Zari








আওধের নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ যখন কলকাতায় আসেন, তখন তাঁর হাত ধরে বাংলায় আসে বিরিয়ানি। একই সঙ্গে নবাব ওয়াজেদ আলি নিয়ে আসেন বেনারসি পান আর নকশা তোলা বাহারি জরির পোশাক।
সুতোর বাঁধনে জড়িয়ে থাকে ইতিহাস। প্রায় হাজার বছরের পুরনো এই বয়ন শিল্প মুঘল শাসকদের সঙ্গে ভারতবর্ষে আসে। এখন বাংলার হাওড়া, হুগলী, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদা ও মুর্শিদাবাদে এই সূক্ষ্ম বয়ন শিল্পের কাজ হয়। শুধুমাত্র হাওড়া জেলাতেই প্রত্যক্ষভাবে জরিশিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৬ লক্ষ শিল্পী। বিশেষ করে হাওড়ার জরি শিল্প তার সূক্ষ্ম কারুকার্য, মানানসই নকশা ও চোখ-ধাঁধানো হস্তশিল্পের জন্য বিখ্যাত। প্রজন্মের পর প্রজন্ম হাওড়ার সাঁকরাইল, পাঁচলা, উলুবেড়িয়া, বাগনান, ডোমজুর, আমতায় এই শিল্পকে লালন করে চলেছে। আক্ষরিক অর্থেই হাওড়া হয়ে উঠেছে বাংলার জরি হাব।
ফটো স্টোরি: শান্তিপুর তাঁত শিল্প
পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত আরও বহু মানুষ। গ্রামীণ হাওড়ার অর্থনীতির ভাল-মন্দ অনেকটাই নির্ভর করে জরিশিল্পের উপরে। মূলত গ্রামীণ এই দূষণবিহীন শিল্পে কাজ করেন বহু নারী-পুরুষ। ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার পরিশ্রম আর নিখুঁত পারদর্শিতা লাগে এই শিল্পে। অপরিসর, অপরিষ্কার কাজের জায়গা, সুরক্ষা বিহীন ভবিষ্যৎ, এই নিয়ে বেশ কিছু দাবি ও অভিযোগ আছে শিল্পীদের। দেশের বাজারে কলকাতা ছাড়া দিল্লি, মুম্বই, দক্ষিণ ভারত ও চণ্ডীগড়ে ভাল বাজার আছে জরির। হাওড়ার জরির কাজ যায় লন্ডন, আমেরিকা, ফ্রান্স, মধ্য প্রাচ্য, পাকিস্তান। (Zari)
নেশা ও পেশা ফটোগ্রাফি। ডকুমেন্টারি স্টোরি টেলিং, স্ট্রিট ও ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফিতে আগ্রহী।