Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

ছাপা বই ও এক অর্বাচীন পাঠকের ভাবনা

রাজদীপ রায়

ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩

a view of a book reader
a view of a book reader
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

যা বুঝি-না, সেই নিয়ে কথা বলতে যাওয়া আমাদের স্বভাবযা আমাদের আয়ত্তের নয়, তাকে ধরা-ছোঁয়ার মধ্যে আনতে গিয়ে কত-না ভ্রান্তি, কত-না রাগ-বিদ্বেষ, লোক-হাসাহাসিএ-লেখার বিষয় গূঢ় কিছু নয় বই পড়েন যিনি, তিনিই পাঠক— যদি এই সাধারণ তথ্য বুঝে নিই, তাহলে বইয়ের সঙ্গে বইয়ের হয়ে-ওঠার বিভিন্ন দিকগুলোর কথা আলগোছে তার কানে আসেসেই কানে-আসা কথাগুলোকে বুঝে ওঠা-তো একদিনে হবে নাসেটা সময়সাপেক্ষ এক প্রক্রিয়াবিশেষঅর্বাচীন এক পাঠকের গোপন নোটবুকের মতোই অলস সেই প্রক্রিয়ার সূত্রপাত লেখা রইল এখানেকানে-শোনা, বইয়ে-পড়া ও লোকমুখ থেকে আহরণ করা ছাপা বইকে ঘিরে মনে হওয়া বিভিন্ন দিক, যা হয়তো কাজের, যা-হয়তো কোনও কাজের নয়।

মুদ্রণযন্ত্র নির্মাণ আর ব্যবহারের আগে ব্যক্তিগত সংগ্রহে কোনও লিখিত-বিষয়কে রাখা যেত নাপুথিসর্বস্ব সময়ে, মূল পুথিলেখকের সঙ্গে যারা সমসময়ে কিংবা তার পরে সেই পুথিকে অনুসরণ করে, তার একটি বা একাধিক প্রতিলিপি বানিয়েছেন, তার মধ্যেও প্রায়শই থেকে গেছে পার্থক্যসেই পুথি অবশ্যই গবেষণার বিষয় কিন্তু জনে-জনে পাঠক সেই পুথি সংগ্রহ করতে পারবেন না কখনোইফলে ছাপাখানা সেই সুযোগ এনে দিয়েছে সাধারণ পাঠকের কাছে

Puthi example
  প্রাচীন পুথির দৃষ্টান্ত

একটি বইয়ের মুদ্রিত নির্দিষ্ট পরিমাণ ‘কপি’ পাঠক বইবাজারে নিঃশেষিত হওয়ার আগে ব্যক্তিগত সংগ্রহে আনতে পারেনএমনকি ফুরিয়ে গেলে সেই বই আবার ছাপা হতে পারে পাঠকের চাহিদার কথা মাথায় রেখেইকিন্তু একজন পাঠক কী কেনেন? বই কেনা মানে অধিকাংশের কাছে আজও বিষয়বস্তু কেনাএ-বিষয়ে কার লেখা— সেটাই বিবেচ্য হয় প্রধানতআমি যদি একজন লেখককে পছন্দ করি, তবে তার বইয়ের প্রোডাকশন যেমনই হোক-না-কেন, কিনব— এই মানসিকতাই বেশিরভাগ পাঠকের থাকেঅন্যদিকে এমনও হতে পারে, বিশেষ কোনও বই সম্পর্কে জেনে পাঠক কিনতে গেলেন তার বিষয়বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হয়েএর সঙ্গে যদি বইটির ছাপা ভালো হয়, অন্তত পড়তে অসুবিধে না-হয়, ঠিকঠাক পাতা দেওয়া থাকে, বাঁধাই ভালো হয়, তাহলেই পাঠক খুশিএর বাইরে, অন্তত বাংলা বইয়ের পাঠকের মধ্যে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন, যিনি বইটা লেখক বা বিষয়বস্তুর জন্যে নয়; কিনছেন শুধুমাত্র তার মুদ্রণনৈপুণ্য, বাঁধাই, বিন্যাস, প্রচ্ছদ, অর্থাত্‍ সামগ্রিক বই-ভাবনা দেখে। 

download - 2023-02-07T212703.756

ভালো বই কাকে বলব? যে-বইটি লেখকের মুনশিয়ানা এবং বিষয়বস্তুর দিক থেকে শুধুমাত্র অভিনব, নাকি যে-বইটি লেখক, বিষয়বস্তু এবং বই নির্মাণ এই সব দিক থেকেই কেনবার উপযুক্ত? বই, যেহেতু প্রকৃত-প্রস্তাবে একটি পণ্যবিশেষই; তাই তাকে যখন আমি দাম দিয়ে কিনছি, পাঠক হিসেবে আমার প্রত্যাশা থাকবে, সেটা যেন ভালো বই হয়ভালো কোন কোন দিক থেকে? লেখকের দিক থেকে তো নিশ্চয়ই, বিষয়বস্তুর অভিনবত্ব ব্যাপারটা আপেক্ষিকএকটি কবিতা-সংকলনে বা কোনও ছোটগল্প সংকলনে সুনির্দিষ্ট বিষয় না-ও থাকে পারে; আবার যদি বইটি প্রবন্ধের বই হয়, সেক্ষেত্রে বিষয়ের দিকটা মুখ্য হয়ে উঠতে পারেএই দুটি বিষয় ছাড়া নিশ্চয়ই আমরা চাইব, বই সুমুদ্রিত হোকযেন তার প্রতিটি বর্ণ, বিশেষত যুক্তবর্ণ, যতিচিহ্ন, স্পেস, স্পষ্ট বোঝা যায়হরফের আকার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়এ-প্রসঙ্গে মনে পড়ে যায় রিফ্লেক্ট পাবলিকেশন প্রকাশিত শরত্‍ রচনাবলী, রমেশ রচনাবলী এবং অন্যান্য বইপত্রের কথাএত ছোট আকারে তার বর্ণগুলো কম মার্জিন রেখে, তুমুল ঘেঁষাঘেসি করে ছাপা হয়, পাঠক হিসেবে রীতিমতো বেগ পেতে হয়বয়স্ক মানুষ হলে তো কথাই নেই

তাহলে বড় আকারের বর্ণেই কেল্লা ফতে হয়ে যাবে? নিশ্চয়ই নয়বই অনুযায়ী, বইয়ের বিষয় অনুযায়ী বর্ণ তার মাপ তৈরি করে নিকজয় গোস্বামী প্রণীত কৃষ্ণেন্দু চাকী চিত্রিত ‘হরিণের জন্য একক’ যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা জানেন এই বইটির সামগ্রিক সজ্জাই নির্মাণ করা হয়েছিল সুচিন্তিতভাবেআপাত দৃষ্টিতে অশিক্ষিত-অর্বাচীনের চোখে প্রায় অ্যালবামের মতো একটি বই তার প্রচ্ছদ থেকে বাই-কালারের মুদ্রণ—সমস্তকিছুর মধ্যেই পরিকল্পনার ছাপ স্পষ্টহরফের মাপ ছোট-বড় হয়েছে, আকার বদলেছে কবির বক্তব্য অনুযায়ীHoriner jonyo Ekok

যাঁরা এই বইটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাসেট বা সিডি শুনেছেন, তাঁরা আন্দাজ করতে পারেন, কণ্ঠস্বরের ওঠানামার বিষয়টা মাথায় রেখে এই পরিকল্পনা করেছিলেন গ্রন্থ নির্মাতা, নিশ্চয়ই সেখানে জয় গোস্বামীর সঙ্গে কৃষ্ণেন্দু চাকীর মতামতও নেওয়া হয়েছিলসমস্ত কবিতাগুলোর হরফ কালো কালিতে ছাপা, আর কৃষ্ণেন্দু চাকীর ইলাস্ট্রেশন গাঢ় লালেলাল-কালোর এই সহাবস্থান মুদ্রণ-বিষয়ে বিশেষ না-জানা পাঠকের চোখেও চিন্তার ব্যাপ্তি জাগিয়ে তুলবেকেননা, বইয়ের বিষয়, তার বিন্যাসের সঙ্গেই ছাপার ধরনটি সম্পর্কিত

Horiner jonyo Ekok
‘হরিণের জন্য একক’, জয় গোস্বামী প্রণীত কাব্যগ্রন্থ। কৃষ্ণেন্দু চাকীর ইলাস্ট্রেশন। কবিতার অন্তর্গত বিষয় অনুযায়ী হরফ ছোট-বড় হয়েছে। পুরো বইটির বিষয়বস্তু বাই-কালারে ছাপা

অধিকাংশ বই ছাপা হয় সাদা-কালোয়; কিন্তু হরফে কালো কালির টোন কমালেই ধূসর রঙের এফেক্ট তৈরি হয় যার সঙ্গে সাদা আর কালোর সামঞ্জস্য তৈরি হয়লিটল ম্যাগাজিন ‘আচমন’-এর প্রকাশনা থেকে বিজলি সরকারের সম্পাদনায় সত্যজিত্‍ চৌধুরীর ‘চিত্রকর রবীন্দ্রনাথ’ প্রকাশিত হয়েছে সাদা-কালো-ধূসরের এই সহাবস্থানকে ব্যবহার করেই। 

Rabindranath book cover
চিত্রকর রবীন্দ্রনাথ বইয়ের মুদ্রণে সাদা পাতায় কালো ও ধূসর রঙের ব্যবহার

‘অনুবর্তন’ প্রকাশিত গৌতম বসুর কবিতাপুস্তিকা ‘রসাতল’ যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের নিশ্চয়ই মনে আছে লেটার প্রেসে ছাপা সেই অসামান্য, নির্ভার প্রচ্ছদের কথাসাদা পাতায় একটু ওপর ঘেঁষে বইয়ের নাম আর নীচে কবির— শুধু এইমলাটের কাগজ খুব একটা শক্তপোক্ত নয়কবিতাগুলো ন্যাচারাল শেডে মুদ্রিতসেই পাতাও কালক্রমে হলুদ হয়ে যায়এই বইয়ের পাশে মনে করতে ইচ্ছে করছে তাঁরই পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত কবিতা-পুস্তিকা— ‘মঞ্জুশ্রী’ভাষালিপি প্রকাশিত এই বইটির কোনও মলাট নেইপ্রচ্ছদ আসলে নামপত্র বা টাইটেল পেজকবিতাবই, কবির নাম এবং নীচে প্রকাশনের নাম ও ঠিকানা লেখামনে পড়বে ‘অতিশয় তৃণাঙ্কুর পথে’ বইটির কথাওগৌতম বসু অত্যন্ত সচেতনভাবেই এভাবে বই করবার কথা চিন্তা করতেনতার বইয়ের বিন্যাস, মুদ্রণ, পাতা, প্রচ্ছদ–প্রতিটি বিষয়েই তাঁর সুচিন্তিত ভাবনা ছিল

Manjushree Gautam Basu
‘মঞ্জুশ্রী’— অফসেটের কাজ। মলাট-বিহীন ১৬পাতার পুস্তিকা। শেষ পাতায় কোনো কবিতা রাখা হয়নি।

মণীন্দ্র গুপ্ত তাঁর প্রথম বই ছাপাবার জন্যে এমন প্রেস খুঁজে বার করেছিলেন, যারা শুধু বাসের টিকিট ছাপতগড়িয়াহাটে অবস্থিত সেই প্রেসে গিয়ে মণীন্দ্র গুপ্ত প্রশ্ন করেছিলেন, তাদের ‘কেস’ আছে কি না এবং সেই কেসে হরফ সাজানোর বিষয়টি পারেন, এমন কেউ আছেন কি না একটুকুই তাঁর কাছে যথেষ্ট ছিলকর্মস্থলের কাজ সেরে মণীন্দ্র গুপ্ত প্রেসে পৌঁছতেন; একটু করে কম্পোজ হতবইটি ছাপা হয় ট্রেডল মেশিনেবইয়ের নাম— ‘নীল পাথরের আকাশ’পুরো কাজটিই হয় মণীন্দ্র গুপ্তের তত্ত্বাবধান ও উপস্থিতিতেমণীন্দ্র গুপ্তকে যাঁরা প্রেসে গিয়ে কাজ করতে দেখেছেন, তাঁরাই সাক্ষ্য দেবেন এ-বিষয়ে যে, মণীন্দ্র গুপ্ত চাইতেন কম খরচে কীভাবে রুচিশীল প্রোডাকশন করা যায়তাঁর এই মনোভঙ্গি অনুসরণ করে পরবর্তী সময়ে লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশনা থেকে একাধিক উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছেসীমিত পুঁজির মধ্যেও কীভাবে সুচারু মুদ্রণ, সুস্থিত বাঁধাই, যথাযথ প্রচ্ছদসহ একটি বইকে আনা যায় পাঠকের কাছে, এসব নিয়ে ভেবেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মীরাঅর্থাত্‍ মণীন্দ্র গুপ্ত হোন কিংবা গৌতম বসু, একটি বিষয় পরিষ্কার, তাঁরা শুধু লিখেই দায়িত্ব শেষ না-করে বইটি হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি খুঁটিনাটির সঙ্গে জুড়ে থাকতে চাইতেনপাঠকের কাছে তাই এঁদের বই পড়া মানে শুধুমাত্র লেখাটুকু নয়; তাঁদের সেই লেখা উপস্থাপন করবার রীতিনীতিও উল্লেখযোগ্য বিষয় হিসেবে ধরা দেয় উদাহরণ আরও আছে, সীমিত পরিসরের কারণে আপাতত এখানেই এ-প্রসঙ্গ শেষ করা হল

Manindra Gupta Book
মণীন্দ্র গুপ্তের প্রথম কবিতা বই ‘নীল পাথরের আকাশ’-এর প্রচ্ছদ

নিউজ প্রিন্টের পাতায় প্রকাশিত হত দেবদাস আচার্য সম্পাদিত ‘ভাইরাস’, মাত্র চার পাতাসেই চারটি পাতা কতটা ধারালো ছিল— পাঠকমাত্রেই জানতেনআজকের লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদকেরা অনেকেই সাধারণ সংখ্যা প্রকাশ করতে চান নাঅনেকক্ষেত্রে আবার রয়ে যায় নির্বাচনের অভাব‘ভাইরাস’ সেখানে একেবারে আনকোরা, নতুনদের লেখাই ছাপতলেটার প্রেস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে পত্রিকা-প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেছে— এমন ইতিহাসও আছেপূর্ব মেদিনীপুর থেকে প্রকাশিত, অর্ণব পণ্ডা সম্পাদিত কবিতার কাগজ ‘রৌদ্রছায়া’-র যাত্রা থেমে যাওয়ার কারণ তার শেষ-মলাটে দেওয়া আছে: 

“হয়তো আর বেরুবে না রৌদ্রছায়াএবং সম্ভবত লেটার প্রেস থেকে প্রকাশিত পৃথিবীর শেষ ছোটো পত্রিকাটি পাঠ করছেন আপনিকেননা, যে লেটার প্রেস থেকে এটি প্রকাশ হতো, এই সংখ্যা প্রকাশের পরই সেটি বন্ধ হয়ে যাবেআর লেটার প্রেস ছাড়া রৌদ্রছায়া? এখনো ভেবে ওঠা যায়নিপ্রায় পনের বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলতরুণরাই ছিল এই পত্রিকার প্রাণপোকা ও পাতার যে সম্পর্ক রৌদ্রছায়ার সঙ্গে তরুণ কবিদের ছিল সেই সম্পর্কআর ছিল বন্ধুত্বের অভিজ্ঞানএইসব সম্পর্কগুলো ফিকে হয়ে গেল কি না বোঝা যাবে এবারশাদা পাতাগুলি ধাতব আওয়াজ নিয়ে শেষবার ফুটে উঠছে বর্ণমালায়মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে একা সম্পাদক; বাইরে পৌষ মাসের গ্রামীণ বিকেল—তাতে হেলানো রয়েছে তার সাইকেলকয়েকটি পাখির কিচিরমিচির শুধু মিশে গেল শেষ মুদ্রণে…

সত্যি, আর বেরুবে না রৌদ্রছায়া?”

একজন পত্রিকা-সম্পাদক, যিনি নিজেও একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি, লেখকদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের সঙ্গে প্রেসের আত্মীয়তা, মুদ্রণের বিষয় কীভাবে অনায়াসে এক করে ভাবতে পারেন, এই সম্পাদকীয় তার মূর্ত উদাহরণ। 

little mag Roudrachaya
লেটার প্রেস থেকে ছাপা 'রৌদ্রছায়া'-র শেষ সংখ্যা।

বইপ্রকাশ বা বই কেনবার সবচেয়ে বড় মাহেন্দ্রক্ষণ বইমেলাপ্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের পর থেকেই বইপাড়ার বিভিন্ন প্রেস সরগরম হয়ে ওঠেপত্রিকা, প্রকাশক, কম্পোজিটর, প্রেসকর্মীদের রাতজাগা পরিশ্রমে প্রস্তুত হয়ে আসে বইবইপাড়ায় ইতিউতি গেলে খবর কানে আসে— কোন বই কোন প্রেস থেকে ছাপা হচ্ছেতাড়াহুড়োয় ছাপা বইয়ের ক্ষেত্রে অনেকসময়েই মুদ্রণপ্রমাদ থেকে যায়অফসেটের পরে এখন প্রিন্ট-অন-ডিমান্ডের সময়মুদ্রণজাত কোনও ভুল পরের ‘কপি’-তে সংশোধনের সুযোগ থাকেঅবশ্য কোনও ক্ষেত্রে যেনতেনপ্রকারেণ বইমেলায় আনা হয় তুমুল ভুলসহএতে ওই বিশেষ বইটি একজন মান্য লেখকের হলেও, বিষয়বস্তু মনোগ্রাহী হলেও সেই বই গ্রহণযোগ্য হয়-না ছাপার অতিরিক্ত ভুলের জন্যেশুধু বই নয়, পত্র-পত্রিকার ক্ষেত্রেও এই বিষয়টা জরুরিছাপার ভুল ন্যূনতম হলে, বা প্রায় না-থাকলে তখন সেই পত্রিকা বা বই কিনতে পাঠক দেরি করেন নাবানান ভুল, ছাপার ভুল, অপরিচ্ছন্ন ছাপা, মার্জিনের ভুল ব্যবহার একটি বইকে পাঠকের থেকে দূরে ঠেলে দিতে পারে অনায়াসেশুধুমাত্র মেলায় বিক্রির জন্যে অযত্নে ছাপা ও বাঁধাই করা বই কোনও পাঠক ও ক্রেতা কিনবেনই বা কেন? ধরা যাক, মুদ্রণপ্রমাদ এমন হল, পাঠক বুঝতে পারলেনযদি সেই লেখ্যবস্তুর প্রথম রূপটিতেই পাঠক এমন ভুল দেখতে পান, তাঁর মনে হয়—এখানে তো এই বানান এইটা হবে, সে-ভুল সংশোধিত হয়ে যায়কিন্তু যদি এমন হয়, ভুল এমন হল তাকে সংশোধন করা গেল নাভুল যে হয়েছে, সেটাই বুঝতে পারা গেল না! সমস্যাটা আরও বাড়ে

আরও পড়ুন- মলাট কাহিনি: তিনটি কবিতা

গৌতম বসুর ‘অন্নপূর্ণা ও শুভকাল’-এর ‘সংবর্তিকা’ কর্তৃক প্রকাশিত সংস্করণ যাঁরা দেখেছেন, লক্ষ করেছেন নিশ্চয়ই— একাধিক জায়গায় কবি নিজেই নীল কালিতে সংশোধন করে গেছেন ছাপার ভুলপ্রতিটি বইতেই এই সংশোধন করেছিলেন কি না, সেই তথ্য অবশ্য অর্বাচীন পাঠকের কাছে নেইশুধু নিজের বইতে নয়, তাঁর সম্পাদিত ‘আদম’ থেকে প্রকাশিত দেবদাস আচার্যের ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’-র প্রথম সংস্করণের (প্রথম প্রকাশ, বইমেলা ২০০৮) কিছু জায়গায় সংশোধন রয়েছেবইটির শেষে ‘আচার্যর ভদ্রাসন’ শিরোনামে যে গৌতমের নিবন্ধটি রয়েছে, সেখানে ‘কবিতায়’ শব্দটি কেটে ডানদিকের মার্জিনে ‘কতিপয়’ করেছেনসংশোধনের আগে লাইনটি ছিল: “কবিতায় উঁচু প্রাচীর টেনে নামিয়ে এনেছিলেন দেবদাস আচার্য,…”, সংশোধিত হবার পর লাইনটি হল: “কতিপয় উঁচু প্রাচীর টেনে নামিয়ে এনেছিলেন দেবদাস আচার্য…”, কিন্তু ভুল শব্দটি ধরে যদি কেউ বাক্যটি পড়েন, তাহলেও একটা অর্থ তৈরি হয়এই ভুল পাঠককে প্রতারণা করে, ঠকায়গৌতম বসু যদি নিজে না সংশোধন করতেন, এই ভুল ধরা যেত না অন্তত ওই সংস্করণটিতেআশার কথা, বইটির নতুন সংস্করণ হয়েছে এবং নিশ্চয়ই ভুলগুলো আর নেই

Printing mistake Example1
গৌতম বসু সম্পাদিত দেবদাস আচার্যের ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’-র সম্পাদকের বয়ানে ছাপার ভুল সংশোধন করেছেন গৌতম বসু নিজেই।

শুধু বইয়ের ভেতরে নয়, ভুল থেকে যায় বইয়ের স্পাইনে, এমনকী সূচিপত্রের মধ্যেওসেটা সহজেই পাঠকের চোখে পড়ে এবং প্রত্যাশিতভাবেই বিষয়টা পাঠকের কাছে পীড়াদায়ক হয়ে ওঠেযেমন, জানুয়ারি ২০২০-তে অনুষ্টুপ থেকে প্রকাশিত  বই ‘আইয়ুবের রবীন্দ্রচর্চা’-র স্পাইনে লেখা রয়েছে ‘আইয়ুবের বরীন্দ্রচর্চা’সপ্তর্ষি প্রকাশন থেকে জানুয়ারি ২০১৬-তে অনিমিখ পাত্রের কবিতাবই ‘পতনমনের কুর্সি’ প্রকাশিত হয়সেই বইয়ের স্পাইনেও অনিমিখ পাত্রের জায়গায় ছাপা হয়েছে ‘অনমিখ পাত্র’এতদিনে নিশ্চয়ই বই দুটির প্রমাদ সংশোধিত হয়ে গেছে আশা করা যায়

misprint on spine
স্পাইনে ছাপার ভুল- তিনটি দৃষ্টান্ত

ওই জানুয়ারি ২০১৬-তেই সপ্তর্ষি প্রকাশন থেকে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয় প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের ‘কবিতা সমগ্র’তার প্রথম খণ্ডের সূচিতে প্রণবেন্দুর কাব্যগ্রন্থ ‘নিজস্ব ঘুড়ির প্রতি’ হয়েছে ‘নিজস্ব ঘুড়ি’, ‘শুধু বিচ্ছিন্নতা নয়’ কাব্যগ্রন্থর নাম হয়েছে ‘শুধু বিচ্ছিন্নতা’, ‘হাওয়া, স্পর্শ করো’ হয়েছে ‘হাওয়া স্পর্শ কর’দ্বিতীয় খণ্ডের সূচিতেও ছাপার ভুল অব্যাহত‘অন্ধ প্রাণ, জাগো’ হয়েছে ‘অন্ধ প্রাণ জাগো’, ‘বাধা পেরোনোর গান’ হয়েছে ‘বাঁধা পেরনোর গান’, ‘রৌদ্রের নখরে’ হয়েছে ‘রৌদ্রের নখর’খুঁটিয়ে পড়লে ভেতরেও ছাপার ভুল চোখে পড়েঅর্বাচীন পাঠকের পক্ষ থেকে এই প্রত্যাশাও থাকবে— নতুন মুদ্রণ যদি হয়ে থাকে, বাংলা ভাষার এই মান্য ও শিরোধার্য কবির কবিতা-সমগ্রে থাকা এইসব ভুলগুলি নিশ্চয়ই এতদিনে সংশোধিত হয়ে গেছেসম্প্রতি অর্বাচীন পাঠকের সংগ্রহে এসেছে ‘গাঙচিল’ থেকে প্রকাশিত সন্দীপ দত্তের ‘বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিবৃত্ত’(১৮১৮—’৯৯)বইটির প্রথম প্রকাশ জানুয়ারি ২০১২জানুয়ারি ২০২২-এ তার তৃতীয় মুদ্রণেও স্পাইনে লেখা রয়েছে— ‘বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিবত্ত’ছাপার ভুল একজন পাঠককে কতখানি বিব্রত করতে পারে তার উদাহরণ ভার্চুয়াল মিডিয়ার অন্তর্গত পাঠকদের গড়ে তোলা বিভিন্ন গ্রুপে দেখা যায়বানান ও ছাপার অতিরিক্ত ভুল পড়বার গতি রুদ্ধ করে দেয়, পাঠকের মনে বিরক্তির উদ্রেক ঘটায়সংশোধিত প্রুফ পড়ে থাকে, শেষ মুহূর্তের ভুলগুলো সংশোধন হয়-না তাড়াহুড়োয়; সেই বই বাজারে আসে বিক্রির জন্যে— ব্যক্তিগত সূত্রে এমন কথা প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায়বিষয়টি দুঃখের হয় তখন, যখন খেটেখুটে করে দেওয়া সংশোধন মূল বইতে যায় নাসম্পাদক, লেখকের সঙ্গে  প্রকাশকের দূরত্ব তৈরি হয়তবে সমস্যা শুধুমাত্র প্রকাশকের নয়;  কখনও লেখক-সম্পাদকের পরিশ্রমেও ঘাটতি থেকে যায়। 

Misprint in Index
প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের 'কবিতা সমগ্র ১'-এর সূচিপত্র। প্রথম প্রকাশ: জানুয়ারি ২০১৬।
Misprint in Index2
প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের 'কবিতা সমগ্র ২'-এর সূচিপত্র। প্রথম প্রকাশ: জানুয়ারি ২০১৬। প্রকাশনা: সপ্তর্ষি প্রকাশন।

অর্বাচীন পাঠকের ব্যক্তিগত অশিক্ষা তুমুলতাই সে বই-প্রস্তুতির অন্দরমহলে অনধিকারী হিসেবে প্রবেশ করবার ধৃষ্টতা দেখায় কখনো-কখনোকাছের বন্ধুদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে জানবার চেষ্টা করে, ও.সি.আর অর্থাত্‍ Optical Character Reader-এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা কতটুকু? তার ফলে কীভাবে কম্পোজিং-এর ক্ষেত্রে সময় ও খরচ— দুইই বেঁচেছেদুশো পেজ কম্পোজ করতে যদি এক সপ্তাহ লাগে, ও.সি.আর পদ্ধতিতে খুব কম সময়ে, নামমাত্র খরচে সেটা করে ফেলা যায়তাহলে কি মানবসম্পদকে খেয়ে নিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা? কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পক্ষে এমন অনেককিছুই ধরা সম্ভব নয়, যা একজন সতর্ক মানুষ ধরে ফেলতে পারেএকটি শব্দের দৃশ্যরূপ এই পদ্ধতিকে শেখানো থাকেধরা যাক যুক্তবর্ণগুলোর কথাযন্ত্র জানে, যেমন: ক্ত, প্ত, ক্র; তবে এগুলো তার কাছে বর্ণ নয়, ক্যারেক্টর বলাই সঙ্গতপুরোনো টাইপ ফেসের ক্ষেত্রে এগুলোকে পড়তে অনেক সময়েই যন্ত্রের সমস্যা হয়ে থাকেফলে ক্র হয়ে যেতে পারে ত্র বা এপুরোনো হরফ যোজনায় ধরা যাক, ফ-য়ে হ্রস্ব-উ লেখা হচ্ছে, সেখানে হ্রস্ব-উ একটু ডানদিক চেপে পড়তএমন হতে পারে ও.সি.আর তাকে ফৃ হিসেবে গ্রহণ করলবসিয়ে নিল অতিরিক্ত কোনও কমাযারা প্রত্যক্ষভাবে ও.সি.আর ব্যবহার করেন, তাদের সঙ্গে কথা বললে এবং সম্ভব হলে হাতে-কলমে চাক্ষুষ করলে বিষয়গুলো কিছুটা জানতে পারা যায়প্রযুক্তির সুবিধে নিতে গিয়ে অতিরিক্ত যন্ত্র-নির্ভরতা থেকে ভুল থেকে যায়সেই ভুলও সংশোধিত না-হয়ে অনেকসময় চলে আসে পাঠকের দরবারেস্পেসের সমস্যাও হতে পারে কখনও— বিশেষত একই পাতায় একাধিক কলাম থাকলেব্যবহারকারীরা জানাচ্ছেন, যদি একই পাতায় দুটি কলাম থাকে, তাহলে তার ও.সি.আর দু’বার আলাদা করে করতে হবেনইলে পুরো পাতা স্ক্যান করে নিলে মাঝের অংশটা স্পেস হিসেবে ধরে, পুরোটাকে একটা কলাম ধরে নিলে ঘটতে পারে মহাবিপত্তিকাজেই মনোযোগ প্রয়োজন।

১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে লেখা একটি খোলা চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছেসেই চিঠির প্রসঙ্গ সামনে রেখে আপাতত এই অনিঃশেষ বিষয়ের ইতি টানা যাবেচিঠিটি লিখেছেন শুদ্ধব্রত দেব, প্রতিক্ষণের নির্বাহী সম্পাদক— পাঠকের প্রতি‘একটি জরুরি স্বীকারোক্তি ও একটি প্রতিশ্রুতি’ শিরোনামে তিনি লিখেছেন: 

“প্রতিক্ষণ মনে করে বইয়ের সৌকর্যের সঙ্গে নির্ভুল মুদ্রিতপাঠও বইনির্মিতির বনিয়াদি শর্তপ্রতিক্ষণ এটাও মনে করে প্রকাশনাক্ষেত্রে যথেষ্ট সুনাম অর্জনের পরেও প্রমাদবিহীন মুদ্রণের ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি সফল হতে পারিনিএটি আমাদের বিনয় নয়, অকপট স্বীকারোক্তিএর জন্য আমরা আত্মসমালোচনা করতে বাধ্য, কারণ একজন পাঠক যখন বই কেনেন, তখন একটি নির্ভুল পাঠ পাওয়া তাঁর অধিকারের মধ্যে পড়েতা না পাওয়া মানে তাঁর সেই অর্জিত অধিকার খর্ব হওয়া”…

  নির্ভুল মুদ্রণ নিয়ে প্রতিক্ষণের বার্তা

কেন এই কথা লিখছেন, কেননা এ-বছর বইমেলায় ‘প্রতিক্ষণ প্রকাশিত একটি বইয়ে ‘গুরুতর কিছু মুদ্রণপ্রমাদ’ চোখে পড়ায় তাঁরা প্রকাশনার পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আর্থিক ক্ষতি সত্ত্বেও বইটির প্রথম মুদ্রণসংখ্যা(১০০০)-র প্রত্যেকটি বইপাড়া তথা বইবাজার থেকে তুলে নিতেশুধু তাই নয়, যাঁরা এই বই ইতিমধ্যে কিনে ফেলেছেন, প্রকাশনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—পুরোনো বইটির বিনিময়ে তাঁরা সংশোধিত বইটি তুলে দেবেনসত্যি কথা বলতে, এই চটজলদি চালাকির বাজারে পাঠকের কাছে দায়বদ্ধ থাকবার এর চেয়ে বড় উদাহরণ সম্প্রতি আর নেইপাঠক এই সিদ্ধান্তের সাধুবাদ জানিয়েছেনএকজন পাঠক এটাও চান, একটি প্রকাশনা তার সামগ্রিক বই নির্মাণের ক্ষেত্রে এমন যত্নবান হবেন, যাতে কেনবার সময় তাঁর মনে হয়—যে-পণ্য তিনি কিনছেন, যে-পরিমাণ মূল্য মুদ্রিত রয়েছে, বইটির লেখা-বিষয়-প্রকাশনা, একজন বইকর্মীর শ্রম, এই সবকিছু মিলিয়েই তা একান্তভাবে সঙ্গতিপূর্ণ

ঋণ: অরণি বসু, গৌরব কেতন লাহিড়ী

ছবি সৌজন্য: Flickr, Wikimedia Commons, লেখক
Rajdip Roy Author

শূন্য দশকের কবিতা জগতের সুপরিচিত নাম। কবিতা লেখার পাশাপাশি লিখেছেন নানা বিষয়ে প্রবন্ধ। জন্ম হাওড়ার শিল্পাঞ্চলে, পেশায় শিক্ষক। প্রকাশিত কবিতার বই- যদি না পুনর্জন্ম হয়(২০১২), ধানদূর্বার দেশ(২০১৪), জন্মান্ধের আলো(২০১৬), সূর্যের বিষাদ(২০১৬), বিশল্যকরণী(২০১৯), রামকৃষ্ণের মুখে গল্প(২০২১)। প্রকাশিতব্য সম্পাদিত বই: ফুল,পুতুল আর আগুন।দেবারতি মিত্র: নির্বাচিত সাক্ষাৎকার ও অগ্রন্থিত গদ্য সংকলন।

Picture of রাজদীপ রায়

রাজদীপ রায়

শূন্য দশকের কবিতা জগতের সুপরিচিত নাম। কবিতা লেখার পাশাপাশি লিখেছেন নানা বিষয়ে প্রবন্ধ। জন্ম হাওড়ার শিল্পাঞ্চলে, পেশায় শিক্ষক। প্রকাশিত কবিতার বই- যদি না পুনর্জন্ম হয়(২০১২), ধানদূর্বার দেশ(২০১৪), জন্মান্ধের আলো(২০১৬), সূর্যের বিষাদ(২০১৬), বিশল্যকরণী(২০১৯), রামকৃষ্ণের মুখে গল্প(২০২১)। প্রকাশিতব্য সম্পাদিত বই: ফুল,পুতুল আর আগুন।দেবারতি মিত্র: নির্বাচিত সাক্ষাৎকার ও অগ্রন্থিত গদ্য সংকলন।
Picture of রাজদীপ রায়

রাজদীপ রায়

শূন্য দশকের কবিতা জগতের সুপরিচিত নাম। কবিতা লেখার পাশাপাশি লিখেছেন নানা বিষয়ে প্রবন্ধ। জন্ম হাওড়ার শিল্পাঞ্চলে, পেশায় শিক্ষক। প্রকাশিত কবিতার বই- যদি না পুনর্জন্ম হয়(২০১২), ধানদূর্বার দেশ(২০১৪), জন্মান্ধের আলো(২০১৬), সূর্যের বিষাদ(২০১৬), বিশল্যকরণী(২০১৯), রামকৃষ্ণের মুখে গল্প(২০২১)। প্রকাশিতব্য সম্পাদিত বই: ফুল,পুতুল আর আগুন।দেবারতি মিত্র: নির্বাচিত সাক্ষাৎকার ও অগ্রন্থিত গদ্য সংকলন।

2 Responses

  1. দু’দিনে শেষ করলাম। লেখায় টান তো ছিলই , না হলে প্রথম দিনের পর আর বোধহয় পড়তাম না। প্রাসঙ্গিক সিরিয়াস বিষয়ের স্বাদু উপস্থাপনা। গবেষণাধর্মী কিন্তু অ্যাকাডেমিক একঘেয়েমি নেই। লেখককে আন্তরিক ধন্যবাদ এই গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com