Santipur Saree










শান্তিপুরে তাঁত শিল্পের সূচনা হয়েছিল পঞ্চাদশ শতকের গোড়ার দিকে। তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী, গৌড়ের রাজা গণেশ দনুজাধর্মণদেবের শাসনকালে ১৪০৯ খ্রিস্টাব্দে শান্তিপুরে বয়নশিল্প শুরু হয়। বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের অনেক তাঁতি ঢাকা, টাঙ্গাইল, বিক্রমপুর ও অন্যান্য এলাকা থেকে শান্তিপুরে এসে বসবাস শুরু করেন। পূর্ববঙ্গ থেকে তাঁতিদের আগমনের ফলে শান্তিপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা ধীরে ধীরে একটি প্রধান বস্ত্র বয়ন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে এবং এর সমৃদ্ধি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
এই শিল্পাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত পণ্য হল শাড়ি। শতাব্দীপ্রাচীন শান্তিপুরী ঘরানার শাড়ি বাংলার মহিলাদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম। শান্তিপুরী শাড়িগুলির প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য ছিল তাদের সূক্ষ্ম বয়নবিন্যাস এবং নকশা করা পাড়। নরম, মসৃণ ও হালকা ওজন বিশিষ্ট হওয়ার ফলে, এই শাড়ি অত্যন্ত আরামদায়ক। সিল্ক বা জরির পাড় সূঁচ দিয়ে বোনা হয়। অতীতে নকশাগুলো সরাসরি কাপড়ে সূঁচ দিয়ে বোনা হতো। এখন এই বিষয়ে আধুনিকতা এসেছে, ডিজাইন কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি হয় অনেক ক্ষেত্রেই।
বিংশ শতাব্দীর শেষভাগ ও একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যন্ত্রচালিত তাঁতের ব্যাপক প্রসারের ফলে,শান্তিপুরের হস্তচালিত তাঁত-নির্ভর ঐতিহ্যবাহী শিল্পাঞ্চল,অস্তিত্বের তীব্র সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল। ধীরে ধীরে আবার আগের জায়গায় পৌঁছতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই অঞ্চলের তাঁত শিল্পীরা।
নেশা ও পেশা ফটোগ্রাফি। ডকুমেন্টারি স্টোরি টেলিং, স্ট্রিট ও ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফিতে আগ্রহী।