১
বলো সমারোহ
ফুঁড়ে দিলে বল্লমের ফলা
কদর্য বিশ্রী সব ছলাকলা
দিয়ে দীন হৃদয় ভরালে
আমাকে রাখলে তুমি আমার আড়ালে
হাসো সমারোহ
খল খল হাসো
তোমার অগ্নিতে দগ্ধ কতশত অপূর্ণ হৃদয়
তোমারি তো হয়েছে আজ জয়
ক্রূর বাদ্যে নৃত্য করো অভুক্ত জঠরের মতো
যা কিছু নান্দনিক সুস্থ সংযত
লোভ আর স্পৃহা দিয়ে সবই লেপে দিলে
পৃথিবী ভাগাড় হবে, কুরে খাবে শকুনে ও চিলে
২
তোমার জন্য বিরাম রেখেছিলাম
সময় করে নিও
দুপুর বেলায় স্মৃতির ভেলায় ভাসো
যদি কখনও প্রিয়
তোমার জন্য শিশির রেখেছিলাম
ঘাসের সমাদরে
ভোরবেলাতে কুড়িয়ে নিও যদি
আমায় মনে পড়ে
তোমার জন্য শাপলা ফুলের ঘাটে
জলতরঙ্গে রেখেছি জলছাপ
সময় করে বোসো, শুনতে পাবে
তোমার আমার নিহত সংলাপ
আমার শঙ্খ চুপটি পড়ে আছে
ইচ্ছে হলে ফুঁ দিও কখনও
দেখবে কেমন মধুর সমারোহে
উঠবে বেজে তোমার কঙ্কণও
৩
আমার শুধুই সন্ধ্যা। মুগ্ধ মরণ
এবার জোনাকি দেব আলোর বন্দিশে
চোখে মেঘ ভরে যায় অঝোর শ্রাবণ
সকল গানেতে যায় বিষণ্ণতা মিশে
মাটি থেকে কুড়িয়েছি পথিকের গান
এ ছাড়া কিছুই নেই আমার সঞ্চয়…
নিতে চাও নিও। আমার ভাসল শাম্পান-
নিকষ রাত্রি নামে। আলো অপচয়।
এই সব বিষণ্ণ বরণীয় গাথা
আমি ফেলে রেখে যাব পৃথিবীর ঘাসে
ধানের মড়াই আর গরুর বাথান
ভরে দেবে আগামীকে নবীন সুবাসে
আমি বীজ বুনে যাই বীজ বুনে রাখি
এ অরণ্য এ বীথির সুনম্র শরীরে
হয়তো কুড়িয়ে নেবে মুগ্ধ জোনাকি
নিয়ে যাবে লোকালয়ে, মানুষের ভিড়ে
*ছবি সৌজন্য: Pixabay
জন্ম ও বড় হওয়া কলকাতায়, বর্তমান ঠিকানা ইলিনয় শিকাগো। লেখালেখির অভ্য়েস দীর্ঘদিনের। প্রবাসের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। প্রকাশিত গল্প সংকলন 'যযাতির ঝুলি'।