবে। বিমা থাকছে জেলেদের। এসব নির্দেশ মেনেই এবার সমুদ্রে পাড়ি জমিয়েছে মাছ ধরার ট্রলার। (Hilsa)
গভীর সমুদ্রে যদি মৎস্যজীবীরা কোনও বিপদে পড়েন, তাহলে ইসরোর নয়া প্রযুক্তির সাহায্যে মৎস্যজীবীদের রক্ষা করা হবে৷ এমনকি কোথায় বেশি মাছ রয়েছে, তা সেই নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমেই দেখতে পারবেন মৎস্যজীবীরা৷
গভীর সমুদ্রে যদি মৎস্যজীবীরা কোনও বিপদে পড়েন, তাহলে ইসরোর নয়া প্রযুক্তির সাহায্যে মৎস্যজীবীদের রক্ষা করা হবে৷ এমনকি কোথায় বেশি মাছ রয়েছে, তা সেই নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমেই দেখতে পারবেন মৎস্যজীবীরা৷ ট্রলারের এক মৎস্যজীবী বলেন, “আবহাওয়া ইলিশ মাছ ধরার অনুকূল রয়েছে৷ এবার যদি মা গঙ্গা মুখ তুলে তাকান, তাহলে গত বছরের তুলনায় এবছর ভাল যাবে। (Hilsa)





সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরা দেখার অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারণ। তাঁদের সাথেই তাঁদের ট্রলারে করে ইলিশ ধরা দেখার এক অনন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলাম। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলারে গিয়ে জেলেদের কর্মব্যস্ততা দেখা, জাল ফেলা, মাছ ধরা এবং সেই মাছ নৌকায় তোলার দৃশ্য মুগ্ধ করার মতো। মৎস্যজীবীদের সাথে কথা বলা এবং তাদের মাছ ধরার কৌশল দেখা। কথায় আছে মাছ-ভাতে বাঙালি৷ আর এই ভোজন রসিক বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে ইলিশের জুড়ি মেলা ভার। বর্ষা এলেই তাই ইলিশের বিভিন্ন পদের দেখা মেলে বাঙালির পাতে৷ সেই কারণে মৎস্যজীবীরাও বর্ষায় ইলিশ ধরার দিকে বেশি নজর দেন৷ যাতে লাভ একটু বেশি হয়। (Hilsa)
এই ট্রলার ৭ জন মানুষের ঘর-বাড়ি। এই সামান্য সময়েই ওদের আপ্যায়নে মুগ্ধ, আর কৃতজ্ঞ। সমুদ্রের বুক চিরে ট্রলার এগোতে শুরু করতেই চা বিস্কুট, এসবের ভিতরে উত্তাল ঢেউয়ের কথা ভুলেই গেছিলাম। উপকূল থেকে নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেছে গত সপ্তাহে থেকে।
এই ট্রলার ৭ জন মানুষের ঘর-বাড়ি। এই সামান্য সময়েই ওদের আপ্যায়নে মুগ্ধ, আর কৃতজ্ঞ। সমুদ্রের বুক চিরে ট্রলার এগোতে শুরু করতেই চা বিস্কুট, এসবের ভিতরে উত্তাল ঢেউয়ের কথা ভুলেই গেছিলাম। উপকূল থেকে নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেছে গত সপ্তাহে থেকে। আজকের উপকূলের আকাশ রৌদ্রজ্জ্বল রয়েছে। টানা ১০ দিন মৌসুমি বায়ু ও নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল থাকায় উপকূলের জেলেরা ঘাটে বসে অলস সময় পার করেছেন। ইতিমধ্যেই উপকূলের হাজার হাজার মাছ ধরার ট্রলার গভীর সমুদ্রে ইলিশের সন্ধানে চলে গেছে। (Hilsa)
টানা ১০ দিন মৌসুমি বায়ু ও নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল থাকায় উপকূলের জেলেরা ঘাটে বসে অলস সময় পার করেছেন। উপকূল থেকে নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেছে গত সপ্তাহে থেকে। মৎস্যজীবীদের জালে সমুদ্রের রূপোলি শস্যের জোয়ার। টন টন ইলিশ তুলে উপকূলে ফিরেছে বহু ট্রলার। ভরা বর্ষায় ফের একবার ইলিশের বন্যা। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছে মৎস্যজীবীদের জালে। উপকূলের আকাশ রৌদ্রজ্জ্বল। ইতিমধ্যেই উপকূলের হাজার হাজার মাছ ধরার ট্রলার গভীর সমুদ্রে ইলিশের সন্ধানে চলে গেছে। সাধারণত পরিমাণ মতো ইলিশ জালে ধরা পরলে এঁরা ফিরে আসবেন মৎস্য বন্দরে আর যদি প্রয়োজন মতো ইলিশ না ধরা যায় এঁরা ফিরবেন ৮ থেকে ১০ দিন পরে। (Hilsa)
বছরের অন্য সময় এই মৎস্যজীবীরা সাধারণত বড় জাহাজে প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে দিয়েই জিবিকা নির্বাহ করেন, আর সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন এই সময়ের জন্য। বাংলার উপসাগরে, অনেক জেলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। গভীর সাগরে মাছ ধরা খুবই কঠিন কাজ এবং ঝুঁকিপূর্ণও। এখানে মাছ শিকারে বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয় এই জেলেদের। কোনও কোনও সময় তারা এই সাগরে প্রাণ হারিয়েছে তবুও জীবিকার জন্য এই সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ছাড়েনি। গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয় জেলেদের। (Hilsa)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
নেশা ও পেশা ফটোগ্রাফি। ডকুমেন্টারি স্টোরি টেলিং, স্ট্রিট ও ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফিতে আগ্রহী।