(Bengali Novel)
মনের মধ্যে যতটুকু দ্বিধা ছিল, এর দায়িত্ব নেবে কী না সে বিষয়ে, তা সম্পূর্ণ ঝেড়ে ফেলে একদিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিল মোহনা। শুধু যে দায়িত্ব নেবে, তাই নয়, প্রথম সারিতে নিয়ে যেতে হবে, ঠিক যেমন পঞ্চাশ বছর আগে ছিল- নিজের মনেই এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিল সে। (Bengali Novel)
কিন্তু এ কাজ তাকে হাতে-কলমে শিখতে হবে। বুঝতে হবে প্রতিটি খুঁটিনাটি। সে ঠিক করল, যতদিন না সে নিজে কাজ চালাবার মতো বিষয়গুলো আয়ত্ত করছে ততদিন যেমন চলছে চলবে। সে নিয়ম করে এখানে আসবে, কয়েক ঘণ্টা থেকে, দেখবে কাজকর্ম। সবচেয়ে জরুরি এখন প্রাক্টিক্যাল ট্রেনিং। যাকে বলে মাঠে নেমে পায়ে বল নিয়ে খেলা প্রাক্টিস। কিন্তু এ বিষয়ে কে তাকে সাহায্য করবে! (Bengali Novel)
আরও পড়ুন: জলকে চল: অষ্টম পর্ব
ভাবতে ভাবতে মনে পড়ল, আলোক কাকুর কথা। মাকে দিদি বলে ডাকেন। পুঁথিপত্রের কর্নধার। সম্পূর্ণ অন্য ঘরানার বইয়ের প্রকাশক হিসেবে তিনিও খুবই আলোচিত ও জনপ্রিয়। মায়েদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল বেড়াতে গিয়ে। মা বেড়াতে খুব ভালবাসেন। বাবা চিরকাল ঘরকুনো। মা তাই একটা ট্রাভেল এজেন্সীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে নিয়ে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াত। এমনই একটা ট্যুরে আলোক কাকুর সঙ্গে পরিচয়। সেবার কেদার দেখতে গেছিল তারা। পথে মারাত্মক বৃষ্টি। সে কাকু কাকিমা আর তাদের মেয়ে হিয়ার সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছিল। তারপর কীভাবে যেন দলছুট হয়ে পড়ল। তখন কাকু পাগলের মতো একবার ওপরে একবার নীচে নেমে এসে তাকে খুঁজছিল। যখন সবাই ধরেই নিয়েছিল সে পা স্লিপ করে খাদে পড়ে গেছে তখনও কাকু মোড়ের মাথায় সেই বৃষ্টিতেই তার জন্য অপেক্ষা করছিল। একটা মেয়ে তাদের সঙ্গে যাচ্ছিল, হঠাৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, আর তাকে না নিয়ে, সে একা ফিরে দিদিকে মুখ দেখাতে পারবে না! অবশেষে মোড়ের মুখের দোকানে মোহনাকে দেখতে পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কাকু কেঁদে ফেলেছিল। (Bengali Novel)

-কোথায় চলে গেছিলি রে মা? বুড়ো কাকুটার যে চিন্তায় মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।
আসলে হয়েছিল কী, অত বৃষ্টির মধ্যে মোহনা প্রায় দৌড়াতে দৌড়াতে নীচে নেমে এসেছিল। কিন্তু কাউকে দেখতে না পেয়ে একটা শেডের তলায় দাঁড়িয়েছিল। অন্ধকারে আর বৃষ্টির দাপটে কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না সে। কাকুও তাকে দেখতে পায়নি। (Bengali Novel)
এরপর তারা হয়ে উঠল অভিন্ন হৃদয় আত্মীয়। বিয়ের আগে একসঙ্গে তারা কত জায়গায় গেছে। বরং এদেশে ফিরে এসে সেভাবে আর যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি। এখন মনে পড়ল তাঁর অফিসও কলেজস্ট্রিট আসার পথেই। সাহিত্যের ইয়ার বুক থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে তাঁকেই ফোন করে ফেলল মোহনা। (Bengali Novel)
“পরদিন দুপুর বারোটার মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিল মোহনা। এই গলিটা সে খুব ভাল করেই চেনে। তার স্কুল হোলিচাইল্ড, ইলেভেন থেকে কলেজ স্কটিশ। তারপর কেমিস্ট্রি অনার্স।”
নিজের পরিচয় দেওয়া মাত্র কাকু বললেন- চলে আয়। কতদিন দেখিনি তোকে। সেই বিয়ের সময় বোধহয় দেখেছিলাম।
-না না কাকু। তুমি রাইয়ের অন্নপ্রাশনেও দেখেছ।
-তাই তো! তা সে এখন কত বড় হল?
-ক্লাস নাইনে পড়ছে। কবে আসব বলো?
-কবে আবার কী! একটু বাদেই বেড়িয়ে যাব আজ। নইলে বলতাম আজই। কাল চলে আয়। বাড়িটা চিনতে পারবি তো?
-হ্যাঁ কাকু।
-তাহলে ওই কথাই রইল। সকাল সকাল চলে আয় দেখি। জমিয়ে আড্ডা দেব।
-আসব। (Bengali Novel)
পরদিন দুপুর বারোটার মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিল মোহনা। এই গলিটা সে খুব ভাল করেই চেনে। তার স্কুল হোলিচাইল্ড, ইলেভেন থেকে কলেজ স্কটিশ। তারপর কেমিস্ট্রি অনার্স। হেদোয়া ছিল তাদের বন্ধুদের আড্ডার জায়গা। প্রমিতের সঙ্গেও এখানেই পরিচয়। সেসব এখন স্বপ্ন মনে হয়। কিংবা পূর্ব জন্মের স্মৃতি। (Bengali Novel)

বাড়িটা খুঁজে পেতে অসুবিধা হল না। শুধু অনেকগুলো নেম প্লেট দেখে একটু অবাক হল। তারা যখন আসত, একটাই নেম প্লেট ছিল। মনীষা ভিলা। কাকুর মায়ের নাম। কী ভীষণ ব্যক্তিত্বপূর্ণ চেহারা ছিল। ভারি সুন্দর কথা বলতেন। গান গাইতেন, কবিতা পড়ে শোনাতেন। খাওয়াতে ভালবাসতেন। কলেজ থেকে যখনই গেছে, না খাইয়ে পাঠাননি কখনও। কাকুও অসাধারণ রান্না করেন। লক্ষ্মৌতে একা থাকাকালীন খাবার জন্য নিরুপায় হয়ে শিখেছিলেন। সে রান্না ফাইভ স্টার হোটেলকে হার মানায়। কাকিমা আর মা বলত- তুমি বইয়ের ব্যবসা না করে, হোটেল করতে পারতে। এখন যা রোজগার করছ, তার থেকে কয়েকশো কোটি টাকা বেশি লাভ করতে। (Bengali Novel)
কাকু হেসে বলত- টাকাটাই কি জীবনে সব? তাহলে মিছে কেন এত আন্দোলন করলাম? জেল খাটলাম? শরীরের অর্ধেকটা তো ভাঙা। জোড়াতালি দিয়ে চলছে। সেগুলো যদি নাও ধরি নিজের পৈত্রিক ঘিয়ের ব্যাবসাই করতে পারতাম। তাতেও তো আমার বাবারাই এক নাম্বার, এখনও অব্দি। কিন্তু এই পেশায় যে সম্মান পাই, তা কি অন্য কোথাও পেতাম!
-তা ঠিক বলেছ। এই পেশার একটা আলাদা মর্যাদা আছে। লেখক, প্রকাশকদের সমাজে মানুষ খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। (Bengali Novel)
আরও পড়ুন: জলকে চল: সপ্তম পর্ব
এসব আলোচনা চলাকালীন সে আর হিয়া ছাদে বসে তাদের প্রেমের গল্প করত। এই বাড়িটায় ঢুকে এসব পুরোনো দিনের কথাই তার মনে পড়ছিল।
বন্ধ দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে ডান দিকে ঘুরতেই একটা ঘর। সেটাই কাকুর অফিস। কাকু বলে আড্ডাখানা। (Bengali Novel)
-আসব? বলে দরজার সামনে দাঁড়াল। কাকু মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা পড়ছিলেন। গলার স্বর শুনে মুখ তুলে তাকে দেখেই- আরে দাঁড়িয়ে কেন? ভেতরে আয়। সেই একইরকম ভরাট দিল-খোলা গলা, মোহনার মন ভাল হয়ে গেল।
কাছে গিয়ে প্রণাম করে বলল- তোমার তো দেখছি বয়সই বাড়েনি। এখনও একইরকম ইয়ং ও হ্যান্ডসাম।
-বলছিস? বলে হো হো করে হেসে উঠল কাকু। তারপর বলল– মা–বাবা কেমন আছে? তুই কবে এলি? প্রমিত এসেছে?
-সবাই ঠিক আছেন। প্রমিত আসেনি। আমি একাই মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছি।
-কোথায় রয়েছিস? দিদির ওখানে?
-না না। শ্বশুরবাড়িতে। তুমি তো জানো আমার শ্বশুরমশাইয়েরও প্রকাশনা সংস্থা।
-হ্যাঁ জানি তো। অমিত বাবুর সঙ্গে খুব ভাল পরিচয়। তবে এখন বোধহয় উনি আর সামলাতে পারছেন না।
-কী করে বুঝলে?
-ওই আমাদের যে কলেজস্ট্রিটে বই দেয়, নির্মল, সে বলছিল, বড়দা বোধহয় নিজে কিছুই দেখেন না। চালান ক্যাশ মেমো ছাড়াই ওদের হলধরবাবু বই দোকানে দিয়ে ক্যাশ টাকা নিয়ে নেয়। (Bengali Novel)

মোহনা মুহূর্তেই বুঝে গেল কেন স্টক বোঝাতে এত অনিচ্ছুক হলধরবাবু। সে এ কথা কাকুকে বলল না। বলল, আমি একটা সাহায্য চাই তোমার থেকে।
-সে নয় হবে। তার আগে বল তুই এখন কী করছিস?
আমি বিগত দশ বছর একটা কর্পোরেট কোম্পানিতে চাকরি করছিলাম। রিজিওনাল হেডও হয়েছি। তবে ভাবছি এবার ছেড়ে দেব।
-কেন রে? ভাল লাগছে না?
-নাহ, জব সাটিসফেকসন পাচ্ছি না।
-তাহলে কী করবি ভাবছিস?
-আমি যেটা ভাবছি সেটা নিয়ে আলোচনার জন্যেই তোমার কাছে আসা।
-বলে ফেল। আমার দ্বারা যদি কিছু হয়। (Bengali Novel)
-তোমার দ্বারাই হবে। আমি ভাবছি চৌধুরী সাহিত্য কুটিরের দায়িত্ব নেব। বাবার বয়স হয়েছে। এখন আর কিছুই দেখতে পারেন না। শুধু নিয়ম করে অফিসে যান এইটুকুই। কিন্তু তুমি তো জানো এটা কতদিনের পুরোনো একটা প্রতিষ্ঠান। বহু লেখক লেখিকার উত্থান এখান থেকেই। আমি তাই এটার ভার নিতে চাই।
-কিন্তু তুই পারবি? আমি যতদূর শুনেছি এখন পত্রিকাটা অনিয়মিত, বই আগের মতো বাজারে পাওয়া যায় না। তার উপর উনি পুরোনো দিনের মানুষ। কাউকে ছাঁটাই করেননি। এত দায়ভার তুই কেন মাথায় নিবি? এর থেকে রোজগার করা কিন্তু বেশ চাপের। (Bengali Novel)
“বেশ। তাই হবে। আমি কাল থেকে তোমার পাঠশালার ছাত্রী। তুমি আমার গুরুমশাই। কিন্তু একটা কথা বলার, বই পাড়ার কেউ যেন ঘুণাক্ষরেও এটা টের না পায়। একেবারেই গোপনে আমি এই কাজটা শিখতে চাই।”
-হুম, সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। আর অফিসের কেউ চাইছে না আমি এতে যোগ দিই, সেটাও বুঝতে পারছি।
-বুঝলাম। তুই এখন কী চাইছিস? আমাকে খুলে বল, তাহলে আমার বুঝতে সুবিধা হবে।
-আমি চাইছি হাতে-কলমে কাজ শিখতে। ওখানে কেউ আমাকে কিছু শেখাবে না, বোঝাবেও না। আপাতত আমি অফিসে দু-মাসের ছুটি নিয়েছি। যদি দেখি এ কাজটা শিখতে পারছি, বা এর থেকে কিছু করার আশা আছে তবে চাকরি ছেড়ে দেব। এটাই সামলাবো পুরো দমে। (Bengali Novel)
-বেশ। আমার থেকে যা যা সাহায্য চাস সব পাবি।
-আমি সবার আগে এই বই ছাপা সংক্রান্ত সব কিছু শিখতে চাই। তুমি আমাকে গাইড করো।
-তোদের একটা লেটার প্রেস ছিল, সেটা আছে?
-না, না সে তো বহু বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে।
-জায়গাটা আছে?
-তা আছে। (Bengali Novel)
-বেশ। সবার প্রথম তুই তাহলে আমার সঙ্গে লেগে পড় কাল থেকেই। এখন তো কম্পিউটারে টাইপ করে বইয়ের টেক্সট রেডি করা হয়। সেগুলো আগে শেখ। লে-আউট কীভাবে হচ্ছে, কোন সাইজ, কোন বইয়ের জন্য কী কাগজ ব্যবহার করা হবে… এসব ডিটেইলে শিখতে হবে।
-বেশ। তাই হবে। আমি কাল থেকে তোমার পাঠশালার ছাত্রী। তুমি আমার গুরুমশাই। কিন্তু একটা কথা বলার, বই পাড়ার কেউ যেন ঘুণাক্ষরেও এটা টের না পায়। একেবারেই গোপনে আমি এই কাজটা শিখতে চাই। (Bengali Novel)
-তাই হবে। কাকু কিছু ভাবলেন। তোর অফিসে কম্পিউটার আছে?
-আছে। তবে কেউ তাতে কাজ করে বলে তো মনে হয় না।
-তাহলে ডি.টি.পি মানে কম্পোজ কোথায় হয়?
-ঠিক জানি না। এ বিষয়ে কেউ কিছুই বলে না।
-তুই বাংলা ইংরেজি টাইপ করতে পারিস? কম্পিউটার সম্পর্কে পরিষ্কার নলেজ আছে?
-টাইপ করতে পারি। দেখিয়ে দিলে সবটাই করতে পারব। (Bengali Novel)
“মা তো আজ বারো বছর হল নেই। তোর বিয়ের পরে পরেই তো চলে গেলেন। কাকিমা আছেন মোটামুটি… বয়স কালে যা হয়, কোমরে ব্যথা, মাজায় ব্যথা, পায়ে ব্যথা, সুগার, প্রেশার…”
-খুব ভাল। তাহলে অফিসে ফিরে তুই কম্পিউটারগুলো ওপেন করে দেখ সেগুলোর কী অবস্থা। যদি ঠিক থাকে ভাল, নইলে লোক ডেকে দেখিয়ে যা করাতে হবে করিয়ে নে। পেজ মেকার, এস.টি.এম এগুলো হচ্ছে সফটওয়্যার, আছে কী না দেখবি। মনে না থাকলে লিখে নে, এক মাস পর একটা লোক রাখবি যে এই কাজগুলো জানে। (Bengali Novel)
-আমি বুঝব কী করে জানে কী না?
-এসব নিয়ে ভাবতে হবে না। কাজে নেমে পড়। তারপর যেমন যেমন ধাক্কা খাবি তেমন তেমন পথ বেরিয়ে আসবে। জয় মা বলে ঝাঁপ দিয়ে দে দেখি। আমি আছি তোর সঙ্গে।
-তুমি নিশ্চিন্ত করলে। আমি ভাবছিলাম কোথা থেকে শুরু করব। যাক এবার বলো তোমাদের কী খবর? কাকিমা কোথায়? ঠাকুমা? হিয়া?
-মা তো আজ বারো বছর হল নেই। তোর বিয়ের পরে পরেই তো চলে গেলেন। কাকিমা আছেন মোটামুটি… বয়স কালে যা হয়, কোমরে ব্যথা, মাজায় ব্যথা, পায়ে ব্যথা, সুগার, প্রেশার…
-ওরে বাবা এত কিছু?
-হুম। প্রতি মাসে একগাদা ওষুধ।
-আর তুমি?
-আমি একেবারে ফিট। যেটুকু সমস্যা ওটুকু না থাকলে মানুষ হতাম না, ভগবান হয়ে যেতাম। বলে হেসে উঠল কাকু। (Bengali Novel)

মোহনা লক্ষ্য করল, হিয়ার কথা কাকু এড়িয়ে গেল। সে বলল, কাকিমার সঙ্গে দেখা করে আসি।
-কাকিমা তো এখানে থাকে না। আমরা এ বাড়ি বিক্রি করে দক্ষিণেশ্বরে একটা ফ্ল্যাট কিনে চলে গেছি, তাও বছর পাঁচেক হল। দিদি জানেন।
-এই জায়গা ছেড়ে তোমরা চলে গেলে? কাকিমা মেনে নিল? (Bengali Novel)
আরও পড়ুন: জলকে চল: পঞ্চম পর্ব
-মেনে নিয়েছে কী না জানি না। তবে মানিয়ে নিয়েছে। আসলে হঠাৎ করেই অনেকগুলো টাকার দরকার হল। ব্যাঙ্ক থেকে অত পেতাম না। তাই ভাবলাম দুটোই তো মাত্র মানুষ এত বড় বাড়িতে। রেখে কী হবে! ওসব ছাড়। একদিন চলে আয় সবাইকে নিয়ে। জমিয়ে খাওয়া দাওয়া, আড্ডা হবে।
-আসব। কাল থেকে রোজ দেখা তো হচ্ছেই। এখন আমার কোনও হোম-ওয়ার্ক? (Bengali Novel)
-হোম-ওয়ার্ক? কাকু কিছু চিন্তা করলেন। তারপর বললেন, এক কাজ কর, আজ তুই পুরো বই পাড়াটা চক্কর দে। বইয়ের দোকানগুলো ঘোর। আমি নির্মলকে বলে দিচ্ছি। ও তোকে গাইড করবে।
-দরকার নেই কাকু। আমাকে বইপাড়ার কেউ ভাল করে চেনে না। আমি একাই ঘুরে ঘুরে দেখি।
-বেশ। তাহলে ওই কথাই রইল। কাল বারোটায় চলে আসিস।
-আসব। বলে বেড়িয়ে এল মোহনা।বার জন্য অমিতবাবুর রাতের ঘুম উড়ে গেছে, কীভাবে এতগুলো কর্মীর মাইনে দেবেন, তিনি না থাকলে এরা কীভাবে সামলাবে এসব নিয়ে তিনি রীতিমত চিন্তিত, আর এরা! (Bengali Novel)
(ক্রমশ)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
অলংকরণ- আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়
বিতস্তা ঘোষাল ঔপন্যাসিক, গল্পকার, কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক। আধুনিক ইতিহাসে এম এ, লাইব্রেরি সায়েন্সে বিলিস। কলেজে সাময়িক অধ্যাপনা। প্রকাশনা সংস্থা ভাষা সংসদের কর্ণধার। ও অনুবাদ সাহিত্যের একমাত্র পত্রিকা ‘অনুবাদ পত্রিকা’-র সম্পাদক।
'বাংলা আকাডেমি', 'সারস্বত সম্মান', 'বিবেকানন্দ যুব সম্মান', ‘একান্তর কথাসাহিত্যিক পুরস্কার', 'কেতকী' কবি সম্মান, ‘চলন্তিকা’, 'দুই বাংলা সেরা কবি সম্মান', 'বিজয়া সর্বজয়া', 'মদন মোহন তর্কালঙ্কার সম্মান', 'বই বন্ধু সেরা লেখক ২০২৪' সহ একাধিক পুরস্কার ও সম্মান প্রাপ্ত।
বিতস্তার প্রকাশিত বই ৩৪টি। তাঁর কবিতা ও গল্প হিন্দি, ওড়িয়া, অসমিয়া ও ইংরেজি,ইতালি, গ্রীক ও স্প্যানিশে অনুবাদ হয়েছে। সম্প্রতি ওড়িয়া ভাষায় প্রকাশিত তার গল্প সংকলন রূপকথার রাজকন্যারা।
দেশ বিদেশে কবিতা ও গল্প পড়ার ডাক পেয়েছেন একাধিকবার।বাংলা সবকটি জনপ্রিয় পত্রিকা ও সংবাদপত্রে তার লেখা নিয়মিত প্রকাশিত।
নিজের কাজের গণ্ডীর বাইরে অফিস ও পরিবারেই স্বচ্ছন্দ বিতস্তা কাজের ফাঁকে অবসর সময় কাটান নানান সামাজিক কাজে।
ভালোবাসা ছাড়া বাকি সব কাজ গুরুত্বপূর্ণহীন। তার নিজের কথায় ভালোবাসা ছাড়া কেউ কি বাঁচে?
