(Poetry)
শীত, স্মৃতি ও ঈশ্বর
শীতকাল মানেই কি স্মৃতির পাহাড়!
স্মৃতি মানেই কি প্রেম! কিংবা অপ্রেম!
প্রেম মানেই কি নিবিড় ভাবে বাঁচতে চাওয়া!
গোটা নভেম্বর জুড়ে
এখন শুধু শীতের অপেক্ষা।
তারপর গাছে গাছে পাতায় পাতায়
ঠান্ডার সেই গন্ধ!
আগামী গুড়ের গন্ধ! নবান্নের পায়েসের গন্ধ!
পৌষ পার্বণের গায়ে লেগে থাকা…
অর্ধেক জীবন আর অর্ধেক ভেজা শাড়ির গন্ধ!
দিন যত এগোয়, বেলা ছোট হয়, ভাবনারা বাড়ে।
বাসি জ্যোৎস্নার গড়ল মাখা
জলছাদ থেকে উঁকি দেয়…
প্রেমিকাকে লেখা প্রথম চিঠি!
মেঘ ছোঁয়া আকাশ, আকাশ জড়ানো মেঘ,
এসব পেরিয়েই কি গভীর অরণ্যের
বুক চিরে পাতা ঝরে?
আর কাঞ্চনজঙ্ঘা শ্বেতশুভ্র হয়ে ওঠে প্রস্ফুটিত একরাশ রজনীগন্ধায়!
এর উত্তর হয়তো কেবল শীতই জানে…
আসলে শীত মানে
নাস্তিকের দরজায় বাসনার ঈশ্বর!
এক গা আঁশটে গন্ধ নিয়ে
যার নাগাল পাওয়া যায় না! (Poetry)


হেমন্তের মাঝামাঝি
হেমন্তের মাঝামাঝি, বেলা ছোট হয়ে আসে।
আগুন লোভী পাখিদের ডানায় উঁকি দেয়…
গরাদভাঙা জানলায় আটকে পড়া, পথচারী রোদ।
গেলবারের অক্ষম শীতকালটায় আমার দিকে চেয়েছিল,
একঢাল কালো চুলে দুঃখের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকা
অপেক্ষারতা এক উষ্ণ তরুণী!
শূন্য গর্ভের ইশারায়, বোবা মেরে যাওয়া ট্রামলাইনে
শিশির জমেছিল।
ভোরের দিকের ভেজা ভেজা শিশির!
জমে যাওয়া কফের মতো দলা দলা শিশির!
হেমন্তের মাঝামাঝি, বেলা ছোট হয়ে আসে।
চৌরাস্তা, শহীদ মিনার আর নোনা ধরা লালবাড়িটার
গা থেকে চলকে আসা অবিনশ্বর আলো,
কাগজের ঠোঙা থেকে ঝাল ঝাল গরম মানুষের
গন্ধ চেটেপুটে সাবাড় করে দেয়।
বারুদ আর পাইপগানের খোঁচায় আমাকে উপভোগ করে…
মুখরোচক চানাচুরের মতন!
ভোরের কুয়াশা বিষবাষ্প না হয়ে…
পা ছড়িয়ে বসে হঠাৎ
স্তনবতী তরুণীর মুখের গান হয়ে যায়!
হেমন্তের মাঝামাঝি, মনের গভীরে জমে থাকা
ভয়েরা হঠাৎ করেই ভ্রম হয়ে যায়! (Poetry)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
অলংকরণ- আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়
লেখকের জন্ম ১৯৮৯ সালের জানুয়ারী মাসে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার শ্রীরামপুর শহরে। ছোটবেলা থেকেই তিনি লেখালেখির সাথে যুক্ত। বিভিন্ন নামী পত্রিকা যেমন সন্দেশ, জোয়ার, কোরক, পথ ও পাঁচালি ইত্যাদি পরিবারের তিনি নিয়মিত সদস্য ছিলেন। বহু স্বনামধন্য লেখক-লেখিকাদের সাথে তিনি বিভিন্ন পত্রিকার শারদসংখ্যায় লেখালিখি করতেন।
