Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

উত্তমের নায়িকা হতে সত্যজিৎকে ‘না’, সত্তরের সাহসিনী আরতি ভট্টাচার্য

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

এপ্রিল ২৪, ২০২৩

Cover story on Arati bhattacharya
Cover story on Arati bhattacharya
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

“কেন…
কেন সর্বনাশের নেশা ধরিয়ে
তুমি এলে না যে
মরি লাজে বুকে বাজে
মন লাগে না আর কোন কাজে”

ঝাউবনের ভিতর দিয়ে ছুটে আসছেন এক আগুনঝরা সুন্দরী। পরনে স্লিভলেস ব্লাউজ আর উড়ন্ত শাড়ির আঁচলের মধ্যে দিয়ে উঁকি দিচ্ছে উন্নত বিভাজিকা। চোখের ইশারায় আর ঠোঁটের কামনায় জ্বলে উঠছে যৌবনদ্যুতিযাকে বলে ‘বোল্ড অ্যান্ড বিউটিফুল’।

সত্তর দশকে টালিগঞ্জ পাড়ায় এমনই এক সাহসী সুন্দরীর আর্বিভাব ঘটেছিল। কাজ করেছেন মোটে এক দশক। কিন্তু তাঁর অভিনয় ও বাঁধনছেঁড়া রূপমাধুরী ভুলতে পারেননি আজও বাংলা ছবির দর্শকেরা। তিনি সত্তরের সাহসিনী নায়িকা আরতি ভট্টাচার্য। আরতি ভট্টাচার্যকে এই প্রজন্ম ততটা না চিনলেও পুরনো যুগের মানুষেরা ভোলেননি আজও। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়ে যারা বাংলা ছবির ভক্ত, তাঁরা অনেকেই চেনেন আরতিকে। 

আরতি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনেক বছর বেপাত্তা। বাংলা ছবিকে বিদায় জানিয়ে বহুদিন এই নায়িকা অন্তরালবর্তিনী। কিন্তু তাঁকে নিয়ে মানুষের কৌতুহল আজও কমেনি। ‘স্ত্রী’ ছবির নায়িকা আরতি ভট্টাচার্য আজও সবার মনে রয়ে গেছেন ‘খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার’ গানের বউরানি মৃন্ময়ী রূপে। উত্তমের নায়িকারূপে আরতি জনপ্রিয় হলেও তিনি কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তপন সিনহার মতো পরিচালকদের সঙ্গে। একাধারে আর্ট ও কমার্শিয়াল ছবির সফল অভিনেত্রী আরতি ভট্টাচার্য। অথচ কেন তিনি অন্তরালে চলে গেলেন? 

Arati Bhattacharya with Uttam kumar
উত্তম কুমারের বিপরীতে আরতি ভট্টাচার্য

 আরতি ভট্টাচার্য যেন পশ্চিমী দমকা হাওয়া হয়ে এসেছিলেন টালিগঞ্জ পাড়ায়। সনাতনী বাঙালি নায়িকার প্রতিচ্ছবি থেকে একেবারেই আলাদা ছিল আরতি ভট্টাচার্যের দীর্ঘাঙ্গী শরীরের গড়ন ও ব্যক্তিত্ব। নারীর স্বাভাবিক কমনীয়তার চেয়েও বেশি বলিষ্ঠ সৌন্দর্য ছিল আরতি’র।

১৯৫১ সালের ৮ নভেম্বর আরতির জন্ম, ডাক নাম বুলবুল। আরতি ছিলেন জামশেদপুরের মেয়ে। তাই বাংলার সাথে সাথে হিন্দি ভাষাও রপ্ত ছিল তাঁর। নায়িকা রূপে আরতি ভট্টাচার্য জনপ্রিয় হলেও তাঁর শৈশব থেকে ইচ্ছে ছিল তিনি ডাক্তার হবেন। লেডি ডাক্তার হয়ে রুগির সেবা করবেন। কিন্তু আমরা যা চাই তাই কী পাই! প্রতি বছর স্কুলে নাটক প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার লাভ করতেন আরতি। ধীরে ধীরে মনে তৈরি হতে থাকল অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছে। জামশেদপুর মহিলা কলেজে পড়াকালীন নাটকে আবার অংশগ্রহণ করলেন আরতি। সেই নাটক দেখতে চিফ গেস্ট হয়ে এসেছিলেন অভিনেতা নট সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় (বড়)। সেসময় সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘নহবৎ’ নাটকের জন্য একজন নতুন মুখের মেয়ে খুঁজছিলেন। এই নাটক দেখতে এসেই সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় খুঁজে পেলেন আরতিকে। সত্যবাবুর মতে, ‘নহবৎ’ নাটকের কেয়া চরিত্রের জন্য একদম পারফেক্ট ছিলেন আরতি।

অভিনয় করবার ইচ্ছেতেই জামশেদপুর থেকে মায়ের সঙ্গে মামার বাড়ি চুঁচুড়ায় চলে এলেন আরতি। যোগ দিলেন সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে। রঙমহলে হিট হল ‘নহবৎ’ নাটক। সেটা ষাটের দশকের শেষ। সেই যে আরতি কলকাতায় এলেন, জামশেদপুরে আর ফেরা হল না। কলেজে পড়াও শেষ করা হল না। জড়িয়ে পড়লেন প্যাশন অভিনয়েই। 

Arati Bhattacharya
রূপসী আরতি

হিন্দি ভাষা আরতি অনেক বাঙালি নায়িকার থেকে ভালো বলতেন। হঠাৎই এক হিন্দি ছবির প্রযোজক বম্বে থেকে বাংলায় উড়ে এসে আরতিকে তাঁর ছবির নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব দেন। না চাইতেই হাতে চাঁদ পান আরতি।  একেবারে বম্বের নায়িকা হবার সুযোগ! ছবির নাম ‘রিওয়াজ’, কিন্তু কদিন শ্যুটিং করেই ছবির কাজ বন্ধ করে ইউনিট নিয়ে বম্বে ফিরে যান প্রযোজক। 

কিন্তু আরতি হারতে শেখেননি। ফিরলেন না জামশেদপুরে। এই সময় পরিচালক মৃণাল সেন নতুন হিন্দি ছবি করছিলেন ‘এক আধুরি কাহানি’। হিন্দি বলতে পারে এমন নবাগতা অভিনেত্রী খুঁজছিলেন মৃণাল সেন। সত্যজিৎ রায় বা মৃণাল সেন মঞ্চ থেকে বহু অভিনেতা অভিনেত্রীকে চলচ্চিত্রে এনে স্টার বানিয়েছেন। চরিত্রের সঙ্গে মানায় এমন অভিনেতাই তাঁরা খুঁজতেন। ঠিক সেভাবেই সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে এল হিন্দি বলতে পারে এমন মেয়ে কলকাতা শহরে খুঁজছেন মৃণাল সেন। সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় আর দেরি না করে আরতিকে পাঠিয়ে দিলেন মৃণাল সেনের কাছে। অডিশন নিয়ে মৃণালও জানিয়ে দিলেন, এই মেয়েকেই তাঁর চাই। ‘এক আধুরি কাহানি’ ছবির নায়িকা হলেন আরতি। তাঁর বিপরীতে ছিলেন নবাগত অভিনেতা বিবেক চ্যাটার্জি। এই বিবেক চ্যাটার্জি পরবর্তীকালে আরও এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী সোমা দে’কে বিয়ে করেছিলেন। যদিও ওঁদের সংসার সুখের হয়নি। 

Film: Ek adhuri kahani
'এক আধুরি কাহানি' ছবির দৃশ্যে আরতি

পাকচক্রে ‘এক অধুরি কাহানি’ রিলিজ করতে দেরি করল। ইতিমধ্যে মৃণাল সেনের সহকারী ইন্দর সেন নিজের পরিচালনায় ছবি করছেন ‘পিকনিক’। ততদিনে ইন্দর সেনের একক পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘প্রথম কদম ফুল’ সুপারহিট। সুধীন দাশগুপ্তর সুরে মন ভরিয়েছে ‘প্রথম কদম ফুল’-এর গান। দ্বিতীয় ছবি ‘পিকনিক’ তৈরি হওয়ার গল্প জানলাম আড়ালে থাকা পরিচালক ইন্দর সেনের কাছ থেকে। ইন্দর সেনের কথায়“পিকনিক ছিল রমাপদ চৌধুরীর বেশ সাহসী গল্প। তিন বন্ধু ও তিন বান্ধবী পিকনিক করতে যাবে নিজস্ব গাড়ি নিয়ে। মেয়েরা ছেলেদের সঙ্গে পিকনিকে যাচ্ছে সেটা তারা বলে যায়নি বাড়িতে। কিন্তু কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধে হয়। পিকনিকে গিয়ে গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সে রাতে আর বাড়ি ফেরা হয় না তাঁদের। এই চাপা উত্তেজনার গল্প নিয়েই ছবি। তিনজন নতুন মুখ অভিনেতা নিয়েছিলাম, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় সবে সবে সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ করেছেন, রঞ্জিত মল্লিক করেছেন প্রথম ছবি মৃণাল সেনের ‘ইন্টারভিউ’, শমিত ভঞ্জ অবশ্যি তখন বেশ কিছু ছবি করে ফেলে পরিচিত নাম। তিন অভিনেতা পেয়ে গেলেও তিন অভিনেত্রী খুঁজতে আমায় বেগ পেতে হয়েছিল। তখন আমায় একদিন সত্যজিৎ রায়ের ক্যামেরাম্যান নিমাই ঘোষ আরতি ভট্টাচার্যের ছবি দেখালেন। নিমাইবাবু আমাকে নিয়ে গেলেন আরতির বাড়িতে। বেশ লম্বা চেহারার স্মার্ট মেয়ে দেখেই আরতিকে চরিত্রের সঙ্গে ভালো মানাবে মনে হল। আর দুজন অভিনেত্রীকে নিলাম, তাঁরাও নবাগতা, জয়শ্রী রায় আর অর্চনা গুপ্ত, ইনি পরিচালক হেমেন গুপ্তর মেয়ে। আরতি শুরু থেকেই সহজাত অভিনয় করতেন। একটা মজার গল্প মনে পড়ছেতখন অভিনেত্রীদের সঙ্গে এত পার্সোনাল হেয়ার-ড্রেসার থাকত না। আরতি নিজেই নিজের চুল ড্রাই করছিল। ড্রায়ার মেশিন আটকে গেছিল আরতির চুলের সঙ্গে। সে এক কাণ্ড।
‘পিকনিক’ ছবির আউটডোর করেছিলাম তোপচাচি লেকে। ছবিটা দেখলেই বুঝবেন।”

আরও পড়ুন: মঞ্জু দে: স্মৃতি বিস্মৃতির ধারাপাত

সত্যি, ‘পিকনিক’ আরতি ভট্টাচার্যের প্রথম দিকের ছবি হলেও তিনি কী ভীষণ সপ্রতিভ! আর পাঁচজন বাঙালি নায়িকার মতো লাজুক অভিনয় নয়। চোখে গগলস, হাতে রাখা ব্যাগ কাঁধে ঝোলানো আর দৃষ্টিতে পুড়ে মরবে যে কোনও পুরুষের হৃদয়। পিকনিক যাবার গাড়িতে আরতি সামনের সিটে বসলেন দুই পুরুষ শমিত ভঞ্জ আর ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়ের মাঝে। যেখানে পুরুষরা পাশে বসা প্রেমিকার কাঁধে হাত রাখেন, সেখানে আরতি স্লিভলেস ব্লাউজ পরিহিত হাত রাখছেন দুই পুরুষের কাঁধে। ‘পিকনিক’-এ শমিত ভঞ্জর বিপরীতে ছিলেন আরতি। সত্তরের দশকে আরতি-শমিত পরস্পরকে ‘তুই’ সম্বোধন করছেন যা বৈপ্লবিক। আরতির লিপে ‘কেন সর্বনাশের নেশা ধরিয়ে’ গানের সুর করেছিলেন সুধীন দাশগুপ্ত। ইন্দর সেন যখন ‘প্রথম কদম ফুল’ করছেন তখনই ওঁকে সুধীন দাশগুপ্ত ‘কেন সর্বনাশের নেশা’, ‘কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে’, ‘ডেকে ডেকে চলে গেছি’ গানগুলো পিকচারাইজ করতে দেন। কিন্তু ‘কেন সর্বনাশের নেশা’ আর দরকার লাগে না তনুজার লিপে ‘প্রথম কদম ফুল’ ছবিতে। তাই ‘পিকনিক’ ছবিতে আরতির লিপে বসিয়ে দেন সেই গান। বিখ‍্যাত এই গানের দৃশ্যের শ্যুট হয়েছিল দীঘার ঝাউবনে।

সেই সময় সুপ্রিয়া দেবীর পর বাংলা ছবিতে কেউ একজন দীর্ঘাঙ্গী চেহারার লাস্যে ভরা অভিনেত্রী এলেন। তিনি আরতি ভট্টাচার্য। একই বছর ১৯৭২ সালেই মুক্তি পেল বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবথেকে আলোচিত ছবি ‘স্ত্রী’। প্রথম একসঙ্গে দেখা যাবে উত্তম কুমার ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের টক্কর। উত্তমের লিপে গাইছেন সঙ্গীতের জাদুকর মান্না দে এবং সৌমিত্রর লিপে অপাপবিদ্ধ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠ। পুরুষশাসিত টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে ‘স্ত্রী’ ছবি যেন মহাতারকা অভিনেতা ও গায়কদের টক্কর। সেখানে নায়িকার রোল করতে তৎকালীন জনপ্রিয় নায়িকারা চাননি। উত্তম-সৌমিত্র এক ছবিতে থাকলে নায়িকাকে আর কে দেখবে! সেই রোলেই দর্শকের চোখে বাজিমাৎ করলেন নবাগতা আরতি ভট্টাচার্য। 

মৃণাল সেনের ‘এক আধুরি কাহানি’র সেটেই আরতির সঙ্গে দেখা করতে এলেন পরিচালক সলিল দত্ত’র সহকারি শ্রীকান্ত গুহঠাকুরতা। শ্রীকান্তবাবু পরে কিছু জনপ্রিয় ছবি করেছিলেন, তবে অকালেই প্রয়াত হন। শ্রীকান্ত গুহঠাকুরতা আরতিকে বলেন “সলিল দত্ত তাঁর নতুন ছবির মেয়ে খুঁজছেন যাতে দুজন নায়ক থাকবে উত্তমকুমার আর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।” সে সময় যারা ইন্ডাস্ট্রির শ্রেষ্ঠ পুরুষ। দুজনের দুই ভক্ত দল। আরতি সলিল দত্তের সঙ্গে দেখা করে কাজ পেয়ে গেলেন। আরতি সলিল দত্তকে জিজ্ঞেস করেছিলেন “আমার রোলটা কী?” সলিল দত্ত’র উত্তর ছিল, “কেন, নায়িকার?” সেদিন চমকে উঠেছিলেন আরতি।

‘স্ত্রী’ কিন্তু সেসময়কার অ্যাডাল্ট ছাপ দেওয়া বাণিজ্যিক ছবি ছিল। উত্তম আরতিকে বিছানায় শুয়ে বলছেন, “তোমার হাতে পাউডার মাখতে এলুম।” আরতির চটজলদি উত্তর “তার জন্য তো আদালত রয়েছে।” উত্তমকুমার তখন মধ্যগগনে, তাঁর সঙ্গে মাখোমাখো দৃশ্যে এক নবাগতা মেয়ে আরতি এতটুকুও স্ক্রিন প্রেজেন্স হারাননি। বরং মেয়েটি মেরুদণ্ড সোজা রেখে নিজের মতামত ভোগী স্বামীকে জানিয়ে দেয়। 

৭২ সালে উত্তম-সৌমিত্র-আরতির ‘স্ত্রী’ ছবির উন্মাদনা কতটা ছিল, তা মালুম হল প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক নিমাই ঘোষের পুত্র সাত্যকি ঘোষের কথা শুনে। সাত্যকি নিজেও বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার। সাত্যকি জানালেন, “আরতি ভট্টাচার্য ইন্ডাস্ট্রিতে আসার শুরুর থেকেই আমার বাবার সাথে আলাপ। উনি আমাদের বাড়িতে এসেছেন, আমরাও আরতি দেবীর বাড়ি গেছি অনেকবার। যখন ‘স্ত্রী’ রিলিজ করল তখন আমি স্কুলে পড়ি। সিনেমা দেখতে যাওয়া বাড়ি থেকে বারণ। কিন্তু উত্তম-সৌমিত্রর ‘স্ত্রী’ আমাদের বন্ধুদের মধ্যে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়াল। ‘স্ত্রী’ না দেখলে নাকি জীবন বৃথা! বাড়িতে অবশ্য ‘স্ত্রী’র গানের রেকর্ড কেনা হয়েছিল। ‘হাজার টাকার ঝাড়বাতিটা’ শুনছি রোজ। শেষমেশ বন্ধুদের চাপে পড়ে বাড়িতে না বলেই জীবনে প্রথম অ্যাডাল্ট সিনেমা দেখলাম ‘স্ত্রী’, পাড়ার ‘ভারতী’ সিনেমা হলে। আজ তো সে সিনেমা হলের আর অস্তিত্ব নেই। আরতি ভট্টাচার্যকে বাস্তবেও যতটা ভালো লাগত, পর্দাতেও দুর্দান্ত লেগেছিল।”

Bengali film Stree Uttam kumar Arati
উত্তম কুমারের সঙ্গে আরতি ভট্টাচার্য

সুচিত্রা, সাবিত্রী, সুপ্রিয়াদের সরিয়ে উত্তম-আরতি জুটি হয়ে গিয়েছিল একসময়। সাত-সাতটি ছবি আরতি করেছেন উত্তম কুমারের সঙ্গে। তার মধ্যে দুটি শ্রেষ্ঠ ছবি ‘স্ত্রী’ এবং ‘আমি সে ও সখা’। ‘আমি সে ও সখা’র খল চরিত্রটি আরতি করতে চাননি। কিন্তু উত্তমের অনুরোধে রাজি হন। এই চরিত্র করে আরতি শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেত্রীর বিএফজেএ পুরস্কার পান। ছবিতে উত্তমের সঙ্গে আরতির একটি চুম্বন দৃশ্য ছিল। আরতিকে উত্তম দেখিয়ে দিয়েছিলেন ক্যামেরার সামনে মাথা পিছনে রেখে কীভাবে চুমু খাওয়া সামলাতে হয়।

আরতি ভট্টাচার্যকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। আরতির মুখ থেকে শুনেছিলাম একবার উত্তমকুমারের সঙ্গে ওড়িশাতে আউটডোর শুটিং করতে গিয়ে ঘটেছিল মজার কাণ্ড! বিপত্তি শুরু হল ক্রাউড নিয়ে। সবাই জেনে ফেলেছে শ্যুটিং হচ্ছে ফিল্মের, এমন ভিড় যে শুটিংয়ের কাজ করা গেল না। এদিকে মেকআপ নেওয়া হয়ে গেছে, সেই সময়কার ক্যামেরা আর সাদা-কালো ছবির প্রয়োজন মতো মুখে লালের ভাব বেশি। সকলকে যেন লাল বাঁদর বাঁদর দেখাচ্ছিল, নিজেই বলেছিলেন আরতি। মেক-আপ করা অবস্থাতেই পালাতে হল শুটিং স্পট ছেড়ে। একটি গাড়ি করে মহানায়ক সহ সবাই পালিয়ে বাঁচলেন। থামলেন একটি গ্রামে। চায়ের দোকান দেখে সবাই মিলে চায়ের একটা আসর জমিয়ে ফেলা গেল। হঠাৎ এক বয়স্ক মানুষ তাঁদের কাছে এসে দাঁড়ালেন, সবাইকে ভালো করে দেখে নিয়ে  উত্তমকুমারকেই গ্রুপ লিডার বুঝে নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “উয়ারা কারা বটে? উয়াদের নাম কী বটে?…” রসিক মহানায়ক নাম বলে বলে পরিচয় করালেন সবার, “ইটা আরতি ভট্টাচার্য্য বটে, উটা রবি ঘোষ বটে…” এভাবে এক এক করে সবার নাম-পরিচয় জানা হল মানুষটির। এদিকে খবর এসে গেছে যে ভিড় কমে গেছে শ্যুটিং স্পটে, এবার গাড়িতে ফিরতে হবে কিন্তু গাড়ি থামাতে হল, কেননা সেই বয়স্ক মানুষটি গাড়ি থামাবার ইশারা করতে করতে ছুটে আসছেন। গাড়ি থামতেই লোকটি কাছে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে উত্তমকুমার-কে জিজ্ঞাসা করলেন  “তুমার নাম কী বটে ?” সকলের পরিচয় দিলেও উত্তমকুমার নিজের পরিচয় করাননি। শেষে উত্তমকুমার বললেন, “অভাগার নাম উত্তমকুমার চট্টোপাধ্যায় বটে!”
মাথা নেড়ে বিজ্ঞভাবে লোকটি বললেন, “তা হইলে তুমার নাম অভাগা বটে”

গাড়ির ভিতর তখন সবাই হাসি চাপতে ব্যস্ত! 

Arati Bhattacharya
আরতি ভট্টাচার্য

উত্তমকুমারের সঙ্গে ‘আনন্দমেলা’, ‘অসাধারণ’, ‘জাল সন্ন্যাসী’, ‘রাজবংশ’, ‘নিশান'(দ্বিভাষিক বাংলা/হিন্দি  ছবি) করেছিলেন। আরেক মজার কাণ্ড বলি। ‘আনন্দমেলা’ ছবিতে উত্তমকুমারের গালে মেক আপে একটা বড় আঁচিল করা হয়। কিন্তু শ্যুটিংয়ের ব্যস্ততায় উত্তমের গাল থেকে সে আঁচিল খসে পড়ে যায় অজান্তেই। খোঁজ খোঁজ! না আঁচিল আর পাওয়া যায় না। শেষমেশ আরতির মাথার উইগ থেকে চুল নিয়ে উত্তমের গালের আঁচিল ফের করা হল।

তপন সিনহার ‘হারমোনিয়াম’ ছবিতে ‘কাল খুশির তুফান উড়িয়ে আজ উদাস কেন’ আরতি মুখার্জি গাইলেন আরতি ভট্টাচার্যের লিপে। নাচনেওয়ালির চরিত্রে আরতির লাস্য আজও ভুলতে পারে না বাংলা ছবির দর্শক। সত্যজিৎ রায়ের ‘জন অরণ্য’ ছবিতেও অভিনয় করেন আরতি। তবে আশির দশকে সুচিত্রা সেনের মতোই আরতি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়কে। ‘ঘরে বাইরে’ ছবিতে বিমলার বিধবা বড় জা-য়ের চরিত্রে সত্যজিৎ কাস্ট করেছিলেন আরতিকে। সেসময়কার বিধবারা মাথার চুল ছোট করে ছেলেদের মতো কেটে রাখতেন। ওরকম চুল সত্যজিৎ আরতিকে সত্যি সত্যি কাটতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তখন আরতির হাতে অনেকগুলো অন্য পরিচালকদের ছবি। যার মধ্যে দুটো ছবিতে উত্তমকুমারের নায়িকা আরতি। আরতি বললেন “উইগ ব্যবহার করে কি চরিত্রটা করা সম্ভব?” সত্যজিৎ বললেন “না, আমি অরিজিনাল ছোট চুল চাই। আমার ছবির সাথে অন্য কারোর ছবি করা যাবে না।” 

আরতি ছেড়ে দেন ‘ঘরে-বাইরে’। কারণ বাকি পরিচালকদের চুক্তিভঙ্গ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। আরতির ছেড়ে দেওয়া চরিত্র করলেন গোপা আইচ।

সৌমিত্র’র সঙ্গে আরতির আরেকটি ছবি ‘জব চার্ণকের বিবি’। জব চার্ণকের কলকাতা আসার ওপর এমন ডকুমেন্টরি ছবি বাংলায় বিরল। কিন্তু সেটি ডাহা ফ্লপ করে। তবে আরতির লিপে গৌরি শ্রীমতীর গাওয়া দোলের গান ‘সাহাব যদি হত শ্যাম এমনই করেই রং মাখাতাম’ হিট হয়েছিল। এই গানেও ঘাঘরা পরে নেচে লাস্য দেখালেন আরতি।

‘শঙ্খবিষ’, আরতির সঙ্গে এই ছবিতে ছিলেন দীপঙ্কর দে আর বাংলাদেশের আনোয়ার, কিন্তু ফ্লপ। ‘জীবন যে রকম’, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস অবলম্বনে ছবি। বম্বে থেকে ওয়াহিদা রহমান কলকাতায় এসেছিলেন বাংলা ছবি করতে ১১ বছর পর। আবার এই ছবির শুটিং চলাকালীন অভিনেত্রী কেয়া চক্রবর্তী-র গঙ্গায় ডুবে মৃত্যুর ঘটনাও ছবিটিকে চর্চায় আনে। যাতে আরতিও ছিলেন। কিন্তু ছবি ১৯৭৯ সালের বহু পরে মুক্তি পেল এবং সুপার ফ্লপ হয়েছিল। 

আরতির সময় কি ফুরিয়ে আসছিল? আসলে বাংলা ছবির সতী নায়িকার চেহারা আরতির ছিল না। লম্বা চওড়া চেহারার নারী বলে আরতি যেন বারবার নেগেটিভ রোলে কাস্ট হচ্ছিলেন। যেমন ‘ময়না’ ছবিতে সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়ের সতী গ্রাম্য ইমেজের পাশে আরতি একদম আধুনিকা ‘আদার ওম্যান’। ‘আমার পৃথিবী’ ছবিতে আরতির ‘যৌবন জ্বালা করে মাতোয়ারা’। বারবার নায়িকার চরিত্র থেকে সরে গিয়ে টালিগঞ্জ পাড়ার ‘মন্দ মেয়ে’ হয়ে থেকে যেতে হচ্ছিল আরতি ভট্টাচার্যকে। 

Arati Bhattacharya in recent days

১৯৮০ সালে আরতি মুম্বই যান ‘কাল হামারা হ্যায়’ হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে। সেই ছবিতে আরতির সহ-অভিনেতা ছিলেন ভোজপুরি ছবির উত্তম কুমার, কুণাল সিং। কুণালকে দেখতে অনেকটা জিতেন্দ্রর মতো। আরতির প্রেমে পড়েন কুণাল। ১৯৮২ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন যুগলে। আরতি ভট্টাচার্য হলেন আরতি সিং। 

কুণাল আর ভোজপুরি যোগ আরতিকে বাংলা ছবি থেকে ক্রমশ সরিয়ে দিতে থাকে। অবশ্য বিয়ের পর পর আরতি-কুণাল মিলে একটি প্রযোজনা সংস্থা খুলে বাংলা ছবি ‘সুখের কাছে’ করবেন মনস্থ করেন। আরতিই নায়িকা। ছবির গানের রেকর্ড বেরিয়ে গেলেও ছবির শ্যুটিং আর এগোয় না। এরপর আর বাংলা ছবিতে ফেরা হয়নি আরতির।

তবে কুণাল সিং কিন্তু ঝরঝরে বাংলা বলতে পারেন। স্ত্রী-র কাছ থেকেই বাংলা রপ্ত করেছেন কুণাল। বাংলা ছবি না হলেও নিজেদের প্রযোজনাতে হিন্দি, ভোজপুরি সিনেমা বানান আরতি। অনেকেই জানেন না আরতি ভট্টাচার্য পরিচালনা করেন দুটি ছবি ‘মাশুকা’ (হিন্দি-১৯৮৭-মুনমুন সেন, অরুণ গোভিল, আমজাদ খান প্রমুখ) এবং দাগাবাজ বালমা (ভোজপুরি-১৯৮৮)। 

কুণালের ছবির জন্য চিত্রনাট্যও লিখেছেন একসময় আরতি। কুণাল সিং ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন, তখন পেছনে থেকে স্বামীর সবটা সামলাতেন আরতি। ঘর-সংসার নিয়েই মজে গেলেন সত্তর দশকের ক্যালকাটা ডিভা।

আড়ালেই চলে গেলেন আরতি। আরতির এক ছেলে আকাশ সিং, সেও বাবার পথে ভোজপুরী ছবির নামী হিরো। 

With Kunal Sing
সহ অভিনেতা স্বামী কুনাল সিংয়ের সঙ্গে

আরতির বাংলায় শেষ কাজ কী?

কলকাতা দূরদর্শনে ১৯৮৮ সালে সম্প্রচারিত ‘চিকিৎসা সংকট’ ধারাবাহিকে আরতি নায়িকা হন। পর্দায় আরতির শেষ কাজ বাংলায়। আরতির বিপরীতে ছিলেন সুভাষ বসু। সুভাষ বসুর মেয়ে টুম্পা রায়ের থেকে জানলাম, “পরশুরাম রাজশেখর বসুর গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘চিকিৎসা সংকট’। সপ্তাহে একদিন টেলিকাস্ট হত। নাট্যরূপ আমার বাবা সুভাষ বসুর আর পরিচালনা অমল সরকারের। তখন আমাদের বাড়িতেও এসেছেন আরতি দেবী বেশ কিছুবার।”

এই ধারাবাহিকে আরতি এক লেডি ডাক্তারের চরিত্র করেছিলেন। এই চরিত্র করতে গিয়ে বোধহয় আরতির ছোটবেলার ডাক্তার হবার ইচ্ছে পূরণ হয়েছিল। অনুপকুমার নির্দেশিত ‘দম্পতি’ মঞ্চ নাটকে আরতি অভিনয় করতে আমেরিকাও গিয়েছিলেন।

২০১৮ সালে চার দশকের আড়াল সরিয়ে আরতি ভট্টাচার্য জনসমক্ষে কলকাতায় এসেছিলেন। ২৪ জুলাই ছিল শিল্পী সংসদের উত্তম স্মরণ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সদনে আমি হাজির ছিলাম স্বচক্ষে আরতি ভট্টাচার্যকে দেখতে। আরতিকে মঞ্চে হাত ধরে বাড়ির বড় বউয়ের মতো নিয়ে এলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। আরতিকে বরণ করে নিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও শিল্পী সংসদ। আরতি আগের থেকে স্থূল হয়েছেন বটে কিন্তু আগের মতোই তিনি প্রাণচঞ্চল। বোঝা যায় আরতি সংসার জীবনে সুখী। মুম্বইয়ের বাসিন্দা হলেও গড়গড়িয়ে বাংলা বললেন। আরতিকে দেখতে মঞ্চের সামনে ছুটে গেল দর্শক থেকে চিত্রগ্রাহক। তাঁকে দেখতেই সেদিন রবীন্দ্র সদন হাউসফুল। আরতি একটা পাথর বসানো দামি হার নিয়ে এসেছিলেন যা তাঁকে মহানায়ক উপহার দিয়েছিলেন। কলকাতায় কোনও উত্তম কুমার সংরক্ষণশালা থাকলে আরতি সেই হার সেখানে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কলকাতায় সে সুযোগ না ঘটায় আরতি হার নিয়ে ফিরে যান।

Arati Bhattacharya in recent days

আরতি ভট্টাচার্য কি আর অভিনয়ে ফিরতে চান না? ভোজপুরি বউমা বাংলায় আর ফিরতে চান না?

আরতি ভট্টাচার্য বলেছিলেন “আমি অভিনেত্রী হিসেবে নায়িকা হিসেবে যে জায়গাটা আপনাদের মনে তৈরি করেছি সেটা আর নষ্ট করতে চাই না। তাই আরতি ভট্টাচার্যের কামব্যাক আর হবে না।” 

আরতি আর ছবি করবেন না, বাংলাতেও তিনি থাকেন না, তবু বাংলা ছবির দর্শকদের আরতি ভট্টাচার্যের মোহমায়া থেকে মুক্তি নেই। চির-প্রেয়সী আরতিকে ঘিরে কৌতূহল আজও নেভেনি, নিভবে না কোনও দিন। 

“এইখানে এসে বহুদিন পরে
এই শিলালিপি কেউ যদি পড়ে
সমবেদনার একটু অশ্রু, তার দুটি চোখ ঢাকো
সাক্ষী থাকুক ঝরা পাতা 
আকাশ বাতাস সাক্ষী থাকুক
সাক্ষী থাকুক বনলতা … ” 

ছবি সৌজন্য: লেখক

Subhadip Bandyopadhyay

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।

Picture of শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।
Picture of শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।

2 Responses

  1. খুব ভালো লাগলো শুভদীপ। তোমার লেখা সব সময়েই ভালো লাগে। নায়িকা আরতি ভট্টাচার্যের 🙏 অনেক কথা জানতে পারলাম তোমার লেখার মধ্য দিয়ে। আগামী দিনে আবার ওনার অভিনয় দেখতে পারলে খুব খুশী হতাম। উনি ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এই কামনা করি 🙏

  2. খুব ভালো লাগলো অভিনেত্রী ও নায়িকা আরতি ভট্টাচার্য্যর বিষয়ে পড়ে ও জেনে।উত্তম কুমারের শেষের দিকের ও উত্তমবিহীন বাঙলা সিনেমায় আরতি ভট্টাচার্য্য একজন পরিচিত মুখ ছিলেন‌।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com