(Corruption)
খনও আছে কী না জানি না, চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী অপরূপা প্রাগে গেলে কিছুদিন আগে অনেক পর্যটকই চমকে যেতেন একটা জিনিস দেখে। (Corruption)
আপনি ইচ্ছে করলে কোরাপশন ট্যুরে যেতে পারেন গ্যাঁটের কড়ি ফেলে।
কোরাপশন ট্যুর? ইহা কী বস্তু মহোদয়?
আরও পড়ুন: ফুলের জলসায় ফুলমালা ডোরে কলকাতা
আপনাকে নিয়ে যাওয়া হত শহরের নানা রকমের বড় বিল্ডিংয়ের সামনে। শোনানো হত এই বাড়ির সঙ্গে কী ভাবে জড়িয়ে রয়েছে দুর্নীতির ইতিহাস। কীভাবে এখানকার সংস্থাগুলোতে করদাতাদের অর্থ চলে গিয়েছে দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা এবং ব্যবসায়ীদের পকেটে। (Corruption)
সোশালিস্ট দেশ থেকে ক্যাপিটালিস্ট দেশে বদলে যাওয়া পুরোনো চেকোশ্লোভাকিয়ার লজ্জার ইতিহাস ও বর্তমান, মূর্ত হয়ে উঠত এই কোরাপশন টুরে। ট্যুর শেষ হলে আপনার হাতে কালো পোশাকের দুই নারী পুরুষ তুলে দিতেন চমৎকার ক্যালিগ্রাফি করা একটা কাগজ। আপনার একটা সার্টিফিকেট। যেখানে লেখা আছে— মাস্টার্স ইন করাপশন অ্যডমিনিস্ট্রেশন। আপনি একটা বিশেষ ডিগ্রি পেয়েছেন। (Corruption)

শুনেছি, এই ধরনের কোরাপশন ট্যুর শিকাগো এবং মেক্সিকো সিটিতেও হয়েছে একদা। যা পরিস্থিতি, তাতে পৃথিবীর বহু শহরেই হতে পারে স্বচ্ছন্দে। (Corruption)
আন্তর্জাতিক দুর্নীতির ইনডেক্স সিপিআই খতিয়ে দেখলে বিশ্বের সবচেয়ে সৎ দেশ কোনগুলো? অসততার বিচারে সেরাই বা কারা? (Corruption)
“বিশ্বের সবচেয়ে অনুন্নত দেশের তালিকায় দেখানো হয় ৪৪ দেশকে। তার মধ্যে সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদানের নাম রয়েছে স্বাভাবিক কারণেই। ৩২টি দেশই আফ্রিকার। ৮টি এশিয়ার।”
ঠিক এক যুগ হয়ে গেল এই ইনডেক্স তৈরির কাজ, নিখুঁত ভাবে লিখলে ১৩ বছর। হিসেব খতিয়ে দেখছি, সততার বিচারে আটটি দেশ এগিয়ে থাকে অধিকাংশ বার। উঁহু, ধারাবাহিক সততার তালিকায় আমেরিকা বা ব্রিটেন নেই। (Corruption)
আছে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, লুক্সেমবুর্গ, নরওয়ে, সুইৎজারল্যান্ড এবং সুইডেন। সবচেয়ে অসৎ দেশের মধ্যে ধারাবাহিকতায় সেরা দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া এবং ভেনিজুয়েলা। (Corruption)
সাউথ সুদানের এই দুর্দশা কেন, প্রশ্ন মনের অন্দরে ঘুরঘুর করবে। সুদান থেকে বেরিয়ে ২০১১ সালে দেশটা স্বাধীন হয়েছিল। চোদ্দো বছরেই ভবিষ্যৎ আঁধারে। হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে আবার দক্ষিণ সুদান নীচের দিক থেকে এক নম্বরে। জিডিপি পার ক্যাপিটা দেখলে লাস্ট বয় বুরুন্ডির পরে দুই নম্বরে। সোমালিয়া আবার হিউম্যান ডেভেলপমেন্টে লাস্ট বয় দক্ষিণ সুদানের পর দু’নম্বরে। (Corruption)
বিশ্বের সবচেয়ে অনুন্নত দেশের তালিকায় দেখানো হয় ৪৪ দেশকে। তার মধ্যে সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদানের নাম রয়েছে স্বাভাবিক কারণেই। ৩২টি দেশই আফ্রিকার। ৮টি এশিয়ার। এই আটটির মধ্যে রয়েছে নেপাল ও বাংলাদেশ— সম্প্রতি যে দুটো দেশে আচমকা পটবদল হল। (Corruption)
“দুর্নীতির ইনডেক্সে আমরা ভারতীয়রা ১৮০ দেশের তালিকায় ৯৬। এর আগের
বার ছিলাম ৯৩ নম্বরে। মানে বিশ্বগুরুর জয়ধ্বনি দেওয়ার ফাঁকেআমরা আরও নামছি।”
বাংলাদেশ এই লজ্জার তালিকা থেকে ছিটকে বেরোতে পেরোছিল দু’বার। ২০১৮ ও ২০২১ সালে। কথা ছিল, এই যন্ত্রণার তালিকা থেকে তারা বেরিয়ে আসবে ২০২৬ সালের নভেম্বরে। নেপালও। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী হবে, বলা কঠিন। নেপালের ডেভেলপিং নেশন্সের তালিকায় নাম তোলার কথা ছিল ২০১৮ সালে। তারা নিজেরাই আবেদন করে, এই উত্তরণ পর্ব ২০২১ পর্যন্ত তুলে রাখার অনুরোধ জানিয়ে। এখন সেটা আরও পাঁচ বছর পিছিয়ে গিয়েছে। (Corruption)
তালিকায় দেশগুলোর নাম দেখলে একটা তথ্য উঠে আসে। যে দেশগুলো অনুন্নতর তালিকায়, সব জায়গায় রাজনৈতিক অস্থিরতা তুঙ্গে। রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে দুর্নীতি আরও দ্রুত বাসা বাঁধে। জটিল গোলকধাঁধার ভিতরে ঘুরপাক খায় তখন। মুক্তি নেই, মুক্তি নেই। (Corruption)
দুর্নীতির ইনডেক্সে আমরা ভারতীয়রা ১৮০ দেশের তালিকায় ৯৬। এর আগের বার ছিলাম ৯৩ নম্বরে। মানে বিশ্বগুরুর জয়ধ্বনি দেওয়ার ফাঁকে আমরা আরও নামছি। কুড়ি বছর আগে একটা সমীক্ষা বলেছিল, দেশের ৬২ শতাংশ লোক কোনও না কোনও সময় একটা কাজের জন্য ঘুষ দিয়েছেন সরকারি কর্মীকে। ছবিটা আজও খুব পালটায়নি। (Corruption)
বাংলাতেই দেখুন না! এত যে শিক্ষা কেলেঙ্কারি নিয়ে এত হইচই, চাকরিপ্রার্থীরা যদি নিজেরা ঘুষ না দিত, তা হলে কি এত খারাপ পরিস্থিতি দাঁড়াত আজ? এখন কান্নাকাটি করে তো কোনও লাভ নেই। (Corruption)
“সব রাজ্যে ঘুষ নেওয়ার কথা কম রিপোর্ট করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে কেরল, ওডিশা, হরিয়ানা, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ। অনেকে অবাক হতে পারেন, পশ্চিমবঙ্গ-দিল্লি-হরিয়ানার এই উত্তরণ দেখে।”
আমাদের দেশে রাজ্য স্তরে দুর্নীতির কোনও ইনডেক্স নেই, যা দেখে সরাসরি বলে দেওয়া যায়, কোন রাজ্য দুর্নীতিতে সবার আগে। তবে ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর তথ্য বলছে, রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির মামলা দায়ের হয়েছে। এটা ২০২২ সালের হিসেব। প্রকাশ হয়েছিল ২০২৪ সালে। এর মানে অবশ্য এই নয় যে, দুটো রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। অনেক সময় লোকে প্রাণের ভয়ে, ভোগান্তির ভয়ে মামলাই করে না। অনেক সময় মানুষ নিজেরাই দুর্নীতির শরিক হয়ে ওঠে দুর্নীতিবাজদের তোল্লাই দিয়ে। অধিকাংশ রাজ্যে শিক্ষা কেলেঙ্কারিতে যা হয়েছে। (Corruption)
ওই সমীক্ষা থেকেই জানলাম, যে সব রাজ্যে লোকে ঘুষ দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলে, তার তালিকায় রয়েছে রাজস্থান, বিহার, উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং তেলেঙ্গানা। আবার সব রাজ্যে ঘুষ নেওয়ার কথা কম রিপোর্ট করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে কেরল, ওডিশা, হরিয়ানা, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ। অনেকে অবাক হতে পারেন, পশ্চিমবঙ্গ-দিল্লি-হরিয়ানার এই উত্তরণ দেখে। সংখ্যাতত্ত্ববিদরা বলছেন, কিছু করার নেই। এখানে যে সব দুর্নীতির কথা থানায় এফআইআর হয়েছে, তা নিয়েই তৈরি এই রিপোর্ট। (Corruption)

পরিসংখ্যানে একটা কথা চালু রয়েছে, পারসেপশন বনাম ইনসিডেন্স। প্রচলিত ধারণার সঙ্গে বাস্তব মেলে না অনেক সময়। রাজ্যে অনেক সময় ঘুষ ও দুর্নীতির সংখ্যা যতটা, তার সঙ্গে নথিবদ্ধ ক্রিমিনাল কেসের সংখ্যা অনেক ফারাক হয়ে দাঁড়ায়। টাটকা পরিসংখ্যান দেওয়াই হয় না বহু সময়। যে দেশে ১৪ বছর জনগণনা হয়নি, সেখানে এই ব্যাপারটা অতি প্রত্যাশিত নয় কি? (Corruption)
একদা সততার প্রতীক, পরে দুর্নীতির— জেলবন্দি আন সান সু কি-র একটা জনপ্রিয় মন্তব্য রয়েছে দুর্নীতি নিয়ে। নেটে সার্চ দিলেই পাবেন। তিনি তখন নোবেল জিতেছেন সদ্য। বলেছিলেন, . ‘ক্ষমতা নয়, দুর্নীতির আসল উৎস হল ভয়। এই ভয়টা কখনও ক্ষমতা হারানোর। আর একটা ভয় ক্ষমতায় থাকা লোকদের চটিয়ে ফেলার ভয়। যদি আমি দুর্নীতিতে না জড়াই, তাই ক্ষমতাবান লোকেরা আমায় আমল দেবে না।’ (Corruption)
আরও পড়ুন: খোলো, জাগো নাটমন্দির
ইতিহাসের পরিহাস এটাই— সেই সু কি চার বছর ধরে তাঁর নিজের দেশেই বন্দি। মিলিটারি তাঁকে বন্দি করে যে একের পর এক মামলা করেছে, তার মধ্যে একটি অভিযোগ দুর্নীতির। একবার গৃহবন্দি রাখা হচ্ছে, একবার জেলে। আর মিলিটারির দখলে থাকা মায়ানমার আজ সততার বিচারে ১৮০র মধ্যে ১৬৮ নম্বরে। এশিয়ার এই অঞ্চলে সবচেয়ে খারাপ জায়গায়। (Corruption)
আমাদের দেশের প্রথম দুর্নীতির গল্পটা কী?

খোঁজ নিলে দেখা যাবে, সে সময় কত স্বচ্ছ ছিল তদন্তের ব্যাপারটা। এত দীর্ঘ সময় লাগত না। এমনিতে যত সময় এগোচ্ছে, তত দ্রুত হয় সব কিছু। জটিল ব্রিজ, ফ্লাইওভার, পথঘাট, অস্ত্রোপচার, পরীক্ষার ফল প্রকাশ— কত দ্রুত হয়ে যায় আজ। শুধু দুর্নীতির তদন্তের ফয়সালা হতেই এখন আরও বেশি দেরি হয়। স্বাধীনতার পরে, প্রখম দিকে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতারাও দুর্নীতির কথা বলতেন প্রকাশ্যে, সংসদে। তদন্তও হত একেবারে জনতার সামনে। আজ যা কল্পনার বাইরে। (Corruption)
১৯৫৭ সালের কথা বলি। সেবার কংগ্রেসের সাংসদ রাম সুভাগ সিং সংসদে উঠে প্রশ্ন করেছিলেন, ’স্টেটসম্যান কাগজে লেখা হয়েছে, এলআইসি হঠাৎই কানপুরের এক কোম্পানিতে ১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করেছে। এর কারণটা কী?’ এই ইস্যুতে এবার প্রবল সোচ্চার হন নেহরুর জামাই ফিরোজ গান্ধি। ট্রেজারি বেঞ্চে দাঁড়িয়ে ফিরোজের বক্তব্য তোলপাড় ফেলে দেয় দেশে। তখনই স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্ত্রী ইন্দিরার সঙ্গে ফিরোজের সম্পর্কের ভাঙন। কাঠগড়ায় সে সময় নেহরুর প্রবল প্রতাপান্বিত অর্থমন্ত্রী টিটি কৃষ্ণমাচারি। (Corruption)
“কী করে দুর্নীতি হয়? সব দেশেই এক উত্তর। রাজনীতির মাথাদের অসততা, অ্যাকাউন্টিবিলিটির অভাব,
বুরোক্রেসি,ব্ল্যাক মানি, স্টক মার্কেট ম্যানিপুলেশন, বিচারব্যবস্থা— এসব থেকেই দুর্নীতির জন্ম।”
নেহরু সেবার এই কেলেলে্ঙ্কারির তদন্ত করার দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন বোম্বে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এম সি চাগলাকে। চাগলা ২৪ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে দেন। বলা হয়েছিল, এত গুরুত্বপূর্ণ মামলা শোনার অধিকার জনগণের রযেছে। ব্যবস্থা হয় প্রচুর মাইকের। হাজার হাজার লোক বাইরে দাঁড়িয়ে শুনত সেই শুনানির বিবরণ। (Corruption)
চাগলা রায় দেন, অর্থসচিব হরিভাই প্যাটেল এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়ে। তবে অর্থমন্ত্রীও সাংবিধানিকভাবে দায়িত্বে থাকায় দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। নেহরু কৃষ্ণমাচারিকে পদত্যাগ করতে বলেন। যদিও নেহরু পরে তাঁকে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে এনেছিলেন, কিন্তু কৃষ্ণমাচারির সঙ্গে সম্পর্ক আর সহজ হয়নি। (Corruption)
আজকের দিনে ভাবা যায় না, অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হচ্ছে ২৪ দিনে। বা তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। এসব ঘটনা আজ আশা করাই অন্যায়। (Corruption)
কী করে দুর্নীতি হয়? সব দেশেই এক উত্তর। রাজনীতির মাথাদের অসততা, অ্যাকাউন্টিবিলিটির অভাব, বুরোক্রেসি, ব্ল্যাক মানি, স্টক মার্কেট ম্যানিপুলেশন, বিচারব্যবস্থা— এসব থেকেই দুর্নীতির জন্ম। (Corruption)
“মালয়েশিয়ায় ২০০৯ সালে মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট ফান্ড তৈরি হল। পরে দেখা গেল, সব ডলার কোনও যাদুবলে ঘুরে গিয়ে জমা পড়েছে সুইৎজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, আমেরিকার ব্যাঙ্কে।”
আমরা ভারতের নানা রাজ্যে দুর্নীতির সাগর ও পাহাড় দেখে আতঙ্কিত। তবে বিশ্বে এমন কিছু দুর্নীতি হয়েছে, যার তুলনায় ভারতের অনেক বড় ঘটনাকে ফিকে দেখাবে। পৃথিবীর নানা প্রান্তে অদ্ভূতুড়ে সব দুর্নীতি। (Corruption)
ইউক্রেনের পলাতক প্রেসিডেন্ট ভিকতর ইয়ানুকোভিচ ৪০ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি হাপিশ করে দেন দেশ ছাড়ার আগে। তিউনিসিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বেন আলি নিয়ম করেছিলেন, তাঁর পরিচিত কয়েকটা নির্দিষ্ট পরিবার ছাড়া কেউ দেশে ব্যবসা করতে পারবে না। চেচনিয়ায় প্রেসিডেন্ট ছিলেন রমজান কাডিরভ। তাঁকে বেসরকারিভাবে কর দিতে হত দেশের সব চাকরিজীবীকে। (Corruption)
“দুর্নীতির সূচকে আলবানিয়া বিশ্বে ৮০ নম্বরে, ভারতের থেকে ১৬ ধাপ এগিয়ে। প্রধানমন্ত্রী ইডি রামা মজা করে বলেছেন, একদিন সব মন্ত্রী এআই বানিয়ে দেবে, প্রধানমন্ত্রীও হবেন এআই দিয়ে তৈরি।”
মালয়েশিয়ায় ২০০৯ সালে মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট ফান্ড তৈরি হল। পরে দেখা গেল, সব ডলার কোনও যাদুবলে ঘুরে গিয়ে জমা পড়েছে সুইৎজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, আমেরিকার ব্যাঙ্কে। প্রধানমন্ত্রীর তরফে হলিউড ও নিউ ইয়র্কে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে ওই অর্থে। এইভাবে একদা রাশিয়ার বহু বহু অর্থ চলে গিয়েছে মলডোভায়। দক্ষিণ আফ্রিকার অনাবাসী ভারতীয় গুপ্তা পরিবার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার আত্মীয়দের অর্থ দিয়ে কার্যত কিনে নিয়েছিল দেশটাকে। জার্মানির মতো দেশে সিমেন্সের মতো সংস্থা এক যুগ ধরে ঘুষ দিয়ে গিয়েছে সরকারি অফিসারদের। দাম বাড়িয়ে দিয়েছে জিনিসের। (Corruption)
সেনা অফিসাররা ক্ষমতায় এসে দুর্নীতির জাহাজে চড়ে বসেছেন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। নাইজিরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সানি আবাচা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে রেখেছিলেন বেআইনি অর্থ। অনেক পরে, অনেক আইনি লড়াই শেষে ব্রিটেনের জার্সি শহরের প্রতিনিধিরা পরে ২৬৮ মিলিয়ন ডলার ফেরত পাঠান নাইজিরিয়ায়। ফুটবল বিশ্বকাপ, ক্রিকেট বিশ্বকাপ, অলিম্পিক সংগঠনের জন্য ভেতরে ভেতরে কত বেআইনি অর্থের খেলা চলে, তা তো সবাই জেনে গিয়েছেন আজকে। (Corruption)

এই লেখাটা লিখতে লিখতেই খবর এল, দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপের পুঁচকে দেশ আলবানিয়া দুর্নীতি মুছে ফেলার জন্য এআই দিয়ে প্রথম ক্যাবিনেট মন্ত্রী বানিয়েছে। নাম তার ডিয়েলা। পৃথিবী অবাক, এই প্রথম দেখবে কোনও এআই মন্ত্রীর কাজ। (Corruption)
দুর্নীতির সূচকে আলবানিয়া বিশ্বে ৮০ নম্বরে, ভারতের থেকে ১৬ ধাপ এগিয়ে। প্রধানমন্ত্রী ইডি রামা মজা করে বলেছেন, একদিন সব মন্ত্রী এআই বানিয়ে দেবে, প্রধানমন্ত্রীও হবেন এআই দিয়ে তৈরি। (Corruption)
ডিয়েলার পদের নামটা কী? মিনিস্টার ফর পাবলিক প্রোকিওরমেন্ট।
ডিজিটাল মন্ত্রিসভা হলে কি দুর্নীতি পুরোপুরি দূর হবে দুনিয়া থেকে? আসবে সে দিন? আশা করতে তো দোষ নেই। অনেক দেশই এসব ভেবে দেখতে পারে ডিয়েলা আলবানিয়ায় কিছু অন্তত করে দেখাতে পারলে। (Corruption)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
বিশিষ্ট সাংবাদিক। এই সময় সংবাদপত্রের প্রাক্তন সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদক। উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সম্পাদক। আনন্দবাজার পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে কভার করেছেন একাধিক বিশ্বকাপ ফুটবল ও অলিম্পিক গেমস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, খেলা, গান, সিনেমা, ভ্রমণ, খাবারদাবার, মুক্তগদ্য— বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতে ভালবাসেন।