Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

কলেজস্ট্রিট: সুরক্ষা দেবতার সন্ধানে

পঙ্কজ চক্রবর্তী

সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫

College Street Pankaj Chakraborty
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
(College Street)

সম্ভবত ২০০৭ সাল, যাঁরা বই এবং বইমেলার সঙ্গে যুক্ত আকাশে বাতাসে তাঁদের এক প্রবল অথচ চাপা আর্তনাদ ভেসে বেড়াচ্ছে। কারণ, সেই বছরই পরিবেশদূষণজনিত কারণ দেখিয়ে বইমেলা ময়দান থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে সল্টলেকে। এবং চতুর্দিকে গুঞ্জন, মূলত নস্ট্যালজিয়া, বইমেলা এখানে স্থানান্তরিত হলে, শহরের কেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলে, ভিড় জমবে না। বইবিক্রির সম্ভাবনা কমে যাবে। অনেকেই বলতে শুরু করলেন ময়দান যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেভাবে সহজলভ্য, সল্টলেকে তার কণামাত্র নেই এবং দূরবর্তী জেলার পাঠকেরা, অসুবিধের সম্মুখীন হবেন। কথাটি যে মিথ্যা কিছু তা নয়। তবু সেই আশঙ্কা সত্যে পরিণত হল না। (College Street)

শুধু দু’এক বছর নস্ট্যালজিয়ায় আক্রান্ত কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেছিলেন-  যাই বলো ময়দানের ধুলো না মাখলে বইয়ের সেই ফিলিংসটাই আসে না। সে সব অবশ্য মাঠে মারা গেছে। বরং স্থানান্তরিত বইমেলার রেকর্ড ভিড় এবং রেকর্ড বিক্রি বুঝিয়ে দিয়েছে বাঙালি নস্ট্যালজিয়া হিয়ার মাঝে লুকিয়ে রাখতে ভালবাসলেও বাস্তব অন্য কথা বলে। সেই অনিবার্যতা আজ সেন্ট্রাল পার্কের বইমেলায় আমাদের সম্পদ হয়ে উঠেছে। এবং এর থেকে শিক্ষা নিলে আমরা দেখতে পাব যেকোনও নতুন আবির্ভাবের জন্য ভবিষ্যৎদ্রষ্টার চোখটি জরুরি। কথাটি যে এসে পড়ল তার একটি সঙ্গত কারণ রয়েছে। (College Street)

আরও পড়ুন: শিক্ষার সেই ট্রাডিশন: যোগ্য-অযোগ্যের সেকাল-একাল

গত পরশু মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে গোটা কলকাতা কার্যত অচল। এবং কলকাতার চোখ দিয়েই জেলা মফস্বলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও পুজোর আগাম ছুটি ঘোষিত হয়ে গেছে। যদি না এই বিপর্যয় সাত-আটটি তরতাজা প্রাণ নিত তাহলে হয়তো এত আশু ছুটির উদ্যোগ নেওয়া হত না। খানিকটা জনরোষের দায় ডি-এর বদলে ছুটি দিয়ে প্রশমিত হল। জনজীবন অচল। অনেকেই অফিসে পৌঁছতে পারেননি। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক নয়। এমতাবস্থায় ছুটির বিকল্প আর কী হতে পারে? (College Street)

College Street Pankaj  Chakraborty
মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বইপাড়ায় জমা জল…

কিন্তু পরিস্থিতি অন্যত্র জটিল হয়েছে। আমাদের সাহিত্যের প্রাণকেন্দ্র কলেজস্ট্রিট কার্যত জলের তলায়। চলাচলের অযোগ্য চারপাশ। সবচেয়ে বড় কথা কলেজস্ট্রিটে ছোট-বড় প্রকাশকের অনেকের আউটলেট জলে ডুবে গেছে। পুজোর মুখে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রচুর বই ও পত্রিকা। যাঁদের নিজস্ব বই আছে সেখানে হয়তো উৎপাদন খরচের ক্ষতি এবং প্রত্যাশিত লাভেরও ক্ষতি। কিন্তু যাঁরা বিভিন্ন প্রকাশনার বই এবং পত্রিকা বিক্রি করেন সেখানে ছাড়টুকু বাদ দিলে নির্ধারিত মূল্যের পুরোটাই ফেরত দিতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রকাশককে। অর্থাৎ অন্য প্রকাশনার উৎপাদন খরচ এবং লাভের ক্ষতির দায় মেটাতে হবে এইসব ছোট আউটলেটগুলিকে। সেই ক্ষতি এই মুহূর্তে সামাল দেওয়া কঠিন। (College Street)

বিক্রি তো বন্ধই। কিন্তু এতখানি আর্থিক ক্ষতি পুজোর মুখে সামলানো ছোট প্রকাশকদের পক্ষে খুবই কঠিন। কার্যত পুজোর মুখে পুজোসংখ্যার আনন্দ আর রইল না। পুজো শুরুর আগেই কলেজস্ট্রিটে নেমে এল নবমীর বিষাদ, দশমীর বিসর্জন। এইমুহূর্তে অনেক ছোট প্রকাশক পুজোসংখ্যা প্রকাশ করছেন অতিরিক্ত লাভের আশায়। হয়তো এই মূলধনটুকু তার আগামী বইমেলার রসদ। ফলে বিপন্ন হল আগামী বইমেলার লাভজনক অবস্থান। সেই ক্ষতির দায় নেবে কে? সরকার? গিল্ড? পাঠক? লেখক? স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন? কোনও ক্রাউড ফান্ড? কে এসে দাঁড়াবেন এইসব ছোট প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের পাশে? এর কোনও উত্তর আপাতত নেই। (College Street)

এই ব্যাপারে প্রধান দায় নিশ্চয়ই সরকারের। কলকাতা পৌরসভা উৎসব ধামাকায় যতখানি ব্যস্ত জনসুরক্ষা নিয়ে তার সিকিভাগ দায় নেই। দীর্ঘদিন ধরে কলেজস্ট্রিট অঞ্চলটিতে সামান্য বৃষ্টি হলে তা নদীর রূপ নেয়। অথচ আজপর্যন্ত নিকাশি ব্যবস্থার বিজ্ঞানসম্মত কোনও পরিকল্পিত রূপ আমরা দেখতে পেলাম না। কিন্তু কলেজস্ট্রিট অঞ্চলটিতে পুজো থেকে বিজয়া সম্মেলনে পার্টির নানা ধামাকা পথরোধ করে হয়েই চলেছে। আহাম্মক সরকার, নির্বাচিত সরকার জানেন পথরোধ করলেও সেই ক্ষতি, সেই অসুবিধা মেনে নেওয়ার ক্ষমতা বাঙালি ভোটারের আছে। (College Street)

“জানতে পারছি বেশ কয়েক বছর আগে কলেজ স্ট্রিটের বর্ণপরিচয় বিল্ডিংয়ে মোটামুটি অল্প টাকার বিনিময়ে সরকার আউটলেট দিতে রাজি হয়েছিলেন। কোনও কোনও প্রকাশক অবশ্য সেই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন। কিন্তু তার শতাংশ নগণ্য।”

পশ্চিমবঙ্গ কিংবা সমগ্র ভারতবর্ষে একটি ব্যাপারে সরকার নিশ্চিত, আপামর জনগণের, পরিষেবা বিষয়ে কোনও ধারণা নেই। তার পরিষেবা কেড়ে নিলে দু’একটি মৃদু তিরস্কার ছাড়া আর কোনও বড় উত্তর জনগণ দেয় না। এভাবেই পশ্চিমবঙ্গেও কলকাতা তথা কলেজস্ট্রিট অঞ্চলটি নিয়ে সরকার নিশ্চিন্তে আছেন। এতদিন  ধরে এই ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরেও সামান্য দুঃখ প্রকাশ আজও সবচেয়ে বড় জনহিতকর প্রকল্প।  তবে শুধু সরকারের ঘাড়ে দায় চাপালে হবে না। আমরা যারা কলেজস্ট্রিটে  বইসংক্রান্ত নানা কাজে যুক্ত এ ব্যাপারে আমাদের উদ্যোগ কতখানি? আমরা যারা নিজের লাভের ব্যবস্থা করতে পেরেছি অথচ নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারিনি?  সেই দায়ভার কি আমাদের উপরেও বর্তায় না? সরকারকে দোষ দেওয়ার আগে একবার ভাবি পূর্ববর্তী কোনও উদ্যোগ ছিল কী না। (College Street)

জানতে পারছি বেশ কয়েক বছর আগে কলেজ স্ট্রিটের বর্ণপরিচয় বিল্ডিংয়ে মোটামুটি অল্প টাকার বিনিময়ে সরকার আউটলেট দিতে রাজি হয়েছিলেন। কোনও কোনও প্রকাশক অবশ্য সেই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন। কিন্তু তার শতাংশ নগণ্য। বরং অধিকাংশ ছোট প্রকাশক বেছে নিয়েছেন কলেজস্ট্রিট পৌরসভা সংলগ্ন মূল অংশটিকে। হরেক মাল ও সেলাইয়ের দোকানগুলি স্থানান্তরিত হয়েছে বই বিক্রির আউটলেটে। গত দশ বছরে, আরও ভাল করে বললে গত পাঁচ বছরে ছোট প্রকাশনীর এবং লিটল ম্যাগাজিনের একটি নিজস্ব বাজার তৈরি হয়েছে। (College Street)

College Street Pankaj  Chakraborty
মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পর বইপাড়ায় জমা জল…

এক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকা প্রধান। বড় প্রকাশনীর মনোপলির যা উপাদান তা এখন ছোট প্রকাশকের হাতের মুঠোয়। ফলে প্রচ্ছদ, বাঁধাই, ছাপা, পাতা সব বিষয়ে তার সুস্পষ্ট ধারণা রয়েছে। এই নান্দনিক এবং ব্যবসায়ী ধারণাটি ছোট প্রকাশনীর পক্ষে গেছে বেশ কয়েক বছর। যখন ছোট প্রকাশনীর একটি গঠনমূলক বাজার তৈরি হচ্ছে তখন দু’খানি বিপর্যয় তাকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল কিছুদিন। করোনা মহামারী এবং আমফান। অনেক প্রকাশক কার্যত হারিয়ে গেছেন। কেউ কেউ তন্ত্র- থ্রিলারে বৈতরণী পার করেছেন কিছুদিন। এবং শেষপর্যন্ত লাভের মুখ দেখে আদর্শের বুলি কপচে  ফিরেও আসেননি। শুধু নিজের প্রকাশনীর বই রাখলে চলবে না। হরেক পাঠককে শামিল করতে তাই প্রায় সব ছোট প্রকাশনীর আউটলেটে অন্যান্য প্রকাশনীর বই এবং ছোট পত্রিকা পাওয়া যায়। প্রকাশনার ছদ্মবেশে বেশিরভাগকেই আসলে বইয়ের দোকান হয়ে উঠতে হয়েছে। (College Street)

“তখন বুঝতাম না। এখন বুঝি রোজ রোজ কলেজস্ট্রিটে গিয়ে ট্রেন ভাড়া দিলে লাভের ভাগ কমে যায়। তাই অনেকের অর্ডার নেওয়ার পর একদিনে কাজ তাঁরা সারতে চাইতেন এবং তখন ছাড় বিষয়টি বস্তুত অলীক।”

সেখানে যথেষ্ট বিক্রিও হয় ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের সৌজন্যে। তাই এতদিন কার্যত ছোট প্রকাশকেরা সুরক্ষা বিষয়ে চোখ বুজেই ছিলেন। হয়তো আগামীতেও থাকবেন। লেখকের যদি দৈবদৃষ্টি থাকে তবে প্রকাশকেরই বা দৈবকৃপা থাকবে না কেন? আর অনিশ্চয়তা যখন লেখালেখির মূল উপাদান! (College Street)

সরকার যখন বর্ণপরিচয় বিল্ডিংয়ে ছোট প্রকাশকদের স্বল্পমূল্যে বিপণি করার ব্যবস্থা করে দিলেন তখন কার্যত বেশিরভাগ ছোট প্রকাশক তা গ্রহণ করলেন না। কেন? এর প্রধান কারণটি অতি সহজেই বোঝা যায়। তাঁদের ধারণা একটি বিল্ডিংয়ের ভিতর আত্মগোপন করলে পাঠক সেখানে পৌঁছবেন না। তাছাড়া  এই অঞ্চলটিতে যে পরিমাণ ফ্লোটিং কাস্টমার থাকেন তা সম্পূর্ণ হাতছাড়া হয়ে যাবে। এই আশায় কার্যত তাঁরা গেলেন না এবং কলেজস্ট্রিটের ছোট গুমটিতেও সুরক্ষা নামক বস্তুটির কোনও ব্যবস্থা রাখলেন না। অথচ চোখ মেলে দেখতে পাচ্ছি, ব্যস্ত দিনগুলিতে, এমনকি শনিবারও কার্যত বহু আউটলেট সকাল সন্ধ্যা মাছি তাড়াচ্ছেন। চা-বিস্কুটের দামটুকু ওঠেনি। তাই যে যুক্তিকে তাঁরা হাতিয়ার করেছিলেন তা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল। তখন বোঝেননি। এখন আর কোনও উপায় আছে কী না আপাতত আমাদের জানা নেই। (College Street)

ছোট প্রকাশকদের একটা বড় অংশ নিজেরাই কবি, নিজেরাই প্রচ্ছদশিল্পী, নিজেরাই ডিটিপি অপারেটার, নিজেরাই বিজ্ঞাপন নির্মাতা, শুধু বাঁধাইটুকুর জন্য  অন্যের উপর নির্ভর করতে হয়। অতিরিক্ত যতটুকু লাভ শুষে নেওয়া যায় তার জন্য পরিবার মিলে কার্যত প্রুফ থেকে প্রচ্ছদ সবেতেই শামিল হয়েছেন। শরীর হয়তো এই ক্ষতি সামলে নেবে। মন নেবে কি? (College Street)

ইদানীং অনেক ছোট প্রকাশকের রাশি রাশি গ্রন্থ প্রকাশ দেখে ভয় হয়, যে পুরনো বই তারা ছাপছেন তার অথেন্টিসিটি কতটুকু! তাদের এসব বিষয়ে কিছু বলার নেই। তার কারণ তারা সবই জানেন এবং নিজের মেধায় নিজেরাই এতখানি মুগ্ধ যে সুরক্ষা বিষয়ে চিন্তাভাবনাটি মূলত কুলি কামিনের কাজ মনে করেন। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। এইমুহূর্তে কলেজস্ট্রিটে যে পরিমাণ ফ্লোটিং কাস্টমার ঘুরে বেরান একটু সমীক্ষা করলেই দেখা যাবে সেখানে পাঠকের সংখ্যা নেহাতই কম। আমাদের ছোটবেলায় আশি-নব্বই দশকে  মফস্বলের বইয়ের দোকানে সিলেবাস দিলে দশ দিন না ঘুরিয়ে তারা বই এনে দিতেন না। তখন বুঝতাম না। এখন বুঝি রোজ রোজ কলেজস্ট্রিটে গিয়ে ট্রেন ভাড়া দিলে লাভের ভাগ কমে যায়। তাই অনেকের অর্ডার নেওয়ার পর একদিনে কাজ তাঁরা সারতে চাইতেন এবং তখন ছাড় বিষয়টি বস্তুত অলীক। (College Street)

আরও পড়ুন: রাহুল পুরকায়স্থ: সময়, শূন্যতা ও দেহপাঠাগার

ইদানীং অনেক অভিভাবকেরা এইসব বইয়ের দোকানের উপর নির্ভর না করে নিজেরাই কলেজস্ট্রিটে পৌঁছে বই কিনছেন ছাড়টুকু বুঝে নিয়ে। এমনকি অনেকেই বছরের শুরুতে কেজি দরে খাতা কেনেন এখান থেকে। সুতরাং তাঁরা এইসব ছোটপ্রকাশনীর আত্মীয়-স্বজন নন। তাঁরা কেবল পাঠকের ছায়া, পাঠকের বিভ্রম। এদেরই আশায় ছোট প্রকাশকেরা, বর্ণপরিচয়ের বিল্ডিংয়ে গেলেন না? এরপরেও রইলেন অনেক ক্রেতা, যাঁরা মূলত মফস্বলের বইয়ের দোকান চালান। তাঁরা আমাদের বইপত্তরই কলেজস্ট্রিট থেকে এনে দেন। আমরাই নির্দেশ দিয়ে দিই কোন আউটলেটে অমুক পত্রিকা পাওয়া যাবে। এমনকি ছোট প্রকাশনীর বইটি ঠিক নির্দিষ্ট কোন আউটলেট দিয়ে রাখা আছে আমরাই জানিয়ে দিই। তাই আউটলেটগুলি কোনও বিশেষ বাড়িতে থাকলেও কিন্তু আমাদের জেলা এবং মফস্বলের বইয়ের দোকানদাররা সেখানেই পৌঁছে যেতেন। (College Street)

আরেকটি কথা ভাববার আমরা বিভিন্ন প্রকাশকের বই আনতে পাঠালে এইসব দোকানদাররা চেষ্টা করেন প্রকাশকদের নিজের ঘর থেকে বই নিতে অতিরিক্ত কমিশনের আশায়। এবার যেদিন আমি গাঙচিল, সপ্তর্ষি, মান্দাস পার্চমেন্ট, পরম্পরার বই আনতে দিলাম একই সঙ্গে, তার খাটনি কিন্তু কমল না। বরং কোথাও তাঁরা সবাই একসাথে থাকলে সকলেরই সুবিধা হত। গোলবাড়ির কষা মাংস থেকে কৃষ্ণনগরের মাদার্স হাট দূরত্ব এইমুহূর্তে কোনও ফ্যাক্টর নয়। যিনি বই কিনতে চান তিনি হাজার অসুবিধা মেনেই এই মুহূর্তে করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডের  বইমেলাটিতে স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠেছেন। (College Street)

তাই কলেজস্ট্রিট কেবলমাত্র একটি নস্ট্যালজিয়া একথা স্বীকার করবার সময় এসেছে। অন্তত যুগের প্রয়োজনে কফি হাউজের গৌরব ছাড়াই বাংলাসাহিত্যে টিকে থাকা যায়। এমন দৃষ্টান্ত অজস্র। তাছাড়া পুরনো বিখ্যাত প্রকাশনীর দোকানগুলি তো কলেজস্ট্রিটে রইলই। এত আশঙ্কার সত্যি কোনও কারণ আছে কি? ছোট প্রকাশকদের উদ্দেশে বলতে চাই আপনারা বড় প্রকাশকের মনোপলি ভেঙেছেন, কিন্তু কলেজস্ট্রিটের মনোপলি ভাঙতে এত আপত্তি কেন? (College Street)

“কেবল তো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, ঘরের দেওয়াল বা মেঝে থেকে উঠে আসা জলেও বছরে প্রচুর টাকার ক্ষতি হয় এখানে। যেসব ঘরে রোদ পৌঁছায় না, সেখানে জ্ঞানের আলোও খুব স্যাঁতস্যাঁতে।”

পুস্তক ব্যবসায় কলকাতার মনোপলি, মূলত কলেজস্ট্রিটের মনোপলি, আজও কি নস্ট্যালজিয়া নয়?  অনেকটা ময়দানে বইমেলার মতো? পিওডি থেকে আইফোন সব কিছুর সুবিধাই তো নিচ্ছেন। আর কলেজস্ট্রিট ছেড়ে চলে গেলে গেল গেল রব তুলে এই অহেতুক বিপর্যয় মেনে নিচ্ছেন কেন? আপনার চোখের জলের দায় নেওয়ার মতো স্বনির্ভর আপনাকে হতে হবে এবং সেটা প্রফেশনালি করতে হবে। বছরের পর বছর নানান দুর্যোগে কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে না। (College Street)

সেই উদ্যোগ কোথায়? এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হল এর চেয়েও বেশি ক্ষতি কি হত সেই উচু বাড়িটির ভিতর থাকলে? বর্ষার দিনে কিংবা আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাস মেনে আপনারাই বা বইগুলির সুরক্ষার অগ্রিম ব্যবস্থা করে রাখলেন না কেন? বলবেন স্থান নেই। নেই যখন অল্প অল্প করে বই আনতেন। বর্ষায় কিংবা আবহাওয়ার পূর্বাভাস মেনে জল পৌঁছতে পারে না এমন উচ্চতায় বইগুলি রাখার চেষ্টা করতেন। (College Street)

College Street Pankaj  Chakraborty
ক্ষতিগ্রস্ত বইপত্রের মাঝে শিশুরা…

এমনকি বড় প্রকাশকদের সামান্য ভাড়া দিয়ে তিন মাসের জন্য তাদের গুদাম ব্যবহার করা যেতে পারত না কি? তাঁরা নিশ্চয়ই রাজি হতেন। অন্তত প্রতিক্ষণ যতদিন আমাদের মাথার উপর আছে। কেবল তো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, ঘরের দেওয়াল বা মেঝে থেকে উঠে আসা জলেও বছরে প্রচুর টাকার ক্ষতি হয় এখানে। যেসব ঘরে রোদ পৌঁছায় না, সেখানে জ্ঞানের আলোও খুব স্যাঁতস্যাঁতে। (College Street)

একটু খেয়াল করলেই ছোট প্রকাশকেরা দেখতেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আউটলেট তৈরি হয়েছে। যাঁরা নিজেদের উদ্যোগে স্থানীয় পাঠক তৈরি করেছেন এবং কলকাতা থেকে যথাসময়ে বই নিয়ে, পত্রিকা নিয়ে তাঁদের পাঠকদের জোগান দেন। সেই সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। আপনার আউটলেট যেখানেই থাকুক ঠিকই তাঁরা একটা বিরাট সংখ্যক বই সেখান থেকেই কিনে নিতেন। এই মুহূর্তেই মনে পড়ছে মালদা পুনশ্চ, মেদিনীপুর ভূর্জপত্র এরকম আরও অনেক জেলার আউটলেটগুলির কথা।  নয়ের দশকে আমরা অজস্র গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের খোঁজ পেতাম নৈহাটি স্টেশনের তিন নম্বর প্লাটফর্মে বিজয়বাবুর বইয়ের দোকান থেকে। সেই দোকান অধুনালুপ্ত। অবশ্য দমদম স্টেশনেও এরকমই একটি গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের দোকান ছিল। বিজয়বাবুর বইয়ের দোকানেই আমি ‘দাহপত্র’ পত্রিকার প্রথম সন্ধান পাই। (College Street)

“বাংলা সাহিত্যকে কলেজস্ট্রিট কেন্দ্রিকতা থেকে বেরোতে হবে। সেই উদ্যোগ এখন থেকেই নিতে শুরু করুন। নিজস্ব প্রকাশনীর বই জেলার বিপণীগুলোতেও নিজ উদ্যোগে পৌঁছে দিন।”

তাই শুধুমাত্র নিজের আউটলেটের উপর ভরসা না রেখে জেলার বিভিন্ন আউটলেটের খোঁজ রেখে নিজেরাই ভেন্ডারের মাধ্যমে কিছু বই ছড়িয়ে দিলে আপনাদের সুরক্ষা খানিকটা নিশ্চিত হতে পারে। ভুলে যাবেন না আপনারা প্রায় প্রতিটি আউটলেটই অনলাইনে বই বিক্রি করেন। নিজেদের বইয়ের প্রি- বুকিং করেন। সেই সংখ্যাটি নেহাত মন্দ না। এইমুহূর্তে ছোট প্রকাশকদের অনলাইন বাজারটি কিছুটা হলেও মজবুত। এর সঙ্গে কলেজস্ট্রিটে ফিজিক্যাল আউটলেটের কোনও সম্পর্ক নেই। (College Street)

লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক যেমন পত্রিকার বাজেটে লেখকের সাম্মানিক ধার্য করেন না, অনেক প্রকাশক যেমন রয়্যালটির ব্যবস্থা রাখেন না, তেমনই ছোটপ্রকাশকও সুরক্ষা বাবদ কোনও খরচের কথা প্রফেশনালি ভাবেন না। সুরক্ষা খাতে কেবল ইউনিয়নের চাঁদা। এই ব্যর্থতার দায় শুধুমাত্র সরকারের উপর চাপাব কেন? আমফানের সময় অনেক ছোট বড় প্রকাশক মিলে ক্রাউড ফান্ডিং করে বিপর্যয়ের খানিকটা মোকাবিলা করেছিলেন। তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্যই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় সেখানেও দুর্নীতি, পারস্পরিক দোষারোপ, হিসেবের গরমিল, অনেক প্রকাশকের প্রতারণা এমনভাবে মিশে গিয়েছিল যে তখনই বোঝা গিয়েছিল ক্রাউড ফান্ডিং এক্ষেত্রে স্থায়ী সমাধান নয়। (College Street)

একজন প্রকাশক এই বিপর্যয়ে পাঠকের দায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার ধারণা পাঠক শুধু ছাড়ের খোঁজ করেন। এই বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়ান না। বলা বাহুল্য এই অতিরিক্ত ছাড়ের খেসারত এইমুহূর্তে ছোট প্রকাশনীকে দিতে হচ্ছে। যতই তাঁরা বলুন কাগজের দাম, বাঁধাই খরচ, জিএসটি এসব বেড়েছে তবু এইসব ছাড়, মহাছাড়, তীব্র আছাড় প্রমাণ করে দিচ্ছে বইয়ের দাম অতিরিক্ত না রাখলে এই কাজ সম্ভব নয়। কর্পোরেটের বাই টু গেট ওয়ান ফ্রি ধারণাটি তাঁর অনুকূলে যায়নি। (College Street)

“ছোট প্রকাশনী সকলে মিলে একটি সমবায় সংগঠন করুন। প্রতিমাসে নির্দিষ্ট চাঁদা তুলে প্রয়োজনে একটি সুরক্ষিত গোডাউন ভাড়া নিয়ে এবং সকলের বই যাতে সুরক্ষিত থাকে তার ব্যবস্থা করুন।”

দশ বছরের পুরনো বই অর্ধেক দাম ছেড়েই দেওয়া যায়। কিন্তু যখন ৫00 টাকার একটি বই ৪০০ টাকায় কেনার পর দেখি একমাস পরে মহাছাড়ে তার মূল্য মাত্র ২০০ টাকা, তখন সেই প্রতারণা প্রকাশককে ধূর্ত ভাবতেই শেখায়। ক্ষতি কি শুধু আপনারই হল প্রকাশক? পাঠকের কি কোনও ক্ষতি হল না? হৃদয়ের বেদনার কথা না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু যাঁরা প্রত্যাশা করেছিলেন নির্দিষ্ট সময়ে বইটি পেয়ে পুজোর ছুটিতে অবসরে পড়বেন তার কষ্টটার বুঝি কোনও মূল্য নেই? (College Street)

College Street Pankaj  Chakraborty
ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটির দেওয়ালের গায়ে বসা পুরোনো বইয়ের দোকানগুলি

আসুন এবার নানা পারস্পরিক অভিযোগ ভুলে কয়েকটি আশু সমাধানের কথা বলা যাক। এসব সমাধান কষ্টকল্পিত হতেও পারে। আবার সম্ভব হতে পারে নানা দৈব দুর্বিপাকেও। সেগুলি স্পষ্ট করে দু’এক কথায় লিখে দিই:

১. সরকারের কাছে আবেদন করা যেতে পারে পুনরায় তারা স্বল্পমূল্যে সুরক্ষা বজায় রেখে ছোট প্রকাশকদের আউটলেট এর ব্যবস্থা করে দিন। (College Street)

২. বাংলা সাহিত্যকে কলেজস্ট্রিট কেন্দ্রিকতা থেকে বেরোতে হবে। সেই উদ্যোগ এখন থেকেই নিতে শুরু করুন। নিজস্ব প্রকাশনীর বই জেলার বিপণীগুলোতেও নিজ উদ্যোগে পৌঁছে দিন। শুধু বইমেলার ভরসায় থাকবেন না। (College Street)

“সর্বাংশে ক্ষতি হল অংসগঠিত শ্রমিকদের। প্রকাশকদের তাও দেবতা আছে। তাঁরা কিংবদন্তি লেখক। কিন্তু এঁদের দেবতা কোথায়? হয়তো আছে অলীক ও অদৃশ্য কোনও টাঁড়বারো।”

৩. নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী বই রাখুন আউটলেটগুলিতে। সংরক্ষণ ও সুরক্ষার ব্যবস্থা মাথায় রেখে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে হয়তো আপনার কিছু করার ছিল না কিন্তু মাথায় রাখুন এখনও এবং প্রতিদিন কলেজস্ট্রিটে ইলেকট্রিকের যা অবস্থা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনা আছে। (College Street)

৪. ছোট প্রকাশনী সকলে মিলে একটি সমবায় সংগঠন করুন। প্রতিমাসে নির্দিষ্ট চাঁদা তুলে প্রয়োজনে একটি সুরক্ষিত গোডাউন ভাড়া নিয়ে এবং সকলের বই যাতে সুরক্ষিত থাকে তার ব্যবস্থা করুন। (College Street)

৫. গিল্ডেরও কিছু দায় আছে। বইমেলায় সামান্য প্রবেশমূল্য ধার্য করে সেই টাকায় তারা একটি গুদামঘর কিনে স্বল্পভাড়ায় ছোট প্রকাশকদের আশ্রয় দিতে পারেন। কিংবা নিজেদের একটি ফান্ড তৈরি করুন ছোট প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত সকলের জন্য। এমনকি বইমেলার আগে লোনের ব্যবস্থা করতে পারেন। কবে বইমেলা শুরু হবে, এবারের থিম কোন দেশ, কে উদ্বোধন করবেন এসব বিষয় ছাড়া আপনারা অচল কি সচল বোঝার উপায় নেই। (College Street)

৬. আপনি প্রকাশক এবং যখন প্রকাশক তখন নিজের ভেতর কবিটিকে লুকিয়ে রাখুন। আপনার উন্নাসিকতা যেন বুদ্ধদেব গুহর পাঠককে বিব্রত না করে। আপনারা স্বপ্ন দেখতেই পারেন, কিংবদন্তি লেখকের গ্রন্থস্বত্ব আদায় করবেন। অবশ্যই করুন। স্বপ্ন যখন দেখছেন ঘি পোলাওয়ের ব্যবস্থা করতেই পারেন। তবু বলব আপনার স্বপ্নের ভিতর প্রয়োজনীয় দমকলটি যেন থাকে। (College Street)

আরও পড়ুন: যেভাবে রচিত, ব্যর্থতার এলাহি আয়োজন

সত্যিই ক্ষতি হল ছোট প্রকাশকদের। আর কারোর কি নয়? আমার মনে হয় প্রকৃত ক্ষতি হল, আউটলেটের কর্মী, ডিটিপি অপারেটর, প্রচ্ছদশিল্পী বাঁধাইয়ের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের। এমনিতেই ছোট প্রকাশকদের নানা অজুহাত থাকে। আর প্রাকৃতিক বিপর্যয় তো সর্বজনস্বীকৃত অজুহাত। আমরা প্রকাশকের পাশে দাঁড়ালেও কর্মীদের পাশে দাঁড়াব না। তার কারণ প্রকাশকের সঙ্গে আমার কবিখ্যাতি জড়িত। কর্মীদের সঙ্গে নয়। সুতরাং এই বিপর্যয়ে পুজোর আগে কর্মীরা ন্যায্য বেতন থেকে খানিক বঞ্চিত হবেন, প্রচ্ছদশিল্পী টাকা পাবেন না, বাকিদের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা। তাছাড়া অনেক প্রকাশক তো নিজেরাই সব করে তাঁদের অনেকের ভাত মেরে রেখেছেন এবং প্রকাশকদেরও কিছু করার নেই। (College Street)

কাজেই সর্বাংশে ক্ষতি হল অংসগঠিত শ্রমিকদের। প্রকাশকদের তাও দেবতা আছে। তাঁরা কিংবদন্তি লেখক। কিন্তু এঁদের দেবতা কোথায়? হয়তো আছে অলীক ও অদৃশ্য কোনও টাঁড়বারো। যে কলকাতা শহরে কলেজস্ট্রিট প্রাঙ্গণে বিপর্যয় গাড়োয়ানের হাতে কার্যত অসহায়। (College Street)

মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

Author Pankaj Chakraborty

জন্ম ১৯৭৭। লেখা শুরু নব্বইয়ের দশকে। পঞ্চাশের বাংলা কবিতার আতিশয্যর বিরুদ্ধে এযাবৎ কিছু কথা বলেছেন। ভ্রমণে তীব্র অনীহা। কিংবদন্তি কবির বৈঠকখানা এড়িয়ে চলেন। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - বিষণ্ণ দূরের মাঠ চার ফর্মার সামান্য জীবন, উদাসীন পাঠকের ঘর, লালার বিগ্রহ, নিরক্ষর ছায়ার পেনসিল, নাবালক খিদের প্রতিভা।  গদ্যের বই- নিজের ছায়ার দিকে, মধ্যম পুরুষের ঠোঁট। মঞ্চ সফলতা কিংবা নির্জন সাধনাকে সন্দেহ করার মতো নাবালক আজও।

Picture of পঙ্কজ চক্রবর্তী

পঙ্কজ চক্রবর্তী

জন্ম ১৯৭৭। লেখা শুরু নব্বইয়ের দশকে। পঞ্চাশের বাংলা কবিতার আতিশয্যর বিরুদ্ধে এযাবৎ কিছু কথা বলেছেন। ভ্রমণে তীব্র অনীহা। কিংবদন্তি কবির বৈঠকখানা এড়িয়ে চলেন। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - বিষণ্ণ দূরের মাঠ চার ফর্মার সামান্য জীবন, উদাসীন পাঠকের ঘর, লালার বিগ্রহ, নিরক্ষর ছায়ার পেনসিল, নাবালক খিদের প্রতিভা।  গদ্যের বই- নিজের ছায়ার দিকে, মধ্যম পুরুষের ঠোঁট। মঞ্চ সফলতা কিংবা নির্জন সাধনাকে সন্দেহ করার মতো নাবালক আজও।
Picture of পঙ্কজ চক্রবর্তী

পঙ্কজ চক্রবর্তী

জন্ম ১৯৭৭। লেখা শুরু নব্বইয়ের দশকে। পঞ্চাশের বাংলা কবিতার আতিশয্যর বিরুদ্ধে এযাবৎ কিছু কথা বলেছেন। ভ্রমণে তীব্র অনীহা। কিংবদন্তি কবির বৈঠকখানা এড়িয়ে চলেন। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - বিষণ্ণ দূরের মাঠ চার ফর্মার সামান্য জীবন, উদাসীন পাঠকের ঘর, লালার বিগ্রহ, নিরক্ষর ছায়ার পেনসিল, নাবালক খিদের প্রতিভা।  গদ্যের বই- নিজের ছায়ার দিকে, মধ্যম পুরুষের ঠোঁট। মঞ্চ সফলতা কিংবা নির্জন সাধনাকে সন্দেহ করার মতো নাবালক আজও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

দিলীপ কুমার ঘোষ
আলোলিকা মুখোপাধ্যায়
বিতস্তা ঘোষাল

সংস্কৃতি

আহার

ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
অমৃতা ভট্টাচার্য
শ্রুতি গঙ্গোপাধ্যায়

বিহার

মণিদীপা ব্যানার্জী
প্রদীপ্ত চক্রবর্তী

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

বিতস্তা ঘোষাল
বিতস্তা ঘোষাল
বিতস্তা ঘোষাল
[adning id="384325"]
[adning id="384325"]

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com