একদিকে আলিপুর আর অন্যদিকে নব্য আলিপুর, এ দু’য়ের মাঝে এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল, যেখানে ইতিহাস গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে আধুনিকতার পাতলা পর্দার আড়ালে। এক একটা করে উৎসব আসে, আর ইতিহাসের গন্ধ ধূপধুনোর গন্ধের সঙ্গে মিশে চেতলা পাড়ার আনাচ কানাচে ছড়িয়ে পড়ে। আদিগঙ্গার পূতিগন্ধময় জলে ভেসে বেড়ায় চাঁদ সদাগরের সপ্তডিঙার শব আর মোচার খোলা। তার পাশেই সক্কাল সক্কাল মাছ তরকারি নিয়ে বসে পড়ে বাজারপার্টি। আসলে এই খালধারের বাস্তুহারা বাজার তো আজকের নয়। চেতলার হাট-বাজার কোনওকিছুই নতুন নয়। অতীতে এই গাংপথেই বারুইপুর-জয়নগর-মজিলপুর হয়ে সাগরদ্বীপের কাছে গঙ্গার মূল ধারা বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ত। এ পথেই কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যের নায়ক ধনপতি সদাগর বাণিজ্যতরী নিয়ে গিয়েছিলেন সিংহলে। এ পথেই বিপ্রদাস পিপলাইয়ের ‘মনসামঙ্গল’-এর নায়ক চাঁদ সদাগর সমুদ্রযাত্রা করেছিলেন। একসময় বঙ্গের বড়ো বড়ো বণিকরা আদিগঙ্গার পথেই সমুদ্রযাত্রা করতেন। তাঁরা কালীঘাটে নিজেদের নৌকো ভিড়িয়ে মা কালীর মন্দিরে পুজো দিতেন। কালীঘাট তখন শুধু তীর্থক্ষেত্রই ছিল না, বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবেও সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আদিগঙ্গা মজে না গেলে সুতানুটি-কলকাতার পরিবর্তে কালীঘাট হত বড়ো বন্দর, আর চেতলার হাট হতো বড়ো বাণিজ্যকেন্দ্র।
এহেন চেতলা-কালীঘাট-কেওড়াতলার ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছিলাম কালীপুজোর আগ দিয়ে। উদ্দেশ্য কিছুই নয়, ইতিহাসের গপ্পের খোঁজ। পেলাম কিছুটা গৌতম ভদ্রের লেখায়, কিছুটা সঞ্জয়দা, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের ‘বুনো স্ট্রবেরি’-তে অন্যরকমভাবে। আর পেলাম সুপ্রিয়দা, সুপ্রিয় চৌধুরীর ‘শোণিতমন্ত্র’ উপন্যাসে। গৌতমবাবু লিখছেন— ‘কলকাতার প্রাতিষ্ঠানিক ইতিহাসে কালীঘাট ও কেওড়াতলা নামে এলাকা দু’টির মাহাত্ম্য আছে। বরাবর প্রশ্ন ওঠে, কালীঘাট না কলকাতা, কোনটার মধ্যে কোনটা? উত্তর নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে চুলোচুলি চলে, নিষ্পত্তি হওয়া দুষ্কর। ঐতিহ্যের অবয়ব ওই সব বিবৃতিতে তৈরি হয়, শাঁসে জলে ভরপুর হয়ে বিবৃতিগুলি পুনর্মুদ্রিত হয়। কালীঘাট-কেওড়াতলার ঐতিহ্য নিয়ে রচনাগুলির মধ্যে চটজলদি কয়েকটা নামও মনে আসে। যেমন, সূর্য্যকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ‘কালীক্ষেত্র দীপিকা’ ও উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের ‘কালীঘাট ইতিবৃত্ত’ আর অধুনালুপ্ত ‘কৌশিকী’ পত্রিকায় প্রকাশিত কেওড়াতলা শ্মশান নিয়ে ইন্দ্রজিৎ চৌধুরীর তথ্যসমৃদ্ধ নিবন্ধ। এই সবই পাথুরে ফলক ও দলিল নির্ভর নিশ্ছিদ্র প্রামাণিক ইতিহাস।’
আর সঞ্জয়দা লিখছেন এক পাড়ার কথা, যে পাড়া হ্যাপেনিং নয়, ইতিহাস বাইরে দিকে পেছন ফিরে লুকিয়ে আছে। তাঁর শব্দে, ‘কালীঘাটের ইতিহাস লেখা যায় না। বনেদি পরিবার নেই, সে রকম কোনও ‘হ্যাপেনিং’ ১৯৫০ বা ’৬০-এ পাড়ায় ঘটেনি। কালীঘাটে টেরাকোটা নেই, গম্ভীরা নেই, স্ট্যাচু নেই। আমাদের কালীঘাট অনেকটা পেঁয়াজের মতো। যতই খোসা ছাড়াও, খোসার আড়ালে খোসা, তার পরেও খোসা, শাঁসটুকু আর খুঁজে পাওয়া যায় না।’ একেবারে খাওয়ার পরে রাঁধা, আর রাঁধার পরে খাওয়া, এই তো পাড়াপড়শির জীবন। মাসিক ও সাপ্তাহিক দৈনন্দিনতার খতিয়ান, ‘এ পাড়ায় শীতের শেষে লোকে বড়ির ঝোল খায়। লেপতোষক রোদে দেয়, লুঙ্গি পরে ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের গান শোনে।’ বা ‘আকাশবাণীতে অনুরোধের আসর মানেই রবিবারের দুপুর শেষ হয়ে এল— চা বসাই, কয়লার উনুন; ছাইয়ের গাদায় ঘুমিয়ে আছে বেড়ালছানা।’

সুপ্রিয়দার আঙ্গিক অবশ্য আলাদা। আলাদা সে সময়কালও। তখন আদি গঙ্গার উপর কাঠের সাঁকো বাঁধা হয়নি। চৌরঙ্গির জঙ্গলে তখন তন্ত্রসাধনা করেন জঙ্গলগিরি ভৈরব। সুপ্রিয়দা ইতিহাসের সঙ্গে কল্পনার মিশেল দেন অনায়াসে— ‘তাঁকে নিয়ে জনশ্রুতি, গুঞ্জন আর রহস্যেরও শেষ নেই গা-লাগোয়া তিনটে গ্রাম সুতোনুটি, গোবিন্দপুর আর ডিহি কলকেতার বাসিন্দাদের মধ্যে। নাকি একদিন জঙ্গলের পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন সাধুবাবা। হঠাৎই চোখে পড়ল বিশাল এক আদিম বটগাছ। গাছের তলায় দাঁড়ানো এক হৃষ্টপুষ্ট দুগ্ধবতী গাভী। বাঁট থেকে অঝোরে দুধ ঝরে পড়ছে মাটিতে। অবাক হলেন জঙ্গলগিরি। ভরা বাঘের জঙ্গলে এরকম একটা দুগ্ধবতী গাভী এল কি করে? জঙ্গলে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তো ওর বাঘের পেটে চলে যাওয়ার কথা। অথচ এর দু’চোখে ভয়ের চিহ্নমাত্র নেই। নিশ্চিন্তে দাঁড়িয়ে দুধ দিচ্ছে মাটিতে। এরকম চলল বেশ কিছুক্ষণ। একসময় ‘হাম্বা’ গলা তুলে ডাক দিল গাভীটি। তারপর ধীর পায়ে দুলকিচালে হেঁটে মিলিয়ে গেল জঙ্গলে।
সামনে এগিয়ে গেলেন সাধুবাবা। দুধে ভিজে সাদা হয়ে রয়েছে জায়গাটা। নরম হয়ে গেছে মাটি। হাতের চিমটে দিয়ে একটুখানি খুঁড়তেই শক্ত একটা কিছু ঠেকল হাতে। দু’হাতে চারপাশের মাটি সরাতেই একটা বিশাল চওড়া চ্যাটালো পাথর। ঘোর কৃষ্ণবর্ণ। লোকে বলে, সেই মুহূর্তে নাকি প্রচণ্ড এক ঝড় উঠেছিল জঙ্গলে। অন্তরীক্ষ থেকে অশরীরী বামাকণ্ঠে আদেশ উচ্চারিত হয়েছিল-“আমি মাটির তলায় চাপা পড়ে রয়েছি বহুকাল। আমাকে তুই কালীঘাটের থানে পৌঁছে দিয়ে আয়।” শিহরিত হয়েছিলেন জঙ্গলগিরি। আদিগঙ্গার ধারে চেতলার গভীর জঙ্গলে বলা ঠ্যাঙাড়ের দলবলের আড্ডা। নিজে গিয়ে ডেকে এনেছিলেন তাদের। রণপায় চড়ে পাবড়া-সড়কি নিয়ে এসেছিল ঠ্যাঙাড়েরা। মাটি খুঁড়ে পাথর তুলে কাঁধে করে সতীর থানে নিয়ে গেছিল। সেই পাথর দিয়েই নাকি তৈরি হয়েছিল কালী কলকাত্তেওয়ালী, দেবী কালিকার মুখ। এমনটাই বিশ্বাস করে সুতোনুটি, গোবিন্দপুর, কলকেতা- এই তিন গাঁয়ের দেবদ্বিজে ভক্তি-বিশ্বাস রাখা অসংখ্য মানুষজন।’
কলকাতার প্রাতিষ্ঠানিক ইতিহাসে কালীঘাট ও কেওড়াতলার নামে এলাকা দু’টির মাহাত্ম্য আছে। বরাবর প্রশ্ন ওঠে, কালীঘাট না কলকাতা, কোনটার মধ্যে কোনটা? উত্তর নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে চুলোচুলি চলে, নিষ্পত্তি হওয়া দুষ্কর। ঐতিহ্যের অবয়ব ওই সব বিবৃতিতে তৈরি হয়, শাঁসে জলে ভরপুর হয়ে বিবৃতিগুলি পুনর্মুদ্রিত হয়। কালীঘাট-কেওড়াতলার ঐতিহ্য নিয়ে রচনাগুলির মধ্যে চটজলদি কয়েকটা নামও মনে আসে। যেমন, সূর্য্যকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ‘কালীক্ষেত্র দীপিকা’ ও উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের ‘কালীঘাট ইতিবৃত্ত’ এই সবই পাথুরে ফলক ও দলিল নির্ভর নিশ্ছিদ্র প্রামাণিক ইতিহাস।
তা সেই দেবদ্বিজে ভক্তি রাখা মানবসন্তানেরা এখনও রমরম করে চেতলার কালীপুজোর ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন দেখে বড্ড ভালো লাগে। বারোয়ারি পুজোই সই, বহু বছরের চিরায়ত সংস্কার আর ইতিহাস জড়ানো থাকে এখানে। চেতলার কালীপুজো বারাসতের কালীপুজোর মতো ধুমধাড়াক্কা কিনা জানি না, তবে অনেকবছর এই এলাকায় থাকার সুবাদে এখানকার কালিকার রূপবৈচিত্র্য দেখবার অঢেল সুযোগ হয়েছে। আজকাল খবরের কাগজেও এসবের খুব কদর। চেতলার হাজার হাত কালী, কৃষ্ণকালী, শিবকালী, তারাপীঠের মা, ভবতারিণী, দুর্গাকালী, ডাকাতে কালী, ছিন্নমস্তা, জীবন্ত কালী এসবের উল্লেখ দেখি প্রায়ই সংবাদপত্রে। এসব ফি বছরই একবার করে দেখি। তবে এবার যাঁকে দেখলুম, তাঁকে ‘দেখে দেখে আঁখি না ফেরে।’
ছোট্ট একটেরে মণ্ডপ। সামনে চৌকি পাতা। তাতে বসে মাথা পর্যন্ত কারণবারি সেবন করে গন্ধ ছড়াতে ছড়াতে মায়ের জনৈক সেবক আমাদের গল্প শোনাচ্ছিলেন। দেখলাম, কারণসুধার প্রভাবে ইতিহাস যেন জীবন্ত হয়ে উঠছে। একনাগাড়ে বলে চললেন এক সর্পমস্তা দেবী কালিকার ইতিবৃত্ত, যার মূলে রয়েছে বীরভূমে মহারাজা নন্দকুমারের স্থাপিত মন্দির। মহারাজা নন্দকুমার কে? সকলেই জানেন, ব্রিটিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় কলকাতা শহরের প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁকে ফাঁসিতে লটকানো হয়েছিল। কিন্তু আর কী জানেন? কারণবাবু জানালেন, আঠেরো শতকে বীরভূমের নলহাটি থানার ভদ্রপুর গ্রামে নন্দকুমারের জন্ম হয়েছিল। প্রথম জীবনে নবাব মিরজাফরের দেওয়ান ছিলেন নন্দকুমার। পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ওয়ারেন হেস্টিংসের কাছ থেকে নিয়ে বর্ধমান, হুগলি, নদিয়া জেলার দেওয়ানি দেয় মহারাজকে। প্রভাব প্রতিপত্তি তুমুল বাড়তে থাকে নন্দকুমারের। আর স্বাভাবিকভাবেই তা হয়ে ওঠে ওয়ারেন হেস্টিংসের চক্ষুশূল। এরপর দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে কীভাবে নন্দকুমারকে একরকমভাবে ‘ফাঁসিয়ে’ দেন হেস্টিংস, সে গল্প মোটের ওপর অনেকেরই জানা।

যা জানা নয় তা হল, নন্দকুমারের প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দিরের কথা। ভদ্রপুরের কাছেই ব্রাহ্মণী নদীর তীরে আকালি গ্রামে ১৭৭৫ নাগাদ কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নন্দকুমার। ‘গুহ্যকালী’ নামে পরিচিত এই কালীমন্দির আজও রয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে মহারাজা নন্দকুমারের তালাবন্ধ সিন্দুকের উপর পঞ্চমুন্ডির আসনে সর্পের বেদিতে দেবী পা মুড়ে বসে থাকেন। কিন্তু কোথা থেকে নন্দকুমার পেয়েছিলেন এই কষ্টিপাথরের কালীমূর্তি? তারও রয়েছে এক গল্প। কথিত আছে, এই সর্পমুকুট, সর্পকুণ্ডল, সর্পাধারী দেবীকে পুজো করতে মগধরাজ জরাসন্ধ। মাটির অনেক নীচে, প্রায় পাতালে স্থাপনা করেছিলেন কালীমূর্তি। সেই থেকে এ কালী গুহ্য (গোপন)। কিন্তু জরাসন্ধের মৃত্যুর পর বিগ্রহের আর খোঁজ ছিল না। এর বেশ কিছুদিন পরের ঘটনা। রানি অহল্যাবাঈ স্বপ্নে একটি শিবলিঙ্গের সন্ধান পান। সেই শিবলিঙ্গ খুঁজতে খুঁজতে আচমকাই এই গুহ্যকালী মূর্তি পান। অহল্যাবাঈ সেই দেবীমূর্তি কাশীরাজ চৈত সিংকে দান করেন।
চৈত সিং সে মূর্তির পূজার্চনা শুরু করেন। এদিকে ওয়ারেন হেস্টিংস সাহেব জানতে পারেন গুহ্যকালীর মূর্তির কথা। তাঁর কারুকার্যমন্ডিত অপরূপ সুষমা দেখে সাহেব লোভে পড়ে যান। ঠিক করেন, দেবীমূর্তিটি ইংল্যান্ডের মিউজিয়ামে নিয়ে যাবেন। কিন্তু তাঁর এই গোপন পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে চৈত সিং মূর্তিটিকে গঙ্গাবক্ষে লুকিয়ে রাখেন আর রটিয়ে দেন যে মূর্তি চুরি গিয়েছে। এদিকে মহারাজ নন্দকুমার কালিকা মন্দির প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্নাদেশ পেয়ে কাশী যাত্রা করেন। সেখানে চৈত সিংয়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তিনি চৈত সিংকে সব জানান। চৈত সিং সব শুনে তো হাতে চাঁদ পেলেন। তিনি সানন্দে নৌকা করে নন্দকুমারের সঙ্গে মূর্তি পাঠিয়ে দিলেন বীরভূমে। নন্দকুমার সেই মূর্তি নিয়ে ব্রাহ্মণী নদী পার করে চলে এলেন আকালি গ্রামে। ব্রাহ্মণীর তীরে শ্মশানের পাশে নিরিবিলি স্থানে মায়ের আটকোনা ইটের মন্দির স্থাপনা করলেন তন্ত্রসাধনের উদ্দেশে।

সেই মূর্তি দেখে এসে কলকাতায় তাঁকে আরাধনার কথা চিন্তা করেন চেতলা ইয়ং স্টার। এ পুজো পঞ্চাশ পার করেছে বহুদিন। এখানে দেবী আসীনা তালাবন্ধ সিন্দুকের উপর সর্পের আসনে। কালো কষ্টিপাথরের মতো গায়ের রং। মাথায় সর্পমুকুট, কানে সর্পকুণ্ডল, কোমরে সর্পবন্ধনী, হাতে সর্পবলয়। মহারাজ জরাসন্ধ নাকি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন, সকালে উঠে প্রথম যাঁকে সামনে দেখবেন, তাঁর আদলে মূর্তি গড়তে হবে। রাজা সকালে বাইরে বেরিয়েই সামনে দেখলেম এক ঘুঁটেকুড়ুনিকে। তাঁর এক হাতে গোবরের তাল, অন্য হাত ঘুঁটে দেবার জন্য উঁচু করা। ঠিক সেই আদলেই প্রতিমা গড়া হল। আর একবারের ঘটনা জানা যায়, এক ব্রাহ্মণ পুজো সেরে ভোগ নিবেদন করে দরজা বন্ধ করার সময় বলে যান, “মা, যা রইল সব খেয়ে নিস।” তিনি জানতেন না তাঁর ছোট্ট মেয়েটি ওই ঘরে লুকিয়ে আছে। পরে মেয়ের খোঁজে ঘরে ঢুকে দেখেন দেবী তাঁর মেয়েকেও খেয়ে নিয়েছেন, মেয়ের শাড়ির কোণ দেখা যাচ্ছে মূর্তির ঠোঁটের কোণে। রাগে-দুঃখে ব্রাহ্মণ বলে ওঠেন, “তোর মুখ আর দেখতে চাই না।” তখনই বিগ্রহ পিছনে ঘুরে যায়। সেই রূপই অনুসৃত এখানে বহু বছর ধরে। দেবী কালিকার অরূপ রূপের বর্ণচ্ছটার মাঝে এই কালো কষ্টিপাথরের আকালির কালী যেন সবার চেয়ে আলাদা। তাই অতিমারীর পরের কালীপুজোয় থাক তাঁরই গুহ্যকথা।
*ছবি সৌজন্য: লেখক
*ঋণ: গৌতম ভদ্র
সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় – বুনো স্ট্রবেরি
দেবযানী বসু, News18 Bangla
লিখতে শিখেই লুক থ্রু! লিখতে লিখতেই বড় হওয়া। লিখতে লিখতেই বুড়ো। গান ভালবেসে গান আর ত্বকের যত্ন মোটে নিতে পারেন না। আলুভাতে আর ডেভিলড ক্র্যাব বাঁচার রসদ। বাংলা বই, বাংলা গান আর মিঠাপাত্তি পান ছাড়া জীবন আলুনিসম বোধ হয়। ঝর্ণাকলম, ফ্রিজ ম্যাগনেট আর বেডস্যুইচ – এ তিনের লোভ ভয়ঙ্কর!!