Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

অনুপম সুরে

অভীক চট্টোপাধ্যায়

এপ্রিল ১১, ২০২২

Anupam Ghatak
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

১৯৫৪ সাল। আশাপূর্ণা দেবীর কাহিনি ‘অগ্নিপরীক্ষা’ নিয়ে ছবি করতে চলেছেন ‘অগ্রদূত’। সংগীত পরিচালক ঠিক করা হয়েছে এমন একজনকে, যিনি সাধারণ সুরপথে হাঁটেন না। জটিল স্ক‍্যানিংয়ে গানকে গড়ে তুলতে পছন্দ করেন। শেষে গিয়ে সমগ্র গানটি সবার মন কেড়ে নেয়। এ এক অদ্ভুত দক্ষতা সুরকারের! তখন তিনি খুবই পরিচিত নাম। বেশ কিছু বেসিক ও ছবির গান তাঁর সুরস্পর্শে জনপ্রিয় হয়েছে।

‘অগ্রদূত’ গোষ্ঠীর বিভূতি লাহা নিয়ে বসলেন সঙ্গীত পরিচালককে। ছবির সিচ‍্যুয়েশন অনুযায়ী গানগুলো কেমন হওয়া দরকার, সেই ব‍্যাপারেই এই বৈঠক। এ ছবিতে আবার এতদিন ধরে বাংলা ছবিতে চলা নায়ক-নায়িকার সংজ্ঞাটাও বদলাতে চলেছে। নেওয়া হয়েছে উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেনকে। যাঁরা এর আগে একবারই মাত্র জুটি বেঁধেছেন “সাড়ে চুয়াত্তর”(১৯৫৩) ছবিতে। কিন্তু সে ছবি কালজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে এই দুজনের তেমন কোনও ভূমিকা ছিল না। তখনকার ধরনের আটপৌরে মধ‍্যবিত্ত বাঙালি যুবক-যুবতীর চেহারাতেই দেখা গিয়েছিল তাঁদের। কিন্তু, ‘অগ্নিপরীক্ষা’-তে সেই জুটির প্রকাশ ঘটল একেবারে নতুন আঙ্গিকে, যার মধ্যে হলিউডি ঘরানার ছাপ স্পষ্ট। সেই ১৯৫০ দশকে এক নতুনের জোয়ার জেগেছিল। পুরনো ধ‍্যানধারণার অনেককিছুই ভেঙে নব চিন্তাধারার প্রকাশ ঘটছিল শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির আঙিনায়। ফলে, ছবির সংগীতেও থাকতে হবে সেই আধুনিকতার ছাপ।

ছবির একটি সিচ‍্যুয়েশনের ব‍্যাপারে বলতে গিয়ে বিভূতি লাহা বললেন সংগীত পরিচালককে, পাহাড়ের ওপর কুয়াশা ভেসে বেড়াচ্ছে। সেখানে বসে রয়েছেন নায়ক-নায়িকা। তখনও একে অপরের কাছে দুজনের মন কুয়াশার মতোই অস্পষ্ট। এই সময়ে নায়িকা তাঁর মনের কথা বোঝাতে নায়কের উদ্দেশ্যে গাইবেন একটি গান, যার মধ্যে এইসব আবহের ছোঁয়া থাকতে হবে। মন দিয়ে সবটা শুনে যে কম্পোজিশন করলেন সুরকার, সেরকম সুরগঠন এর আগে বাংলা গানে সেভাবে হয়নিই বলা চলে। সার্থকভাবে প্রয়োগ করলেন ‘ডিমিনিশিং কর্ড সিস্টেম।’ অদ্ভুত সুরচলন! গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার। আশ্চর্য ব‍্যাপার! গানটি শুনে বিভূতিবাবুর একটুও পছন্দ হল না।

Agni Pariksha Poster
এ ছবির গান দিয়ে শ্রোতাদের মনে আসন পাকা করে ফেললেন অনুপম ঘটক

সুরকার বললেন, ছবির দৃশ্যে কুয়াশাঘন পরিবেশ যে স্বপ্নময় মুহূর্ত তৈরি করছে, গানের সুরও সেই অনুযায়ী কমে-বেড়ে ভেসে ভেসে যাচ্ছে। এটাই তো আদর্শ ওই সিচ‍্যুয়েশনে। তাও বিভূতি লাহা বললেন, অন‍্য একটি সুর করবার জন্যে। এবার বেঁকে বসলেন সংগীত পরিচালক। ঐ সুরই রাখলেন। গাইলেন সন্ধ‍্যা মুখোপাধ‍্যায়― ‘গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু…।’ গানের ‘মিতা মোর কাকলি কুহু…’ অংশের শেষটা যেভাবে সন্ধ‍্যা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠ থেকে আশ্চর্য এক কম্পনের মাধ‍্যমে ঝরে পড়ল, তাকে তো অনুভবে আনতেই ভেতরটা অস্থির হয়ে ওঠে! কী অসামান্য নির্মাণ ও তার গায়নভঙ্গি! সারা জীবনে যদি এই একটি গান শুধু তৈরি করতেন, তাহলেই বাংলা গানের জগতে সোনার অক্ষরে লেখা হয়ে থাকতো সংগীতকার অনুপম ঘটকের নাম। এই ছবিতে সন্ধ‍্যার গাওয়া আরও তিনটি গানও কিছু কম যায় না। ‘কে তুমি আমারে ডাকো…’, ‘ফুলের কানে ভ্রমর আনে…’ ও ‘যদি ভুল করে ভুল মধুর হল…’। এছাড়া, আলপনা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় ও সতীনাথ মুখোপাধ‍্যায় গেয়েছিলেন যথাক্রমে, ‘আজ আছি কাল কোথায় রব…’ এবং ‘জীবননদীর জোয়ার ভাঁটায়…’। সিচ‍্যুয়েশনের দাবি অনুযায়ী দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকের গান।

‘অগ্নিপরীক্ষা’-র গান কোন মাত্রায় পৌঁছে অচিরেই কীভাবে কালজয়ী হয়ে উঠল, তা নিয়ে কিছু বলার দরকার বোধহয় নেই। ‘গানে মোর…’ গানের প্রথমে করা সুরটি রেখে দিয়ে, অনুপম ঘটক পরিচালক বিভূতি লাহাকে বলেছিলেন, “সিচ‍্যুয়েশন অনুযায়ী এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। তাছাড়া, বিভূতিবাবু আপনার হাতে আরও কয়েকটি ছবি আছে। আপনি আরও সুযোগ পাবেন। ‘অগ্নিপরীক্ষা’-র গান ফ্লপ হলে আমি কিন্তু বাংলা ছবি থেকেই সরে যেতে বাধ্য হব।” এটাই বোধহয় একজন অসামান্য প্রতিভাবানের আত্মবিশ্বাস। পাশাপাশি, এও মনে হয়, অনুপম ঘটকের মতো একজন সংগীত পরিচালককে যখন সুরের দুনিয়াতে এরকম দোলাচলে থাকতে হয়, তা অত‍্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

১৯১১ সালের ১১ এপ্রিল ময়মনসিংহের টাঙ্গাইল মহকুমার পাথরাইল গ্রামে জন্ম অনুপম ঘটকের। বাবা অতুলচন্দ্র ঘটক ছিলেন গানের মানুষ। ভালো গাইতেন। মা সুকুমারী দেবীরও উৎসাহ ছিল এ ব‍্যাপারে। অনুপম ছোট থেকেই সুরের আবহাওয়া পেয়েছিলেন। ঠাকুর্দা মাধবচন্দ্র ঘটক ছিলেন নামকরা চিকিৎসক। অতুলচন্দ্রও ছিলেন উচ্চশিক্ষিত। ফলে, গানের পাশাপাশি শিক্ষার ধারাও ছিল পরিবারে। বাবার কাজের সূত্রে টাঙ্গাইল থেকে এলাহাবাদে গিয়ে, সেখানে কিছুদিন কাটিয়ে পরিবার-সহ কলকাতায় চলে এলেন অনুপম ঘটক। অতুলচন্দ্র বিভিন্ন গানের আসরে গান শুনতে ও অনেকসময় গাইতেও যেতেন। সঙ্গে থাকতেন ছোট্ট অনুপম। খুব তাড়াতাড়ি কীভাবে যেন অপূর্ব বাঁশি বাজাতে শিখে গেলেন। সঙ্গে ছিল খেলাধুলার নেশা।

Anupam Ghatak
মাঝে খালি গায়ে বসা অনুপম ঘটকের বাঁয়ে আলপনা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় ও ডাইনে সন্ধ‍্যা মুখোপাধ‍্যায়। রয়েছেন বেচু দত্ত-ও

ছেলে এইসব নিয়ে মেতে উঠছে দেখে অতুলচন্দ্র আবার ছেলেকে পাঠিয়ে দিলেন টাঙ্গাইলে। সেখানেও কিন্তু সুরচর্চা অব‍্যাহত রইল। কাকা ধীরেন ঘটক খুব ভালো কীর্তন গাইতেন। বিভিন্ন আসরে গাইতে যেতেন। সঙ্গী হতেন অনুপম। এছাড়া, গ্রামের মাঝি-মাল্লা, চাষি, চারণকবিদের গানের সঙ্গেও নিত্য পরিচয় হতে লাগল। অন্তরে গেঁথে গেল পল্লী বাংলার সুর। এর কিছুদিন পর, আবার এলেন কলকাতায়। আইএ পড়তে ভর্তি হলেন আশুতোষ কলেজে। কলেজেই দারুণ সুনাম হয়ে গেল গায়ক আর খেলোয়াড় হিসেবে। কলেজের পরীক্ষা দিয়েই বাবার ইচ্ছেতে রেলের চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফল করলেন। কিন্তু চাকরি নিলেন না। অন্তরে যাঁর সংগীতের প্লাবন চলছে, তাঁর কি এসব পোষায়?়

sri tulsidas poster
শ্রী তুলসিদাস ছবির সুরকার ছিলেন অনুপমবাবু

বিএ পড়ার সময় ঘটলো একটি ঘটনা, যা তাঁকে দেখাল সুরপৃথিবীর পথ। এই সময় বালিগঞ্জের একটি সোনার দোকানে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে অনুপমের গাওয়া গান শুনলেন এমন একজন, যাঁকে বহুমুখী প্রতিভাধর বললেও বোধহয় কম বলা হয়। তিনি হলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, কাহিনিকার, অভিনেতা, চিত্র পরিচালক হীরেন বসু। জহুরীর চোখে তিনি ঠিক চিনে নিলেন আসল রত্নটিকে। কাছে টানলেন অনুপমকে। তাঁরই উদ‍্যোগে ১৯৩০ সালে রেডিয়োতে প্রথমবার গাইলেন অনুপম ঘটক। ১৯৩২ সালে হীরেন বসুরই তত্ত্বাবধানে ‘হিন্দুস্থান’ রেকর্ড থেকে বেরোল অনুপম ঘটকের গাওয়া গানের রেকর্ড― ‘আজি সখি ঝর ঝর…’ এবং ‘জানি তোমার সাথে দেখা হবে সাগর কিনারায়…’। জনপ্রিয়তা পেয়েছিল গানদুটি। তার ফলে, একই কোম্পানি থেকে অনুপমের গাওয়া বিভিন্ন আঙ্গিকের বেশ কয়েকটা গানের আরও রেকর্ড বেরোল পর পর।

[‘আজি এ শারদ বিজয়া গোধূলি’ গানটি নিজের সুরে গেয়ে রেকর্ডিং করেছিলেন ১৯৩২ সালে]

এবার তিনি এলেন ছায়াছবির দুনিয়ায়। এখানেও সেই হীরেন বসু। তাঁর পরিচালনা ও সংগীত-নির্মাণে তৈরি ‘মহুয়া’ (১৯৩৪) ছবিতে শুধু সহকারীর কাজ করলেন না, অভিনয় করে গানও গাইলেন অনুপম ঘটক। ১৯৩৫ সালে ‘বিদ্রোহী’ ছবিতে চারণকবির ভূমিকায় অভিনয় করে হিমাংশু দত্তের সুরে গাইলেন, ‘জাগো জাগো হে সুপ্তবীর…’। ছবির আর একজন সুরকার ছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র দে। ছবিতে অন্য এক চারণকবির চরিত্রে অভিনয়-সহ গান গেয়েছিলেন শচীন দেববর্মণ। এ বাদে, ১৯৩৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পরপারে’, ‘গৃহদাহ’, ‘কালপরিণয়’ ও ‘পল্লীবধূ’ (ছোট ছবি)-তেও গান গেয়েছিলেন অনুপম ঘটক। এসবের মাঝখানেই শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিলেন মাস্তান গামা ও কে জি ঢেকনে-র মতো দুই অসামান্য সংগীতগুণীর কাছে। অন্তরে থাকা সংগীত সাম্রাজ্যের সঙ্গে এইসব গুণীজনের শিক্ষা মিশে জন্ম দিল অনুপম-ঘরানার। 

Khemchand Prakash
লাহোর রেডিয়োতে অনুপম ঘটকের কাছে শিক্ষানবিশী করেছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতকার নৌশাদ

‘পায়ের ধুলো’ (১৯৩৫) ছবিতে প্রথমবার এককভাবে সংগীত পরিচালনা করলেন অনুপম ঘটক, যাতে আটটি গান ছিল। লিখেছিলেন হেমেন্দ্রকুমার রায়। অভিনয় করে দুটি গান গেয়েছিলেন জহর গঙ্গোপাধ্যায়। এছাড়া গানে ছিলেন বীণাপাণি দেবী, কমলা দে। আরেকটি সাঁওতালি সুরে সমবেত গান ছিল― ‘গেয়ে যাই বাজিয়ে মাদল/নাচিয়ে বাদল/মাতোয়ালা গান…’। এরপর, হীরেন বসু হিন্দি জগতে পাড়ি দিলে, তাঁরই আগ্রহে অনুপম ঘটকও ১৯৩৭ সালে গেলেন মুম্বই। সেখানে তাঁর সুরারোপে মুক্তি পেল কয়েকটি ছবি। প্রসঙ্গত, দু’বার তিনি কলকাতা ছেড়ে গিয়েছিলেন হিন্দি-উর্দু ছবির দুনিয়ায় কাজ করতে। প্রথমবার ১৯৩০ দশকে মুম্বই। পরেরবার ১৯৪৪ সালে লাহোর। দুটি জায়গা মিলিয়ে অনুপমের সুরে মুক্তি পেয়েছিল, ‘ভোলেভালে’, ‘উসকি তমান্না’, ‘লেডিস ওনলি’, ‘চম্পা’, ‘আয়া বাহার’, ‘বদনামী’, ‘শালিমার’, ‘খুশনসীব’, ‘অ্যায়সা কিঁউ’, ‘ফয়সালা’, ‘বনজারে’ ইত্যাদি ছবি।

১৯৪৬ সালে কলকাতায় ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাঁধায় অনুপমকে ফিরে আসতে হয় বাংলায়। লাহোরে থাকার সময়, সেখানকার রেডিয়ো স্টেশনে অনুপম ঘটকের সহকারী হয়ে কিছুদিন কাজ করেছিলেন পরবর্তীকালে মুম্বইয়ের হিন্দি জগতের প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক নৌশাদ। অনেক পরে, ১৯৮০-র দশকে দূরদর্শনে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এক জায়গায় নৌশাদ সাহেব  অনুপম ঘটকের সম্পর্কে বলেছিলেন― “I was an assistant of a musical genius named Anupam Ghatak at Lahore Radio Satation…”। অনুপম ঘটকের সাংগীতিক প্রতিভার উচ্চতা বোঝার ক্ষেত্রে এটুকু মন্তব‍্যই কি যথেষ্ট নয়? এ থেকে, এও মালুম হয় বাংলা ছাড়া অন‍্য ভাষার গানেও কতটা নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন এই অসামান্য সংগীতব‍্যক্তিত্ব।

[‘শাপমুক্তি’ (১৯৪০) ছবির জনপ্রিয় গান ‘বাংলার বধূ বুকে তার মধু’ অনুপম ঘটকের সুরে গেয়েছিলেন শৈল দেবী ও সুপ্রভা ঘোষ]

১৯৪০ সালে প্রমথেশ বড়ুয়ার পরিচালনায় মুক্তি পেয়েছিল কৃষণ মুভিটোনের ছবি ‘শাপমুক্তি’। অনুপমের সুরে এ ছবির প্রত‍্যেকটি গান অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেল― ‘বাংলার বধূ বুকে তার মধু…’, ‘বনে নয়, মনে রঙের আগুন…’, ‘যে পথে যাবে চলি…’, ‘তোমার গোপন কথা…’, ‘একটি পয়সা দাও গো বাবু…’। গানগুলো গাইলেন শৈল দেবী, সুপ্রভা ঘোষ (পরে সরকার), প্রতিভা (আন্না) সেন ছাড়াও প্রথমবার নায়ক-গায়ক হিসেবে আবির্ভূত হওয়া রবীন মজুমদার, যিনি প্রথম ছবি থেকেই প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেলেন অভিনয় ও গানে। এর পিছনে পরিচালক প্রমথেশ বড়ুয়ার পাশাপাশি অনুপম ঘটকের সুরনির্মাণের ভূমিকাকেও স্বীকার করতে হবে। গান লিখেছিলেন অজয় ভট্টাচার্য এবং অনুপমের সহকারী হয়ে এ ছবিতে ছিলেন পরবর্তীকালের আর এক যুগন্ধর সংগীত পরিচালক রবীন চট্টোপাধ্যায়। 

[‘শাওন আয়ে পিয়া না আয়ে’ এ গানটি অনুপম ঘটক বেঁধেছিলেন ‘সাধনা’ (হিন্দি) ছবির জন্য, গেয়েছিলেন হরিশ]

এরপর, ‘কর্ণার্জুন’ (১৯৪১), ‘মায়ের প্রাণ’ (১৯৪১), ‘পাষাণদেবতা’ (১৯৪২) ছবিতে সংগীত পরিচালনার পরে অনুপম ঘটক বিস্ফোরণ ঘটালেন ১৯৫০ সালের ‘শ্রীতুলসীদাস’ ছবিতে। কাহিনি, চিত্রনাট্য, পরিচালনা, গান রচনা হীরেন বসুর। ভজন-কীর্তনের বন‍্যা বয়ে গেল গোটা ছবি জুড়ে। ছোট-বড়ো মিলিয়ে ২৮টি গান ছিল ছবিতে। তুলসীদাসের লিপের প্রত‍্যেকটা গানে মাতিয়ে দিলেন হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়। তেওড়া তালে তৈরি ‘লিখিনু যে লিপিখানি…’ গানের এক অসাধারণ কম্পোজিশন করলেন অনুপম ঘটক। বিশেষ করে সঞ্চারীতে ‘তোমারে নয়নে ভরি রাখি…’ অংশের একটা জায়গায় আজানধ্বনির টুকরো ছোঁয়া মিশিয়ে যে স্ক‍্যানিং করেছেন, তা ভাবা যায় না! হেমন্ত-কণ্ঠের আরও গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘আমি তনুচন্দন বাটি রামনাম পাষাণে/ নয়ন সলিল ঢালি তায়…’। যেমন বাণী, তেমন সুর ও গাওয়া। এছাড়া, গেয়েছিলেন জগন্ময় মিত্র, সাবিত্রী ঘোষ, সুপ্রভা ঘোষ, অখিলবন্ধু ঘোষ প্রমুখ শিল্পী। প্রসঙ্গত, হেমন্তর গান ‘লিখিনু যে লিপিখানি প্রিয়তমারে…’-র পাশাপাশি সাবিত্রী ঘোষ গেয়েছিলেন চার লাইনের একটি পদ, ‘লিখিনু যে লিপিগুলি প্রিয় তোমারে…’। অপূর্ব বাণীবিন‍্যাস!

এরপর, অনুপম ঘটকের সুরে সমৃদ্ধ যেসব ছবি মুক্তি পায়, সেগুলো হল, ১৯৫২ সালে ‘সঞ্জীবনী’, ‘কার পাপে’, ১৯৫৪-তে ‘কল‍্যাণী’, ১৯৫৫ সালের ‘অনুপমা’, ‘দেবী মালিনী’, ‘পরেশ’, ‘দৃষ্টি’, ১৯৫৬ সালে ‘কীর্ত্তিগড়’, ‘একটি রাত’, ‘শঙ্কর নারায়ণ ব‍্যাঙ্ক’, ‘অসমাপ্ত’ (এ ছবিতে আরও চারজন সংগীত পরিচালনা করেন), ‘নাগরদোলা’। ১৯৫৬ সালের ১২ ডিসেম্বর অনুপম ঘটকের অকালপ্রয়াণের পর, ১৯৫৭-তে তাঁর সুরারোপিত যেসব ছবি মুক্তি পায়, সেগুলি হল, ‘সুরের পরশে’, ‘পরের ছেলে’, ‘মাধবীর জন‍্য’ ও ‘একতারা’ (এ ছবির টাইটেল-সংয়ের সুরটি করে যেতে পারেননি অনুপমবাবু, ওটি করেছিলেন তাঁর সহকারী হিসেবে ঐ ছবিতে থাকা দুর্গা সেন)। এছাড়া, ১৯৫৪-র ‘অগ্নিপরীক্ষা’-র কথা তো শুরুতেই বলা হয়েছে। 

[অনুপম ঘটকের সুরে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘শ্রী তুলসিদাস’ ছবির কালজয়ী গান ‘লিখিনু যে লিপিখানি প্রিয়তমারে’]

সিনেমা ছাড়া বেসিক বাংলা গানেও অনুপম-প্রতিভার বিচ্ছুরণ কিছু কম নেই। প্রথমেই বলতে হয়, হীরেন বসুর কথায় পঞ্জাবী ‘হির’ গানের অনুসরণে তৈরি অনুপম ঘটকের দুটি অতুলনীয় কম্পোজিশনের কথা― ‘প্রিয়ার প্রেমের লিপি…’ ও ‘শুকনো শাখার পাতা ঝরে যায়…’। ১৯৪৯ সালে রেকর্ডে গাইলেন হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়। কণ্ঠশিল্পীর যথেষ্ট দক্ষতা না থাকলে এরকম কঠিন সুরচলনের গান গাওয়া সম্ভব নয়। দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল গানদুটি, যা আজও অব‍্যাহত। এছাড়া, অনুপম সুরে হেমন্ত আরও যেসব বেসিক গান গেয়েছিলেন, তার প্রায় প্রত‍্যেকটিই স্বকীয়তায় উজ্জ্বল― ‘আকাশ মাটি ঐ ঘুমালো…’, ‘আমি তো তোমারি ওগো…’, ‘হংসমিথুন চলে…’, ‘মেঘ মেদুর বরখারে…’। একমাত্র ১৯৫১ সালে একটি রেকর্ডের দু’পিঠ জুড়ে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কথায় ও অনুপম ঘটকের সুরে হেমন্তর গাওয়া কাহিনিমূলক গান― ‘অনুরূপা রায় ১ ও ২’, বেশ হালকাচালের হয়েছিল, যা একেবারেই শ্রোতাদের মন কাড়তে পারেনি। এ গান থেকে অনুপম ঘটকের আসল প্রকাশ যে সেভাবে ঘটেনি, তা বলা যেতেই পারে।

হেমন্ত বাদে বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া আরও যেসব বেসিক গান অনুপম সুরে আজও জীবন্ত, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, সাবিত্রী ঘোষের ‘কাঙালের অশ্রুতে যে রক্ত ঝরে…’, জগন্ময় মিত্রের ‘বাসর’, ‘সমাধি’, ‘অশ্রুমুকুতা কেন তোমার চোখে…’, সন্ধ‍্যা মুখোপাধ‍্যায়ের কণ্ঠে ‘গানে তোমায় আজ ভোলাব…’, বিনতা চক্রবর্তীর ‘নবমেঘ নামে সুদূর বলাকায়…’, শচীন গুপ্তের গাওয়া ‘সারারাত জ্বলে সন্ধ‍্যাপ্রদীপ…’, তরুণ বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের ‘কত কথা প্রাণে জাগে…’, নীতা বর্ধনের (পরে সেন) ‘প্রভুজী তুমি চন্দনসম…’ ইত‍্যাদি।

কিছুদিন আগে প্রয়াত আধুনিক বাংলা গানের একসময়ের বিশিষ্ট শিল্পী অরুণ দত্ত দীর্ঘদিন গান শিখেছিলেন অনুপম ঘটকের কাছে। পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হন। অরুণবাবুর লেখায় অনেক কিছু উঠে এসেছে এই প্রবাদপ্রতিম সুরকারের বিষয়ে। যেমন জানা যায়, সন্ধ‍্যা মুখোপাধ‍্যায় কতটা প্রিয় কণ্ঠশিল্পী ছিলেন অনুপম ঘটকের। আসলে তাঁর যে জটিল সুরবিন‍্যাস, তা অনায়াসে অপরূপ হয়ে উঠতো সন্ধ‍্যা-কণ্ঠে। অরুণ দত্ত লিখছেন, ‘সন্ধ‍্যাদির মার্গসংগীতচর্চা, গলার রেঞ্জ ও কণ্ঠসম্পদের অলংকারের মূল‍্য বুঝে গুরুজীর প্রিয়পাত্রী হয়ে উঠেছিলেন তিনি।’ এ ব‍্যাপারে কানাঘুষো চলত, যে অনুপমবাবু সন্ধ‍্যার গানের ক্ষেত্রে একটু পক্ষপাতিত্ব করেন। এর জবাব কীভাবে দিয়েছিলেন অনুপম ঘটক, তা লিখে গিয়েছেন অরুণবাবু। 

১৯৫০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে একবার একটি ছবির গানের জন্যে তাঁর ‘গুরুজি’ সন্ধ‍্যাকে না-নিয়ে নিলেন তখনকার অন‍্য এক জনপ্রিয় শিল্পীকে। গানটির সুরবিন‍্যাস ছিল যথেষ্ট জটিল ও উঁচু পরদায় বাঁধা। অনেক চেষ্টা করেও সেই শিল্পী সুরকারকে খুশি করতে পারলেন না। তখন তিনি তাঁর সহকারী হীরেন ঘোষকে আরও কয়েকজন শিল্পীর কাছে পরপর যেতে বললেন। কিন্তু ইচ্ছে করেই সন্ধ‍্যা মুখোপাধ‍্যায়ের নামটা বাদ রাখলেন। কেউই রেকর্ডিং-এর সময়ের ঘটনা শুনে গাইতে সাহস পেলেন না। অবশেষে আনা হল সন্ধ‍্যাকে। তিনি এলেন, গাইলেন ও জয় করলেন সুরকারের মন। এরপর থেকে ওই পক্ষপাতিত্বের প্রসঙ্গ আর কেউ তুলতেন না।

sandhya Mukhopadhyay 1
অনুপম ঘটকের সুর সার্থকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়

অনুপম ঘটক কীভাবে গান শেখাতেন, তা নিয়ে অনেককিছু বলেছেন অরুণ দত্ত, যা থেকে বোঝা যায় অন্তরোপলব্ধির কোন স্তরে সংগীতকে ধারণ করতেন এই মহান সংগীতকার। যেদিন প্রথম অনুপম ঘটকের কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতে গান শিখতে যান অরুণবাবু, সেদিন গিয়েই এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর। লিখছেন,

“সেই ১১/বি, কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতে পৌঁছে ঘরে ঢুকতেই দেখি, এক বিশাল চেহারার মানুষ আদুল গায়ে, ধুতিপরিহিত― চেয়ারে উপবিষ্ট। ফরসা রঙের সঙ্গে গায়ের ওপর বেছানো পৈতেতে যেন চোখজুড়োনো দৃশ্য। প্রথম দর্শনেই ভক্তি আসে। যাইহোক, গিয়ে বসতেই শুনি, তাঁর সামনে বসা এক বয়স্ক ছাত্রীকে উনি বলছেন― ‘তুমি যে এতদিন গানের চর্চা করছ, কোনোদিন রেওয়াজ বা গান গাইবার সময় তোমার মনে কি কোনও শিহরণ এসেছে?’ ছাত্রীটি বলল― ‘না তো!’ উনি বললেন― ‘এই শিহরণ আসে কাব‍্য ও সুরের সমন্বয়ে তৈরি গানের অনুভব ও উপলব্ধি থেকে। গভীর বোধ থেকে যখনই সেই অনুভূতির স্তরে পৌঁছবে, দেখবে তোমার মনে একটা শিহরণ জেগেছে।’ কথাগুলো শুনে আশ্চর্য হয়ে গেলাম! ধীরে ধীরে চোখ তুলে ওঁর মুখের দিকে তাকাতেই দেখি, উনি বসে আছেন স্থির হয়ে আর ওনার দৃষ্টি দূরে কোথাও হারিয়ে গেছে।”

এরকম একজন সংগীত-সাধকের কি কোনও পরিমাপ সম্ভব?! সংগীত যে নিছক সুর-তাল-লয় নয়, অনুভবের গভীর স্তরে তাকে ধারণ করাই যে আসল সংগীত-সাধনা, এ তো তারই শিক্ষা! অনুপম ঘটক কোন মাপের সংগীতনির্মাতা ছিলেন, তা বোঝা যায় যখন সলিল চৌধুরীর মতো জিনিয়াস ‘গানে মোর ইন্দ্রধনু’-তে ডিমিনিশিং কর্ডের ব‍্যবহার শুনে বলেন, “অনুপমদা নিশ্চয়ই কোনও জন্মে পিয়ানো-টিউনার ছিলেন, নইলে এমন কাণ্ড করেন কী করে!” আবার আর এক বিরল সংগীত-প্রতিভা নচিকেতা ঘোষ, কোনও একটা গানের সঞ্চারী অংশে সুর করার সময় অরুণ দত্তকে বলেছিলেন, “এই অংশটা অনুপমদার থেকে নেওয়া, না নিলে দাঁড়াচ্ছিল না।” নচিকেতা ঘোষ প্রায়ই আসতেন অনুপম ঘটকের বাড়িতে। এসে দিনের পর দিন মন দিয়ে লক্ষ করতেন কীভাবে অনুপমবাবু ডিমিনিশিং কর্ডের ব‍্যবহার করছেন, যা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, নিজের সুররচনাতেও এই কর্ডের অসামান্য প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন নচিকেতা ঘোষ। এর অন‍্যতম সেরা দৃষ্টান্ত, হেমন্ত-কণ্ঠের সেই বিখ্যাত গান― ‘আমার গানের স্বরলিপি লেখা রবে…’।

[দুই দিকপালের যুগলবন্দি। অনুপম ঘটকের সুরে অখিলবন্ধু ঘোষের গাওয়া গান ‘শ্রাবণরজনী শেষে’]

অনুপম ঘটকের সুররচনা ছিল অনুমানের অসাধ‍্য। একটি গানের সুরারোপে তিনি ভ্রমণ করতেন নানা সুরপথে। শেষে গিয়ে সেইসব রকমারি বর্ণের ও গন্ধের সুরপুষ্প দিয়ে গেঁথে ফেলতেন এক অপরূপ সংগীত-মালিকা, যা স্বর্গীয় শোভা ছড়ায় সুরের পথে। অনুপম ঘটকের নিজেরই একটি লেখায় প্রতিভাত সংগীতকে তিনি কোন অনুভূতির গভীরে ধারণ করতেন―

“অন্তর জানতে পারে সংগীত আন্তরিক হলো কিনা? আন্তরিক সংগীতে আত্মসমর্পণের বীজ থাকে। এই বীজ হতে সৃষ্টি হয় তিনটি বিশিষ্ট ধারা। প্রথম হৃদয় থেকে উঠে সে হয় ঊর্ধ্বমুখী― যায় সে আত্মার অন্বেষণে, দ্বিতীয় ধারা সুন্দর পৃথিবীকে সুন্দরতর করে, তৃতীয় ধারা― হৃদয় থেকে উঠে আবার হৃদয়ে ফিরে আসে।”

সুরলোকের অধিবাসী ছাড়া এমন উপলব্ধি অসম্ভব! যেখানে পৌঁছতে হলে এক কঠিন সুরসাধনার পথ পেরোতে হয়।

তথ‍্যঋণ :
১) ‘প্রসাদ’ : সংগীত সংখ্যা(আষাঢ় ১৩৭৭)
২) ‘তোমার গীতি জাগালো স্মৃতি’ ২― জয়তী গঙ্গোপাধ্যায়(প্রতিভাস, জানুয়ারি ২০০৯)
৩) ‘সুরের জাদুকর অনুপম ঘটক’― অরুণ দত্ত(‘শহর’ বাংলা গান সংখ্যা, প্রতিভাস, সপ্তম সংখ্যা এপ্রিল ২০১২)
৪) ‘গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু’― সন্ধ‍্যা মুখোপাধ‍্যায়(দীপ প্রকাশন, জুন ২০১৯)
৫) ‘আনন্দধারা’― হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়(সম্পাদনা : অভীক চট্টোপাধ্যায়, সপ্তর্ষি প্রকাশন, ফেব্রুয়ারি ২০১৩)
৬) ‘সাতাত্তর বছরের বাংলা ছবি'(সংগ্রাহক-গ্রন্থনা-সম্পাদনা : তপন রায়, বাপী প্রকাশনী, আগস্ট ১৯৯৬)
এছাড়া, বিভিন্ন সিনেমার বুকলেট ও গ্রামাফোন কোম্পানি প্রকাশিত গানের বই ‘শারদ অর্ঘ্য’।

*ছবি সৌজন্য: Wikipoedia, Youtube

Author Avik Chattopadhyay

জন্ম ১৯৬৫-তে কলকাতায়। বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। স্কুল জীবন সেখানেই। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক। ছোটো থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ। গান শেখাও খুব ছোটো থেকেই। তালিম নিয়েছেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও। দীর্ঘদিন মার্কেটিং পেশায় যুক্ত থাকার পর, গত বারো বছর ধরে পুরোপুরি লেখালেখি, সম্পাদনার কাজে যুক্ত। পুরনো বাংলা গান, সিনেমা, খেলা ইত্যাদি বিষয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়-সহ বহু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তমকুমারের "হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর", হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের "আনন্দধারা", রবি ঘোষের "আপনমনে", মতি নন্দীর "খেলা সংগ্রহ"। লিখেছেন "সংগীতময় সুভাষচন্দ্র" বইটি। সাত বছর কাজ করেছেন "মাতৃশক্তি" ও "জাগ্রত বিবেক" পত্রিকায়। বর্তমানে নিজস্ব লেখালিখি ও সম্পাদনা নিয়ে ব্যস্ত।

Picture of অভীক চট্টোপাধ্যায়

অভীক চট্টোপাধ্যায়

জন্ম ১৯৬৫-তে কলকাতায়। বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। স্কুল জীবন সেখানেই। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক। ছোটো থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ। গান শেখাও খুব ছোটো থেকেই। তালিম নিয়েছেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও। দীর্ঘদিন মার্কেটিং পেশায় যুক্ত থাকার পর, গত বারো বছর ধরে পুরোপুরি লেখালেখি, সম্পাদনার কাজে যুক্ত। পুরনো বাংলা গান, সিনেমা, খেলা ইত্যাদি বিষয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়-সহ বহু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তমকুমারের "হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর", হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের "আনন্দধারা", রবি ঘোষের "আপনমনে", মতি নন্দীর "খেলা সংগ্রহ"। লিখেছেন "সংগীতময় সুভাষচন্দ্র" বইটি। সাত বছর কাজ করেছেন "মাতৃশক্তি" ও "জাগ্রত বিবেক" পত্রিকায়। বর্তমানে নিজস্ব লেখালিখি ও সম্পাদনা নিয়ে ব্যস্ত।
Picture of অভীক চট্টোপাধ্যায়

অভীক চট্টোপাধ্যায়

জন্ম ১৯৬৫-তে কলকাতায়। বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। স্কুল জীবন সেখানেই। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক। ছোটো থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ। গান শেখাও খুব ছোটো থেকেই। তালিম নিয়েছেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও। দীর্ঘদিন মার্কেটিং পেশায় যুক্ত থাকার পর, গত বারো বছর ধরে পুরোপুরি লেখালেখি, সম্পাদনার কাজে যুক্ত। পুরনো বাংলা গান, সিনেমা, খেলা ইত্যাদি বিষয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়-সহ বহু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তমকুমারের "হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর", হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের "আনন্দধারা", রবি ঘোষের "আপনমনে", মতি নন্দীর "খেলা সংগ্রহ"। লিখেছেন "সংগীতময় সুভাষচন্দ্র" বইটি। সাত বছর কাজ করেছেন "মাতৃশক্তি" ও "জাগ্রত বিবেক" পত্রিকায়। বর্তমানে নিজস্ব লেখালিখি ও সম্পাদনা নিয়ে ব্যস্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com