আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন: নিশিকান্তই কি দরজা খুললেন জটায়ুর? (প্রথম পর্ব)
স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে তাহলে কি হত্যা, ষড়যন্ত্র, পদে পদে বিপদের জাল বিছানো গোয়েন্দা কাহিনিতে নিশিকান্ত সরকারের মধ্যে দিয়ে খানিকটা হলেও হাস্য কৌতুক আনতে চেয়েছেন লেখক? তা যদি হয়, তাহলে বলতে হয় গোয়েন্দা কাহিনিতে কমিক রিলিফ এনে সত্যজিৎ (satyajit ray) কিছুটা পরীক্ষার রাস্তায় হাঁটতে চেয়েছেন। এক হিসাবে গোয়েন্দা কাহিনিতে এটা অভিনবও বটে। কারণ, স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের শার্লক হোমস বা আগাথা ক্রিস্টির খর্বকায় বেলজিয়াম গোয়েন্দা আরকুল পোয়ারোর কাহিনিতে এই ধরনের রসবোধের উদাহারণ তেমন নেই। অবশ্য ক্রিস্টির আরেক সৃষ্টি মিস মার্পেলের কথায় কৌতুকের ছোঁয়া আছে, তাঁর কথা-I don’t like abbreviation. -এর মধ্যে।
আর একটা কথা। দেখা যাচ্ছে সন্দেশের চাহিদা মেটাতে ১৯৬৫ সাল থেকে প্রদোষ চন্দ্র মিত্র তথা ফেলুদা এবং তস্য খুড়তুতো ভাই তপেশরঞ্জন মিত্র তথা তোপসের আবির্ভাব ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ কাহিনিতে। সন্দেশের ১৯৬৫ সালের ডিসে্ম্বর থেকে ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন কিস্তিতে প্রকাশিত হয় ফেলুদার প্রথম কাহিনি। তারপর একে একে সন্দেশে প্রকাশিত হল বাদশাহী আংটি, কৈলাশ চৌধুরির পাথর আর শেয়াল-দেবতা রহস্য। শেষ কাহিনিটা সন্দেশের ১৯৭০ সালের মে-জুন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: কে ছিলেন সত্যবতী? – ঈশা দাশগুপ্ত
ততদিনে বাংলা সাহিত্যে এই নবতম গোয়েন্দাটির কাণ্ডকারখানা নজরে এসেছে দেশ পত্রিকার প্রবাদপ্রতীম সম্পাদক সাগরময় ঘোষের। তাঁরই অনুরোধে সত্যজিৎ লিখলেন ‘গ্যাংটকে গণ্ডগোল’ যা ১৯৭০ সালের দেশ পূজাবার্ষিকীতে বেরলো। পরের বছর দেশ পূজাবার্ষিকীতে বার হল ‘সোনার কেল্লা’।
( এখানে বলে রাখা ভাল ফেলুদা কাহিনির সঙ্গে দেশ পূজাবার্ষিকীর সখ্যতা বজায় থাকে ১৯৯২ সালে ‘রবার্টসনের রুবি’ প্রকাশ অবধি। সব মিলিয়ে ১৯৭০ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত দেশ পূজাবার্ষিকীতে ১৮টা ফেলুদা কাহিনি প্রকাশিত হয়)
এখন যে প্রশ্ন এখানেই মাথাচাড়া দেয় তা হল, গোয়েন্দা কাহিনীতে জটায়ুকে আনার দরকারটাই বা কী ছিল? এখানেই নিশিকান্ত সরকার অনুঘটকের কাজ করেছেন বলাই যায়। অনুমান করা যায়, নিশিকান্ত সরকার চরিত্রটা সত্যজিতের মনে ধরেছিল। তাই বোধহয় আগের চার কাহিনিতে ফেলুদা যতটা চপল ছিল ‘গ্যাংটকে গণ্ডোগোল’ এ তা অনেক কমে গিয়েছে। আর ‘সোনার কেল্লা’ যখন লিখছেন তখন যেন আরও পালিশ করে নিশিকান্ত সরকারকেই জটায়ু করে ফেরত আনলেন। আর আনলেন শুধু নয়, গোয়েন্দা দলের সদস্যও করে ফেললেন।
ততদিনে বাংলা সাহিত্যে এই নবতম গোয়েন্দাটির কাণ্ডকারখানা নজরে এসেছে দেশ পত্রিকার প্রবাদপ্রতীম সম্পাদক সাগরময় ঘোষের। তাঁরই অনুরোধে সত্যজিৎ লিখলেন ‘গ্যাংটকে গণ্ডগোল’ যা ১৯৭০ সালের দেশ পূজাবার্ষিকীতে বেরলো। পরের বছর দেশ পূজাবার্ষিকীতে বার হল ‘সোনার কেল্লা’।
কিন্তু কেন এই নিশিকান্ত থেকে জটায়ুতে উত্তরণ? ক্ষেত্র গুপ্ত তাঁর ‘সত্যজিতের সাহিত্য’ বইতে লিখেছেন, আসলে সত্যজিৎ নিজেই ফেলুদা, তোপসে আর জটায়ুর মধ্যে নিজের সত্ত্বাকে ত্রিধা বিভক্ত করতে চেয়েছেন। ক্ষেত্রবাবু লিখছেন- দীর্ঘদেহী ফেলু মিত্তিরের তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, প্রচণ্ড ব্যক্তিত্ব,অসাধারণ পড়াশুনো, রহস্যভেদী কল্পনার মধ্যে স্রষ্টা আছেনই। যেমন শার্লক হোমসের মধ্যে লেখক আর্থার কোনান ডয়েল, প্যারি মেশনের মধ্যে লেখক স্ট্যানলি গার্ডনার, মিস মার্পেলের মধ্যে আগাথা ক্রিস্টি বা ব্যোমকেশের মধ্যে শরদিন্দু। সত্যজিতের কিশোর পাঠককে কমিউনিকেট করার যে আগ্রহ, তার ফলে তপেশের মধ্যে তার লেখক সত্তার খানিকটা জমা হয়েছে। এবং এই যে গোয়েন্দা গল্প লিখে সত্যজিতের জনপ্রিয়তা তার আত্মপ্রতিফলন জটায়ুতে। জটায়ুর সঙ্গে একাত্মতা, আবার তাঁকে নিয়েই হাসাহাসি। যেন এই মহান শিল্পস্ষ্টা এই রোমাঞ্চকর কাহিনিগুলি লিখতে লিখতে মনে মনে হেসে কুটিকুটি। খুব গম্ভীর হয়ে রহস্য কাহিনি লিখছেন, আবার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঠাট্টা করার একটা জায়গা খুঁজেও নিয়েছেন। ফেলুদা সিরিজে এক সত্যজিতের এই তিন রূপ। অর্থাৎ, নিশিকান্তকে এনে কৌতুকের যে পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন, তারই পূর্ণতা পায় ‘দুর্ধস দুশমন’ ‘হণ্ডুরাসে হাহাকার’ এর লেখকের মধ্যে। সত্যজিৎ বিশেষজ্ঞ লেখক প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত তাঁর ‘ফেলুদা রহস্য’ বইতে বিষয়টি প্রাঞ্জল করে বুঝিয়েছেন। প্রসেনজিৎ লিখছেন- ফেলুর ভক্তদের কেউ লিখে অনুযোগ করেছিল, জটায়ু আর তেমন হাসাতে পারছেন না। শুনে ভদ্রলোক বেজায় রেগে গিয়ে বলেন,আমি কি সং? ফেলু বলে, না না, আপনি সং হতে যাবেন কেন? সং, ভাঁড়, ক্লাউন, জোকার-এসব অত্যন্ত অপমানকর কথা। আপনি হলেন বিদূষক। ও ভাবে নিজেকে কল্পনা করে নিলে দেখবেন আর কোনো ঝঞ্জাট নেই।

অবশ্য লালমোহনবাবুকে নিয়ে নানা রকমের নির্দোষ মজা করতে ছাড়েননি ফেলুদাও। জটায়ুর লেখা নিয়ে ফেলুদার সেই বিখ্যাত কবিতা-
বুঝে দেখ জটায়ুর কলমের জোর
ঘুরে গেছে রহস্য কাহিনীর মোড়
থোড় বড়ি খাড়া
লিখে তাড়া তাড়া।
এইবারে লিখেছেন খাড়া বড়ি থোড়।
পাশাপাশি ফেলুদা ভালওবাসেন তাঁর এই সরল সাদাসিধে বন্ধুটিকে। তাই ফেলুদাকে ১৯৯০ এ এসে বলতে শুনি- আপনি আমি তো পরস্পরের পরিপূরক। সোনায় সোহাগা। অ্যারালডাইট দিয়ে আমার সঙ্গে সেঁটে রয়েছেন আপনি সেই সোনার কেল্লার সময় থেকেই। আমাকে ছাড়া আপনার অস্তিত্বই নেই অ্যান্ড ভাইসি ভার্সা।
নিশিকান্ত থেকে লালমোহনে উত্তরণ প্রসঙ্গ প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত তাঁর আরেক গবেষণাধর্মী বই ‘আতসকাঁচে ফেলুদা’তেও এনেছেন। প্রসেনজিৎবাবু লিখছেন- তদন্তের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে ফেলুদের সঙ্গে আলাপ হয়ে যাওয়া নিশিকান্ত চরিত্রটিকে পরে আবার নিয়ে আসার পরিকল্পনা লেখকের ছিল কি না জানার কোনো পথ নেই। তবে তেমন পরিকল্পনা থাকলেও কাজটি আর করা হয়নি। ভাগ্যিস লেখক আর নিয়ে আসেননি নিশিকান্তবাবুকে। তাহলে হয়ত বাংলা সাহিত্যের একটি অবিস্মরণীয় চরিত্রকে আমরা নাও পেতে পারতাম।
এখানে আরও একটা বিষয় প্রণিধানযোগ্য। ফেলুদা কাহিনিগুলো যেহেতু কিশোরপাঠ্য, তাই পুরোপুরি নীহাররঞ্জন রায়ের কিরিটী রায়-সুব্রত রায় জুটির মত প্রাপ্তবয়স্ক রহস্যের দিকে হাঁটেননি সত্যজিৎ। বরং শিশু ও কিশোর পাঠ্য হেমেন্দ্রকুমারের দিকে ঝুঁকেছেন সুকুমার তনয়। হেমেন্দ্রকুমারের বিমল-কুমার জুটির সঙ্গে ছিল রামহরি আর বিশাল বপুর ইন্সপেক্টর সুন্দর চৌধুরী যারা পাঠকদের কিছুটা কমিক রিলিফ দিত। কিন্তু সে অর্থে এরা বিমল-কুমার জুটির সদস্য নয়। কাহিনির প্রয়োজনে হেমেন্দ্রকুমার মাঝে মধ্যে এনেছেন মাত্র।

এখানে সত্যজিৎ আর এক ধাপ এগিয়েছেন। গ্যাংটকে গণ্ডগোল- এ নিশিকান্তকে আনলেও, তাকে ফেলুদা অ্যাণ্ড কোং এ সামিল করেননি। ‘সোনার কেল্লা’-তে ‘থ্রি মাসকেটিয়ার্স’ পূর্ণ করলেন লালমোহন গাঙ্গুলিকে দিয়ে। বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্যে একদম আধুনিক কৌতুকের সংমিশ্রণ তো সুকুমার তনয়ই করবেন। এতে সত্যিই আশ্চর্য্যের কিছু আছে কি?
বাঙালি পাঠকও তাই ভালবেসে ফেলেছে গড়পারের এথিনিয়াম স্কুলের বাংলার মাস্টার বৈকুন্ঠনাথের কবিতার ভক্ত এই নিখাদ ‘রহস্য রোমাঞ্চ ঔপন্যাসিক’-কে। এক হিসাবে তিনি তো বিগত শতকের মধ্যবিত্ত বাঙালিরও ছায়া। তাই প্রথমবার বিমানযাত্রায় ভয় পাচ্ছেন কী না জিজ্ঞেস করাতে জটায়ুর উত্তর তো যে কোনও কল্পবিলাসী মধবিত্তের কথা- কল্পনার দৌড় থাকলে মানুষ কোনও কিছু না করেও সব কিছু করে ফেলতে পারে। প্লেনে আমি চড়িনি। যদি জিজ্ঞেস করো নার্ভাস লাগছে কী না, তাহলে বলব-নট এ বিট, কারণ কল্পনার আমি শুধু প্লেনে নয়-রকেটে চড়ে মুনে পর্যন্ত ঘুরে এসেছি।
সবুজ অ্যাম্বাসাডরে চড়ে (ফেলুদার মতে মাদ্রাজি ফিল্ম মার্কা সবুজ, যদিও জটায়ুর ভাষায় গ্রিনটা বড় সুদিং) সারেগামা হর্ণ বাজিয়ে রজনী সেন রোডে জটায়ুর আসা, সেখানে নিউমার্কেটের কলিমুদ্দির দোকানের ডালমুট চানাচুর সহযোগে মকাইবাড়ির চা খেতে খেতে আড্ডা, ‘তাঁর একের পর এক প্রখর রুদ্রের গোয়েন্দা অ্যাডভেঞ্চার কাহিনির ‘সেলিং লাইক হট কচুরিজ’ হওয়া, সবই আসলে এক অন্য ফেলে আসা রোমান্টিকতার হদিশ দেয়।
তবে জটায়ূকে এত ভালবাসার পিছনে কিন্তু এক হাওড়ার আইনজীবীর ভূমিকাও কিছু কম নয়। সেই যে ১৯৭৪ সালে ‘সোনার কেল্লা’ আর ১৯৭৮ সালে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এ জটায়ূর ভূমিকায় অভিনয় করলেন, দর্শক সন্তোষ দত্তকেই রহস্য রোমাঞ্চ ঔপন্যাসিকের রিল রূপ ভেবে নিল। তাঁর ‘এটা আ-মা-র’ বলে লাফিয়ে জংবাহাদুরের ভোজালি নিতে আসা বা ‘উট কি কাঁটা বেছে খায়?’ বা ‘কোনও প্রশ্ন নয়-নো কোশ্চেনস’ তো বাংলা সিনেমার প্রাচীনতম প্রবাদবাক্যগুলোর অন্যতম। তাই মোহন আগাসে, রবি ঘোষ, অনুপকুমার,অনুপম খের এর মতো অভিনেতা বিভিন্ন সময়ে নানান ফেলুদা কাহিনীতে জটায়ু হলেও বাঙালি আজও সন্তোষ দত্তকেই জটায়ু ভাবে। এমনকি ১৯৮৮ সালের ৫ই মার্চ সন্তোষ দত্তের প্রয়াণের পর সত্যজিৎ বললেন- আমার জটায়ু চলে গিয়েছে, আমি আর জটায়ু চরিত্র করব না।

মঞ্চ আর একাধিক চলচ্চিত্রে দাপটের সঙ্গে দীর্ঘকাল অভিনয় করা এই নিপাট ভদ্রলোকেরও ছিল মার্ক টু অ্যাম্বাসাডর। আইনজীবীর কাজে বিন্দুমাত্র অবহেলা না করেও যে নিবেদিত প্রাণ শিল্পী হওয়া যায় তা সন্তোষ দত্ত দেখিয়ে গিয়েছেন।
জটায়ু প্রসঙ্গে লীলা মজুমদার লিখেছেন- আমাদের রোজকার জীবনের চেনাজানা মানুষদের মতো দুর্বলতা, অহংভাব আর দোষে গুণে মেশানো একজন দারুণ মানুষকে ফেলুদা-কাহিনীতে পেলে, আমরা অবশ্যই গলে যাই! তিনি হলেন রহস্য রোমাঞ্চ গল্প লেখক, ফেলুদার একমাত্র বন্ধু, ওঁদের প্রায় সব তদন্তের কাজে নিত্যসঙ্গী লালমোহন গাঙ্গুলী বা জটায়ু। রহস্যের ঘনঘটা বা মগজের ব্যায়ামের ফাঁকে ফাঁকে, অনাবিল হাসি সরসকার আশ্চর্য সিং-দরজাটা খুলে দেয় লালমোহনবাবুর অতি সাবলীল উপস্থিতি। জটায়ু যতই বাস্তব চরিত্র হোক না কেন,আমাদের চারপাশের ঝলমলে জীবনে ফেলুদা বা তোপসের চাইতেও বিরল মানুষ তিনি। লালমোহনবাবুর মতো মানুষ যত বাড়বে, পৃথিবীটা তত বেশি বাসযোগ্য হয়ে উঠবে। অমন অননুকরণীয় বাচনভঙ্গী, চাঁছাছোলা মেলামেশার প্যাটার্ন,ও রকম খাঁটি বন্ধুত্ব-আমাদের পানসে জীবনে নুন মিশিয়ে দেয়।
তাই মনে পড়ে সুমন চট্টোপাধ্যায়ের সেই বিখ্যাত গান-
গল্পে তিনি ভালই ছিলেন,
গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ শীত।
জটায়ুকে সঙ্গে নিয়ে
চলে গেলেন সত্যজিৎ।
তথ্যসূত্র:
সত্যজিৎ রায়-ফেলুদা সমগ্র
সুনীত সেনগুপ্ত-জটায়ু জিন্দাবাদ
ক্ষেত্র গুপ্ত-সত্যজিতের সাহিত্য
প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত- আতসকাঁচে ফেলুদা
প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত -ফেলুদা রহস্য
প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত- গল্প ভাবেন সত্যজিৎ
অশোক বক্সী-জটায়ুকে যেমন দেখেছি
দেবাশিস মুখোপাধ্যায়-সত্যজিৎ রায়-তথ্যপঞ্জি
ছবি সৌজন্য: livemint, Facebook,
মূলত শিল্প বাণিজ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সাংবাদিকতায় ব্যপ্ত বিগত তিন দশক। তবে সুযোগ পেলে ক্যামেরা নিয়ে বেড়িয়ে পড়া বা অন্য ধরনের লেখাতে প্রাণের আরাম খোঁজার চেষ্টাও চলে