(Lal Dighi)
মাঝে মাঝেই জলের মধ্যে বুদবুদ উঠছে কিছু দূর অন্তর। ওইখানে রয়েছে মাছেরা। তারাও কি মুখ বাড়িয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার ফাঁকে মানুষের মুখ দেখতে চায়? (Lal Dighi)
ওই জলে ছায়া পড়েছে দুটি বৃহৎ অট্টালিকার। রঙে যেমন ফারাক তাদের, তেমনই ব্যবধান বয়সে এবং গঠনের স্টাইলে। জলধারা কাঁপে, কাঁপে সেই দুটি অট্টালিকার ছায়া। একটি প্রাচীন, তার রং সাদা। একটি অপেক্ষাকৃত নবীন, সেটা রঙিন। সূর্য এখন অস্ত যাচ্ছে গঙ্গার ওপারে। আকাশের এক কোণে নানারকম রং। সেই রং লেগে দুটি অট্টালিকা অন্য রূপ নিয়েছে। বাস্তবে এবং জলের ছায়ায়। (Lal Dighi)
আরও পড়ুন: উত্তর কেন দেশের সব রাজ্যই বঞ্চিত, উত্তর নেই
এই দিঘির একদিকে সবুজে সবুজ, তাতে ঢাকা পড়েছে লাল রঙের একটি মহার্ঘ বিল্ডিং। যার প্রতিটি ঘরে, প্রতিটি সিঁড়িতে ইতিহাস। তার উল্টোদিকে আবার একটি দীর্ঘ সাদা বহুতল। তার পাশের এক কোণ দিয়েই সূর্য আজকের মতো গৃহছাড়া হয়ে অন্য কোথাও মাধুকরীতে যাচ্ছে অন্যরকম রং ছড়িয়ে। (Lal Dighi)
এই দীঘিটিই ইতিহাসের সুন্দরী লালদীঘি। কল্লোলিনী কলকাতার একেবারে হৃদপিন্ডে বসে আছে। সেখানে যে ছায়া পড়ছে তা জিপিও, রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, রাইটার্স বিল্ডিং ও বিএসএনএল অফিসের। লালদীঘি যেন চারদিকে তাকিয়ে দেখে, এত নিঃস্তব্ধতা গ্রাস করল কেন চারধারে? (Lal Dighi)
“লালদীঘির এই প্রান্তে বসে থাকলে কখনওই মনে হয় না কলকাতায় বসে আছি। এখন এই পরিবর্তিত মানচিত্রের মধ্যিখানে তো আরও বেশি। বরং মাঝে মাঝে মনে হবে, যেন মফসসলের কোনও দিঘির ধারে বসে আছি অকারণ।”
আমি তো বসে আছি ডালহৌসির পুরোনো মিনিবাস স্ট্যান্ডের দিকের ঘাটে। যদি উল্টোদিকে বসতাম, তাহলে হয়তো এই দীঘিতে ছায়া দেখতাম স্টিফেন হাউসেরও। সেই স্টিফেন হাউস, যার কথা বললে মনে পড়বেই আমাদের এক হতদরিদ্র মুখ্যমন্ত্রী ও ব্রিটিশদের হাতে এক চোখ হারানো এক নেতার। একটা সময় বিরোধী বামপন্থীরা রটিয়ে দিয়েছিল, এই স্টিফেন হাউস বিক্রি করে দিয়েছেন ওই দুই প্রবীণ নেতা। মানুষ বিশ্বাসও করে নিয়েছিল। (Lal Dighi)
পরে বাস্তবে দেখা যায়, এই দুই প্রবীণ নেতা সম্পূর্ণ নির্দোষ। বিক্রিবাটার প্রশ্নই ছিল না। অসম্ভব দারিদ্র্যে শেষজীবন কেটেছিল তাঁদের, যা আজকের নেতারা কল্পনা করতে পারবেন না। মানুষ মারাত্মক ভুল ধারণা করেছিলেন প্রফুল্ল সেন ও অতুল্য ঘোষ সম্পর্কে। (Lal Dighi)

লালদীঘির এই প্রান্তে বসে থাকলে কখনওই মনে হয় না কলকাতায় বসে আছি। এখন এই পরিবর্তিত মানচিত্রের মধ্যিখানে তো আরও বেশি। বরং মাঝে মাঝে মনে হবে, যেন মফসসলের কোনও দিঘির ধারে বসে আছি অকারণ। কোনও কাজ হাতে নেই আজ। শুধু জলের ভেতরে মাছের ঘাই মারার দৃশ্য দেখে যাব। আর দেখে যাব জলের মাঝে জিপিও আর রাইটার্সের ছায়ার কাঁপন। (Lal Dighi)
এই লালদীঘির ইতিহাস কী বলে? অনেকে বলেন, মিশন রো-র দিকে একটি চার্চ ছিল, যার রং ছিল লাল। তার ছায়া এই দীঘিতে পড়ত বলে দীঘির নাম লালদীঘি। কারও তত্ত্ব বলে, ফোর্ট উইলিয়ামের লাল ছায়া এই জলে পড়ত। কেউ আবার কৃতিত্ব দেন লালচাঁদ বসাককে, তিনিই নাকি খনন করেছিলেন পুকুরটি। (Lal Dighi)
“সেই লালদীঘি! কত ইতিহাস এখানে জড়িয়ে। সেই লালদীঘির অদূরেই, পায়ে হাঁটা পথে চিরকালের জন্য শুয়ে রয়েছেন চার্নক। সম্পূর্ণ উল্টোদিকে অতটাই হয়তো দূর হবে, অ্যান্টনি কবিয়ালের প্রিয় কালীবাড়ি।”
তবে যা দেখি, অধিকাংশ আবার তোলেন হোলিতে দীঘির রং লাল হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ। এখানে কলকাতা একেবারে প্রাণ দিয়ে গুলে খাওয়া বিশিষ্ট সাহিত্যিক পূর্ণেন্দু পত্রীর একটি ঘটনার বর্ণনা যোগ করা যায়। যেখানে তিনি বলেছিলেন, জোব চার্নকের সঙ্গে সুতানুটির মানুষের প্রথম এবং একমাত্র মোলাকাতের নিদর্শন। এবং সেটা লালদীঘির পাড়েই। সেখানে জড়িয়ে গিয়েছে চার্নক ও অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির ঠাকুর্দার নাম। (Lal Dighi)
জোব চার্নক যে কলকাতায় এসেছিলেন, বইয়ে পূর্ণেন্দু লিখেছিলেন, ‘ঘটনাটা ঘটেছিল লালদীঘির পাড়ে। সেখানেই তখন শ্যাম রায়ের বিগ্রহ। প্রত্যেক বছর উৎসব হয় দোলের। নিশ্চয়ই সমবেত হত অজস্র মানুষ। তা না হলে আবির লেগে লাল হত কী করে লালদীঘি? একবার ওই উৎসবের মধ্যে ইংরেজরা ঢুকতে চাইলে পর্তুগিজ অ্যান্টনী বাধা দেয়। সে খবর পেয়ে জোব চার্নক ছুটে এসে হাতের ঘোড়ার চাবুক দিয়ে পিটিয়ে দেন পর্তুগিজ অ্যান্টনিকে।’ তারপরে পূর্ণেন্দুর সংযোজন, ‘অ্যান্টনি তখন চাকরি করতেন সাবর্ণ চৌধুরী জমিদার বংশে। নায়েব। চৌধুরী বংশের বিদ্যাধর ইংরেজদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে আগ্রহী। তাই অ্যান্টনিকে ঠ্যাঙানোর প্রতিবাদ না করে, বরং চার্নকের মনোতুষ্টির তাগিদেই, অ্যান্টনিকে সরিয়ে দিলেন কাঁচরাপাড়ার জমিদারিতে। এই অ্যান্টনিই কলকাতার নামজাদা কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির ঠাকুর্দা।’ (Lal Dighi)
আরও পড়ুন: বাংলার মৃত পুজোর গান ও এক অসমিয়া গায়কের মায়াজাল
মনে মনে ভাবি, সেই লালদীঘি! কত ইতিহাস এখানে জড়িয়ে। সেই লালদীঘির অদূরেই, পায়ে হাঁটা পথে চিরকালের জন্য শুয়ে রয়েছেন চার্নক। সম্পূর্ণ উল্টোদিকে অতটাই হয়তো দূর হবে, অ্যান্টনি কবিয়ালের প্রিয় কালীবাড়ি। (Lal Dighi)
এসব ভাবনার ফাঁকেই চোখ রাখি বর্তমানের দৃশ্যমালায়। মাঝদীঘিতে ভাসছে কিছু সাদা নীল নৌকো। নৌকো না বলে বোট বলা ভাল। বহু আগে এখানে সন্ধ্যের দিকে ফোয়ারা কাজ করত। লাল নীল হলুদ সবুজ আলো জ্বলত। একেবারে অন্যরকম লাগত দৃশ্যপট। সব কিছু যে বদলে গেছে, সেই তুমি আর সেই তুমি নেই গো। (Lal Dighi)

রাইটার্স বিল্ডিং গুরুত্বহীন হয়ে যাওয়ার পর, ডালহৌসিতে মিনি বাস স্ট্যান্ড উঠে যাওয়ার পর, ফেয়ারলি প্লেসের রেলের টিকিট বিক্রির জমজমাট বিক্রির ঘর উঠে যাওয়ার পর, একেবারেই বিবর্ণ হয়ে গেছে বিবাদী বাগ চত্বর। অনেকটা নিষ্পন্দ যেন। চারদিকের সেই বৈচিত্র্যময় খাবার দিয়ে সাজানো ফুটপাথ অচেনা লাগে। চোখে ভাসে হারিয়ে যাওয়া চাইনিজ, বাটার নান, ঘুগনি, রোল, মোমো, টোস্ট, মিষ্টি, নীরার কোল্ড ড্রিংকসের সেই ছোট ছোট দোকানগুলো। যেখানে অমৃতের স্বাদ ছিল ফুটপাতে। এখন সব ফাঁকা। ওই দোকানের কিছু চিহ্ন শুধু রয়ে গিয়েছে টি বোর্ডের পিছন দিকটায় বা হাইকোর্ট পাড়ায়। (Lal Dighi)
জনশূন্য ফুটপাথ ভালে, না খারাপ, সেই সিদ্ধান্তে যাচ্ছি না। শুধু ভরদুপুরে ডালহৌসীতে ঘুরে বেড়ালে কেমন প্রাণহীন মনে হয় গোটা চত্বর। রাইটার্সের পিছনে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের ১১৭ বছরের বাড়ি, আজ আগের তুলনায় অনেক জনহীন। টি বোর্ডের কাছে পাসপোর্ট অফিসের চত্ত্বর। বা রাইটার্সের একেবারে সম্পূর্ণ উল্টোদিকের ব্যাঙ্কের চত্বরগুলো। অথবা একদিকের জিপিও এলাকা। রেলের টিকিটের মতো, শেয়ার বা ব্যাঙ্কের কাজ এখন অনেক বেশি অনলাইনে হয়। রাইটার্সের অধিকাংশ মন্ত্রক উঠে গিয়েছে নবান্ন বা বিধাননগরে। ডাকঘরেরও অনেক প্রতিপক্ষ কুরিয়র সার্ভিস এসে গিয়েছে পাড়ায় পাড়ায়। জিপিও বিল্ডিংয়ের বড় বড় থামওয়ালা বারান্দায় কর্মহীন কিছু মানুষ বসে, শুধু মোবাইল দেখে যাচ্ছে, কিছু ভবঘুরে বোধহীন তাকিয়ে। সারাদিন এভাবেই হয়তো থেকে যাবে। (Lal Dighi)
“রাইটার্সে এখন বসেন হাতে গোনা কিছু মন্ত্রী। অনেক গেট বন্ধ। সামান্য কিছু খোলা গেটে পুলিশ উদাসীন। মোবাইলে ব্যস্ত। আরও কিছু মন্ত্রী থাকলে হয়তো এত নির্জনতার সাক্ষী থাকত না লালদীঘি বা রাইটার্সের চারপাশটা।”
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মোড় থেকে রাইটার্সের সামনে দিয়ে আপনি হাঁটছেন বাঁদিকের ফুটপাত দিয়ে। দেখবেন সারি সারি পুলিশের ভ্যান রাখা। সেই পুলিশের ভ্যানের পেছনে রাস্তা সাজানোর জন্য কিছু বেঞ্চ তৈরি হয়েছিল পাথরের ফুটপাথের উপরে। সেগুলো অর্ধেক রং চটা, অর্ধেক শ্যাওলা পড়া, অর্ধেক ভাঙা। কোথাও ভবঘুরেরা বসে রয়েছে, কিছু ভিখারী। বেলা চারটেতেও রাস্তাটা ঘন অন্ধকার। ওইদিকেই পার্কিং করার জায়গা। অধিকাংশ পার্কিংয়ের গেটে মানুষ তাস খেলছে। তাস নাকি জুয়া, বলতে পারব না। (Lal Dighi)
রাইটার্সে এখন বসেন হাতে গোনা কিছু মন্ত্রী। অনেক গেট বন্ধ। সামান্য কিছু খোলা গেটে পুলিশ উদাসীন। মোবাইলে ব্যস্ত। আরও কিছু মন্ত্রী থাকলে হয়তো এত নির্জনতার সাক্ষী থাকত না লালদীঘি বা রাইটার্সের চারপাশটা। (Lal Dighi)

লালদীঘির যে ধাপে আপাতত বসে আছি, তার পাশেই দেখা যাচ্ছে মাছ মারার জায়গা। অজস্র পুরোনো ট্রাঙ্ক সেখানে রাখা। তালা চাবি মারা এই ট্রাঙ্কেই থাকে মাছ ধরার সাজ সরঞ্জাম। এত সুন্দর দিঘির ধারে এইভাবে তালাবন্ধ ট্রাংকগুলো কেন যে পড়ে বুঝলাম না। বর্ষা সদ্য শেষ হল বলে দিঘির জল সিঁড়ি ছাপিয়ে অনেকটা উপরে। এখন এখানে মাছ ধরার লোক কম আসে। (Lal Dighi)
আরও পড়ুন: দুর্নীতির শিকড় ও ডালপালার খোঁজে
রাইটার্সের দিকে আবার অনেকটা উঁচু করে রাখা হয়েছে জায়গাটা, গাড়ি পার্কিং সেন্টারের ওপরে। তার ওপরে সুন্দরভাবে লাগানো ঘাস এবং গাছ। বিকেলের দিকে সেইখানে একদল অবাঙালি ছেলে খেলে চলেছে। ওখানে ওঠার জায়গা নেই, খেলারও কথা নয়— কী ভাবে হয় জানি না। ছেলেরা রেলিং ধরে উঠে যায়। দাপাদাপিতে নষ্ট হয়ে যায় ঘাস। (Lal Dighi)
এমনিতে লালদীঘির ধারে আপনি ঘুরতে পারবেন না ভাল করে। অনেকটা জায়গা জঙ্গল। চারপাশে বাঁধানো রাস্তাগুলো ভেঙে পড়েছে। রাস্তা শেষ হয়ে গিয়েছে ভগ্নস্তূপের মাঝে। (Lal Dighi)
জানি না, রাইটার্সের কাজকর্ম পুরোপুরি নবান্নে চলে যাওয়ার পরেই লালদীঘির কপাল এভাবে পুড়ল কিনা। সন্ধ্যের পর তো জায়গাটা একেবারে ভূতুড়ে। ২৫ বছর আগের ইস্টার্ন বাইপাস, গঙ্গার পাড় বা রাজারহাটের মতো। রাতেও তো কত লোক, কত পর্যটক ঘুরতে আসতে পারতেন এখানে। কেন আসবেন বলুন তো? হায় রে, রাতের লালদীঘি তাই বহুদিনই পড়ে থাকে দুয়োরানি হয়ে। (Lal Dighi)
“লালদীঘি থেকে উঠে সেন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চ পেরিয়ে লালবাজারের দিকে এগোই। চোখের সামনে ভেসে ওঠে, দুই বাংলার অনেক লালদীঘির কথা। বহরমপুর, চন্দননগর, চট্টগ্রাম, যশোর…।”
অবশ্যই সরকারের দুটো তিনটে বিভাগ লালদীঘি এবং বিবাদী বাগ চত্বরের উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত। আর অবধারিতভাবে দুটো বিভাগের টক্করে থেমে গিয়েছে উন্নয়ন। যা দেখে এক সময় মনে হয়েছিল, কলকাতা আর একটা দেখার মতো জিনিস পাচ্ছে, সেটা তো আর নেই। লালদীঘির জল যেমন থমকে আছে, তেমনই থমকে আছে উন্নয়নের অগ্রগমন। অবশ্যই বাঁধানো রাস্তাটাকে এমন করে দেওয়া যেত, যাতে চক্কর দেওয়া যায় চারদিক। সে তো আর হচ্ছে না! (Lal Dighi)
এই যে লালদীঘি, কত ইতিহাস তোমার গায়ে লেগে। আজকের মানচিত্র দেখে উতলা হয়ো না ১৭৫৬ সালে ১৮ জুন সিরাজ-উদ-দৌল্লার সঙ্গে ব্রিটিশদের যুদ্ধ নাকি এখানেই হয়েছিল! সিরাজের দলে তখনও বিশ্বাসঘাতকরা কাজ করেনি, ইংরেজরা তাই সেবার জিততে পারেনি। (Lal Dighi)

লালদীঘির পাড়ের সেই কাছারিবাড়ি, সেই শ্যামরায়ের বিগ্রহ আজ কোথায়! পূর্ণেন্দু পত্রী দেখিয়েছেন, ১৯০১ সালের সেন্সাস রিপোর্টের অন্যতম লেখক অতুলকৃষ্ণ রায় তাঁর কলিকাতার সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে ওই কাছারিবাড়ির অস্তিত্ব দেখিয়েছেন শহরের সাতটি জায়গায়। শ্যাম রায় (গোবিন্দ দেব) বিগ্রহ নাকি চলে যায় কালীঘাটে। (Lal Dighi)
লালদীঘি থেকে উঠে সেন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চ পেরিয়ে লালবাজারের দিকে এগোই। চোখের সামনে ভেসে ওঠে, দুই বাংলার অনেক লালদীঘির কথা। বহরমপুর, চন্দননগর, চট্টগ্রাম, যশোর…। (Lal Dighi)
আরও পড়ুন: ফুলের জলসায় ফুলমালা ডোরে কলকাতা
চট্টগ্রামে লালদীঘির মাঠে ১৯৬৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ছয় দফা আন্দোলনের দাবিতে প্রথম জনসভা করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর লেখা ছয় দফার একটা বই বিলি হয়েছিল সেদিন। দাম ছিল ২৫ পয়সা। প্রকাশক ছিলেন তাজুদ্দিন আমেদ। সেখানে মুজিব লিখেছিলেন, ‘আমার প্রস্তাবিত ৬ দফা দাবিতে যে পূর্ব পাকিস্তানের সাড়ে পাঁচ কোটি শোষিত বঞ্চিত আদম সন্তানের অন্তরের কথাই প্রতিধ্বনিত হইয়াছে, তাতে আমার কোনও সন্দেহ নাই। খবরের কাগজের লেখায়, সংবাদে ও সভা-সমিতির বিবরণে সকল শ্রেণীর সুধীজনের বিবৃতিতে আমি গোটা দেশবাসীর উৎসাহ-উদ্দীপনার সাড়া দেখিতেছি। তাতে আমার প্রাণে সাহস ও বুকে বল আসিয়াছে।’ (Lal Dighi)
বাংলার বিভিন্ন প্রান্তেই লালদীঘিগুলো অন্তত অতন্দ্র জেগে থাকুক। চারপাশে যেভাবেই মানচিত্র পাল্টে যাক না!
ছবি ঋণ: লেখক
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত
বিশিষ্ট সাংবাদিক। এই সময় সংবাদপত্রের প্রাক্তন সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদক। উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সম্পাদক। আনন্দবাজার পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে কভার করেছেন একাধিক বিশ্বকাপ ফুটবল ও অলিম্পিক গেমস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, খেলা, গান, সিনেমা, ভ্রমণ, খাবারদাবার, মুক্তগদ্য— বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতে ভালবাসেন।