Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

অভিনেতার আড়ালে থাকা পরিচালক বিকাশ রায়

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

মে ২৫, ২০২৩

Film Director Bikash Roy
Film Director Bikash Roy
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

বিকাশ রায়, এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি লিখতে পারতেন, অভিনয় করতে পারতেন, পরিচালনা করতে পারতেন, এমনকি প্রযোজনাও করেছেন। আমাদের দুর্ভাগ্য যে এমন মাল্টি-ট্যালেন্টেড মানুষের কথা এখনকার প্রজন্ম সেভাবে জানে না, জানার চেষ্টাও করে না। যাকে এক ডাকে সব বাঙালি একসময় চিনত, সেই বাঙালিদের সংখ্যাও ক্রমশ কমে আসছে। তবু অভিনেতা বিকাশ রায় দর্শকমহলে আজও সমাদৃত। তাঁর অভিনীত কিছু ছবির চরিত্র আজও মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। ‘উত্তর ফাল্গুনি’, ‘আরোগ্য নিকেতন’, ‘ছদ্মবেশী’, ‘দাদু’, ‘পরিণীতা’ বা ‘৪২’ ছবিতে বিকাশ রায়ের দুর্দান্ত ভিলেন অভিনয়। নায়করূপে বিকাশ রায়ের ‘রত্নদীপ’ ছবিটি পরিচালনা করেন দেবকী কুমার বসু। সেই ছবি তিনটি ভাষায় রিলিজ করেছিল। অথচ এই ছবি এ যুগে কতজন মনে রেখেছেন? বিকাশ রায়ের কথায় “আমি তো মনে করি, আঙুলে গোনা যে কটি চরিত্রে আমি ভালো অভিনয় করতে পেরেছি, তার মধ্যে ‘রত্নদীপ’ বোধহয় সবার উপরে। আমরা সকলে প্রাণ দিয়ে দেবকীবাবুর নির্দেশ পালন করেছিলাম— ছবি প্রচণ্ড বক্স অফিস হিট করেছিল।” যদিও বিকাশ রায়ের অভিনীত চরিত্রগুলির কোনোটায় লঘু অভিনয় খুঁজে বের করা দুষ্কর।

অভিনেতা বিকাশ রায় আমাদের সকলের চেনা হলেও, পরিচালক বিকাশ রায় আজও বেশিরভাগ দর্শকের কাছে প্রায় অজানা। “বিকাশ রায় পরিচালক ছিলেন নাকি?” এমন প্রশ্নই আজকের বাঙালি করে বসবে হয়তো?
এই প্রতিবেদনের নিবেদন পরিচালক নির্দেশক বিকাশ রায় ও তাঁর পরিচালিত ছবিগুলির গল্প।

Bikash Roy
বিকাশ রায়

পরিচালক হয়ে ওঠার গল্প

অভিনেতা বিকাশ রায়ের মনে হতে থাকল “কাজ চলে, নাম যশ হয়, কিন্তু মন খুশি হয় না। কী যেন আমার করা হল না, কী যেন আমার দেবার আছে। মন ছটফট করে। একটা ছবিতে শুধু অভিনয় ছাড়া আমার আর তো কিছু করার থাকে না। তবু মনে হয় আমার আরও কিছু করার আছে।…”

ঠিক এই চিন্তা থেকেই তাঁর পরিচালনায় আসা। চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে রেডিও ও বিজ্ঞাপন জগতে কাজ করে এসেছিলেন বিকাশ রায়। পরিচালনার ইচ্ছে জাগায় যৌথ ভাবনায় বিকাশ রায় নতুন কিছু সৃষ্টিতে মাতলেন। চার বন্ধু-পরিচালক অজয় কর, আর্ট ডিরেক্টর বীরেন নাগ, সুবোধ দাস ও বিকাশ রায় মিলে ঠিক করলেন নিজেরা ছবি করবেন। তৈরি হল যৌথ প্রযোজনা কোম্পানি। প্রথম কাজ কোনান ডয়েলের ‘হাউন্ড অফ ব্যাস্কারভিল’ অবলম্বনে ‘জিঘাংসা’ ছবি। পরিচালক অজয় কর। দুরন্ত সেট বানালেন বীরেন নাগ এবং দুর্দান্ত অভিনয়ে বিকাশ রায়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরসংযোজনা রহস্য-রোমাঞ্চ ছবিটিকে আরও গা ছমছমে করে তুলল। ছবি সুপারহিট।

কিন্তু এই প্রযোজনা সংস্থা ভেঙে গেল। সেসময়কার জনপ্রিয় পরিচালক চিত্ত বসুর সব ছবিতেই নায়িকা হতেন সন্ধ্যারাণী। চিত্ত বসু আর সন্ধ্যারাণীর সঙ্গে মিলে বিকাশ রায় গঠন করলেন নতুন প্রযোজনা কোম্পানি। ছবি হল ‘শুভযাত্রা’। পরিচালক তখন চিত্ত বসু। ছবি চললেও ব্যবসা সফল হল না।
এসময় বিকাশ রায় অভিনয় করার পাশাপাশি চিত্রনাট্যকার হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন বাংলা ছবিতে। অজয় করের ‘সাজঘর’ ছবির চিত্রনাট্যকার ছিলেন বিকাশ রায়। পরবর্তীকালে প্রকাশিত ‘তীরভূমি’, ‘বিন্দুর ছেলে’, ‘দুই পুরুষ’ ছবির চিত্রনাট্যকারও তিনি।

Bikash Roy

নানা কাজে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েও বিকাশ রায়ের কাজ করার খিদে মিটছিল না। তাঁর কজন শুভানুধ্যায়ী বললেন, নিজে ছবি পরিচালনা না করলে, নিজের মনের চাহিদা মিটবে না। 

অর্দ্ধাঙ্গিনী

নতুন পদক্ষেপ— চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা। আত্মপ্রকাশ করলেন পরিচালক বিকাশ রায়। তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি ‘অর্দ্ধাঙ্গিনী’। বিকাশ রায় যতগুলি ছবি পরিচালনা করেন বেশিরভাগ তাঁরই প্রযোজনা। বন্ধু অসীম পাল ছিলেন অংশীদার প্রযোজক।
একান্নবর্তী পরিবারের গল্প। বিশাল স্টার কাস্ট। পাঁচ ভাই ও পাঁচ বউয়ের গল্প। অভিনয়ে বড় ভাই পাহাড়ি সান্যাল, বড় বউ সুনন্দা দেবী, জীবেন বসু-ভারতী দেবী, বিকাশ রায়-মঞ্জু দে, অসিতবরণ-সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, সবিতা চট্টোপাধ্যায় বসু-নির্মল কুমার। এছাড়াও ছিলেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকাশ রায় পরিচালিত প্রথম ছবি ‘অর্দ্ধাঙ্গিনী’ এতটাই সাড়া ফেলে যে এই বাংলা ছবির গল্প নিয়েই পরে বিমল রায় হিন্দি ছবি ‘পরিবার’ বানান। হিন্দি ছবি ‘পরিবার’-এ বম্বের অভিনেতারা অভিনয় করলেও বাংলা থেকে একমাত্র সবিতা চট্টোপাধ্যায় বসুর কাস্টিং বদলায়নি। সবিতা বাংলা ও হিন্দি দুই ছবিতেই ছিলেন।

Movie Ardhangini
'অর্দ্ধাঙ্গিনী' ছবির পোস্টার

‘অর্দ্ধাঙ্গিনী’ ছবিতে পাঁচ ভাইয়ের বাচ্চাদের রোলে অনেকগুলো ছেলেমেয়ের দরকার ছিল। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় ছেলে গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের জানালেন “বিকাশ জ্যাঠা একদিন আমাদের বাড়ি এলেন বাবার সঙ্গে ‘অর্দ্ধাঙ্গিনী’ নিয়ে কথা বলতে। ছবিতে অনেকগুলো বাচ্চা দরকার! আমাদের তিন ভাইবোনকে দেখে বিকাশ জ্যাঠা আমাদেরই এই ছবিতে নিলেন। আমি, আমার ভাই পিনাকী, বোন ভুটি— বাসবী তখন একদমই ছোট। আমাদের পাশের ভাড়াটিয়ার ছেলে চন্দন, আমাদের এক দিদি বুলি— সবাই  ‘অর্দ্ধাঙ্গিনী’তে অভিনয় করলাম। পরিচালক বিকাশ রায়ের হাত ধরেই আমার প্রথম ছবিতে অভিনয়। আমরা তখন খুব ছোট, কিন্তু কত সহজ করে বিকাশ রায় আমাদের ডিরেকশন দিতেন। কটা স্টেপ এগোব সেটা উনি মেঝেতে চক দিয়ে গোল্লা কেটে কেটে বলে দিতেন। আমি বিকাশ রায় আর মঞ্জু দে’র ছেলের রোলে অভিনয় করেছিলাম। একটা সিন ছিল— পাহাড়ি সান্যাল আমার জ্যাঠা, তাঁর ছেলের পৈতে। সেই অনুষ্ঠানে আমার কাকা জীবেন বোস সবাইকে লুকিয়ে কাটলেট খাচ্ছেন। আমি দেখে ফেলায় উনি আমাকে বলছেন, কাউকে বলিস না, তোকে কাটলেট খাওয়াব। কিন্তু আমি লুকিয়ে গিয়ে সেটা আরেক কাকা অসিতবরণকে বলে দিচ্ছি। তখন জীবেন বোস ধরা পড়ে যাচ্ছেন। এমন মজার দৃশ্যটা করতে পেরেছিলাম বিকাশ জ্যাঠার জন্যেই।
আমরা সব বাচ্চারা মিলে সন্ধ্যা মুখার্জির একটা গানে লিপ দিয়েছিলাম  “এই স্বাস্থ্য এই স্বাস্থ্য, চকচকে দেহমন চাস তো, এক মন দুধ রোজ খাস তো”। ‘অর্দ্ধাঙ্গিনী’র সাকসেস পার্টিতে আমি গেছিলাম। তখন সন্ধ্যা মুখার্জিকে প্রথম দেখি। তবে বিকাশ জ্যাঠা নিজের ছেলেমেয়েদের ফিল্ম লাইনের ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে দেননি। নিজের ছবিতেও কিন্তু নিজের সন্তানদের নেননি। কারণ সবাই খারাপ চোখে দেখতেন ফিল্ম জগতকে। আমার বাবা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিক থেকে মুক্তমনা ছিলেন।”

Ardhangini star cast

‘অর্দ্ধাঙ্গিনী’র সফলতার পর বিকাশ রায় পরিচালনা ও প্রযোজনা করলেন তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘সূর্যমুখী’। নায়িকার ভূমিকায় সুচিত্রা সেনকে ভেবেছিলেন বিকাশ রায়। কিন্তু নায়িকা শেষ অবধি হলেন সন্ধ্যারাণী। সুচিত্রা সেন বেশি টাকার নায়িকা হওয়ায় তাঁকে কোনও ছবিতেই নিতে পারেননি বিকাশ রায়। উত্তম-সুচিত্রা জুটি নিয়েও ছবি করার ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু দুজনকে নিলে প্রোডাকশন ব্যয় অনেক বেড়ে যেত।

আরও পড়ুন- উত্তমের নায়িকা হতে সত্যজিৎকে ‘না’, সত্তরের সাহসিনী আরতি ভট্টাচার্য

 ‘সূর্যমুখী’ নায়িকা-প্রধান গল্প। সন্ধ্যারাণী যেন এ ছবিতে সতীত্বের পরীক্ষা দিচ্ছেন। সতী বউয়ের সব শ্রী যে মেয়ের মধ্যে ছিল, ফুলশয্যার রাতে সেই মেয়ের স্বামী পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। পরে তাঁকে স্বামী ত্যাগ করেন। একা মেয়ের একলা যৌবনের সুযোগ নেয় তাঁর দেওর। যে চরিত্রে বিকাশ রায়। বিকাশ এখানে ধূসর চরিত্রে। সন্ধ্যারাণীর স্বামীর ভূমিকায় অভি ভট্টাচার্য। এছাড়াও ছিলেন ছবি বিশ্বাস, চন্দ্রাবতী দেবী, ভারতী দেবী, মঞ্জু দে প্রমুখ।

ছবির শেষে ছিল স্বামী অভি ভট্টাচার্য অপরাধবোধ থেকে স্ত্রী সন্ধ্যারাণীর পায়ে ধরে ক্ষমা চাইছেন। তৎকালীন ফিল্ম সমালোচকরা এতে ক্ষুন্ন হয়ে ছবির রিভিউ-তে লিখেছিলেন “একজন পুরুষ কেন নারীর পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাইবে? এটা কী করে দেখালেন পরিচালক বিকাশ রায়!” পঞ্চাশের দশকের সমাজ তখন চূড়ান্ত পুরুষতান্ত্রিক। কিন্তু বিকাশ রায় এমন মুক্ত মনেই গড়েছিলেন অভি ভট্টাচার্য্যর চরিত্রটিকে।

'Surjamukhi' Film poster

‘সূর্যমুখী’ দুঃখের গল্প হলেও সুপারহিট করে। তাঁর বড় কারণ ছবির গান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে এই ছবিতেই সন্ধ্যারাণীর লিপে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সেই কালজয়ী গান ‘আকাশের অস্তরাগে আমারই স্বপ্ন জাগে’। ছবির শুরু এ গান দিয়েই। বিকাশ রায়ের পরিচালনায় প্রথম সুপারহিট গান এল হেমন্ত সুরের হাত ধরেই। হেমন্ত-কণ্ঠে ‘ও বাঁশিতে ডাকে সে শুনেছি যে আজ’।

এ ছবিতে পঞ্চাশের দশকের সীতারূপে ‘সূর্যমুখী’ সন্ধ্যারাণী সবার মন জিতে নেন।

বসন্ত বাহার

তৃতীয় ছবিতে ফ্যামিলি ড্রামা থেকে শতহাত দূরে হাঁটলেন বিকাশ রায়। ভেঙে ফেললেন চিরাচরিত বাংলা ছবির প্লট। শাস্ত্রীয় সংগীত-নির্ভর ছবি ‘বসন্ত বাহার’ তৈরি করলেন। এবার সংগীত পরিচালকের দায়িত্বে জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ। চরিত্রচিত্রণে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, বসন্ত চৌধুরী, বিকাশ রায়। সাবিত্রীর লিপে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্লাসিকাল গান ‘বাঁধো ঝুলনা তমাল বনে/ এসো দুলি দুজনে’। এই গান বাংলা ছবিতে ইতিহাস সৃষ্টি করল।

সংগীতই এই ছবির প্রধান অঙ্গ। বাণিজ্যিক ছবির মূলস্রোতে শাস্ত্রীয় গানকে স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনল এই ছবি। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় তাক লাগিয়ে দিলেন একের পর এক শাস্ত্রীয় গানে। সঙ্গে পুরুষ-কণ্ঠে মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও এ টি কানন। আরও এক ঘটনা, ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খাঁ প্রথম এই ছবিতে প্লেব্যাক করেন, যা ছিল ছবির বড় আকর্ষণ। ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খাঁ-র কণ্ঠে ‘বসন্ত বাহার’ ছবির গান রেকর্ডিং হয়ে যাবার পরেও, মনোমত না হওয়ায়, সবিনয়ে ছবির গান আর সিচুয়েশন তাঁকে এমনভাবে শুনিয়েছিলেন বিকাশ রায়, চোখে জল এসে গিয়েছিল ওস্তাদজীর। নিজেই উপলব্ধি করেছিলেন, এই মুডটাই তো নেই তাঁর গানে, তাঁর গায়কিতে! নতুন উদ্যমে আবার শুরু হল রেকর্ডিং। ওস্তাদজী আবার গাইলেন। নতুন প্রাণ পেল ‘আয়ে না বালম্’।

Basanta Bahar Cinema poster
'বসন্ত বাহার' ছবির পোস্টার

মরুতীর্থ হিংলাজ

বিকাশ রায়ের সবথেকে আলোচিত আলোড়িত বক্সঅফিস হিট ছবি ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’। স্বর্ণযুগের ট্রাভেল ফিল্মগুলির মধ্যে বিকাশ রায় পরিচালিত এই ছবিটি শ্রেষ্ঠ। ‘নতুন তীর্থ’, ‘বিগলিত করুণা জাহ্নবী যমুনা’ বা ‘তুষারতীর্থ অমরনাথ’ ছবিগুলির থেকে বহুগুণ বেশি জনপ্রিয়তা পায় ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’। কাহিনিকার অবধূত। জটাধারী অবধূত তাঁর আশ্রম থেকে এই ছবির শ্যুটিং দেখতেও আসতেন। ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’ ছবিটি হিটের আরেকটি বড় কারণ ছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের অবিস্মরণীয় মিউজিক। হেমন্ত-কণ্ঠ যখন পর্দাতে মরুভূমির প্রান্তরে পড়ছে তখন রীতিমতো রোমাঞ্চিত হতে হয়।

হিংলাজ মাতার দুর্গম দর্শন নিয়ে ছবি। অভিনয়ে উত্তমকুমার, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, বিকাশ রায়, অনিল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। এই সময় কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে উত্তম-সাবিত্রীর প্রেম ভেঙে গেছিল। তবু দৃশ্যে উত্তমের কোলেই সাবিত্রীকে পড়তে হবে। সেই দৃশ্য দুজনেই অনবদ্য করেছিলেন নিজেদের ব্যক্তিগত অভিমান দূরে রেখে। ছবির শেষে সাবিত্রী ওরফে কুন্তীর থিরুমল (উত্তমের চরিত্র-নাম) বলে একটা চিৎকার করে ডেকে ঝাঁপ দেবার দৃশ্য ছিল। বিকাশ রায় সাবিত্রীকে নির্দেশ দেন গায়ের যত শক্তি আছে তত জোরে চিৎকার করতে। সাবিত্রী বলেছিলেন “বিকাশদা আমার গলার শিরা ছিঁড়ে গেলে অন্য ছবি বা মঞ-নাটক আর কোনওদিন করতে পারব?” বিকাশ রায় সাবিত্রীর চিকিৎসা করাবেন বলে ভরসা দেন। সাবিত্রী ভীষণ জোরে চিৎকার করলেও সে যাত্রায় রক্ষা পান। অভিনয়কে বাস্তবে আনার ক্ষমতা তখনকার অভিনেতাদের ছিল। কিন্তু তখন সাবিত্রীর অভিযোগ ছিল এই ছবিতে অভিনয় করে পুরো টাকা পাননি তিনি।

Morutirtha Hinglaj Cinema poster
সবচেয়ে আলোচিত ছবি 'মরুতীর্থ হিংলাজ'

‘মরুতীর্থ হিংলাজ’-এর গান নিয়ে আছে একটা দারুণ গল্প। ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’-এর মরুভূমির শ্যুটগুলো হয়েছিল দিঘার বালিয়াড়িতে। উট ভাড়া করে নিয়ে আসতে অনেক খরচ হয়। কিন্তু রোজকার শ্যুটিং হয় না, অনেক বিপত্তি। ঝড়বৃষ্টিতে শ্যুটিং বন্ধ ছিল অনেকদিন।
এদিকে ছবির গানগুলো কলকাতায় রের্কড করে হেমন্তর মন ভরল না। বিকাশ রায়কে বললেন, “মরুভূমি প্রান্তরে আদিগন্ত বিস্তৃত মরুপ্রান্তরে ছড়িয়ে পড়বে ‘পথের ক্লান্তি ভুলে…’,সেই আবহটা পেলাম না গানে। গানগুলো বম্বে থেকে রেকর্ড করিয়ে আনলে হয় না?”

বিকাশ রায় বললেন “ঝড়-বৃষ্টিতে শ্যুটিং বন্ধ ছিল। উত্তম, সাবিত্রী সহ সবাইকে বসিয়ে বসিয়ে পয়সা দিতে হয়েছে— আর পারব না টানতে।” হেমন্ত চুপ। ক’দিন পরে বম্বে ফেরত বিমানবন্দরে নেমে হেমন্ত সোজা বিকাশ রায়ের কাছে। দুটো স্পুল হাতে তুলে দিয়ে বললেন “এই নিন আপনার মরুতীর্থ হিংলাজের গান, বম্বে থেকে রেকর্ড করিয়ে আনলাম।”
বিকাশ রায় বললেন “কিন্তু কোরাস? আপনার সঙ্গে বম্বের শিল্পীরা বাংলায় কোরাস করতে পারল? যা আছে চন্দ্রাবতী, সাবিত্রীর লিপে!” হেমন্ত বললেন অবিচলভাবে, “ধুর ওখানকার শিল্পীরা বাংলা বলতে পারে নাকি। কিছুতেই পারে না ঠিক উচ্চারণ। তখন গীতা আর লতাকে ডেকে কোরাসে আমার সঙ্গে গাইয়ে নিলাম।”

বিকাশ রায় কিংকর্তব্যবিমূঢ়! যেন পাড়ার শ্যামলী-মাধবীকে দিয়ে কোরাস গাইয়ে নিয়েছেন এমন সহজভাবে বললেন হেমন্ত। এত দামি শিল্পী, তাঁরা কিনা এমনি এমনি হেমন্তর কথায় কোরাস গেয়ে দিল। তাও কিনা যাঁরা পরস্পরের সমসাময়িক প্রতিদ্বন্দ্বী গায়িকা। হেমন্তর বন্ধুত্বকে এতটাই সম্মান দিতেন লতা ও গীতা।
বিকাশ রায় বললেন “নামগুলো বললেন ভাগ্যিস। ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’-এর টাইটেল কার্ডে নামগুলো থাক।”

কেরি সাহেবের মুন্সি

প্রমথনাথ বিশীর লেখা উপন্যাস ‘কেরি সাহেবের মুন্সি’র মতো উপন্যাস নিয়ে ছবি করা সেসময়ে বাংলা ছবির জগতে দুঃসাহসিক কাজ। এই ছবির জন্য বিকাশ রায় তাঁর বহুদিনের বন্ধু সহনায়িকা মঞ্জু দে-কে কাস্ট করলেন। কিন্তু সেসময় মঞ্জু দে কিছু সময় ছবি করছিলেন না, ইংল্যান্ডে গেছিলেন। বিকাশের অনুরোধে মঞ্জু দেশে ফিরলেন। শ্যুটিং শিডিউল শুরু হয়ে গেছে, ইতিমধ্যে মঞ্জুর পক্স হল। বিকাশ রায় কিন্তু মঞ্জু দের জন্য দু-মাসের বেশি সময় অপেক্ষা করেছিলেন। তিনি পারতেন মঞ্জুর পরিবর্তে অন্য অভিনেত্রীকে নিতে। বিকাশ রায় বললেন “মঞ্জু সুস্থ হয়ে উঠে অভিনয় করবে।” তাই তিনি করলেন। এই ছবিতে অভিনেত্রী তন্দ্রা বর্মণও অভিনয় করেছিলেন। যিনি ছিলেন ‘অতল জলের আহ্বান’ ছবির নায়িকা।

Keri Saheber Munsi poster
প্রমথনাথ বিশীর লেখা উপন্যাস ‘কেরি সাহেবের মুন্সি’ নিয়ে ছবি করলেন বিকাশ রায়

রাজা সাজা

আবার উত্তমকুমার ও সাবিত্রী, বিকাশ রায়ের ছবিতে। ‘রাজা সাজা’ ছবির জন্য গ্রামে শ্যুটিংয়ের প্রয়োজন ছিল। বিকাশ রায় ঠিক করলেন তাঁর নিজের গ্রাম প্রিয়নগরে ছবির আউটডোর করবেন। বিকাশ রায়ের ইচ্ছে ছিল পৈতৃক বাড়িটিকে স্টুডিও বানানোর। সেইমতো ফিল্ম ইউনিট চলে গেল তাঁর গ্রামে। কিন্তু বিপত্তি ঘটল উত্তমকুমার গ্রামে আসায়। তখন উত্তমকুমার স্টার। তিনি গ্রামে আসছে শুনেই শয়ে শয়ে লোক শ্যুটিংস্পটে এসে হাজির। আশেপাশের গ্রাম থেকেও লোক ছুটে এল। উত্তমকুমার দূর থেকে তাঁদের কয়েকবার হাত নাড়লেন। কিন্তু গুরুকে সারা গ্রামের লোক আরও কাছ থেকে দেখতে চায়। বিকাশ রায়ের পৈতৃক বাড়ি তখন লোকে লোকারণ্য। শেষমেশ উত্তমকুমারের নিরাপত্তার খাতিরে পুরো প্রোডাকশন টিম স্থান পরিবর্তন করে টাকিতে গিয়ে শ্যুটিং করতে বাধ্য হয়। বিকাশ রায়ের ইচ্ছের চিরতরে সলিল সমাধি ঘটল। নিজের পরিচালিত ছবিতে নিজেদের বাড়ি, নিজের গ্রামকে আর দেখানো হল না তাঁর। এই ঘটনার শোকে আর গ্রামের বাড়িতে কখনও যাননি তিনি। একবার শুধু ভাইপোর বিয়েতে গেছিলেন ভাইপোর অনেক অনুরোধে। দুঃখের কথা বিকাশ রায়ের সেই পৈতৃক বাড়ি আজ ধূলিসাৎ হয়ে গেছে বিকাশ রায়ের স্বপ্নের মতোই। ‘রাজা সাজা’র কিছু দৃশ্যগ্রহণ হয়েছিল কলকাতার মার্বেল প্যালেসে।

Cinema poster
'রাজাসাজা' ছবিতে উত্তম-সাবিত্রী

নতুন প্রভাত

বিকাশ রায়ের পরিচালনায় যত ছবি যত হিট হোক না কেন, তাঁর নিজের মতে তাঁর পরিচালিত শ্রেষ্ঠ ছবি ছিল ‘নতুন প্রভাত’। রোগীদের স্যানাটোরিয়াম ঘিরে ছবির গল্প। অভিনয়ে সন্ধ্যারাণী, বিকাশ, সাবিত্রী। যদিও এই ছবিটি বাণিজ্যিক সফলতা পায়নি। সেই নিয়ে কিছুটা হলেও অবসাদ ছিল শ্রী রায়ের। ছবিটির প্রযোজক বিকাশ রায় নিজে ছিলেন না। প্রযোজক ছিলেন অনন্ত সিংহ। বিকাশ রায় বলেছিলেন “আমার নিজস্ব মতে ‘নতুন প্রভাত’ আমার পরিচালিত সব ছবির মধ্যে শ্রেষ্ঠতম। কিন্তু ছবিটি দর্শকসমাজে সমাদর পায়নি। অনন্তবাবু লোকসান খেয়েছিলেন।”

Kajallata Poster
বিকাশ রায়ের মতে তাঁর পরিচালিত শ্রেষ্ঠ ছবি ছিল 'নতুন প্রভাত'

কাজললতা

বিকাশ রায়ের শেষ নিবেদন। উত্তমকুমার ও অপর্ণা সেন জুটির ছবি। ‘কাজললতা’ ছবিটি এখন আর পাওয়া যায় না, সত্তর দশকের ছবি হওয়া সত্ত্বেও। বিকাশ রায় সম্পর্কে অপর্ণা সেন বলেছেন “আমি যখন ছবির জগতে এলাম ততদিনে বিকাশদা বাবা-কাকার রোল করছেন। ‘মেমসাহেব’ ছবিতে উনি আমার কাকার রোল করেন। সেখানে কাকার সঙ্গে আমার খুব ঝগড়াঝাঁটির দৃশ্য ছিল। কাকার ঠিক করা বিয়ের সম্বন্ধ প্রত্যাখ্যান করছি আমি। ঝগড়ার সিন করার পর বিকাশদা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেন। আমি ওঁকে বলতাম বিকাশদা। কিন্তু আমার আসলে জেঠুই বলা উচিত ছিল। আমার বাবার চেয়েও বয়সে খানিকটা বড় ছিলেন। মনে হত শ্যুটিংয়ে উনি আমার অভিভাবক। ওঁর ডিরেকশনে ‘কাজললতা’ ছবিতে আমার উত্তমকুমারের সঙ্গে একটা কান্নাকাটির সিন ছিল। কাঁদার অভিনয় করছি আর বিকাশদা বলছেন, “আর একবার কর.. আর একবার কর।” এদিকে শটটা কাটেননি উনি। আর একবার করতে বলছেন, আবার করছি। এইরকম করে সাত আটবার নিয়েছিলেন। শেষ দিকটায় খুব আপসেট হয়ে গিয়েছিলাম আমি। কেন কাটছেন না শট! কেন এতবার করাচ্ছেন! কিন্তু পরে বুঝেছিলাম সে জন্যেই কান্নাকাটিটাও ঠিকঠাক হল। তখন পিঠ চাপড়ে বললেন, “এই তো! খুব ভাল হয়েছে।”
ডিরেক্টর আমি নিজে যখন হয়েছি এসব মানুষের শিক্ষাও কাজে লেগেছে।”

Kajallata Poster
উত্তম-অপর্ণা জুটির 'কাজললতা'

শ্রুতিনাটকের স্রষ্টা বিকাশ রায়

ছবি পরিচালনা এরপর আর বিকাশ রায় করেননি। কিন্তু তিনি আরেকটি অভাবনীয় কাজ করলেন পরিচালক রূপে নতুন ভূমিকায়। মঞ্চে শ্রুতি অভিনয়। যা প্রথম বিকাশ রায় ভাবেন। ওঁরই আইডিয়া। পরে এইরকম অনুষ্ঠানের নামকরণ হল ‘শ্রুতিনাটক’। প্রথমেই রবীন্দ্রনাথের ‘শেষের কবিতা’ বেছে নিলেন বিকাশ রায়। কণ্ঠের মাধ্যমে মঞ্চে অভিনয় ফুটিয়ে তোলা। কণ্ঠ নিয়ন্ত্রণে বিকাশ রায়ের ক্ষমতা ছিল অনবদ্য। একক ব্যক্তির নাট্যপাঠ হয়েছে আগে। শিশির কুমার ভাদুড়ি, শম্ভু মিত্ররা একাঙ্ক নাট্যপাঠ করলেও এমন সমবেত শ্রুতিনাটকের পথিকৃৎ বিকাশ রায়কেই বলা যায়। শ্রুতিনাটক কথাটি এই ‘শেষের কবিতা’ দিয়েই শুরু হল। অমিত রে— সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, লাবণ্য— লিলি চক্রবর্তী। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনে বিকাশ রায়ের এই গাইডেন্স বড় অবদান রেখেছিল। এছাড়াও ছিলেন নীলিমা দাস, পার্থ ঘোষ, গৌরী ঘোষ, জগন্নাথ বসু ও উর্মিমালা বসু। গৌরী-পার্থ বা জগন্নাথ-উর্মিরা শ্রুতিনাটকে পরবর্তী যুগে আইকনিক জুটি হয়েছিলেন। তাঁদের মঞ্চে শ্রুতিনাটকের শুরুটা কিন্তু বিকাশ রায়ের হাত ধরেই। এরপর ‘চিরকুমার সভা’ শ্রুতিনাটকও পরিচালনা করেন বিকাশ রায়। সৌমিত্র বলেছিলেন “বিকাশদার পরিচালনায় ছবিতে কাজ করার সৌভাগ্য হল না। কারণ ওঁর বেশিরভাগ ছবিতেই উত্তমকুমার থাকতেন।”

Bikash Soumitra
সৌমিত্রর সঙ্গে

মঞ্চে প্রবেশের সময়টা আমার হাতে ছিল না, কিন্তু প্রস্থান-টাতো আছে …

অভিনেতা বিকাশ রায়ের আড়ালে পরিচালক বিকাশ রায় ঢাকা পড়ে যাবার আরেকটি কারণ তাঁর পরিচালিত বেশিরভাগ ছবিই আর দেখার সুযোগ নেই। বাণিজ্যিক ছবির সংরক্ষণ তো আমাদের দেশে করা হয় না। তাই পরিচালক বিকাশ রায় বিস্মৃত হয়ে পড়েছেন।

নবীনদের প্রাধান্য প্রতিপত্তি বাড়ছিল টালিগঞ্জ পাড়ায়। নতুন যুগের পরিচালকরাও আসছিলেন। হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষিত পরিচালক-অভিনেতা বাদে বেশিরভাগই ছিলেন ভিতর-ফাঁপা। এঁদের রুচিশিক্ষার সঙ্গে বিকাশ রায়ের মানিয়ে নিতে অসুবিধে হচ্ছিল। নতুন প্রজন্মের থেকে অবহেলা-অপমান-অসম্মান পাওয়ার আগেই বিকাশ রায় নিজেই নিজের অবসর ঘোষণা করলেন প্রেস ডেকে। টলিউডে এ ঘটনা বিরলতম। এমন সাহস আর কোনও অভিনেতা আগে দেখাননি, যা ঐতিহাসিক।

“২০ মার্চ, ১৯৮৪ প্রেসের বন্ধুদের ডেকে বললাম, ‘মন থেকে ছুটি পেয়েছি, শরীর ছুটি চাইছে— এবার অবসর নেব ভাই।’ বললেন—
        ‘পেয়েছি ছুটি বিদায় দেহ ভাই
সবারে আমি প্রণাম করে যাই।’

 

 

 তথ্য সহায়তায়: ডাঃ জ্যোতিপ্রকাশ গুহ, গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিকাশ রায়ের আত্মজীবনী ‘আমি’ ও ‘কিছু স্মৃতি, কিছু কথা’ 

 ছবি সৌজন্য: ডঃ জ্যোতিপ্রকাশ গুহ, Wikipedia, Facebook

Subhadip Bandyopadhyay

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।

Picture of শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।
Picture of শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com