Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

শ্রীমান অমলের অভিষেক উপলক্ষে

বাংলালাইভ

ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩

article of Kinjal Patrika on Amal Chakrabarty
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

প্রবীণ সাংবাদিক, ছড়াকার, লেখক, সাহিত্যিক অমিতাভ চৌধুরীর লেখা এই নিবন্ধটি প্রকাশ পেয়েছিল কিঞ্জল পত্রিকার রজতজয়ন্তী বর্ষের ‘অমল চক্রবর্তী’ বিশেষ সংখ্যায় (Amal Chakrabarty)। পত্রিকার অনুমতিক্রমে নিবন্ধটি বাংলালাইভের পাতায় পুনঃপ্রকাশিত হল।

বিশেষ ধন্যবাদ কিঞ্জল পত্রিকার সম্পাদক, লেখক, বাংলালাইভের দীর্ঘদিনের শুভানুধ্যায়ী চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়…

অমিতাভ চৌধুরী (শ্রী নিরপেক্ষ)

অমিতাভ_চৌধুরীসেই অমল চক্রবর্তী (Cartoonist Amal Chakraborty), রোগা-পটকা এবং শ্যামলকান্তি, যৌবনেও কৈশোর সীমানা পার হয়নি, এইরকম যাকে দেখতে ছিল— এখন ‘কিঞ্জল’ তাকে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা করবে। এতে আমার আহ্লাদের কারণ অনেকগুলি। অমল সতীর্থদের বলেছেন, ব্যঙ্গচিত্রকর হিসাবে তাঁর সফল এবং বহু প্রশংসিত বৃত্তিগত জীবনের একেবারে প্রথম দিকের দরজায় নাকি আমিই ছিলাম। তা যদি সত্য হয়, প্রচুর গর্বের কারণ আছে। হ্যাঁ, এটা ঠিক, যুগান্তর পত্রিকায় তাঁকে প্রতিষ্ঠা দিয়ে দৈনিক সংবাদপত্রের জগতে তাঁকে দৃষ্টিগোচর করায় আমার হাত ছিল। কিন্তু সেই সামান্য সহায়কশক্তি যথাসময়ে তাঁর পাশে না থাকলেও অমল একদিন না একদিন নিশ্চিতই রসিক চিত্রশিল্পী এবং বিদ্রুপ-ভাষ্যকার ব্যক্তি হিসাবে তাঁর যথাযথ স্থান, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সুকুমার রায়চৌধুরীদের পাশে না হলেও একই বৃত্তিগোত্রের মধ্যে নিশ্চয়ই, একাই করে নিতে পারতেন। অমলের অব্যবহিত পূর্বসূরীদেরও অনেককেই আমি ঘনিষ্ঠভাবে চিনতাম, যেমন অদম্য রেবতীভূষণ, বালসুলভ কৌতুকে— মিটিমিটি-চোখ পি সি এল। কিংবা চণ্ডী লাহিড়ী, যাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় নমস্কারের দোরগোড়ায় থেমে গিয়েছিল। এঁদের মধ্যে অমল যখন আত্মবিকাশ করলেন, তখনকার চেহারাটির বর্ণনা দিয়েই এই রচনাটির শুরু।

রেবতীবাবু বা পি সি এল-এর কার্টুন আঁকার কৌশল, পরিহাস রস, কিংবা ভাষ্য রচনার ক্ষমতা এখানে আলোচ্য নয়। কিন্তু এঁদের আঁকার জন্য পাঠক অপেক্ষা করে থাকত, যেমন বাঁধা কোনও ‘কলামনিষ্টের’ জন্য ক্ষেত্রায়িত পাঠকদল তৈরি হয়।

Amal Chakrabarty
কার্টুনে অমল চক্রবর্তী; অলংকরণে অনুপ রায়

আমার সময়কার এঁদেরও আগে বাংলার ব্যঙ্গচিত্রকরদের একটি মহান ধারা দীর্ঘকালে জন্মলাভ করেছিল। সেই ধারায় পরশুরামের সহযাত্রী, তাঁর গল্পের অনবদ্য চিত্রকর যতীন্দ্রনাথ সেনকে উল্লেখ করেই স্মরণীয় নামের তালিকায় প্রধানতম বলা যায়, কৌতুক রচনার মুকুটমণি সুকুমার রায়ের (চৌধুরীর) উজ্জ্বল পাদপ্রদীপে। তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোরও প্রখ্যাত চিত্রকর, বা ‘ইলাস্ট্রেটর’ ছিলেন সত্য, (এদেশে ‘লিথো প্রিন্টিং-এর জন্মদাতা হিসাবেও তাঁকে সম্মান দিয়েছে তৎকালীন বঙ্গসমাজ) কিন্তু উপেন্দ্রকিশোরের মধ্যে সুকুমারের তুলনীয় পরিহাসচাতুর্য কখনও দেখা যায়নি। আজগুবি রসের কবিতা এবং তার সঙ্গে কৌতুকী আঁকার যে দৃষ্টান্ত তিনি তৈরি করেছিলেন, বিশ্বের সেরা শিশু সাহিত্যেও তার সমতুল্য শিল্পকর্ম পাওয়া সম্ভব নয়। কল্পনার অসম্ভাব্যতায়ও তাঁর সমকক্ষ কাউকে তো দেখছি না। কমপিউটারবাহী অদ্যকার ‘অ্যানিমেশান’-কলা যে সুযোগ সৃষ্টি করেছে, সুকুমার রায় তার হদিশ পেলে কী কাণ্ডই যে হত, তা চিন্তারও অতীত। সুকুমারের সঙ্গে আঁকার বংশানুক্রমে তাঁর পূর্বসূরী গগনেন্দ্রনাথেরও সম্পর্ক নেই, একালের পি সি এল, চণ্ডী লাহিড়ী, কিংবা অমল চক্রবর্তীরও কোনও আত্মীয়তা নেই।

আরও পড়ুন- ফিরে দেখা: অমল রোদ্দুর

তবু, জাতে এঁরা সকলেই এক। ট্যারা চোখে জীবন, সমাজ ও রাজনীতিকে দেখার একটা অদ্বিতীয় ক্ষমতা এঁদের মধ্যে বিদ্যমান। লেখায় যেমন শিবরাম চক্রবর্তী। এই বিরূপাক্ষ মনোভঙ্গির সঙ্গে কেউ কেউ অনেক ঝাল তেল লাগিয়ে ব্যঙ্গশ্লেষবিদ্রুপের সমাবেশে যে রচনা, লেখারই হোক আঁকায়ই হোক, সৃষ্টি করেন। অমলরা সেদিকে বেশি যাননি। তাঁরা আছেন হাস্যরসের দিকে ঝুঁকে। ভারতবর্ষে কার্টুন শিল্পে পিতামহতুল্য ‘শংকর’ আবার হাস্যরসের চেয়ে ব্যঙ্গভাষ্য দিয়ে চেনা রাজনীতির একটা অচেনা দিক আমাদের চোখে আনতেন। সেই ধারায়ই ‘কুট্টি’, কিংবা বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন শিল্পী ‘লুরি’, অথবা মধ্যবর্ত্তী এখন ভারতবর্ষের সেরা ভাষ্যকার ‘লক্ষণ’, যিনি অমলের মতোই টাইমস অব ইন্ডিয়ায় দৈনিক একটি অনুচিত্র পেশ করেন। ‘লক্ষণ’-এর বয়স আশির ঘরে পৌঁছেছে, তবু বিরূপাক্ষ ভঙ্গিটি অম্লান। 

Cartoonist Amal Chakraborty
কার্টুন জগতের কিংবদন্তি অমল চক্রবর্তী

বাঙ্গলা পত্রপত্রিকা থেকে হাস্যরসাত্মক রচনা এবং শিল্পকর্ম দুইই প্রায় প্রস্থান করেছে। অর্ধশিক্ষিত রোমান্টিসিজমের কবলে কবিতা তো রয়েছেই, আরও দুঃখের ব্যাপার গদ্যও ওই আবিলতায় আক্রান্ত। টিভি-তে দুই-এক রকমের রঙ্গরসের যে চেষ্টা হয় সে নিজেই নিজের কার্টুন। তার সঙ্গে আবার একটা গ্রাম্যতা ঢুকেছে, যা এককালে কলকাতার গৃহস্থ বাড়িতে অসভ্যতা, কিংবা চ্যাংড়ামির পর্যায়ে ফেলা হত। এখন সেটাকেই ব্যঙ্গরস বলে চালানো হচ্ছে।

এরই একটি ভদ্র, বিনয়ী প্রতিবাদ অমলের আঁকা। তাঁর সঙ্গে পূর্বসূরীদের যতখানি সৌহার্দ্য, সমকালীন কিংবা উত্তরসূরীদের সেরকম যোগাযোগ একেবারেই নেই, এইটি লক্ষণীয় এবং গৌরবের বিষয় তবে, এই সুযোগে বলা দরকার, ইতিপূর্বে আমার সম্পূর্ণ অগোচরে ছিল ‘কিঞ্জল’। এখানেও একটি বিশিষ্ট ব্যতিক্রম বিদ্যমান। এঁরা যে অমলকে সম্মান দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হবেন, এটাই স্বাভাবিক। আপাতত এঁরা এবং অমল, কতকাংশে আমিও একান্তই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত। তাতে যে পরিমাণ দুঃখ, সেই পরিমাণেই গর্ব বোধ করি।

 

 

*ছবি সৌজন্য: Amal Chakrabarty Facebook page

Banglalive.com Logo

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।

Picture of বাংলালাইভ

বাংলালাইভ

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।
Picture of বাংলালাইভ

বাংলালাইভ

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস