Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

এক কাপ চায়ে আমি… পর্ব (৪)

মহুয়া রায়

জুন ২৯, ২০২৩

old darjeeling Glenary's bakery and Keventer's
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

আগের পর্ব পড়তে: পর্ব [] [] []

গতবারের গল্পে বলেছিলাম ‘রোটিওয়ালা’ দের কথা। এই রোটিওয়ালাদের চল চায়ের শহর দার্জিলিং-এ (Darjeeling) তখন শুরু হয়েছিল যখন পাউরুটি-খেকো সাহেবরা সব দার্জিলিংয়ে আসা যাওয়া এবং থাকা আরম্ভ করলেন। প্রত্যেক টি এস্টেটে (tea estate) এই কাজে একজনকে নিয়োগ করা হত। এই রোটিওয়ালারা দার্জিলিং-এর কাছাকাছি যেকোনও শহরে যেতেন, মাংস ও অন্যান্য মুদিখানার জিনিস কিনে এবং তার সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ পাউরুটি কিনে দার্জিলিং টাউনে ফিরতেন। এই ছিল তাদের কাজ। এদের প্রচুর পরিশ্রম ও ছোটাছুটিরকরতে হত কারণ এখনকার মতো এত ভালো রাস্তা তখন দার্জিলিং শহরে তৈরিই হয়নি এবং এটা ছিল তাদের রোজেকার রুটিন। এই সময় ভাদো সাহেব গ্লেনারি (Glenary’s) নামের একটি বাড়িতে একটা রমরমা বেকারি খুললেন। নাম দিলেন – ‘ভাদোস বেকারি’। 

এইবার গল্প জমে গেল। ভাদো সাহেব খুব ভালো গান গাইতেন আর তার সঙ্গে ইতালিয় পদ্ধতিতে পাউরুটি, কেক ও পেস্ট্রি বানাতেন। সকালে বেকিং আর বিকেলে নিয়াপলিটান প্রেমের গান। কিছুদিন এই সব নিয়মে চলার পর বেকারি দুর্দান্ত চলতে শুরু করল ও রোটিওয়ালাদের কাজ কমতে লাগল। এইবার ভাদো সাহেব পড়লেন প্রেমে একজন তিব্বতি মহিলার। প্রেম নিবেদন এবং তারপর বিয়ে। এরপর পাঁচটি সন্তানের জনক হওয়ার বেশ কিছু বছর পরে ওঁর মন আবার ইতালির জন্য ব্যকুল হয়ে উঠল। ঠিক করলেন বেকারি বন্ধ করে চলে যাবেন ইতালি। ভাদো যখন এইসব নানা চিন্তা ভাবনা করছেন, তখনই দার্জিলিং-এর একটি সাহেবদের ক্লাবে স্টুয়ার্ডএর চাকরি নিয়ে এসে উদয় হলেন অ্যাডলফ প্লিভা সাহেব। জাতে জার্মান। ভাদোকে তখনও তিনি চেনেননা। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে  দার্জিলিং-এ ঘুরতে ঘুরতে প্লিভা সাহেবের হঠাৎ ভাদো সাহেবের সঙ্গে আলাপ ও বন্ধুত্ব। 

প্লিভা'স বেকারি

আমি যে সময়টার কথা বলছি সেটা খুব সম্ভবত ১৯০০ দশক। কেননা গ্লেনারিজ-এর গোড়াপত্তন নিয়ে যত তথ্য ঘাঁটাঘাটি করি সব জায়গাতেই একই কথা লেখা – ‘over 100 years old’ (একশো বছরের বেশি পুরনো)। কোনও সাল তারিখের উল্লেখ পাওয়া যায়না। প্লিভা সাহেব খুব শিগগির এই বেকারির ৭৫% শেয়ার কিনে ফেললেন। আর এই দেখে ভাদো সাহেব নিশ্চিন্ত মনে তার পরিবারকে নিয়ে পাড়ি দিলেন ইতালি। গল্পের আরও একটু বাকি। কিন্তু এতটা গল্পের পর চায়ের সঙ্গে টাও যে চাই। তাই আজকের রেসিপি তে আসি। প্লিভা সাহেব ছিলেন জার্মানির লোক তাই আজকের রেসিপি জার্মান ডোনাট (German doughnut) কিংবা প্লেন ডোনাট (plain doughnuts)। 

plain doughnut
প্লেন ডোনাট

উপকরণ:

ড্রাই ইস্ট- ১১/২( দেড়) চা চামচ
গরম জল- ১/৪ কাপ
অল্প গরম দুধ- ১ ১/২ (দেড়) কাপ
সাদা চিনির গুঁড়ো- ১/২ কাপ 
নুন- ১ চা চামচ
ডিম- ২টো
গলানো মাখন/ ঘি/ সূর্যমুখী তেল- ১/৩ কাপ
ময়দা- ৫ কাপ  
ডোনাট ভাজার জন্য তেল- ৩ কাপ

প্রণালী:

১. গরম জলে – ইস্ট মিশিয়ে ৫ মিনিট রেখে দেবেন যতক্ষণ ফেনা না ওঠে

২. একটা বড় বাটিতে ইস্ট এর মিশ্রণ, দুধ, চিনি, নুন, ডিম, তেল আর ময়দা ভালো করে মিশিয়ে নেবেন। কাঠের হাতা ব্যবহার করলে ভালো হয়। এইটা এইভাবে মাখতে হবে যেন মাখা মিশ্রণটা বাটিতে আর না লাগে। খুব নরম করে লুচির আটা মাখলে যেমন হয়ে একদম সেইরকম নরম হবে। 

৩. একটা বড় জায়গায় (থালা হলেও চলবে) একটু একটু করে ময়দা ছড়িয়ে ৫-৬ বার ভালো করে ডলে মাখতে হবে ময়দার তালটাকে। তারপরে ছোট ছোট লেচি কেটে ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ২০ মিনিট পরে লেচিগুলো গোল টুকরো করে মধ্যে একটা ছোট গোলাকার ফুটো করে গরম তেলে ভেজে নামান। একটু হালকা চিনির গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন এপিঠ ওপিঠ করে। ডোনাট একটু ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পরিবেশন করুন। সন্ধেবেলা এক পেয়ালা গরম এক চায়ের সঙ্গে একটা দারুণ খাবার। 

আর গল্প অল্প বাকি…

ছবি সৌজন্য: Pixabay

Author Mohua Roy

মহুয়া এক কর্পোরেট সংস্থায় কর্মরত কাউন্সিলর। ভ্রমণ এবং নতুন নতুন খাদ্য-সংস্কৃতি সম্বন্ধে তাঁর অসীম আগ্রহ।

Picture of মহুয়া রায়

মহুয়া রায়

মহুয়া এক কর্পোরেট সংস্থায় কর্মরত কাউন্সিলর। ভ্রমণ এবং নতুন নতুন খাদ্য-সংস্কৃতি সম্বন্ধে তাঁর অসীম আগ্রহ।
Picture of মহুয়া রায়

মহুয়া রায়

মহুয়া এক কর্পোরেট সংস্থায় কর্মরত কাউন্সিলর। ভ্রমণ এবং নতুন নতুন খাদ্য-সংস্কৃতি সম্বন্ধে তাঁর অসীম আগ্রহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস