মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর পশ্চিমের বৃহত্তম ও ব্যস্ততম শহর সিয়াটেল যা বিগত কয়েক দশকে তথ্য প্রযুক্তির এক অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। সবুজে মোড়া নয়নাভিরাম এই শহরতলিতে বঙ্গ ও ভারতীয় সংস্কৃতিকে পুনঃস্থাপিত ও উজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা নিয়ে মৈত্রীর আত্মপ্রকাশ ২০২২ সালে। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তারা সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন করে দুর্গোৎসবের, যার উষ্ণ আবেদন নিমেষেই ছড়িয়ে পড়েছিল সিয়াটেল শহরতলীর সর্বত্র। এবছর মৈত্রীর দুর্গোৎসব তার দ্বিতীয় বর্ষে (Durga Puja in Seattle)।
আশ্বিনের শেষে সিয়াটেলে আবহাওয়া বড় খামখেয়ালি রূপ নেয়। হিমেল হাওয়া ক্ষণে ক্ষণেই নিয়ে আসে আগাম শীতের বার্তা কিন্তু শারদীয়ার উষ্ণতা ভুলিয়ে দেয় সেসব কিছুকে। বাঙালির এই মহোৎসবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষার আর মাত্র কয়েকটা দিন। মৈত্রীর দ্বিতীয় বর্ষের দুর্গোৎসব আয়োজিত হচ্ছে অক্টবরের ২০ থেকে ২২, মেপল ভ্যালি সংলগ্ন মেপল ভিউ মধ্য বিদ্যালয়ে।

কুমোরটুলি থেকে আসা প্রতিমা ও তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মৈত্রীর সদস্যরা তৈরি করেছেন নতুন মণ্ডপসজ্জা। বোধন থেকে বিসর্জনে থাকবে সাবেকি আচার। থাকছে তিনদিনব্যাপী জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শঙ্খ ধ্বনি প্রতিযোগিতা, ধুনুচি নাচ ও সিঁদুর খেলা। বাঙালির রসনার তৃপ্তির জন্য থাকছে নিরামিষ ও আমিষ খাবারের লোভনীয় সমাহার। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আসবেন ভারতীয় পোশাক আশাক ও সাজসজ্জার পসরা সাজিয়ে।
আরও পড়ুন: সুরুল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো
সংস্থার সৃষ্টির সময়ে করা প্রতিশ্রুতি মেনেই, মৈত্রী সিয়াটেলের এই পুজো সার্বিক অর্থেই এক সার্বজনীন পুজো যেখানে কোনও প্রবেশ মূল্য নেই। সময় অনুযায়ী দর্শনার্থী সর্বসাধারণকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে, থাকছে তাদের জন্য ভোগ বিতরণ। নিজগুণেই সিয়াটেলের জনমানসে এক স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে মৈত্রীর দুর্গোৎসব এবং আশা, তাদের এই ঐকান্তিক উদ্যোগ শুধু স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যে না, অবাঙালিদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেবে বঙ্গ সংস্কৃতির উষ্ণতা।
এই নিবন্ধে ব্যবহৃত ছবি লেখকের তোলা।
জয়ন্ত ভট্টাচার্য্য জন্মসূত্রে পশ্চিমবঙ্গের চুঁচুড়ার, পড়াশুনা শিবপুর বি ই কলেজে আর কর্মসূত্রে আমেরিকায় প্রায় পঁচিশ বছরের প্রবাস জীবন। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, নেশা গান-বাজনা। নানারকম সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে ভালোবাসেন।