Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

ফুলের জলসায় ফুলমালা ডোরে কলকাতা

রূপায়ণ ভট্টাচার্য

সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫

Flower Market
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
(Flower Market)

সকাল ছ’টা থেকে বড়জোর সাড়ে সাতটা। শুধু এই দেড় ঘণ্টা, ওই রাস্তায় হেঁটে গেলে মনে পড়বে ঠাকুরমার ঝুলির অমর গল্পের কথা। ঢাক ঢোল বেজে উঠলে একটি নগরী জেগে উঠছে। আবার ঢাক ঢোল বাজলে, পরক্ষণেই তা উধাও হয়ে যাচ্ছে নিঃশব্দে। সবার চোখের সামনেই। (Flower Market)

বড়বাজার স্ট্র্যান্ড রোডের মোড় থেকে হাওড়া ব্রিজের মুখটা পর্যন্ত হাঁটলে ওই অনুভূতি মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে সাত সকালে। অনুভবহীন আশ্চর্য অনুভূতি। (Flower Market)

আরও পড়ুন: খোলো, জাগো নাটমন্দির

ছ’টার সময় ফুটপাতের রেলিঙে কোথাও ঝুলছে অপরাজিতার নীলমালা। কোথাও বেল ফুলের সাদা মালা। কোনও জায়গায় ঝুলছে লাল জবার মোটা মালা। কোথাও আবার হলুদ গাঁদা দিয়ে তৈরি মালা। কোথাও হলুদ-লাল গাঁদার। (Flower Market)

এইভাবে নানা ফুলের, নানা রঙের মেলায় সেজে উঠছে ফুটপাত। সামান্য দূরে রোদ পড়ে আরও ঝলসে উঠছে হাওড়া ব্রিজের রুপোলি রং। বর্ণনা করার দুঃসাহস নেই ওই দৃশ্যের। কোনও লাইন লিখেই তৃপ্ত হওয়া যায় না, এমনই ঐশ্বরিক দেখায় সেই ফুটপাথের অংশ। আসল বাজারে ঢুকিইনি তখনও, তবু মনে হচ্ছে, কোনও এক অচেনা স্বর্গের দুয়ারে দাঁড়িয়ে রয়েছি। (Flower Market)

Flower Market
ওই রাস্তায় হেঁটে গেলে মনে পড়বে ঠাকুরমার ঝুলির অমর গল্পের কথা। ঢাক ঢোল বেজে উঠলে একটি নগরী জেগে উঠছে।

ভিড়ে ভিড়ে নানা রঙের দোপাটি নিয়ে বসে কেউ। দোপাটি মানে দোপাটির পাপড়ি। প্লাস্টিকের ব্যাগে সাদা, গোলাপি, লাল, নীল পাপড়ির দোপাটি সম্পূর্ণ অন্যরকম দেখাচ্ছে। দোপাটি নিয়ে মহম্মদ রফির বহুচর্চিত বাংলা গান মনে আসবেই ‘তোমার নীল দোপাটি চোখ, শ্বেত দোপাটি হাসি, আর খোঁপাটিতে লাল দোপাটি দেখতে ভালোবাসি।‘ (Flower Market)

নীল দোপাটি অবশ্য় দেখিনি কখনও। নীল অপরাজিতা বাজারজুড়ে। 

এমনই এক পুজোয় ভূপেন হাজারিকা-রুমা গুহঠাকুরতা গেয়েছিলেন, ‘সাজিয়ে দোপাটি মাথার খোঁপাটি অঙ্গ দুলিয়ে কে মেঘরং শাড়ি পরে হেলেদুলে চলে এই মন কেড়েছে সে’। খোঁপা সাজতে কে আর দোপাটির আশ্রয় নেয়? নীল দোপাটিরই বা অস্তিত্ব কোথায়? (Flower Market)

“অনেকদিন ধরে শুনছি, এ বাজারের রূপ নাকি পালটে দেবে সরকার। এত ময়লা, এত ঘুপচি ঘর, এত দমবন্ধ পরিবেশ থাকবে না। থাকবে কোল্ড স্টোরেজ, যাতে ফুল নষ্ট না হয়ে যায়। গঙ্গার ওপারেও হবে এক বিকল্প ফুল বাজার। সে সব হল কোথায়?”

পদ্ম ফুলেরও তো কারও খোঁপায় আশ্রয় জোটে না। কিন্তু আজ এই শহরে, এই শরতে পদ্মের চেয়ে অভিজাত ফুল আর নেই। বাংলার সেরা ফুল বাজারে ভোরের আলোয় কারও সামনে পদ্ম পাতায় মুড়ে পদ্মফুল রেখে যাচ্ছে অনেকে। সাদা পদ্ম, লাল পদ্ম। কোথাও কুঁড়ি হয়েছে শুধু, কোথাও ফুটেই গিয়েছে ফুল। বিশাল পদ্মপাতায় সযত্নে মোড়া পদ্মফুলগুলো দেখলে রেললাইনের ধারের নয়ানজুলির পদ্মকলি মনে পড়ে। তখন হাওড়া ব্রিজের ইস্পাতে ভোরের রোদ পড়ে রুপোলি রং ছড়াচ্ছে। ওখানেই শুনলাম, হাওড়া থেকে ট্রেন ছাড়লে এখন বহু জায়গাতেই রেল লাইনের পাশে নয়ানজুলিতে পদ্মের ছড়াছড়ি। (Flower Market)

এই রঙের মালায় ভাসতে ভাসতে সকালের কলকাতার সবচেয়ে বড় ফুল বাজার এক অন্য রূপ নিয়েছে। ইতিহাস বলছে, ১৮৫৫ সাল থেকে এ বাজার গঙ্গার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মানে ১৭০ বছর হল। মল্লিকঘাটও ওই সময়ই তৈরি। ঘাট বানিয়েছিলেন রামমোহন মল্লিক, তাঁর বাবা নিমাইচরণ মল্লিকের স্মৃতিতে। ফুলের বাজারও, পড়লাম ওই সময় থেকে তৈরি। (Flower Market)

Flower Market
ফুলের তো কোনও শেষ নেই। শেষ নেই পুজোর অন্য উপচারেরও।

হাওড়া ব্রিজে ওঠার মুখে ফুটপাত থেকে নিচে তাকালে মনে হবে যেন সিনেমার কোনও শুটিং দেখছি। রং, রং আর রং। ফুলের রং।

এত সকালে কোনও চক্ররেল নেই। যদি থাকত, তাহলে ফুলের সঙ্গে ট্রেনের এক অপরূপ দৃশ্যকল্প তৈরি হত নিশ্চিতভাবে। ওই দৃশের কাছে হেরে যেতে পারে উপচে পড়া গঙ্গা, হাওড়া ব্রিজ ও হাওড়া স্টেশনের সম্মিলিত রূপ। অনেকদিন ধরে শুনছি, এ বাজারের রূপ নাকি পালটে দেবে সরকার। এত ময়লা, এত ঘুপচি ঘর, এত দমবন্ধ পরিবেশ থাকবে না। থাকবে কোল্ড স্টোরেজ, যাতে ফুল নষ্ট না হয়ে যায়। গঙ্গার ওপারেও হবে এক বিকল্প ফুল বাজার। সে সব হল কোথায়? মল্লিকঘাট বাজার আজও নিজস্ব মহিমা নিয়ে দাঁড়়িয়ে। তবে বড় এলোমেলো, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। (Flower Market)

“ফুলের দর ওঠা নামা করে বিশেষ দিন দেখে, পুজো দেখে, বিয়ের তারিখ দেখে। বাজারের সময়ও বদলায় এসব দেখে। কোনওদিন আর বিরতি থাকে না। সারাদিন, সারা রাত।”

ফুলের তো কোনও শেষ নেই। শেষ নেই পুজোর অন্য উপচারেরও। সেখানে হাঁটলে দেখা যায়, কোনও মহিলা বসে রয়েছেন শুধু দূর্বা ঘাস নিয়ে। কারও হাতে বেলপাতা, শুধু বেলপাতা। তাঁদের সঙ্গে পড়ে রয়েছে গাদাগাদা তুলসীর পাতা। কারা নেই সে বিক্রেতাদের দলে? তরুণ-তরুণী, প্রবীণ প্রবীণা— সব প্রজন্মকে মিলিয়ে দিয়ে জেগে থাকে, জিতে যায় ফুল। (Flower Market)

জেগে থাকা, জিতে যাওয়ার কথায় মনে পড়ল। ওই যে লোক গুলো দাঁড়িয়ে আছেন ওখানে, তাঁদের প্রত্যেকেরই গল্প অনেকটা সিনেমার মতো। রাত্রি একটার ট্রেন ধরে হাওড়া স্টেশনে এসে থেকে যান কেউ। ভোর হতে এখানে আসা। কেউ প্রথম ট্রেন ধরে, কেউ শেষ ট্রেন ধরে আসেন। অনেকে হাওড়া স্টেশন থেকেই রাতের অন্ধকারে চলে আসেন এখানে। ভোর তিনটে থেকেই তো শুরু কেনাকাটা। (Flower Market)

Flower Market
কলকাতার ছোট-বড় সব বাজারেই এখান থেকে ফুল যায় সাত সকালে।

বহু বছর আগে এভাবে ভোররাতের ট্রেন ধরে কলকাতা ময়দানে আসতেন বহু ফুটবলার। হাওড়া-ব্যান্ডেল, শিয়ালদহ-নৈহাটি লাইনের ট্রেন উপচে পড়ত ফুটবলারে। তাঁদের অনেকে কিংবদন্তি হয়েছেন, অনেকে হারিয়ে গিয়েছেন। আজকের দিনে ময়দানে উঠেই গিয়েছে সকালে প্র্যাকটিসের ধারণা। অনেক ক্লাবও মুছে গিয়েছে। ভেজা জার্সি, ফুটবল বুটের বদলে ভোররাতের ট্রেনে ফুলের গন্ধই উথলে ওঠে বেশি। (Flower Market)

কলকাতার ছোট-বড় সব বাজারেই এখান থেকে ফুল যায় সাত সকালে। গড়িয়াহাট বা মানিকতলার যে কোনও চেনা ফুলবিক্রেতার সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে সেখানে। ফুলের দর ওঠা নামা করে বিশেষ দিন দেখে, পুজো দেখে, বিয়ের তারিখ দেখে। বাজারের সময়ও বদলায় এসব দেখে। কোনওদিন আর বিরতি থাকে না। সারাদিন, সারা রাত। একরাশ পদ্ম এবং গাঁদার মধ্যে বসে তমলুকের এক মহিলা বলছিলেন ‘দেখুন, ওই যে আকন্দ ফুলের মালা পড়ে রয়েছে। কিছুদিন আগের শ্রাবণ মাসের সময় ওই মালার দামই ছিল হাজার টাকা। এখন সেটা পঞ্চাশে নেমে গিয়েছে। (Flower Market)‘

“বেল পাতা আবার বেশি আসে ঝাড়খণ্ড থেকে। অনেক মহিলাই বলছিলেন, বেলপাতা আসে পাহাড় থেকে। সেই পাহাড় আসলে কী, ধাঁধায় পড়ছিলাম বারবার।”

পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া এবং রানাঘাট-বনগাঁ। মূলত এই চার জায়গা থেকেই ফুল আসে কলকাতার সবচেয়ে বড় ফুল বাজারে। অবশ্য় কলকাতা লাগোয়া সব জেলাই এখন ফুলচাষে অমৃতের স্বাদ পেয়ে গিয়েছে। (Flower Market)

বেল পাতা আবার বেশি আসে ঝাড়খণ্ড থেকে। অনেক মহিলাই বলছিলেন, বেলপাতা আসে পাহাড় থেকে। সেই পাহাড় আসলে কী, ধাঁধায় পড়ছিলাম বারবার। আরও খোঁজ নিতে বুঝলাম, বেলপাতা হয় চোদ্দো পনেরো রকম। ধানবাদ, রাজগীর, পাকুড়, গয়া থেকেই আসে বেশি। সবচেয়ে ভাল বেলপাতা নাকি গয়ার। তিনটি পাতা নিখুঁত সাজানো থাকবে। পাতার উপরের দিকটা নিখুঁত সরু থাকবে সেখানে। ছেঁড়া থাকবে না কোনও অংশ। (Flower Market)

Flower Market
এই মল্লিকঘাট ফুলবাজারে দাঁড়িয়ে ভগবান নয়, মনে পড়ে মানুষের কথাই।

বসিরহাট স্বরূপনগর থেকে বেলপাতা আনেন এক ভদ্রলোক। তিনি দেখিয়ে দিলেন বেলপাতার ফারাক। কোনওটা তীব্র সবুজ, কোনওটা অল্প, কোনওটা হালকা হলুদ। তাঁর পর্যবেক্ষণ, বাংলার মধ্যে সবচেয়ে ভাল বেলপাতা বোলপুরের। (Flower Market)

হাওড়া ব্রিজের মুখে এক তরুণের সঙ্গে দেখা। বিক্রি করছেন বেল পাতা। বীরভূমের আমেদপুর থেকে আসেন প্রতিদিন। আমেদপুর কিন্তু শান্তিনিকেতন থেকেও আরও ঘণ্টা দেড়েকের রাস্তা। সেই মাঝরাতে বেরোনো‌ আর ফিরতে ফিরতে দুপুর গড়িয়ে যায় প্রায়দিন। তার জন্য কোনও হাহুতাশ দেখলাম না। ঘটনাটা তাঁদের কাছে এত স্বাভাবিক। মল্লিকঘাটের এই জায়গাটা যেন কলকাতা ও জেলাকে একসঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে যায়। রীতিমতো অবাক করা শক্তি তার। (Flower Market)

আরও পড়ুন: জয় বাবা বীরুনাথ

বাসন্তী রোডের দিক থেকে আসা এক তরুণের সঙ্গে কথা হল ফুটপাথে। প্রায় কুড়ি বছর হল এই বাজারে। মেদিনীপুরের ছেলে, কয়েক বছর ধরে থাকেন বাসন্তীর দিকে। ওখানেই জমি কিনে ফুলের চাষ করছেন। তাকেও বাড়ি থেকে বের হতে হয় ভোর তিনটে নাগাদ। ফুল নিয়ে গাড়ি করে আসেন কয়েকজন মিলে। (Flower Market)

ঘোরাঘুরি করে যা বোঝা গেল, তাতে অবশ্যই ফুলে এক নম্বরে পশ্চিম মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া এলাকা। সেখানে ক্ষীরাই তো ফুলের জন্য পর্যটক, ভ্লগারদের স্বর্গরাজ্য। তারপর হাওড়ার বাগনান। রানাঘাট, ঠাকুরনগর আর বনগাঁর দিকে আগে মূলত রজনীগন্ধা ও গাঁদা ফুলের চাষই বেশি হত। এখন সব ধরনের ফুলের চাষ হচ্ছে সেখানে। ডায়মন্ডহারবারের দিক থেকেও লোক আসছে এখন। তারা কেন পিছিয়ে থাকবে হাওড়া বা পশ্চিম মেদিনীপুরের তুলনায়? উত্তরবঙ্গ বা ভিনরাজ্য ছেড়ে দিন, এখান থেকে ফুল যায় ভূটান, বাংলাদেশ, নেপালেও। (Flower Market)

Flower Market
মল্লিক ঘাটে গঙ্গার ধারে ঘুপচি ঘরগুলোয় তৈরি হচ্ছে নানারকম স্তবক, নানা রকম মালা।

মল্লিক ঘাটে গঙ্গার ধারে ঘুপচি ঘরগুলোয় তৈরি হচ্ছে নানারকম স্তবক, নানা রকম মালা। এক একটা ছোট ঘুপচি ঘরে এত সুন্দর মালা তৈরি ভাবা যায় না। মালা তৈরির জায়গাও আলাদা। গোলাপ, রজনীগন্ধা থেকে অর্কিড, সব রকমের মালা। সাদা মতি ফুলের মালাও দেখলাম। এই যে এখন রাজনীতিকদের বিশাল বিশাল মালা পরানোর চল হয়েছে, তেমন দীর্ঘ মালাও তৈরি হয়। গাড়ি সাজানোর মালাও পাবেন। (Flower Market)

আসলে ঘাটের ধারে এই ছোট ছোট ঘুপচি ঘরের পৃথিবী আবার কয়েক ফুট দূরের ফুল বিক্রেতাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কোথাও ঝুলছিল বকুল ফুলের পাতার মালা। তার মধ্যে ফুল দিয়ে সাজালে তার একেবারে অন্য রূপ। বকুল ফুলের পাতা নাকি সবচেয়ে সবুজ, সবচেয়ে কঠিন। তাই এর মালার কদর। আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম পান পাতা দিয়ে এই মালা। ভুল ভাঙল পরে। (Flower Market)

সন্নাসী রাজা ছবির উত্তমকুমার তাঁর অননুকরণীয় গেয়ে ওঠেন, ‘ফুল সাজতে লাগে, পুজোয় লাগে, লাগে জন্মদিনে, ফুলশয্যায়, লাগে মৃতদেহ সাজিয়ে দিতে, কত রসিক দেখো ভগবান।‘

সেদিন মল্লিকঘাটের অপ্রশস্ত, ময়লা বাজারে এক প্রবীণ হাতে তুলে বিক্রি করছিলেন এক সূর্যমুখী ফুলের স্তবক। এখানে ভোরে এসে তিনিই কিনেছেন সেই ফুল। তারপর নিজে বিক্রি করছেন। যতটা লাভ করা যায়। বাজারের বিস্তৃতি এতটাই, একজনের পক্ষে পুরোটা ঘোরা সম্ভব নয়। তাই এই ধরনের লোকগুলোই ভরসা। (Flower Market)

এখন দেখলাম, হাওড়া ব্রিজ সংলগ্ন পুরোনো ওয়ারহাউস ছাড়িয়ে জগন্নাথ ঘাটের দিকে যায়নি ফুলের বাজার। পুজো এগিয়ে এলে নিশ্চিতভাবে চলে যাবে। তখন আরও নামবে ফুল বিক্রেতাদের ঢল। ওয়ারহাউসের ভিতরটা ভয়ঙ্কর। অন্ধকার ঘুটঘুটে, ময়লা, জলে একাকার। সকাল সাতটার সময় হাঁটলে মনে হয়, রাত নটা বেজে গিয়েছে। কল্পনার চেষ্টা করি, এখানে যাঁরা ফুল বিক্রিতে বসেন, তাঁদের ভোগান্তি কীরকম। (Flower Market)

Flower Market
একদিকে নিঃশব্দে বয়ে চলেছে গঙ্গা, অন্যদিকে সশব্দে চলে যাচ্ছে চক্র রেল। তার ঠিক মাঝে বহু রাত জাগা মহিলা, পুরুষ জীবনযুদ্ধে সম্বল করেছে ফুল।

সন্নাসী রাজা ছবির উত্তমকুমার তাঁর অননুকরণীয় গেয়ে ওঠেন, ‘ফুল সাজতে লাগে, পুজোয় লাগে, লাগে জন্মদিনে, ফুলশয্যায়, লাগে মৃতদেহ সাজিয়ে দিতে, কত রসিক দেখো ভগবান।‘ (Flower Market)

এখানে, এই মল্লিকঘাট ফুলবাজারে দাঁড়িয়ে ভগবান নয়, মনে পড়ে মানুষের কথাই।

আরও পড়ুন: জয় বাবা বীরুনাথ

একদিকে নিঃশব্দে বয়ে চলেছে গঙ্গা, অন্যদিকে সশব্দে চলে যাচ্ছে চক্র রেল। তার ঠিক মাঝে বহু রাত জাগা মহিলা, পুরুষ জীবনযুদ্ধে সম্বল করেছে ফুল। রোদে পুড়ছে, বৃষ্টিতে ভিজছে, রাতের পর রাত জাগছে, ঘর ছেড়ে আসছে বহু দূরে। ভগবান রসিক হতে পারেন, মানুষ কিন্তু লড়াকু। (Flower Market)

সারাদিন বাজারের পর প্রচুর ফুল পড়ে থাকে বাজারে, খড়ের গাদায়। অবিক্রিত, কোনও কাজে লাগল না আর। তাতে লেগে রইল বহু দূরের কোনও ফুলচাষীর স্বপ্ন, জীবন সংগ্রামের লড়াই। তা কী করে বৃথা যেতে পারে বলুন তো? (Flower Market)

ছবি সৌজন্য- লেখক
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

Rupayan Bhattacharjee

বিশিষ্ট সাংবাদিক। এই সময় সংবাদপত্রের প্রাক্তন সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদক। উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সম্পাদক। আনন্দবাজার পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে কভার করেছেন একাধিক বিশ্বকাপ ফুটবল ও অলিম্পিক গেমস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, খেলা, গান, সিনেমা, ভ্রমণ, খাবারদাবার, মুক্তগদ্য— বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতে ভালবাসেন।

Picture of রূপায়ণ ভট্টাচার্য

রূপায়ণ ভট্টাচার্য

বিশিষ্ট সাংবাদিক। এই সময় সংবাদপত্রের প্রাক্তন সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদক। উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সম্পাদক। আনন্দবাজার পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে কভার করেছেন একাধিক বিশ্বকাপ ফুটবল ও অলিম্পিক গেমস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, খেলা, গান, সিনেমা, ভ্রমণ, খাবারদাবার, মুক্তগদ্য— বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতে ভালবাসেন।
Picture of রূপায়ণ ভট্টাচার্য

রূপায়ণ ভট্টাচার্য

বিশিষ্ট সাংবাদিক। এই সময় সংবাদপত্রের প্রাক্তন সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদক। উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সম্পাদক। আনন্দবাজার পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে কভার করেছেন একাধিক বিশ্বকাপ ফুটবল ও অলিম্পিক গেমস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, খেলা, গান, সিনেমা, ভ্রমণ, খাবারদাবার, মুক্তগদ্য— বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতে ভালবাসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

সংস্কৃতি

আহার

অমৃতা ভট্টাচার্য
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
অমৃতা ভট্টাচার্য

বিহার

কলমকারী

কিংশুক বন্দ্যোপাধ্যায়
রূপায়ণ ভট্টাচার্য

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

বিতস্তা ঘোষাল
বিতস্তা ঘোষাল

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com