(Poetry)
বর্ষা ও প্রেমের আখ্যান
মন আর মনখারাপের মাঝের ফারাকটা
ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে,
যেন বাতাসের খোলামকুচি।
সমতলে হাঁটলে ক্লান্তি আসে এখন!
বিশ্রাম নেব।
পাহাড়ি পথের পাশে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা,
তীরের বিছানায়, ঘুমিয়ে নেব খানিক!
মাথার ওপর বোমারু বিমান পাক দিচ্ছে,
নিরিবিলি বাদলা মেঘেদের মতো।
হাতের তালুতে ভাল লাগা জমা হচ্ছে।
মনে হচ্ছে তোমার দেওয়া প্রেমের উপহারগুলো,
পাহাড় হয়ে জাপটে ধরছে আমাকে।
শতছিন্ন মনে, উন্মাদের মতো পিছু নেয়,
অসম পরকীয়া!
প্রেমটা যখন তোমার সাথে তোমার অতীতের,
তখন ভবিষ্যতের পথ চেয়ে বসে থাকা
ছাড়া, আর কীই বা করতে পারি?
ঘুম আসছে শুধু, চোখ খুলতে পারছি কই! (Poetry)


বৃষ্টি আর নদীর গল্প
একটা জীবনমুখী বৃষ্টির দিনে, ভাবনার
নিরপেক্ষতা বজায় রাখাটাই কঠিন!
সত্যিই কঠিন!
এই বৃষ্টিই তো নদী হয়ে সাগরে মেশে।
কীকিভাবে মেশে? বুঝতে গেলে
একটা গোটা জীবন পার হয়ে যায়।
নদীর কি জীবন পাওয়াবার কোন দায় নেই?
দায় নেই মুঠো ভরে প্রেম ছুঁড়ে দেওয়াবার?
নদীর দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকে চিল-শকুন-কাক।
নদী নষ্ট হয়!
হঠাৎই তার সখ্য হয় সংসারের সাথে।
তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বলে ওঠে।
গলা ছেড়ে গান গায় বনজ্যোৎস্না।
“নদী আপন বেগে পাগল পারা।”
ঠিক সন্ধের মুখে হলুদ আলোরা
ছায়া ফেলে ভাবনায়।
পরনে ছাপা শাড়ি, কপালে মেরুন টিপ।
পক্ষপাত ঝরে যায় বৃষ্টি হয়ে ঝরে যায়! (Poetry)
কসমিক বদ-অভ্যাস ও বৃষ্টি
দূরে কোথাও শাঁখ বেজে চলেছে।
বর্ষামঙ্গল গাইছে, শিশির ভেজা
মেয়েদের দল।
ঝমঝম ঝমঝম, বৃষ্টির উলুধ্বনিতে
চোখ বুজে আসে।
জলজ নয়নে ঠোঁটে ঠোঁট দিই,
হাতে হাত!
আমার চিবুক জাপটে ধরুক
তোমার গ্রীবার আঁচিল!
ঘুমিয়ে নে, যেমন ঘুম চেয়েছিলি
তুই, নাগরিক ইঁদারা!
ভাবী সময়ের, পাতা ঝরার দিনলিপি
লিখে চলেছে, প্রেমিক শ্রাবণ।
গুমোট আকাশে চেয়ে থাকে
নম্র তারার দলা। ঝুলন্ত চাঁদের নকশা এঁকে,
নিভৃত আশ্রয় খুঁজে নেবে ঝলসানো অ্যাপেআপিটাইট!
ডেসার্ট কিংবা হাল্কা চুমুর দোকানপাট
খুলে রেখে, সরীসৃপের চলন,
মৃত গিটারে তখন বব ডিলান তুলেছে।
অবেলার বকুলতলা থেকে একটা
আঁশটানি গন্ধ, উঠে এসে দাঁড়াল
ঈশ্বর ও শয়তানের মাঝ বরাবর। (Poetry)


বিষ এবং দৃশ্যকল্প
মৃত হাইওয়ের ধারে
ছাই ছাই রঙের ধাবা।
তন্দুরি রুটি, চিকেন কষা,
সাথে চিলড্ বিয়ার!
ঝরে যাওয়া বারো মাস এখানে
নক্ষত্রলোকের অন্যমনস্ক আগুনে সেঁকা হয়।
রেণুহীন খুন এঁকে যায় যন্ত্রণার গুহালিপি।
ইরানীনের কবির মৃতদেহ ছাইচাপা পড়ে আছে
ওই জানালাবিহীন তন্দুরের ভিড়ে!
সেই দৃশ্যের বীভৎসতা এড়াতে, খুঁজে পেতে
কোন নিরিবিলি রিসর্টে পালিয়ে যায়, বিহঙ্গের নবরস।
তার বন্ধনহীন বক্ষ, শ্রমের দাসত্ব করেছিল
একদিন, নিয়মিত সেই মধুখোর গুহামুখে।
ছিঁচকাঁদুনে বৃষ্টির স্তন বেয়ে গড়িয়ে
পড়া দুধরস, ভিজে কমললতার ছবি আঁকে। (Poetry)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
অলংকরণ- আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়
লেখকের জন্ম ১৯৮৯ সালের জানুয়ারী মাসে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার শ্রীরামপুর শহরে। ছোটবেলা থেকেই তিনি লেখালেখির সাথে যুক্ত। বিভিন্ন নামী পত্রিকা যেমন সন্দেশ, জোয়ার, কোরক, পথ ও পাঁচালি ইত্যাদি পরিবারের তিনি নিয়মিত সদস্য ছিলেন। বহু স্বনামধন্য লেখক-লেখিকাদের সাথে তিনি বিভিন্ন পত্রিকার শারদসংখ্যায় লেখালিখি করতেন।