Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

এপারের গানে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ: দ্বিতীয় পর্ব

Bangladesh Liberation War
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
(Bangladesh Liberation War)

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তৈরি ছবি ‘জয় বাংলা’ মুক্তি পেয়েছিল। প্রযোজক ও পরিচালক ছিলেন যথাক্রমে ধীরেন দাশগুপ্ত ও উমাপ্রসাদ মৈত্র। এপারের শিল্পীদের সঙ্গে এতে অভিনয় করেছিলেন তখন কলকাতায় থাকা বাংলাদেশী শিল্পীদের বেশ কয়েকজন।অভিনয়শিল্পীরা ছাড়াও এই ছবিতে দেখা গিয়েছিল স্বনামধন্য সুচিত্রা মিত্র ও দেবদুলাল বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়কে। সুধীন দাশগুপ্তের সুরে এ ছবিতে কয়েকটি গান ছিল। কবি সুভাষ মুখোপাধ‍্যায়ের লেখা “স্ট্রাইক স্ট্রাইক…” ও “আমাদের মিছিলের দুই মুখ…” কবিতা দু’টিতে সুরারোপ করে গাওয়ানো হয়েছিল যথাক্রমে সমবেত কণ্ঠে ও সুশীল মল্লিককে দিয়ে। বাকি দুটি গান, “আমাদের সংগ্রাম চলছে…” ও “শোনো হিন্দু মুসলমান…” গানদুটি ছিল সমবেত কণ্ঠে ও অমর রায়ের গলায়। ছবিতে বাকি দু’জন গীতিকার ছিলেন দিনেন্দ্র চৌধুরী ও বাংলাদেশের সিকান্দার আবু জাফর। এছাড়া, যে একটিমাত্র রবীন্দ্রসংগীত ছিল, সেটি গেয়েছিলেন সুচিত্রা মিত্র। দুই বাংলার শিল্পীদের মিলিত প্রয়াসে তৈরি এই ছবি ও তার গান দারুণ উন্মাদনা জাগিয়েছিল সেইসময়। (Bangladesh Liberation War)

জন্মশতবর্ষে এক ফুটবল কিংবদন্তি : অভীক চট্টোপাধ্যায়

এ প্রসঙ্গে বলতেই হয়, শুধু বাংলাই নয়, হিন্দি জগতকেও নাড়া দিয়েছিল বাংলাদেশ অভ‍্যুত্থান। ১৯৭১-এ নাগপুরে আই.এস.জোহরের পরিচালনায় হিন্দি নাটক ‘জয় বাংলাদেশ’ মঞ্চস্থ হয়েছিল। এই নাটকটিকেই সামান্য পালটে ঐ বছর একই নামে একটি হিন্দি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। পরিচালক ছিলেন জোহরই। ছবিতে কল‍্যাণজী আনন্দজীর সুরে বেশ কয়েকটি গান গেয়েছিলেন কিশোরকুমার, লতা মঙ্গেশকর, মহেন্দ্র কাপুর, সুষমা শ্রেষ্ঠের মতো শিল্পীরা। অভিনয়ে ছিলেন কাবেরী সরওয়ার চৌধুরী, দিলীপ দত্ত, মধুমতী, তবসুম, এস.এন. ব‍্যানার্জি, অম্বিকা জোহর, আই.এস.জোহর, রাধা সালুজা প্রমুখ শিল্পীরা। (Bangladesh Liberation War)

Sachin Dev Burman
শচীন দেব বর্মন

১৯৭১ সালের পুজোর রেকর্ডে দেখা গেল বেশকিছু শিল্পীর গানের বিষয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে গ্রামোফোন কোম্পানির রেকর্ডই বেশি। যেমন, সিলেট থেকে আসা বিখ্যাত লোকসংগীতশিল্পী নির্মলেন্দু চৌধুরী, পুলক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের কথায় নিজের সুরে গাইলেন, “বন্ধু! কান্দে আমার মন রে/ এপার কান্দেরে ওই পারের লাগিয়া/ রাম কান্দে রহিমের লাগিয়া/ভুলিতে কি পারে গঙ্গা/ পদ্মার ঢেউয়ের কথা রে… একখানা ঘর দুইখানা হয়/ দেয়াল দিলে মাঝে/ কোন দেয়ালে আকাশ ভাগ হয়/ তাতো বুঝি না রে…”। স্বাধীন হলেও নিজের জন্মভূমি যে বিদেশই রয়ে গেল, সেই বিভাজনের যন্ত্রণার ছবি স্পষ্ট গানটিতে। আসলে সবই তো এক। তবু আলাদা! একসময়ের অন‍্যতম জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন ললিতা ধর চৌধুরী। ১৯৭১-এ পুজোর সময় গাওয়া তাঁর একটি গানে শ‍্যামল গুপ্তের কলমে উঠে এল ওপার-এপার বাংলার একাকার হয়ে থাকার কথা― “এই পারে বাংলা, ওই পারে বাংলা/ কী করে করি পারাপার/ ও মাঝি দেখ/ মাঝ-দরিয়ায় যেন/ ডোবে না তরী আমার… তুফানে আমি তো ভয় করি না/ঠিকানা আমি তো ভুল করি না/পুবেরই আকাশে সূর্য উঠছে/পশ্চিমে সোনা-গলা রঙ লাগে তার…”। সুরকার ছিলেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ‍্যায়। একই বছর শিবদাস বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের কথায় নিজের সুরে ভূপেন হাজারিকার একটি গান যেন হয়ে উঠল দুই বাংলার মিলন-মন্ত্র―

  গঙ্গা আমার মা পদ্মা আমার মা
  আমার দুই চোখে দুই জলের ধারা মেঘনা যমুনা। 
  একই আকাশ একই বাতাস 
  এক হৃদয়ে একই তো শ্বাস 
  দোয়েল কোয়েল পাখির ঠোঁটে একই মূর্ছনা। 
  এপার ওপার কোন পারে জানিনা 
  আমি সবখানেতে আছি― 

  গাঙের জলে ভাসিয়ে ডিঙা পদ্মাতে হই মাঝি। 
  শঙ্খচিলের ভাসিয়ে ডানা দুই নদীতে নাচি। 
  একই আশা ভালোবাসা 
  কান্নাহাসির একই ভাষা 

  দুঃখ সুখের বুকের মাঝে একই যন্ত্রণা।  (Bangladesh Liberation War)

“কে যাস রে ভাটিগাঙ বাইয়া/ আমার ভাইধন্ রে কইয়ো/ নাইওর্ নিতো বইলা/ তোরা কে যাস/কে যাস…”। গানটি থেকে এক অদ্ভুত যন্ত্রণাময় আকুলতা বেরিয়ে এসেছে।

১৯৭১-এ গ্রামোফোন কোম্পানির পুজোর রেকর্ডে নিজের সুরে শচীন দেব বর্মণ যে গানদুটি গাইলেন, তা থেকে ঝরে পড়ল তাঁর জন্মভূমির প্রতি আবেগের অনুভূতি, যার মধ্যে একটি গান ছিল, “কে যাস রে ভাটিগাঙ বাইয়া/ আমার ভাইধন্ রে কইয়ো/ নাইওর্ নিতো বইলা/ তোরা কে যাস/কে যাস…”। গানটি থেকে এক অদ্ভুত যন্ত্রণাময় আকুলতা বেরিয়ে এসেছে। দ্বিতীয় গানটির প্রসঙ্গে আসতে গেলে, এই নিবন্ধের শুরুতে উল্লিখিত মোহিনী চৌধুরীর লেখা ১৯৪৮ সালে নিজের সুরে গাওয়া শচীনকর্তার গানটির ব‍্যাপারে বলতে হবে। যে গানটির ধাঁচেই ১৯৭১-এ গাওয়া গানটিকে গড়ে তোলা হয়েছিল। শুধু আবেদন গিয়েছিল বদলে। ১৯৪৮-এ দেশভাগের যন্ত্রণা বুকে নিয়ে মোহিনীবাবু লিখেছিলেন, “সেই যে দিনগুলি/ বাঁশি বাজানোর দিনগুলি/ ভাটিয়ালির দিনগুলি/বাউলের দিনগুলি/ আজও তারা পিছু ডাকে/ কুলহারা গাঙের বাঁকে/ তালসুপারির ফাঁকে ফাঁকে/পিছু ডাকে/ শুনি তাকদুম তাকদুম বাজে/ বাজে ভাঙা ঢোল/ ও মন যা ভুলে যা/ কী হারালি/ ভোল রে ব‍্যথা ভোল… ঐ না পারে ঢোল বাজে রে/এপারে তার সাড়া/মাঝখানে বয় থৈ থৈ থৈ/নয়নজলের ধারা/কই গেল সে গাঁয়ের মাটি/কই সে মায়ের কোল/কই কই কই সে হাসি/কই সে খেলা/কই সে কলরোল…”। সব ভেঙে গেছে। তারই প্রতীক হয়ে যেন ভাঙা ঢোলের আওয়াজ বুকে সব-হারানোর বেদনা জাগাচ্ছে, জন্মভূমির যেসব মধুর স্মৃতি এসে আছড়ে পড়ছে হৃদয়ে― তা ভোলা অসম্ভব হলেও, ভুলে থাকতে হবে। উপায় নেই। গোটা গানটাই যেন একরাশ হাহাকার। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ জন্ম নেওয়াতে, সেই বছর শচীনকর্তার গাওয়া গানটি থেকে এক ধরনের উচ্ছ্বাস ফুটে উঠল। দেশহারানো মানুষের অন‍্যতম প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর মনে হচ্ছে, রাজনৈতিকভাবে বিদেশ থাকলেও, তিনি যেন তাঁর জন্মভূমিকে ফিরে পেয়েছেন। তাঁর পত্নী মীরা দেব বর্মণের কলমে উঠে এল যেন সেই আনন্দ ও নতুন আশার ভাষা। গানের একটি লাইনেই যা পরিষ্কার― “বিসর্জনের ব‍্যথা ভোলায় আগমনীর খুশিতে”। ঢোল-বাদনের তালে তালে শচীন-কণ্ঠের উচ্ছ্বাস গোটা গানটিতে ছড়িয়ে রয়েছে। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে জেগে ওঠা ‘বাংলাদেশ’ এভাবেই একই ধাঁচের দুটি গানের(১৯৪৮ ও ১৯৭১) আবেদনকে বদলে দিল যন্ত্রণা থেকে আনন্দে। গানটি এরকম―

আমি টাকডুম টাকডুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল
সব ভুলে যাই তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল।
বাংলা জনম দিলা আমারে
তোমার পরান আমার পরান এক নাড়িতেই বাঁধা রে
মা-পুতের এই বাঁধন ছেঁড়ার সাধ‍্য কারো নাই
সব ভুলে যাই তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল।
মা তোমার মাটির সুরে সুরেতে
আমার জীবন জুড়াইলা বাউল ভাটিয়ালিতে,
পরান খুইলা মেঘনা তিতাস পদ্মারই গান গাই
সব ভুলে যাই তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল।
বাজে ঢোল নরম গরম তালেতে
বিসর্জনের ব‍্যথা ভোলায় আগমনীর খুশিতে,
বাংলাদেশের ঢোলের বোলে ছন্দপতন নাই

সব ভুলে যাই তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল। (Bangladesh Liberation War)

১৯৭১-এ “বাংলাদেশের হৃদয় হতে” নামে একটি লং প্লেয়িং রেকর্ড প্রকাশ করে গ্রামোফোন কোম্পানি। যাতে দুই বাংলার বিভিন্ন শিল্পীরা গানে গানে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি।

১৯৭১-এ “বাংলাদেশের হৃদয় হতে” নামে একটি লং প্লেয়িং রেকর্ড প্রকাশ করে গ্রামোফোন কোম্পানি। যাতে দুই বাংলার বিভিন্ন শিল্পীরা গানে গানে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি। যেমন, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কথায় শ‍্যামল মিত্র নিজেরই সুরে উদাত্ত ভঙ্গিতে গেয়েছিলেন, “বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খৃষ্টান, বাংলার মুসলমান/ আমরা সবাই বাঙালি/ তিতুমীর, ঈশা খাঁ, সিরাজ সন্তান এই বাংলাদেশের/ ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন, নেতাজি সন্তান এই বাংলাদেশের/ এই বাংলার কথা বলতে গিয়ে/বিশ্বটাকে কাঁপিয়ে দিল/কার সে কণ্ঠস্বর/মুজিবর/সে যে মুজিবর/ ‘জয় বাংলা’ বলে রে ভাই… “, শ‍্যামল মিত্র ও আরতি মুখোপাধ‍্যায়ের দ্বৈতকণ্ঠে ছিল মনকাড়া সুরে ও গায়কীতে গাওয়া, “তোমাদের উড়িয়ে দিলাম/ ওগো শান্তির দূত পায়রা/ উড়ে গিয়ে/বলে এসো/ সারা পৃথিবীর কাছে/ শান্তি স্বপ্ন/ সে তো শুধু এই/ বাংলাদেশেই আছে/ বাংলাদেশেই আছে…”। (Bangladesh Liberation War)

Shyamal Mitra
শ্যামল মিত্র

যা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ১৯৭১-এ গ্রামোফোন কোম্পানি প্রকাশিত ‘জয় বাংলা’ নামে একটি রেকর্ডে তাঁদের অপরূপ সংগীতমূর্ছনায় বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর ও উস্তাদ আলী আকবর খাঁ। এই রেকর্ডে ‘জয় বাংলা’ নামে যে মিউজিক‍্যাল কম্পোজিশনটি ছিল, সেটি তৈরি করেছিলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর। যাতে মুখ‍্য যন্ত্র অবশ্যই ছিল সেতার। পরিবেশনে পণ্ডিতজীর সঙ্গে কোরাসের সাহচর্য ছিল। এক অপূর্ব নির্মাণ! এটি জর্জ হ‍্যারিসনের ‘বাংলাদেশ’ নামে তৈরি মিউজিক‍্যাল কনসার্টের প্রভাবে প্রভাবান্বিত হয়ে তৈরি করেছিলেন রবিশঙ্কর। যে কথা তিনি নিজেই বলেছিলেন এবং রেকর্ডে হ‍্যারিসনের নামও বলা আছে। আমরা জানি, জর্জ হ‍্যারিসন ছিলেন বিশ্বখ্যাত ‘বিটলস্’ গ্রুপের অন‍্যতম শিল্পী এবং তাঁকেও আলোড়িত করেছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা। প্রসঙ্গত, “জয় বাংলা” রেকর্ডটি ভারত ছাড়াও একইসঙ্গে প্রকাশিত হয়েছিল ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও কানাডা থেকে। প্রকাশ করেছিল ‘অ্যাপেল রেকর্ডস’। (Bangladesh Liberation War)

গ্রামোফোন কোম্পানি ছাড়া অন‍্য রেকর্ড কোম্পানি থেকেও বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭১-এ। যেমন সে’বছর ‘হিন্দুস্থান রেকর্ড’ কোম্পানি থেকে বাংলাদেশ বিষয়ক কয়েকটি রেকর্ড প্রকাশিত হয়, যাতে দুই বাংলার শিল্পী সমাবেশ ঘটেছিল। আমরা জানি, প্রত‍্যেক বছর পুজোর রেকর্ডের যাবতীয় তথ‍্যসংবলিত গানের বই প্রকাশ করত রেকর্ড কোম্পানিগুলি। ১৯৭১-এ হিন্দুস্থান রেকর্ডের গানের বইতে বাংলাদেশ সংক্রান্ত রেকর্ডগুলির ব‍্যাপারে লেখা হয়েছিল, “বঙ্গবন্ধু মুজিবের নেতৃত্বে বাংলার গণ উত্থান আজ সমস্ত পৃথিবীর জনচিত্তে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সঙ্গীতমাধ‍্যমে পশ্চিম বাংলার এমনকি ভারতের সর্বসাধারণের নিকট স্বাধীনতাকামী বাংলার অধিবাসীদের মরণপণ সংগ্রামের কাহিনি প্রচার করবার জন‍্য আমরা যে আদর্শ গ্রহণ করেছিলাম তাতে এপার বাংলা, ওপার বাংলা উভয় বাংলার শিল্পীদের নিকট হতে আমরা অভূতপূর্ব সহায়তা পাই।” (Bangladesh Liberation War)

শ‍্যামল গুপ্তের কথায় ও বাপী লাহিড়ির সুরে বাংলাদেশের শিল্পী মহম্মদ আবদুল জব্বার গেয়েছিলেন, “হাজার বছর পরে/ আবার এসেছি ফিরে/ বাংলার বুকে আছি দাঁড়িয়ে/ টেনেছে দু’দিক থেকে বুকভরা ভালোবাসা/ আবার দ’হাত যেন বাড়িয়ে…”

এই সিরিজে মোট চারটি রেকর্ড বেরিয়েছিল। তার মধ্যে একটিতে শ‍্যামল গুপ্তের কথায় ও বাপী লাহিড়ির সুরে বাংলাদেশের শিল্পী মহম্মদ আবদুল জব্বার গেয়েছিলেন, “হাজার বছর পরে/ আবার এসেছি ফিরে/ বাংলার বুকে আছি দাঁড়িয়ে/ টেনেছে দু’দিক থেকে বুকভরা ভালোবাসা/ আবার দ’হাত যেন বাড়িয়ে…”― প্রার্থনার ভঙ্গিতে মেলডি-নির্ভর সুরে গাওয়া গানটি মন ছুঁয়ে যায়। পাশ্চাত্য সুরে প্রভাবিত আরেকটি গান কোরাসের সাহচর্যে দ্রুতলয়ে বয়ে চলে প্রাণে সাড়া জাগায়― “সাড়ে সাত কোটি মানুষের আজ একটি নাম মুজিবর/সাড়ে সাত কোটি প্রশ্নের জবাব পেয়ে গেলাম মুজিবর… এ যে সূর্যের দীপ্তিতে ভাস্বর/এ যে আত্মার মত অবিনশ্বর/দোলে হুংকার ‘জয় বাংলা’-র নগর গ্রাম।” দ্বিতীয় রেকর্ডে অপরেশ লাহিড়ীর সংগীত পরিচালনায় লালন ফকিরের দুটি গান গেয়েছিলেন বাংলাদেশের আরেক শিল্পী মকসুদ আলী খাঁ। গানদুটি ছিল, “গৌর প্রেম করবি যদি ও নাগরী…” এবং “আপন ঘরের খবর নে না…”। (Bangladesh Liberation War)

ব‍্যঙ্গ ও প‍্যারডি গানের একসময়ের জনপ্রিয় শিল্পী দীপেন মুখোপাধ‍্যায় দুটি গান গাইলেন আরেকটি রেকর্ডে। প্রার্থনা মুখোপাধ‍্যায়ের সুরে গানদুটির মধ্যে প্রথম গানটি চন্দনের লেখা। যেখানে ইয়াহিয়া খাঁ ও পাকসেনাদের ধিক্কার জানানো হয়েছে এবং জয়গান গাওয়া হয়েছে শেখ মুজিবুর ও মুক্তিযোদ্ধাদের― “না না না ইয়াহিয়া(তুমি) হত‍্যা যতই করোনা/ ভাবছি তোমায় দেখে/আজকে তোমার মনেরই খবর/ শুনেছি বাঙালিদের/ ‘জয় বাংলা’ মুখেতে ধ্বনি/ মশাল হাতে পথ দেখাচ্ছে― নায়ক মুজিবর/ বুঝলে গুণধর…”। দ্বিতীয় গানটি লক্ষ্মীকান্ত রায়ের লেখা, “স্বাধীনতাকামী ‘বাংলাদেশ’-এর পরিত্রাতা কে?/ সাড়ে সাত কোটি বাঙালির আজ ভাগ‍্যবিধাতা কে?/ একটি সুরেতে কে দিয়েছে বেঁধে বাঙালির অন্তর/ সে তো শেখ মুজিবর!/ ধন‍্য হে মুজিবর… জয় হোক বাংলার/ জয় হোক বাঙালির/ জয় হোক জনতার/ জয় হে বাঙালি বীর/ জয় হোক মুজিবর!/ জয় শেখ মুজিবর!” (Bangladesh Liberation War)

হিন্দুস্থান রেকর্ড কোম্পানির এই সিরিজের চতুর্থ রেকর্ডে যে গানটি ছিল, তার কথা না বললে এই বিষয়ে যে কোনও বলাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। শেখ মুজিব ও বাংলাদেশ মুক্তি আন্দোলন নিয়ে কোনও গানের কথা উঠলে, সবার মনে প্রথমেই আসে এই গান।

হিন্দুস্থান রেকর্ড কোম্পানির এই সিরিজের চতুর্থ রেকর্ডে যে গানটি ছিল, তার কথা না বললে এই বিষয়ে যে কোনও বলাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। শেখ মুজিব ও বাংলাদেশ মুক্তি আন্দোলন নিয়ে কোনও গানের কথা উঠলে, সবার মনে প্রথমেই আসে এই গান। গানটির গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, সুরকার ও গায়ক অংশুমান রায় এবং সংগীত পরিচালক দিনেন্দ্র চৌধুরী, তিনজনেই ঘটনাচক্রে কলকাতার গড়িয়া অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন। শোনা যায়, সেখানকার একটি চায়ের দোকানে বসে গানটি নাকি গড়ে উঠেছিল। তবে এ গানের কথা বলতে গেলে প্রথমে বলতে হবে কলকাতা বেতারের কথা‌। কারণ, গানটি সেখানেই প্রথমবার সম্প্রচারিত হয়। আর তার কিছুদিনের মধ‍্যেই বেরোয় রেকর্ডটি। গানটির বিষয়ে যাওয়ার আগে, রেডিও নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার। (Bangladesh Liberation War)

Aparesh Lahiri
অপরেশ লাহিড়ী

১৯২৭ সালে কলকাতা বেতার শুরু হয়। তখন থেকে ১৯৪৭ অবধি সংস্থাটি ব্রিটিশ পরিচালনাধীনে থাকলেও নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে, যখন যেমনভাবে সম্ভব হয়েছে, দেশ ও বিশ্ব সমাজ-রাজনীতির বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনার বিষয়ে কলকাতা বেতার নিয়েছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। স্বাধীনতার পরে যা আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে ও মুক্তি পায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার অধ‍্যায়কে ঘিরে বেতারের উজ্জ্বল ভূমিকার কথা ভোলা যায় না। এর আগে, ভারত-চিন (১৯৬২), ভারত-পাকিস্তান (১৯৬৫) যুদ্ধের সময়েও বেতার নিষ্ক্রিয় ছিল না। কিন্তু, ১৯৭১- এ বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে সেই ভূমিকা তুঙ্গে ওঠে। প্রতিদিনের সংবাদ তো ছিলই, এছাড়া প্রণবেশ সেনের অনবদ্য কলমে সৃষ্টি ‘সংবাদ পরিক্রমা’, প্রধানত দেবদুলাল বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের অসামান্য পাঠে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে জীবন্ত ছবি করে তুলতো শ্রোতার কাছে। আর ছিল উপেন তরফদারের পরিচালনায় ‘সংবাদ বিচিত্রা’। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ঘটনাবহুল জায়গা থেকে সরাসরি প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হত। যেখানে ১৯৭১-এ প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছিল মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি খবর তুলে আনতেন প্রতিবেদকেরা। যা শুনলে শিহরণ জাগত শ্রোতাদের মনে। প্রণবেশ সেন, দেবদুলাল বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়, উপেন তরফদারদের নিবিড় যোগ ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে। তাঁরা গিয়েওছিলেন সেখানে। স্বাধীনতার অব‍্যবহিত পরেই বেতারের এই ত্রয়ীকে পুরস্কৃত করে সম্মান জানিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। আর ভারত সরকার দেবদুলাল বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়কে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে সম্মানিত করেছিল।
১৯৭১-এ ‘সংবাদ বিচিত্রা’-য় “বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ” নামে একদিনের অনুষ্ঠানে অংশুমান রায়ের গানটি প্রথমবার সম্রচারিত হয়, যা দুই বাংলার আকাশ বাতাসকে মুখরিত করে দিয়েছিল। স্বাধীনতা লাভের অপরিসীম আনন্দের প্রকাশ ঘটেছে গানটিতে। পূর্ববঙ্গের মানুষেরা যেন ভাবতেই পারছেন না, সত্যিই তাঁদের দেশটা স্বাধীন হয়েছে কী না! ১৯৭১-এর ৭ মার্চ রমনা রেসকোর্স-এর ময়দানে বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন, “…এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা…”― সেই কথা যে বাস্তবে রূপ পেয়েছে, তা যেন স্বপ্ন মনে হচ্ছে সে দেশের মানুষের কাছে। ভিটেমাটি ছেড়ে এপার বাংলায় আসা অসংখ্য মানুষের মনেও একইরকম শিহরণ হচ্ছে। এই সর্বাত্মক স্বপ্নময় অভাবনীয় খুশির রূপ ফুটে উঠেছে গানটিতে। (Bangladesh Liberation War)

‘সংবাদ বিচিত্রা’-র সেদিনের অধিবেশনে অংশুমান রায়ের গানটি শোনানো হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের ফাঁকে ফাঁকে। সবমিলিয়ে সেই সম্প্রচার এক অন‍্য মাত্রা নিয়েছিল।

‘সংবাদ বিচিত্রা’-র সেদিনের অধিবেশনে অংশুমান রায়ের গানটি শোনানো হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের ফাঁকে ফাঁকে। সবমিলিয়ে সেই সম্প্রচার এক অন‍্য মাত্রা নিয়েছিল। প্রসঙ্গত, রেকর্ডে মূল বাংলা গানটি একপিঠে ছিল। আর উলটোপিঠে ছিল গানটির ইংরেজি অনুবাদ। এটিও করেছিলেন গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।― “The voice is not one/ but a million Mujiburs singing/ they fill and thrill the sky/ with the echoes ringing/ Bangladesh― My Bangladesh…”। বাংলা গানটি অংশুমান রায়ের একক কণ্ঠে থাকলেও, ইংরেজি ভার্সনটিতে তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়েছিলেন করবী নাথ। এবার দেখা যাক বাংলা গানটির সম্পূর্ণ বাণীরূপ―

শোনো একটি মুজিবরের থেকে
লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি প্রতিধ্বনি
আকাশে বাতাসে ওঠে রণি
বাংলাদেশ― আমার বাংলাদেশ।
সেই সবুজের বুকচেরা মেঠোপথে
আবার যে ফিরে যাবো
আমার হারানো বাংলাকে
আবার তো ফিরে পাবো
শিল্প কাব‍্যে কোথায় আছেহায়রে এমন সোনারখনি।
বিশ্বকবির সোনার বাংলা
নজরুলের বাংলাদেশ
জীবনানন্দের রূপসী বাংলা
রূপের যে তার নেইকো শেষ
বাংলাদেশ।
জয় বাংলা বলতে মনরে আমার
এখনও কেন ভাবো
আমার হারানো বাংলাকে
আবার তো ফিরে পাবো
অন্ধকারের পুব আকাশে
উঠবে আবার দিনমনি। (Bangladesh Liberation War)

এতক্ষণের আলোচনায় এটুকু পরিষ্কার, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে এপার বাংলার সংগীতজগত কতখানি মুখরিত হয়েছিল। আসলে কোনও বিশেষ অধ‍্যায়কে কেন্দ্র করে নয়, দেশভাগের পর থেকে সবদিক থেকে ছোট বড় সব বিষয়ে এক মন এক প্রাণ হয়ে একটি সুরেই বেজেছে দুপারের মানুষের হৃদয়। কাটাদেশ বা কাঁটাতার এই মিলনানুভূতির সামনে কোনওদিনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। (Bangladesh Liberation War)

তথ‍্যঋণ :
১) বিভিন্ন বছরের রেকর্ড কোম্পানির গানের বই
২) আনন্দধারা― হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (সম্পাদনা : অভীক চট্টোপাধ্যায়/ সপ্তর্ষি প্রকাশন)
৩) সলিল চৌধুরী রচনাসংগ্রহ ১(সংকলন ও সম্পাদনা : সবিতা চৌধুরী, অন্তরা চৌধুরী, রণবীর নিয়োগী/দে’জ পাবলিশিং)
৪) আলোর পথযাত্রী (সংকলন ও সম্পাদনা : ধীরাজ সাহা/ ওপেন মাইন্ড)
৫) সুধীন দাশগুপ্ত (সম্পাদনা : অশোক দাশগুপ্ত/ আজকাল)
৬) শ‍্যামল মিত্র (সম্পাদনা : অলক চট্টোপাধ্যায়/ আজকাল)
(লেখাটি ইমতিয়াজ আহমেদ সম্পাদিত ‘সঙ্গীত মনন’ পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধের লেখক কর্তৃক পরিমার্জিত রূপ।)

ছবি সৌজন্য- উইকিমিডিয়া, উইকিপিডিয়া

Author Avik Chattopadhyay

জন্ম ১৯৬৫-তে কলকাতায়। বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। স্কুল জীবন সেখানেই। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক। ছোটো থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ। গান শেখাও খুব ছোটো থেকেই। তালিম নিয়েছেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও। দীর্ঘদিন মার্কেটিং পেশায় যুক্ত থাকার পর, গত বারো বছর ধরে পুরোপুরি লেখালেখি, সম্পাদনার কাজে যুক্ত। পুরনো বাংলা গান, সিনেমা, খেলা ইত্যাদি বিষয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়-সহ বহু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তমকুমারের "হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর", হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের "আনন্দধারা", রবি ঘোষের "আপনমনে", মতি নন্দীর "খেলা সংগ্রহ"। লিখেছেন "সংগীতময় সুভাষচন্দ্র" বইটি। সাত বছর কাজ করেছেন "মাতৃশক্তি" ও "জাগ্রত বিবেক" পত্রিকায়। বর্তমানে নিজস্ব লেখালিখি ও সম্পাদনা নিয়ে ব্যস্ত।

Picture of অভীক চট্টোপাধ্যায়

অভীক চট্টোপাধ্যায়

জন্ম ১৯৬৫-তে কলকাতায়। বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। স্কুল জীবন সেখানেই। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক। ছোটো থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ। গান শেখাও খুব ছোটো থেকেই। তালিম নিয়েছেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও। দীর্ঘদিন মার্কেটিং পেশায় যুক্ত থাকার পর, গত বারো বছর ধরে পুরোপুরি লেখালেখি, সম্পাদনার কাজে যুক্ত। পুরনো বাংলা গান, সিনেমা, খেলা ইত্যাদি বিষয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়-সহ বহু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তমকুমারের "হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর", হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের "আনন্দধারা", রবি ঘোষের "আপনমনে", মতি নন্দীর "খেলা সংগ্রহ"। লিখেছেন "সংগীতময় সুভাষচন্দ্র" বইটি। সাত বছর কাজ করেছেন "মাতৃশক্তি" ও "জাগ্রত বিবেক" পত্রিকায়। বর্তমানে নিজস্ব লেখালিখি ও সম্পাদনা নিয়ে ব্যস্ত।
Picture of অভীক চট্টোপাধ্যায়

অভীক চট্টোপাধ্যায়

জন্ম ১৯৬৫-তে কলকাতায়। বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। স্কুল জীবন সেখানেই। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক। ছোটো থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ। গান শেখাও খুব ছোটো থেকেই। তালিম নিয়েছেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও। দীর্ঘদিন মার্কেটিং পেশায় যুক্ত থাকার পর, গত বারো বছর ধরে পুরোপুরি লেখালেখি, সম্পাদনার কাজে যুক্ত। পুরনো বাংলা গান, সিনেমা, খেলা ইত্যাদি বিষয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়-সহ বহু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তমকুমারের "হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর", হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের "আনন্দধারা", রবি ঘোষের "আপনমনে", মতি নন্দীর "খেলা সংগ্রহ"। লিখেছেন "সংগীতময় সুভাষচন্দ্র" বইটি। সাত বছর কাজ করেছেন "মাতৃশক্তি" ও "জাগ্রত বিবেক" পত্রিকায়। বর্তমানে নিজস্ব লেখালিখি ও সম্পাদনা নিয়ে ব্যস্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com