Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

ফিরে দেখা ভূতের গল্প: ছায়া

Horror Story
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
(Horror Story)



মধ্যাহ্ন। ভাদ্র মাসের শেষে মেঘমুক্ত আকাশের নীলিমা প্রখর রৌদ্রকিরণে উজ্জ্বল। যেদিকে চাহিয়া দেখ আকাশসীমাস্পর্শী প্রান্তর, বৃক্ষবিরল। রৌদ্রকিরণে প্রান্তর হইতে বর্ষার জল শোষিত হইতেছে, সুক্ষ্ম বাষ্পের তরঙ্গ চারিদিকে লক্ষিত হইতেছে। অতিদূরে গৃধিনী উড়িতেছে। নিস্তব্ধ মধ্যাহ্ন—শব্দ নাই, প্রান্তরে লোক-সমাগম নাই, লোকের যাতায়াত পর্যন্ত নাই। (Horror Story)

সেই জনশূন্য রৌদ্রতপ্ত প্রান্তরের মধ্য দিয়া আমার বন্ধু চন্দ্রকুমার ও আমি গমন করিতেছিলাম। কোথায় যাইতেছিলাম, কেন যাইতেছিলাম, আমি তাহা জানিতাম না। চন্দ্রকুমার আমার বাল্যবন্ধু, কয়েক বৎসর গৃহত্যাগ করিয়া নিরুদ্দেশ হইয়াছিল; সম্প্রতি গৃহে ফিরিয়া আসিয়াছে। তাহার অনুরোধ-মত তাহার সঙ্গে যাইতেছিলাম। কোথায় যাইতেছিলাম, জিজ্ঞাসা করিয়া কোন উত্তর পাই নাই। (Horror Story)

Horror Story
দশদিন হইল আমরা গৃহত্যাগ করিয়াছি, কোথায় আসিয়াছি, জানি না

দশদিন হইল আমরা গৃহত্যাগ করিয়াছি, কোথায় আসিয়াছি, জানি না। এ কয়দিন রেলে শকটে কিম্বা শিবিকায় আসিতেছিলাম, পদব্রজে চলিতে হয় নাই। অদ্য প্রাতে চন্দ্রকুমার শিবিকা বিদায় করিয়া দিয়াছে, বলিতেছে, আমাদিগকে আর অধিক দূর গমন করিতে হইবে না। সঙ্গে তৃতীয় ব্যক্তি নাই। কিছুদূর আসিয়া এই প্রান্তরে পড়িয়াছি। আর কতদূর যাইতে হইবে, জানি না। (Horror Story)

আরও পড়ুন: ফিরে দেখা ভূতের গল্প: হরতনের গোলাম

নিরুদ্দেশ হইবার পূর্বে চন্দ্রকুমার মজলিসী রকম লোক ছিল, গল্প-গুজব বেশ করিত। ফিরিয়া আসিয়া আর সেরূপ নাই। কথা অল্প কয়, প্রায় মৌনভাব। আজও কথাবার্তা একরূপ বন্ধ।
পার্শ্বে অথবা পশ্চাতে একবারও দৃষ্টিপাত না করিয়া চন্দ্রকুমার বেগে চলিতেছিল। রৌদ্রে ও পথের শ্রান্তিতে আমি ঘর্মাক্ত ও ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিলাম। চন্দ্রকুমারের মুখে ক্লান্তি-চিহ্ন নাই। (Horror Story)

মধ্যাহ্ন কাল অতীত হইলে চারিদিকে চাহিয়া দেখিলাম, সম্মুখে যেমন অনন্ত প্রান্তর, পশ্চাতেও সেইরূপ অনন্ত প্রান্তর। মনে সন্দেহ হইল, চন্দ্রকুমার পথ হারাইয়াছে। জিজ্ঞাসা করিলাম, আমরা কোথায় যাইতেছি? তুমি পথ হারাও নাই তো?
‘কোন চিন্তা নাই। আমার সঙ্গে নিশ্চিন্ত হইয়া আইস।’
আর কোন কথা হইল না। আমরা পূর্বের মত চলিতে লাগিলাম।
সূর্য পশ্চিমে হেলিল, চন্দ্রকুমারের ও আমার ছায়া প্রান্তরে দীর্ঘ হইয়া পড়িল। প্রান্তরের সীমায় ক্রমশ বিটপীশ্রেণী দেখা দিল।
সন্ধ্যার সময় প্রান্তর হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া বৃক্ষতলে একটি কুটীর দৃষ্ট হইল। কুটীরের সম্মুখে উপনীত হইয়া দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া চন্দ্রকুমার কহিল, ‘আসিয়াছি।’ এই বলিয়া কুটীরে প্রবেশ করিল। (Horror Story)

গৃহের কোণে মৃৎকলসীতে জল ছিল; অঞ্জলি পুরিয়া পান করিলাম। চন্দ্রকুমারকে জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘এখানে কয়দিন থাকিতে হইবে?’



তাহার পশ্চাতে পশ্চাতে আমিও প্রবেশ করিলাম। কুটীর অতি ক্ষুদ্র, একটিমাত্র অপ্রশস্ত গৃহ। ইহাও বুঝিলাম যে, কুটীর এ সময় শূন্য হইলেও একেবারে শূন্য নহে, মানুষের যাতায়াত আছে। চন্দ্রকুমার এভাবে প্রবেশ করিল, যেন কুটীর তাহার নিজের। আমাকে কহিল, ‘বিশ্রাম কর।’
অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত হইয়াছিলাম। গৃহের কোণে মৃৎকলসীতে জল ছিল; অঞ্জলি পুরিয়া পান করিলাম। চন্দ্রকুমারকে জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘এখানে কয়দিন থাকিতে হইবে?’
দাঁড়াইয়া চন্দ্রকুমার কুটীরের বাহিরে দেখিতেছিল। কহিল, ‘পরে বলিব।’
আমি আর-কিছু বলিলাম না। কুটীরতলে শুষ্ক তৃণ বিস্তৃত ছিল; তাহাতে শয়ন করিলাম। শ্রান্তিজনিত তন্দ্রা শীঘ্রই আসিল, পরে নিদ্রা আসিল। (Horror Story)

নিদ্রাভঙ্গ হইলে দেখি, চন্দ্রকুমার কুটীরে নাই; বাহিরে জ্যোৎস্না উঠিয়াছে। কুটীরের বাহিরে গমন করিলাম।
জ্যোৎস্নালোকে প্রান্তর নিস্তরঙ্গ সমুদ্রের ন্যায় দেখাইতেছে।

নিদ্রাভঙ্গ হইলে দেখি, চন্দ্রকুমার কুটীরে নাই; বাহিরে জ্যোৎস্না উঠিয়াছে। কুটীরের বাহিরে গমন করিলাম।
জ্যোৎস্নালোকে প্রান্তর নিস্তরঙ্গ সমুদ্রের ন্যায় দেখাইতেছে। চারিদিকে যেন বিষাদের ছায়া পড়িয়াছে। নৈশ নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া মধ্যে মধ্যে কুটীরের পার্শ্বে পেচক ডাকিতেছে। মানুষের মধ্যে আমি একা। চন্দ্রকুমার কোথায়?
রাত্রি হইতে লাগিল। কুটীরে ফিরিয়া আসিলাম। চক্ষে আর নিদ্রা আসিল না।

গভীর রাত্রে মনুষ্যের পদশব্দ শুনিতে পাইলাম। দ্রুতপদে কে যেন কুটীরের অভিমুখে আসিতেছে। আমি উঠিয়া বসিলাম। চন্দ্রকুমার বেগে কুটীরে প্রবেশ করিল। তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ নিশেব্দ দ্রুত পদক্ষেপে আর একজন প্রবেশ করিল। দ্বিতীয় ব্যক্তি স্ত্রীলোক, এই পর্যন্ত বুঝিতে পারিলাম। তাহার মুখ দেখিতে পাইলাম না। (Horror Story)

চন্দ্রকুমার ভীতের ন্যায়, উন্মত্তের ন্যায় কহিল, “আর কেহ যেন কুটীরে প্রবেশ না করে, তাহা হইলে আমাদের প্রাণ-সংশয়! তুমি দ্বার রক্ষা কর, কেহ প্রবেশ করিবার চেষ্টা করিলে তাহাকে কাটিয়া ফেলিবে। এই ধর।’ বলিয়া আমার হস্তে তীক্ষ্ণধার মুক্ত অসি দিল।

কুটীরে কারো মুখে কোন কথা নাই। ভীতি-রুদ্ধ নিশ্বাসের শব্দ কখনো-কখনো শুনিতে পাইতেছিলাম।

আমি কোন কথা কহিলাম না, কিছু জিজ্ঞাসা করিলাম না। চন্দ্রকুমারের কোন কথা অন্যথা করিবার যেন ক্ষমতা ছিল না। তরবারি লইয়া কুটীর-দ্বারে দাঁড়াইলাম।
জ্যোৎস্নালোকে প্রান্তরের অনেক দূর দেখা যাইতেছে। যেদিকে বৃক্ষশ্রেণী, সেইদিকে কিছু অন্ধকার। কোথাও কিছু দেখিতে পাইলাম না, কোন শব্দ শুনিতে পাইলাম না। কুটীরে কারো মুখে কোন কথা নাই। ভীতি-রুদ্ধ নিশ্বাসের শব্দ কখনো-কখনো শুনিতে পাইতেছিলাম। (Horror Story)

অকস্মাৎ কুটীরের সম্মুখে মনুষ্যের ছায়া পতিত হইল। তরবারির উপর মুষ্ঠি দৃঢ় হইল, জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘কে যায়?’
ছায়া অপসৃত হইল, মনুষ্যমূর্তি দেখিতে পাইলাম না।
কুটীরে অস্ফুট ভীতিশব্দ হইল, কে করিল, বুঝিতে পারিলাম না।
আবার পূর্ববৎ ছায়া দৃষ্ট হইল, আবার ডাকিলাম, ‘কে যায়?’ আবার ছায়া অদৃশ্য হইল।

ক্রমে আমার বিশ্বাস জন্মিল যে, কোন ব্যক্তি অলক্ষিত থাকিয়া কুটীর প্রদক্ষিণ করিতেছে। জ্যোৎস্নালোকে এক একবার তাহার ছায়া দেখা যাইতেছে, কিন্তু সে স্বয়ং দৃষ্টিগোচর হইতেছে না। যতবার আমি ছায়া দেখিতে পাই, ততবার একই প্রশ্ন করি, ততবার ছায়া অপসৃত হয়।
জ্যোৎস্না ক্রমে মলিন হইয়া আসিল, প্রতৃষের পূর্বগামী অস্পষ্ট অন্ধকার আকাশে দেখা দিল। তখন কুটীরের পার্শ্বে অতি মৃদু, অতি বিকট হাস্যধ্বনি হইল। আমি শিহরিয়া উঠিলাম। (Horror Story)

আরও পড়ুন: তমস্বিনী


প্রভাত হইলে চন্দ্রকুমার কুটীরের বাহিরে আসিল। এক রাত্রে মনুষ্যের মুখে এত পরিবর্তন কখনও দেখি নাই। সে সময়ে সে-কথার কোন উল্লেখ করিলাম না। আমার কয়েকটি কথা জিজ্ঞাসা করিবার ছিল।
চন্দ্রকুমারকে বলিলাম, ‘দুই একটা কথা আমার জানিবার আছে। এ-পর্যন্ত তুমি আমায় কিছু বল নাই, আমারও জানিবার জন্য বিশেষ ঔৎসুক্য হয় নাই; কিন্তু এখন সৎকর্মে অথবা অসৎকর্মে তোমার সহায়তা করিতেছি, জানা প্রয়োজন।’ (Horror Story)

‘সকল কথা বলিতে পারিব না। এই রমণীর অথবা আমার কাহারও অসদভিপ্রায় নাই। একবার এ আমার প্রাণরক্ষা করে। তাহার পর ইহার প্রাণসংশয় হয়। আমি ইহার প্রাণরক্ষা করিয়াছি। এখন আমাদের উভয়ের প্রাণসংশয়। তুমি যদি পার তো আমাদিগকে রক্ষা কর। আমাদের আত্মরক্ষার সাধ্য নাই।’
আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘এখন দেশে ফিরিয়া যাইবে?’
‘যদি বাঁচিয়া থাকি।’
আমি বিস্মিত হইয়া চন্দ্রকুমারের মুখের দিকে চাহিলাম।

আমি অন্য কথা তুলিলাম: ‘তুমি যে বলিতেছ তোমাদের উভয়ের প্রাণসংশয়, তাহার কোন কারণ আছে? আর, আত্মরক্ষা করা তোমার অসাধ্য কেন? তোমার বাহুতে বল আমার অপেক্ষা অধিক।’

আমি অন্য কথা তুলিলাম: ‘তুমি যে বলিতেছ তোমাদের উভয়ের প্রাণসংশয়, তাহার কোন কারণ আছে? আর, আত্মরক্ষা করা তোমার অসাধ্য কেন? তোমার বাহুতে বল আমার অপেক্ষা অধিক।’
চন্দ্রকুমার অতি কাতর হাসি হাসিল। কহিল, ‘রাত্রে আশঙ্কার কোন কারণ দেখ নাই?’ (Horror Story)

কুটীর-প্রদক্ষিণকারিণী ছায়া, ছায়ার অলক্ষিতে আবির্ভাব ও আচম্বিতে তিরোধান এবং সেই অতি মৃদু অতি বিকট হাস্য আমার স্মরণ হইল। এসকল সত্য, অথবা ভয়বিচলিত কল্পনা মাত্র? ক্ষণকাল চিন্তা করিয়া কহিলাম, ‘যাহা দেখিয়াছিলাম, বুঝিতে বা বুঝাইতে পারিতেছি না।’
‘পারিবেও না, পারিলে আশঙ্কা এত হইত না। আমরা যে-কারণে আত্মরক্ষায় অক্ষম, তুমি এ পর্যন্ত সে অবস্থায় পতিত হও নাই; সেইজন্য তোমাকে সঙ্গে লইয়া আসিয়াছি।’ (Horror Story)

Horror Story
এমন সময় রমণী কুটীরের বাহিরে আসিল


এমন সময় রমণী কুটীরের বাহিরে আসিল। আমাকে দেখিয়া বিশেষ লজ্জিত হইল না। আমিও তাহার দিকে চাহিয়া দেখিলাম।
রমণী সুন্দরী বলিলে কিছু বলা হয় না। সুন্দরী বলিলে সে রূপের কিছুই বর্ণনা হয় না। এমন নির্মল সৌন্দর্য কখনও দেখি নাই। মুখে হৃদয় প্রতিবিম্বিত হইতেছে, সে হৃদয় নির্বিকার, নির্মল, প্রসন্ন; সে মুখ দেখিয়া চন্দ্রকুমারের কথায় আর সন্দেহ রহিল না।

রমণীকে দেখিয়া বিদেশীয় ভাষায় চন্দ্রকুমার তাহাকে কি বলিল, রমণীও সেই ভাষায় উত্তর দিল। আমি কিছু বুঝিতে পারিলাম না। চন্দ্রকুমার আমাকে কহিল, ‘আমাদের ভাষা জানে না।’
তাহার পর চন্দ্রকুমার রমণীকে অন্যান্য কথা বলিতে লাগিল, বুঝিতে পারিলাম, আমার সম্বন্ধে কিছু বলিতেছে। কারণ কথা শুনিতে শুনিতে রমণী এক-একবার সলজ্জ অথচ পুলকিত দৃষ্টিতে আমার নাম বলিয়া দিল। (Horror Story)

রমণীর নাম জানিবার ইচ্ছা হইলেও সহসা জিজ্ঞাসা করিতে পারিলাম না। চন্দ্রকুমার আপনিই কহিল, ‘তুমি উহার নাম জিজ্ঞাসা করিবে না?’

রমণী ধীরে অশ্রুতপূর্ব নাম একবারে উচ্চারণ করিতে না পারিয়া কহিল, ‘প্র-ভা-ত-চন্দ্র।’
আমি চন্দ্রকুমারকে বলিলাম, রমণী কতক নিষ্কৃতি পাইয়া আহ্লাদিত হইয়া পূর্বাপেক্ষা দ্রুততর কহিল, ‘প্র-ভা-ত।’
রমণীর নাম জানিবার ইচ্ছা হইলেও সহসা জিজ্ঞাসা করিতে পারিলাম না। চন্দ্রকুমার আপনিই কহিল, ‘তুমি উহার নাম জিজ্ঞাসা করিবে না?’ (Horror Story)

‘করিব বই কি!’
চন্দ্রকুমারের কথা-মত রমণী আপনার নাম বলিল, ‘বাদলা।’
নামটি নিতান্ত বিজাতীয় মত বোধ হইল না। আমাদের সঙ্গে কিছু আহার্য সামগ্রী ছিল। আহারাদির পর চন্দ্রকুমারকে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘এখন কী করিতে ইচ্ছা করিতেছ?’

চন্দ্রকুমার কহিল, ‘তোমার কী পরামর্শ?’
আর এক পরিবর্তন লক্ষ্য করিতেছিলাম, এ-পর্যন্ত চন্দ্রকুমারের চিত্তবল যেন শিথিল হইয়া পড়িতেছিল, আমার যেরূপ ইচ্ছা তাহারও ইচ্ছা যেন তদনুরূপ। (Horror Story)

এসকল কথার মর্ম কিছুই বুঝিতে পারিতেছিলাম না, কিন্তু শুনিয়া শুনিয়া বিস্ময়ের তীক্ষ্ণতা হ্রাস হইয়া যাইতেছিল। এরূপ অদ্ভুত কথা বিশ্বাস করিব কি না তাহাও বুঝিতে পারিতেছিলাম না।

আমি কহিলাম, ‘এখানে আর রাত্রিযাপন করা পরামর্শসিদ্ধ বোধ হয় না। এখানে নানাপ্রকার আশঙ্কা।’
চন্দ্রকুমার কহিল, ‘আমার মনে কেবল এক আশঙ্কাই প্রবল। সে আশঙ্কা এখানে যেরূপ অন্যত্রও তদ্রূপ, প্রাণীশূন্য মরুভূমিতে যেমন, লোকালয়েও সেইরূপ; একাকী অসহায় পথে যেরূপ, সশস্ত্র সৈন্যরক্ষিত দুর্গমধ্যেও সেইরূপ। পলায়ন করিয়া এ আশঙ্কা হইতে রক্ষা পাইব না।’

এসকল কথার মর্ম কিছুই বুঝিতে পারিতেছিলাম না, কিন্তু শুনিয়া শুনিয়া বিস্ময়ের তীক্ষ্ণতা হ্রাস হইয়া যাইতেছিল। এরূপ অদ্ভুত কথা বিশ্বাস করিব কি না তাহাও বুঝিতে পারিতেছিলাম না।
আমি বলিলাম, ‘সে যাহাই হউক, এখানে আর থাকিবারও কোন আবশ্যক দেখিতেছি না।’ (Horror Story)

‘কিছু না। এখনি চল। বাদলাকে ডাকিব?
ডাক
চন্দ্রকুমার রমণীকে ডাকিল। আমরা গৃহাভিমুখে যাত্রা করিলাম।

আরও পড়ুন: পেয়ারা গাছের নীচে: লীলা মজুমদার



ছায়াশূন্য প্রান্তরে চলিতে চলিতে দিনমান অতিবাহিত হইল।
সন্ধ্যার পর লোকালয়ে উপনীত হইলাম। রাত্রিযাপনের জন্য একটি ক্ষুদ্র গৃহ ভাড়া লইলাম। বাদলা গৃহের ভিতর শয়ন করিল, চন্দ্রকুমার ও আমি দ্বারের নিকট শয়ন করিয়া রহিলাম। রাত্রে আমার ভাল নিদ্রা হইল না— চন্দ্রকুমার ও রমণীর সম্বন্ধে নানারূপ চিন্তা মনে উদিত হইতে লাগিল। কিরূপে ইহাদের পরস্পরের পরিচয় হইল? কিসের আশঙ্কায় ইহারা এত ভীত? এই অল্প সময়ের মধ্যে ইহাদের প্রতি আমার অত্যন্ত স্নেহ জন্মিয়াছিল। মনে হইতেছিল, যেন আমি ইহাদের সুখ-দুঃখের ভাগী, ইহাদের কোন বিপদ হইলে আমি তাহার জন্য দায়ী। (Horror Story)

নিদ্রিতাবস্থায় দুই-একবার চন্দ্রকুমার অস্পষ্ট ভাষায় একটা কথা কহিয়াছিল। কী বলিতেছিল, ভাল বুঝিতে পারিলাম না। অবশেষে গৃহের ভিতরেও শব্দ শুনিতে পাইলাম। রমণী নিদ্রিতাবস্থায় যেন কি বলিতেছে। আমি মনোযোগ পূর্বক শ্রবণ করিতে লাগিলাম।

রমণী আবার কথা কহিল। এবার বুঝিতে পারিলাম— ‘মীরাণ!’ ভয়পীড়িত, কাতর এবং কিয়ৎ অস্পষ্ট স্বরে এই নাম বলিল। চন্দ্রকুমার পার্শ্ব ফিরিয়া নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিল, ‘মীরাণ!’
চন্দ্রকুমার যে নিদ্রিত, তাহাতে আমার কোন সংশয় ছিল না, রমণী নিদ্রিত অথবা জাগ্রত বলিতে পারি না। কিন্তু উভয়ের মুখে এক কথা। যে ব্যক্তির নাম মীরাণ, উভয়েই তাহাকে জানে এবং উভয়েই তাহাকে ভয় করে। মীরাণ কে? (Horror Story)

চারিদিকে চাহিয়া দেখিলাম। চন্দ্র অস্ত যায়, গৃহ প্রাচীরে, বৃক্ষশিরে অল্প চালোক রহিয়াছে। নিচে অন্ধকার হইয়া আসিতেছে।

গৃহে একমাত্র প্রদীপ তৈলশূন্য হইয়া নির্বাণোমন্মুখ হইয়া আসিতেছিল। নির্বাণোন্মুখ প্রদীপ থাকিয়া থাকিয়া এক-একবার উজ্জ্বল হইয়া উঠিতেছিল। অবশেষে একবার জ্বলিয়া নিবিয়া গেল।
তখন আমার মনে হইল যেন নিকটেই কাহারও পদশব্দ ও নিশ্বাস শুনা যাইতেছে। আমি শয্যায় উঠিয়া বসিলাম; শয্যাপার্শ্বে তরবারি ছিল, গ্ৰহণ করিলাম। কিন্তু দ্বারের নিকট রহিলাম। চারিদিকে চাহিয়া দেখিলাম। চন্দ্র অস্ত যায়, গৃহ প্রাচীরে, বৃক্ষশিরে অল্প চালোক রহিয়াছে। নিচে অন্ধকার হইয়া আসিতেছে। মনুষ্যের কোনরূপ চিহ্ন কোথাও দেখিতে পাইলাম না। (Horror Story)

Horror Story
অন্ধকার ক্রমশ গাঢ়তর হইতে লাগিল

অন্ধকার ক্রমশ গাঢ়তর হইতে লাগিল। মনুষ্য কোথাও দেখিতে পাই নাই, কিন্তু মনুষ্যকণ্ঠ শুনিতে পাইলাম। কোথা হইতে শব্দ আসিতেছে, বুঝিতে পারিলাম না। শরীরে রোমাঞ্চ হইল, অজানিত আশঙ্কায় চিত্ত ব্যাকুল হইয়া উঠিল।
শব্দ নিকটবর্তী হইল। শব্দ গম্ভীর, কিন্তু উচ্চ নহে। ভাষা বুঝিতে পারিলাম না। কয়েকটি কথা বারংবার মন্ত্রের ন্যায় উচ্চারিত হইতেছে। (Horror Story)

আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘কে?’
কোন উত্তর হইল না। শব্দ দূরে যাইতে লাগিল। কয়েকবার এইরূপ হইল। শব্দ নিকটে আসে, আবার দূরে চলিয়া যায়। একই কণ্ঠ, একই রূপ শব্দ। রাত্রিশেষে দূরে চলিয়া গেল, আর কিছু শুনিতে পাইলাম না। (Horror Story)

আরও পড়ুন: উত্তরণ



চন্দ্রকুমারের নিকট ঘটনার উল্লেখ করিলাম না। তাহার মানসিক অবস্থা যেরূপ, তাহাতে এইসকল কথা শুনিলে ভীত হইতে পারে। বলিলেও কোন ফল নাই।
রাত্রিকালে এইরূপ আশঙ্কা ও বিস্ময়জনক ব্যাপার নিত্য ঘটিতে লাগিল। আমি সকল কথাই গোপন রাখিতাম, চন্দ্রকুমার কিছু দেখিতে কিংবা শুনিতে পাইত কিনা বলিতে পারি না। আমাকে কখনো কিছু বলিত না।

পথের তিনদিন অবশিষ্ট রহিল। কয়েকদিন রাত্রে নিদ্রিতাবস্থায় চন্দ্রকুমার এবং রমণীর মুখে মীরাণ এই নাম শ্রবণ করিয়াছিলাম। অবশেষে কৌতূহল সংবরণ করিতে না পারিয়া চন্দ্রকুমারকে জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘মীরাণ কে?’
নাম শ্রবণ-মাত্র চন্দ্রকুমার শিহরিয়া উঠিল, চারিদিকে চাহিয়া দেখিল। তাহার মুখ শুষ্ক হইয়া গেল, চক্ষু বিস্তৃত হইল, সর্বাঙ্গ থরথর কাঁপিতে লাগিল। আমার হস্ত ধারণ করিয়া অতি মৃদুস্বরে জিজ্ঞাসা করিল, ‘কে তোমায় বলিল?’ (Horror Story)

নাম শ্রবণ-মাত্র চন্দ্রকুমার শিহরিয়া উঠিল, চারিদিকে চাহিয়া দেখিল। তাহার মুখ শুষ্ক হইয়া গেল, চক্ষু বিস্তৃত হইল, সর্বাঙ্গ থরথর কাঁপিতে লাগিল। আমার হস্ত ধারণ করিয়া অতি মৃদুস্বরে জিজ্ঞাসা করিল, ‘কে তোমায় বলিল?’

‘কেহ বলে নাই, নিদ্রিতাবস্থায় তোমার মুখেই শুনিয়াছি।’ রমণীর উল্লেখ নিষ্প্রয়োজন বিবেচনায় তাহার নাম করিলাম না।
চন্দ্রকুমার দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া আবার জিজ্ঞাসা করিল, ‘বাদলার মুখে শুনিয়াছ?’
আমি কহিলাম, ‘নিদ্রিতাবস্থায় তাহার মুখেও শুনিয়াছি।’

চন্দ্রকুমার কোন কথাই কহিল না। কিছুক্ষণ পরে ঊর্ধ্বদিকে মুখ তুলিয়া কহিল, ‘আর অধিক বিলম্ব নাই।’
আমি বলিলাম, ‘কিসের?’
চন্দ্রকুমার কথার উত্তর দিল না, অন্য দিকে চলিয়া গেল।
শয়নের কাল উপস্থিত হইলে চন্দ্রকুমার নীরবে রোদন করিতে লাগিল। রমণীও কাঁদিল। হৃদয়-বিদারক কাতর স্বরে চন্দ্রকুমার কয়েকটি কথা কহিল, তাহাতে রমণীর অশ্রুধারা আরও বেগে বহিতে লাগিল। (Horror Story)

গৃহের ভিতর তীব্র বিদ্যুৎশিখার ন্যায় আলোকরশ্মি প্রবিষ্ট হইল, আবার পূর্বের ন্যায় অন্ধকার। ছায়া অপসৃত হইল, আর কিছুই আমি দেখিতে পাইলাম না।

গভীর রাত্রে সহসা নিদ্রাভঙ্গ হইল। ঘরের দিকে চাহিয়া দেবি, দ্বারের নিকট মনুষ্যের ছায়া। এবার আমি শয্যাত্যাগ করিলাম না, ছায়ার প্রতি দৃষ্টি স্থির করিলাম। ছায়া তৎক্ষণাৎ অদৃশ্য হইল। কিয়ৎকাল পরে আবার দৃষ্ট হইল। দেখিলাম, ছায়ার হস্ত সঞ্চালিত হইতেছে। কয়েকবার এইরূপ হইল। অবশেষে একবার হস্তচ্ছায়া অত্যন্ত সঞ্চালিত হইল। গৃহের ভিতর তীব্র বিদ্যুৎশিখার ন্যায় আলোকরশ্মি প্রবিষ্ট হইল, আবার পূর্বের ন্যায় অন্ধকার। ছায়া অপসৃত হইল, আর কিছুই আমি দেখিতে পাইলাম না।

যে মুহূর্তে বিদ্যুতের ন্যায় আলোক গৃহে প্রবেশ করিল, সেই মুহূর্তে রমণী চিৎকার করিয়া উঠিল। চন্দ্রকুমার শয্যা হইতে লম্ফ দিয়া রমণীর পার্শ্বে গেল। আমি আলোক লইয়া দেখি, রমণী নিস্পন্দ, নিশ্বাস-প্রশ্বাস রহিত হইয়াছে। বজ্রাঘাতে যেরূপ মৃত্যু হয়, রমণীর সেইরূপ মৃত্যু হইয়াছে। চন্দ্রকুমার রমণীর ললাট নিরীক্ষণ করিতে লাগিল। আমিও তাহার সহিত দেখিলাম, রমণীর ললাটে অঙ্গুলি-চিহ্ন রহিয়াছে।

চন্দ্রকুমার চিৎকার করিয়া কহিল, ‘মীরাণ, আমাকে কেন লইলে না?’ এই বলিয়া উম্মত্তের ন্যায় রমণীর মৃতদেহ আলিঙ্গন করিতে উদ্যত হইল। কিন্তু তৎপূর্বে আর একবার সেইরূপ বিদ্যুৎ চমকিল। চন্দ্রকুমার চিৎকার করিয়া ঘুরিয়া পড়িয়া গেল। দেখিলাম, তাহার ললাটেও অঙ্গুলির চিহ্ন রহিয়াছে।

(বানান অপরিবর্তিত)

Nagendranath_Gupta

নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৮৬১ – ১৯৪০) মোতিহারী-বিহার। আদি নিবাস হালিশহর-চব্বিশ পরগনা।। মথুরানাথ। খ্যাতনামা সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ১৮৭৮ খ্ৰী. জেনারেল অ্যাসেমব্লীজ ইনস্টিটিউট থেকে প্রবেশিকা পাশ করে লাহোরে কিছুকাল শিক্ষকতা করেছিলেন। ১৮৮৪ খ্রী. করাচীর ‘ফিনিক্স’ পত্রিকার সম্পাদক হন। ১৮৯১ খ্রী. লাহোরের ‘ট্রিবিউন’ ও ১৯০৫ খ্ৰী. এলাহাবাদের ‘ইন্ডিয়ান পিপল’ নামক সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদনা-কাৰ্য পরিচালনা করেন। ১৯০১ খ্রী. তিনি ও ব্ৰহ্মবান্ধব উপাধ্যায় ‘দি টোয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরী’ নামে একটি ইংরেজী মাসিকপত্ৰ প্ৰকাশ করেন। ‘ইন্ডিয়ান পিপল’ পত্রিকা দৈনিক ‘লীডার’-এর সঙ্গে মিলিত হলে তিনি তার যুগ্ম-সম্পাদক হন এবং পুনর্বার ১৯১০ খ্রী. থেকে দু’বছর ‘ট্রিবিউন’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। কিছুদিন ‘প্ৰদীপ’ ও ‘প্ৰভাত’ পত্রিকারও সম্পাদক ছিলেন। প্রথম জীবনে ‘স্বপন সঙ্গীত’ গীতিকাব্য (১৮৮২) এবং পরে ‘সাহিত্য’ ও ‘ভারতী’ পত্রিকার জন্য বহু ছোট গল্প ও কয়েকটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। বৃদ্ধ বয়সে বন্ধু রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি কবিতার ইংরেজী তৰ্জমা গ্ৰন্থাকারে প্রকাশ করেন। তার অমর কীর্তি দ্বারভাঙ্গা মহারাজের অর্থসাহায্যে ‘বিদ্যাপতি’ ও ‘গোবিন্দদাস ঝা’র পদাবলীর সম্পাদনা ও সঙ্কলন প্ৰকাশ। রচিত উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ : ‘পর্বতবাসিনী’, ‘অমরসিংহ’, ‘লীলা’ এবং ‘জীবন ও মৃত্যু’।

Picture of নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত

নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত

নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৮৬১ – ১৯৪০) মোতিহারী-বিহার। আদি নিবাস হালিশহর-চব্বিশ পরগনা।। মথুরানাথ। খ্যাতনামা সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ১৮৭৮ খ্ৰী. জেনারেল অ্যাসেমব্লীজ ইনস্টিটিউট থেকে প্রবেশিকা পাশ করে লাহোরে কিছুকাল শিক্ষকতা করেছিলেন। ১৮৮৪ খ্রী. করাচীর ‘ফিনিক্স’ পত্রিকার সম্পাদক হন। ১৮৯১ খ্রী. লাহোরের ‘ট্রিবিউন’ ও ১৯০৫ খ্ৰী. এলাহাবাদের ‘ইন্ডিয়ান পিপল’ নামক সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদনা-কাৰ্য পরিচালনা করেন। ১৯০১ খ্রী. তিনি ও ব্ৰহ্মবান্ধব উপাধ্যায় ‘দি টোয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরী’ নামে একটি ইংরেজী মাসিকপত্ৰ প্ৰকাশ করেন। ‘ইন্ডিয়ান পিপল’ পত্রিকা দৈনিক ‘লীডার’-এর সঙ্গে মিলিত হলে তিনি তার যুগ্ম-সম্পাদক হন এবং পুনর্বার ১৯১০ খ্রী. থেকে দু’বছর ‘ট্রিবিউন’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। কিছুদিন ‘প্ৰদীপ’ ও ‘প্ৰভাত’ পত্রিকারও সম্পাদক ছিলেন। প্রথম জীবনে ‘স্বপন সঙ্গীত’ গীতিকাব্য (১৮৮২) এবং পরে ‘সাহিত্য’ ও ‘ভারতী’ পত্রিকার জন্য বহু ছোট গল্প ও কয়েকটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। বৃদ্ধ বয়সে বন্ধু রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি কবিতার ইংরেজী তৰ্জমা গ্ৰন্থাকারে প্রকাশ করেন। তার অমর কীর্তি দ্বারভাঙ্গা মহারাজের অর্থসাহায্যে ‘বিদ্যাপতি’ ও ‘গোবিন্দদাস ঝা’র পদাবলীর সম্পাদনা ও সঙ্কলন প্ৰকাশ। রচিত উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ : ‘পর্বতবাসিনী’, ‘অমরসিংহ’, ‘লীলা’ এবং ‘জীবন ও মৃত্যু’।
Picture of নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত

নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত

নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৮৬১ – ১৯৪০) মোতিহারী-বিহার। আদি নিবাস হালিশহর-চব্বিশ পরগনা।। মথুরানাথ। খ্যাতনামা সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ১৮৭৮ খ্ৰী. জেনারেল অ্যাসেমব্লীজ ইনস্টিটিউট থেকে প্রবেশিকা পাশ করে লাহোরে কিছুকাল শিক্ষকতা করেছিলেন। ১৮৮৪ খ্রী. করাচীর ‘ফিনিক্স’ পত্রিকার সম্পাদক হন। ১৮৯১ খ্রী. লাহোরের ‘ট্রিবিউন’ ও ১৯০৫ খ্ৰী. এলাহাবাদের ‘ইন্ডিয়ান পিপল’ নামক সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদনা-কাৰ্য পরিচালনা করেন। ১৯০১ খ্রী. তিনি ও ব্ৰহ্মবান্ধব উপাধ্যায় ‘দি টোয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরী’ নামে একটি ইংরেজী মাসিকপত্ৰ প্ৰকাশ করেন। ‘ইন্ডিয়ান পিপল’ পত্রিকা দৈনিক ‘লীডার’-এর সঙ্গে মিলিত হলে তিনি তার যুগ্ম-সম্পাদক হন এবং পুনর্বার ১৯১০ খ্রী. থেকে দু’বছর ‘ট্রিবিউন’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। কিছুদিন ‘প্ৰদীপ’ ও ‘প্ৰভাত’ পত্রিকারও সম্পাদক ছিলেন। প্রথম জীবনে ‘স্বপন সঙ্গীত’ গীতিকাব্য (১৮৮২) এবং পরে ‘সাহিত্য’ ও ‘ভারতী’ পত্রিকার জন্য বহু ছোট গল্প ও কয়েকটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। বৃদ্ধ বয়সে বন্ধু রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি কবিতার ইংরেজী তৰ্জমা গ্ৰন্থাকারে প্রকাশ করেন। তার অমর কীর্তি দ্বারভাঙ্গা মহারাজের অর্থসাহায্যে ‘বিদ্যাপতি’ ও ‘গোবিন্দদাস ঝা’র পদাবলীর সম্পাদনা ও সঙ্কলন প্ৰকাশ। রচিত উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ : ‘পর্বতবাসিনী’, ‘অমরসিংহ’, ‘লীলা’ এবং ‘জীবন ও মৃত্যু’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

অরূপ গঙ্গোপাধ্যায় 
মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়

সংস্কৃতি

আহার

অমৃতা ভট্টাচার্য
শমিতা হালদার
অমৃতা ভট্টাচার্য

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

নির্মাল্য চ্যাটার্জি
শক্তিপদ ভট্টাচার্য
নির্মাল্য চ্যাটার্জি

উপন্যাস

মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়
মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়
মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com