(Sholay)
আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে বাড়ির সাদা-কালো অনিডা টিভিতে কিছু দৃশ্য দেখে খুব উত্তেজিত হই। কয়লার ইঞ্জিন টানা ট্রেনের দৃশ্য, চারিদিকে ঘোড়ায় চড়া ডাকাত, হাতে দোনলা বন্দুক, ট্রেন থেকে গুলি ছুঁড়ছে আমার প্রিয় নায়ক, অমিতাভ বচ্চন! তখনও জানা ছিল না, এটা কোন সিনেমার দৃশ্য। বাবা বললেন– ‘শোলে’। শোলে শব্দের অর্থ কী, তাও জানা ছিল না। আমি জ্ঞান হওয়ার পর থেকে হিন্দি অ্যাকশন ফিল্মের পোকা। কাজেই এই সিনেমা, আমাকে দেখতেই হবে। এইধরনের অ্যাকশন আমি আগে কখনও দেখিনি। তখন আমার বয়স সিঙ্গেল ডিজিটে! (Sholay)
আরও পড়ুন: সংলাপই ‘শোলে’র শক্তি, শান
১৯৯৬ সালের ২৬ শে জানুয়ারি দূরদর্শনে প্রথমবার শোলে দেখানো হল। অপেক্ষার অবসান হল। আমি তখন ক্লাস ফোরে। দুপুরবেলায় দেখেছিলাম সাদাকালো টিভিতে। সেই আমাকেই শোলের ৫০ বছর উপলক্ষে একটি লেখা দিতে বলেছে বাংলালাইভ ডট কম। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি! সবচেয়ে বড় কথা, এটা আমার লেখার কথাই নয়। হয়তো অন্য কেউ লিখতেন।(Sholay)
যিনি আমাকে এই লেখা চাইতে ফোন করেছিলেন তাঁকে আমার কথা বলেছিলেন সুকল্পদা। তিনি জানতেন, আমার সঙ্গে অমিতাভ বচ্চনের একবার সামনাসামনি দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে! সে অবশ্য অন্য প্রসঙ্গ। (Sholay)

শোলে ছবি নিয়ে অনেক কিছুই লেখা যায়। শোলের ব্যাপ্তি বিশাল। এই লেখায় তাই শোলের কিছু পার্শ্বচরিত্রদের নিয়ে কথা বলতে চলেছি। কেন বলছি? আমার মনে হয় শোলে ভারতবর্ষের সিনেমার ইতিহাসে এমন একটি ছবি যার মূল চরিত্রগুলো ছাড়াও তার পার্শ্বচরিত্রগুলিকে মানুষ মনে রেখেছে। সিনেমা হিট করলে লোকজনের মনে চরিত্র ছাড়াও কিছু পার্শ্বচরিত্র থেকে যায়। বেশিরভাগ সময় কমিক রিলিফের জন্যই এদের ডাক পড়ে। কিন্তু, শোলেতে শুধুমাত্র দর্শকদের কমিক রিলিফ দেওয়ার জন্য এইসব পার্শ্বচরিত্রদের আগমন ঘটেনি। তাঁরা প্রত্যেকে হয়ে উঠেছেন স্ক্রিপ্টের অবিচ্ছেদ্য অংশ। (Sholay)
“শোলে একবারই হয়। শোলের ফর্মুলা সেলিম-জাভেদ বা রমেশ সিপ্পিরও জানা নেই! জানলে ওঁরা নিশ্চয় আরও কয়েকটি শোলে বানাতেন!”
ডাকাত দলের থিমের উপর আগেও ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’ এর মতন একাধিক ছবি তৈরি হয়েছে। সহজভাবে ভাবলে, একটি সাংঘাতিক ডাকাতকে ধরার গল্প। আবার জয়-বিরুর গল্পে, ‘দো আঁখে বারাহ হাথ’ ছবির ছোঁয়া মেলে। শোলে ছবির ভেতরে অনেক জায়গায় লুকিয়ে আছে নানান জায়গা থেকে পাওয়া ‘অনুপ্রেরণা’। যেভাবে ছবিটি তৈরি করা হয়েছিল সেইসময়ের সাপেক্ষে বৈপ্লবিক বললেও কম বলা হয়। পঞ্চাশ বছর পরেও তা বৈপ্লবিক! (Sholay)
শোলের ঘরানায় পরবর্তীকালে একাধিক ছবি তৈরি হয়েছিল। তাঁরা কোনও দিক থেকেই শোলের ধারেকাছে আসতে পারেনি। শোলে ছবিতে অত্যন্ত যত্ন নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল পার্শ্বচরিত্রদের। এদের সকলের যে প্রচুর সংলাপ ছিল, অথবা প্রচুর স্ক্রিন টাইম, এমনটা একেবারেই নয়। কিন্তু, অনেকেই তৈরি করেছিল অদ্ভুত ইমপ্যাক্ট। সাম্প্রতিক ছবির মধ্যে আমার ‘গ্যাংগস অফ ওয়াশেপুর– প্রথম ও দ্বিতীয়’ ছবি দু’টির কথা মনে পড়ছে যেখানে চরিত্র ছাড়াও পার্শ্বচরিত্রদের দর্শক মনে রাখবে অনেকদিন। আমার মনে হয় এই কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, যে শোলে থেকে একটিও পার্শ্বচরিত্র বাদ দিলে ছবিটি তার সৌন্দর্য হারাবে। সবচেয়ে বড় কথা হল টাইমিং। কখন, কোন চরিত্র আসছে, কোন সংলাপ বলছে, কীভাবে বলছে। এই সঠিক সময়ে সঠিক চরিত্রের আগমন দর্শকের মনে সিনেমাটি সম্পর্কে গভীর ছাপ ফেলে। (Sholay)

তবে এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, শোলে একবারই হয়। শোলের ফর্মুলা সেলিম-জাভেদ বা রমেশ সিপ্পিরও জানা নেই! জানলে ওঁরা নিশ্চয় আরও কয়েকটি শোলে বানাতেন! (Sholay)
সিনেমার শুরুর দিকে ওই সাংঘাতিক ট্রেনের অ্যাকশন দৃশ্য দেখে দর্শক খানিক ব্যোমকে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। তারপর পর্দায় হাজির হয় ইংরেজ জমানার জেলার বলে নিজেকে দাবী করা এক জেলার (আসরানি)। এই চরিত্রটি চার্লি চ্যাপলিনের বিখ্যাত ছবি ‘দ্য গ্রেট ডিকটেটর’ থেকে অনুপ্রাণিত। জেলার, চেহারার দিক থেকে কোনওভাবেই দুঁদে, জাঁদরেল নন। তাই কয়েদীরা যাতে তাঁকে ভয় পায় সেইজন্য তিনি গালবাদ্যের সাহায্যে নিজের হিটলার ইমেজ তৈরির চেষ্টায় সবসময় সক্রিয়। কারণ, তিনি এতটাই গর্দভ যে তাঁর সেপাইদের আদ্ধেককে ডানদিকে আর বাকি অর্ধেককে বামদিকে যেতে বলে বাকিদের নিজের পিছু পিছু আসতে বলেন! এমনকি তিনি জেলে যে ইনফরমারকে নিয়োগ করেছেন সেও আদতে একটি চালাকির রাংতামোড়া হাঁদারাম। (Sholay)
“রিলিজের সময়ে শোলের রানটাইম ছিল তিন ঘণ্টা চব্বিশ মিনিট। সেসময় এমারজেন্সি চলছে। শোলে রিলিজের পরপরই কেউ কেউ তাঁকে ‘ফ্লপ’ ঘোষণা করেছিল।”
এই হাঁদারাম থুড়ি হরিরাম (কেষ্ট মুখার্জী) জেলে নাপিতের কাজ করতে করতে নানান খুফিয়া খবর জোগাড় করে জেলারকে চালান করে। কেষ্ট মুখার্জী সিনেমার জগতে মাতালের চরিত্রের জন্য বিখ্যাত হলেও শোলে ছবিতে তিনি মদ্যপানের সুযোগ পাননি। এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য, যে জেলের নানান কয়েদির মধ্যে একজন কয়েদিকে (রাজ কিশোর) আমরা দেখতে পাই যাকে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বলে মনে হয়। এখানে অন্য কাউকে আনাই যেত। কিন্তু, এটা শোলে! ভুলে গেলে চলবে না। (Sholay)
কমেডির কথাই যখন হচ্ছে তখন সেই কথার খেই ধরে পৌঁছে যাচ্ছি আর একটি মজাদার চরিত্র সুরমা ভূপালির (জগদীপ) কাছে। শোনা যায় ভূপালের কোনও এক রক্তমাংসের লোকের আদলে এই চরিত্র সৃষ্টি করেছিলেন সেলিম-জাভেদ। এই চরিত্রের সঙ্গে বাঙালিদের মধ্যে পপুলার নানান গুল্পোবাজ দাদার মিল পাওয়া যায়। জগদীপ এই চরিত্রে অভিনয়কে অন্য লেভেলে নিয়ে গিয়েছিলেন। সুরমা ভূপালিকে এতটাই জীবন্ত করে তুলেছিলেন যে একে বাদ দিয়ে শোলে অকল্পনীয়। অদ্ভুতভাবে জগদীপের মতন অভিনেতার আর কোনও চরিত্র কি কেউ মনে রেখেছে! (Sholay)
আর একটা কথা বলতে ভুলে যাচ্ছি। রিলিজের সময়ে শোলের রানটাইম ছিল তিন ঘণ্টা চব্বিশ মিনিট। সেসময় এমারজেন্সি চলছে। শোলে রিলিজের পরপরই কেউ কেউ তাঁকে ‘ফ্লপ’ ঘোষণা করেছিল। এদিকে সকাল সাড়ে আটটায় শো শুরু হলেও মাঝেরাতের মধ্যে লাস্ট শো শেষ হচ্ছে না। তাই, পাঞ্জাবে মুক্তির আগে রমেশ সিপ্পিকে অনুরোধ করে, জেলর, সুরমা ভূপালির মতন কমিক রিলিফের সিনগুলো কেটে দিয়ে সিনেমার রানটাইম কিছুটা কমানো হয়। এদিকে এইসব ‘কাট’যুক্ত শোলে দেখে দর্শক হইচই শুরু করে! তাই আবার ফিরে আসেন জেলর, সুরমা ভূপালিরা। পরে সুরমা ভূপালি নামে জগদীপ অভিনীত একটি হিন্দি ছবি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৮ সালে। সেখানে অমিতাভ বচ্চন এবং ধর্মেন্দ্র দুজনেই অভিনয় করেছিলেন। (Sholay)
আরও পড়ুন: আসলেই শোলে: ঘটনার ঘনঘটা
আসা যাক আরেক চরিত্রের কথায়, বসন্তীর মউসি (লীলা মিশ্রা) শোলে ছবিতে এক কাল্ট স্ট্যাটাস অর্জন করেছেন তিনি। বিরুর সঙ্গে বসন্তীর বিয়ের কথা বলতে গিয়ে জয় আর মউসির সংলাপের আদান-প্রদান আজও বিখ্যাত। সুরমা ভূপালির মতোই মউসি চরিত্রে লীলা মিশ্রার অভিনয় তাঁকে রূপোলি পর্দার চরিত্র নয়, বরং পাশের বাড়ির মাসিমা বানিয়ে ফেলেছিল দর্শকদের মনে। পান চিবিয়ে ঠোঁট লাল করা লীলা মিশ্রার সংলাপ বলার ইউনিক ভঙ্গিমা তাঁকে রামগড়ের নয় বরং ভারতীয় সংস্কৃতির ‘মউসি’ চ্যাপ্টারের শ্রেষ্ঠতম প্রেজেনটেশনে পরিণত করেছে। (Sholay)
অনেক কমিক টাইমিং হল। এবার দু-চারটে সিরিয়াস কথা বলা যাক। রামলাল চরিত্রটি নীরবে বিচরণ করেছিল ঠাকুরসাহেবের আশেপাশে। সত্যেন কাপ্পু অভিনীত এই চরিত্রে এক অদ্ভুত নীরবতা ছিল। রামলাল অনেক কিছু দেখেছে। ঠাকুর সাহেবের সুন্দর সাজানো সংসার, সেখান থেকে গব্বরের হাতে প্রায় গোটা পরিবারের হত্যা। থেকে গেছে শুধু বিধবা পুত্রবধূ, আর দু-হাত হারানো প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে থাকা ঠাকুর সাহেব। রামলাল সবকিছুর নীরব সাক্ষী। এই মেলানকলি মাখা নীরবতা পর্দায় অসামান্য দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন সত্যেন কাপ্পু। একইরকম নীরবতা আমরা দেখতে পাই রাধার (জয়া ভাদুড়ি) চরিত্রেও। (Sholay)

আহমেদ (শচিন পিলগাওকর) চরিত্রটি একদম সাদামাটা গ্রাম্য যুবকের। আহমেদ সুরমা ভূপালির মতন পাওয়ারফুল ইম্প্যাক্ট তৈরি করতে না পারলেও তাঁর মৃত্যু ছবির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া মুহূর্ত রচনা করে। বরং আহমেদের বাবা রহিম চাচা (এ কে হাঙ্গাল) অনেক বেশি ইম্প্যাক্ট তৈরি করতে পেরেছেন। কোথাও যেন মনে হয়, সেলিম-জাভেদ শোলের স্ক্রিপ্টে বিধবা বিবাহ, ধর্মীয় ঐক্য ইত্যাদি সামাজিক বার্তাগুলি দিতে চেয়েছিলেন। (Sholay)
“‘ইতনা সান্নাটা কিউ হে ভাই’– এই সংলাপ ছিল রহিম চাচার! তিনি তখনও জানতেন না, এই নিস্তব্ধতা- ‘মৃত্যুর নিস্তব্ধতা’।”
‘ইতনা সান্নাটা কিউ হে ভাই’– এই সংলাপ ছিল রহিম চাচার! তিনি তখনও জানতেন না, এই নিস্তব্ধতা- ‘মৃত্যুর নিস্তব্ধতা’। তখনও জানতেন না আর কয়েক পা এগোলেই তাঁর এই দৃষ্টিহীন অস্তিত্ব আবিষ্কার করবে তাঁর প্রিয় পুত্র আহমেদের ঠাণ্ডা মৃতদেহ! কিন্তু, তারপরও সেই ইমাম সাহেব অদ্ভুত শান্ত! আবার এক নিস্তব্ধতা! তারপর শোনা যায় আজান। ক্যামেরা তাক করে গ্রামের মসজিদের দিকে। (Sholay)
ইমাম সাহেব নামাজ পড়তে চলে যাবেন ধীরপায়ে। তাঁর সমস্ত যন্ত্রণা তিনি সমর্পণ করবেন খোদার কাছে। এ কে হাঙ্গাল এখানে কালজয়ী অভিনয় করে গেছেন। সংযত আবেগ পর্দায় ফুটিয়ে তোলা খুব সহজ কাজ নয়। (Sholay)
আমরা এবার একটু অন্য কথায় আসি। ‘মেহেবুবা’ গানে হেলেন অসামান্য নৃত্য পরিবেশন করলেও সেখানে জালাল আগাকে ভুলে গেলে চলবে না। আবার ‘সামহা’ (ম্যাক মোহন) গোটা ছবিতে একবার মাত্র সংলাপ বলার সুযোগ পেয়েছিল। অথচ এই সামহাকে কোনও দর্শক ভুলতে পারেনি আজও! গব্বরের সংলাপ সামহাকে অ্যাকটিভ করে রেখেছিল। কালিয়াকে (বিজু খোটে) বাকি দুই ডাকাতের সঙ্গে রাশিয়ান রুলেটের আদলে তৈরি দৃশ্যে দেখা গিয়েছিল। সর্দারের নমক খেয়েও মুক্তি মেলেনি, সর্দার তাঁকে গুলিও খাইয়েছিল। (Sholay)
“অপেক্ষায় আছি বড়পর্দায় শোলে দেখার! কিন্তু, এ কথা ভেবে হতাশ লাগে, যে মুক্তি পাবে হয়তো কোনও মাল্টিপ্লেক্সে। একসময় শোলের শো চলার সময় সিনেমা হল সিটিতে, হাততালিতে ফেটে পড়ত। কিন্তু, মাল্টিপ্লেক্সে কেউ সিটি মারে না, হাততালি দেয় না।”
কারণ, জো ডর গয়া, সমঝো মর গয়া! এই কালিয়াকে অতি সামান্য সময়ে পর্দায় দেখা গেলেও, দর্শক তাঁকে মনে রেখেছে। গব্বরের সংলাপে সেও যেন জীবন্ত! আর একটি চরিত্রের উল্লেখ করা যাক, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সেই অভিনেতার নাম জানা নেই। শোলে ছবিতে তাঁর নাম হয়েছিল শংকর, এক নিরীহ গ্রামবাসী। বিরুর মুখে ‘সুইসাইড’ আর ‘গুডবাই’ শব্দদুটো তাঁর কাছে বিস্ময়ের উদ্রেক করেছিল। এগুলো কী, তাঁর জানা ছিল না। পাশে দাঁড়ানো গ্রামবাসী জানায়, সাহেবরা যখন মরে তখন তাঁকে সুইসাইড বলে। (Sholay)

শংকর তারপর জানতে চায়, সাহেবরা কেন মরে? একইভাবে পাশে দাঁড়ানো গ্রামবাসী মারফৎ ‘গুডবাই’ এর অর্থ হিসাবে সে জানতে পারে যে সাহেবরা যখন কোথাও যায় সেটাকে গুডবাই বলে। এখানেও শংকরের অদ্ভুত প্রশ্ন, সাহেবরা কোথায় যায়! কেন জানি না, আমার এই নিরীহ গ্রামবাসীকে দার্শনিক মনে হয়। তাঁর দু’টো সহজ সরল প্রশ্নে কমিক রিলিফের সঙ্গে অদ্ভুত এক দার্শনিকতার ফ্লেভার আছে। এই ছবিতে আরও অন্যান্য পার্শ্ব চরিত্র থাকলেও তাঁদের মধ্যে আমি তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু দেখিনি। তাই ইফতেকর, ওম শিভপুরী এঁদের অভিনীত চরিত্রগুলির কথা বলছি না। (Sholay)
সবশেষে যে পার্শ্ব চরিত্র নিয়ে আলোচনা, সে কিন্তু মানুষ নয়। ঠিকই ধরেছেন। আমি এক মেয়ে ঘোড়া ‘ধননো’র কথা বলছি। ‘ধননো’ কিন্তু ভীষণভাবে সিনেমায় উপস্থিত। বসন্তীর জন্য তাঁর প্রাণপণ দৌড় কেউ ভোলেনি। (Sholay)
আরও পড়ুন: আসলেই শোলে: ‘শোলে’-র গান: গানকথার সংলাপ
শোলের ৫০ বছর পূর্তিতে অরিজিন্যাল এনডিংসহ তাঁর রেসটোর্ড ভার্শনটি মুক্তি পেয়েছে ইতালিতে। আমি কলকাতার জ্যোতি সিনেমাহলে শোলে দেখিনি। দেখতেও পাব না কোনওদিন। কিন্তু, শোলের ৫০ বছর পূর্তির সাক্ষী আমি। শোলের রেসটোর্ড ভার্শনটি নিশ্চয় আমাদের দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। অপেক্ষায় আছি বড়পর্দায় শোলে দেখার! কিন্তু, এ কথা ভেবে হতাশ লাগে, যে মুক্তি পাবে হয়তো কোনও মাল্টিপ্লেক্সে। একসময় শোলের শো চলার সময় সিনেমা হল সিটিতে, হাততালিতে ফেটে পড়ত। কিন্তু, মাল্টিপ্লেক্সে কেউ সিটি মারে না, হাততালি দেয় না। পটপট করে মহার্ঘ পপকর্ণ কামড়ানোর শব্দ আর নাচোজের সঙ্গে দেওয়া গ্যাদগ্যাদে মেওনিজের ঝাঁঝাল গন্ধ নাকে আসে। সেখানে শোলে দেখে কি সেই মজা পাব! হয়তো পাব না। কিন্তু, দেখতে যাব। অপেক্ষায় আছি! (Sholay)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ছবি সৌজন্য – আন্তর্জাল
সুমন সরকারের জন্ম ১৯৮৭ সালে চন্দননগরে। ছোটবেলায় বাংলা পড়তে খুব একটা ভালো না লাগলেও বড় বয়সে সেই বাংলা ভাষায় লেখালিখি শুরু। পড়াশুনা স্ট্যাটিসটিক্স নিয়ে, পেশা অধ্যাপনা। শখ লেখালিখি, গিটার বাজানো, আড্ডা দেওয়া। প্রকাশিত বই "ফাজিলের স্মৃতিকথা", "কেস খাওয়ার কিসসা" ইত্যাদি।