টেবিল
যদি তুমি নেমে যাও, যদি তুমি ফিরে তাকাও, যদি তুমি বাড়াও আর এক পা, যদি তুমি তাকাও রাস্তার খোসার ওপারে, দেখবে প্রায় কেউ কোথাও যাচ্ছেই না প্লিজ কিছু মনে কোরো না এই পক্ষপাতে
(Poetry)
শক্তি ১
২০ মিটার মাটির নীচ থেকে
পৃথিবীর তাপমাত্রা ধ্রুবক হয়ে যায়
এবং তা দিন বা রাতের ওপর নির্ভর করে না।
২০ মিটারের পর থেকে প্রতি ৩০ মিটারে ১° C করে বাড়ে
এবং আভ্যন্তরীণ উষ্ণতার একটা জিওথার্মাল পাম্প
একে ফুঁড়ে ফেলতে পারে আর অবিচলিতভাবে এই শক্তিকে চিরকালের জন্য নিয়ে যেতে পারে। খোঁড়ো।
শক্তি ২
তারপর সেই তথাকথিত উষ্ণতার অনুভূমিক পাম্প
যা মাটির দেড় মিটার নীচ দিয়ে চলে যায়
সে জানে যে, যে পরিবর্তনই এর ভেতর দিয়ে আসুক না কেন
তাকে কীভাবে ব্যবহার করতে হয়
কিংবা বদলে যায় যেন বৃষ্টিভেজা মাটির মতো
অথবা কোনো এক ঋতুর তাপে উষ্ণ
ঠিক যে কোনটা তাতে কিছু এসে যায় না
যতক্ষণ না তুমি কাজে লাগাচ্ছ ওখানে যা আছে তাকে, যা ইতিমধ্যেই ভঙ্গুর।
জানালা
নীচে ডানদিকের জানালাটা বন্ধই থাকে
উপরে ডানদিকের জানালাটা খোলাই থাকে
বাথরুমের জানালা দিয়ে আলো ঢুকতে দেওয়ার জন্য
উপরে বামদিকেরটাও খোলা থাকে আলোর জন্য
কিন্তু নীচে বামদিকের অপর জানালাটা
সবসময় বন্ধই থাকে।
রাস্তার দিকের আর উঠোনের জানালাগুলো
বন্ধ থাকে, উপরের দিকে জানালাগুলো খোলা।
ফ্র্যাঙ্ক
এখানে আমি পাঁচ বছর ধরে বাস করছি
আর পাঁচ বছর ধরেই ওরা ডেকে চলেছে:
ফ্র্যাঙ্কি কি এখানে আছে? আমি ফ্র্যাঙ্কির সঙ্গে কথা বলতে চাই
কিন্তু ফ্র্যাঙ্ক কি আপনাকে বলেনি কোথায় আপনি ওকে খুঁজে পেতে পারেন প্লিজ ফ্র্যাঙ্ককে খুঁজে পেতে সাহায্য করুন আমায়
ওকে কি ওরা ট্রান্সফার করে দিয়েছে? – আমি
কী করে জানব? কী করে আপনি পাঁচ বছর যোগাযোগ ছাড়া ছিলেন?
কে আপনি? এতদিন কোথায় ছিলেন?

রেনাতা মোরেসি একজন কবি ও অনুবাদক। তাঁর জন্ম ইতালির পূর্ব উপকূলে আড্রিয়াটিক সাগর ঘেঁষা রেনাকাতি নামের এক ছোট্ট শহরে, ১৯৭২-এ। মধ্য ইতালির ওই এলাকারই গ্রামাঞ্চলে বেড়ে উঠেছেন এই কবি। তাঁর মা বাবা ছিলেন সাদাসিধে, খেটে খাওয়া শ্রেণির, যাঁরা অর্থাভাবে হাইস্কুল অবধি পৌঁছতে পারেননি।
এ পর্যন্ত তাঁর চারটি কবিতার সঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর মূল কবিতাগুলি ইতালিয়ান ভাষায় লেখা। কবিতা অনূদিত হয়েছে ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষায়। তাঁর লেখা একক এবং বহু-র মধ্যেকার অস্বচ্ছ সম্পর্ক নিয়ে কথা বলে। তিনি একে বলেন অ্যাবস্ট্রাক্ট লিরিসিজম। ২০১৫-য় ইতালিয়ান সংস্কৃতি মন্ত্রক তাঁকে অনুবাদের জন্য জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেছেন। তিনি একটি ছোটো প্রকাশনা সংস্থার জন্য ‘লাকুস্ত্রিন’ নামে একটি কবিতা সিরিজ সম্পাদনা করেন। তিনি তুলনামূলক সাহিত্যে পিএইচডি করেছেন এবং বর্তমানে পাদুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকান সাহিত্য নিয়ে গবেষণারত।

অনিমিখ পাত্র
অনিমিখ পাত্র-র জন্ম ১৯৮৩ সালে। ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। প্রকাশিত কবিতার বই ৮টিঃ যতদূর বৈধ বলি (২০০৯), কোনো একটা নাম (২০১৩), পতনমনের কুর্সি (২০১৬), সন্দেহপ্রসূত কবিতাগুচ্ছ (২০১৭), আলো দেখার নেশা (২০১৯), রাস্তার কোনো ছুটি নেই (২০২০), অনিমিখ পাত্র-র কবিতা (২০২২), আমি অনেকের চিৎকার (২০২৪)। কবিতা অনূদিত হয়েছে ইংরেজি, ইতালিয়ান, স্প্যানিশ ও চাইনিজ ভাষায়। অনুবাদ করেছেন বিভিন্ন ভাষার কবিতা, ইংরেজি ভাষামাধ্যমের সাহায্যে। সমকালীন ইতালীয় কবিদের কবিতা অনুবাদের কাজে রত। সম্পাদনা করেন দ্বিভাষিক সাহিত্য জার্নাল 'দুনিয়াদারি'