Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

পণ্ডিত আবার রস-রচয়িতা: বিরল মিশ্রণ

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়

নভেম্বর ৮, ২০১৯

Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

নবনীতা দেবসেন ছিলেন এক জন খুব পণ্ডিত ব্যক্তি, আবার ছিলেন এক অসামান্য রস-রচয়িতা। এই কম্বিনেশন অত্যন্ত বিরল। আমাদের পণ্ডিতরা সাধারণত হন খুব নীরস, জীবন বুঝেশুনে তাঁরা এতটা গোমড়া হয়ে থাকেন যে কোনও কিছুতেই আর মজা পান না। নবনীতা তলিয়ে বুঝতেন, ক্ষুরধার বিশ্লেষণও করতে পারতেন, একই সঙ্গে জীবনের আনন্দটাও গাঢ় ভাবে উপভোগ করতে পারতেন। জীবনে সকলেই আঘাত পায়, উনিও কম পাননি। শরীর প্রায়ই খারাপ থাকত। তা সত্ত্বেও সদাপ্রসন্ন থেকে উনি আমাদের শিখিয়ে গিয়েছেন, কেমন করে বাঁচতে হয়। আমরা সাধারণত ফুসকুড়ি হলেই ডিপ্রেশনে চলে যাই, বিষাদ এখন খুব ফ্যাশনদুরস্তও বটে। সে ছাঁচকে উনি ওঁর গোটা বাঁচাবাঁচি ও লেখালিখি দিয়েই সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথা মনে পড়লেই তাঁর একটা হাসিভর্তি মুখের ছবি আমাদের সামনে ভেসে ওঠে। চরম রোগও তাঁর কাছ থেকে ভয় বা বিষণ্ণতা আদায় করতে পারেনি। সেখানেও তিনি কিছুটা কৌতুক আর কিছুটা লড়াকু মানসিকতা নিযে মোকাবিলা করেছেন। শেষ দিকের লেখাগুলোয় আমরা সে স্বাক্ষর পাই। মানুষ যখন বুঝতে পারে, ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর, হয় সে খুব উপদেশমূলক লেখা লেখে, কিংবা তার তিক্ততাটা ফুটে বেরোয়। উল্টে নবনীতা তাঁর শেষ দিকের লেখায় মরণকে থোড়াই কেয়ার করে, সুকুমারের পংক্তি ব্যবহার করে, মৃত্যুর নাকের সামনে কাঁচকলা দেখিয়ে গিয়েছেন। তাঁর সাহিত্য মূল্যায়নের ক্ষমতা আমাদের সকলের নেই। কিন্তু তাঁর এই অঢেল জীবনানন্দকে আমরা কিছুটা হলেও অনুসরণ করতে পারি। 

তাঁর বাবা-মা খুব বিখ্যাত ছিলেন, তিনি সারা জীবন অনেক বড় বড় লোকের সঙ্গে মিশেছেন, এমন সব সভায় গিযেছেন, এমন সব সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছেন, যা আমরা অনেকে কল্পনাও করতে পারব না। এই সে দিনও অভিজিত বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এসে তাঁর বাড়িতে দেখা করে গেলেন। সোজা কথায়, তিনি ছিলেন এই সমাজের উঁচু শ্রেণির এক জন মানুষ। যিনি যে-সব কথা ভাবেন ও যাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন, সেই সব ভাবনা ও সমাবেশ আমাদের নাগালের অনেকটা বাইরে। অথচ সে-সব বিবরণও যখন তিনি তাঁর লেখায় দিতেন, একটা উজ্জ্বল মেধা আর একটা সাদাসাপ্টা মানসিকতারই প্রতিফলন আমরা দেখতে পেতাম। মনে হত, আমাদেরই এক জন যেন কী করে এই ঝাড়লণ্ঠন জ্বলা সভাটায় পৌঁছে গিয়েছে, তার পর চারপাশের মজা দেখতে দেখতে সরস ভঙ্গিতে সবটা লিখছে। সেই পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা আমাদের নেই, কিন্তু কথাগুলো পড়ে মনে হয়, আরে, এ তো একদম আমারই মতো কথা, আমারই মতো ভাবনা। যে লোকটা নোবেল-পাওয়া লোকের সঙ্গে হরদম মেশে, তার ভাবনা আমার মতো হবে না, এই আমাদের বিশ্বাস। উঁচুতে উঠে যাওয়া লোকেরও তা-ই প্রোজেক্ট, আমার ভাবনা যেন আমজনতার মতো না হয়। কিন্তু নবনীতা এ-সব কিছুকে থোড়াই কেয়ার করে, তাঁর লেখার পর লেখায় অসামান্যতার সঙ্গে এই সুরটা বাজিযে যেতে সক্ষম হয়েছেন, আমি তোমাদেরই লোক। এ বড় সহজ কথা নয়। মহাকাব্যের ব্যঞ্জনা বুঝতে বুঝতে বারান্দার চড়াইপাখির নাচ বা পাড়ার পাগলের প্রতি সমান মনোযোগী থাকা, খুব কঠিন ক্ষমতা। নবনীতার কাছ থেকে যেন এই শিক্ষাও আমরা পাই।

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় হাসিখুশি, এমনকী যখন সেই মোড-এ থাকেন না, নিজেকে ঠেলে হিঁচড়ে হিহিহোহো’তেই ল্যান্ড করানোর চেষ্টা করেন। জাপটে ভালবাসেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সিরিয়াল, গান, রাস্তায় নেড়িবাচ্চার লটরপটর কান। পড়াশোনার সময় ফিল্ড করেছেন, হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভেঙেছেন, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়েছেন, এক বার পাহাড় থেকে অনেকটা হড়কে পড়ে মুচ্ছো গেছিলেন, উঠে দেখেন, কবর! এক বার ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অঙ্গ হিসেবে চিন গেছিলেন, রাত্তির দুটোয় সাংহাইয়ের রাস্তায় হারিয়ে গিয়েও কাঁদেননি। ফিউজ সারাতে পারেন, পাখার কার্বন বদলাতে পারেন, কাগজের চোঙ পাকিয়ে গাড়িতে পেট্রল ঢালতে পারেন, চিনেবাদাম ছুড়ে দিয়ে মুখে নিপুণ লুফতে পারেন। ব্যাডমিন্টন খেলার ইচ্ছে খুব, কিন্তু জায়গা ও র‌্যাকেট নেই। অরোরা বোরিয়ালিস যারা দেখেছে, তাদের একাগ্র ভাবে হিংসে করেন। দেশের বাড়িটা উনি বড় হওয়ার পর ছোট হয়ে গেছে বলে, আর আমির খান এক বার কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন— সে কাগজ হারিয়ে গেছে বলে, জেনুইন কষ্ট পান। এক বার ঈগলের রাজকীয় উড়ান আগাগোড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন।

Picture of সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় হাসিখুশি, এমনকী যখন সেই মোড-এ থাকেন না, নিজেকে ঠেলে হিঁচড়ে হিহিহোহো’তেই ল্যান্ড করানোর চেষ্টা করেন। জাপটে ভালবাসেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সিরিয়াল, গান, রাস্তায় নেড়িবাচ্চার লটরপটর কান। পড়াশোনার সময় ফিল্ড করেছেন, হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভেঙেছেন, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়েছেন, এক বার পাহাড় থেকে অনেকটা হড়কে পড়ে মুচ্ছো গেছিলেন, উঠে দেখেন, কবর! এক বার ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অঙ্গ হিসেবে চিন গেছিলেন, রাত্তির দুটোয় সাংহাইয়ের রাস্তায় হারিয়ে গিয়েও কাঁদেননি। ফিউজ সারাতে পারেন, পাখার কার্বন বদলাতে পারেন, কাগজের চোঙ পাকিয়ে গাড়িতে পেট্রল ঢালতে পারেন, চিনেবাদাম ছুড়ে দিয়ে মুখে নিপুণ লুফতে পারেন। ব্যাডমিন্টন খেলার ইচ্ছে খুব, কিন্তু জায়গা ও র‌্যাকেট নেই। অরোরা বোরিয়ালিস যারা দেখেছে, তাদের একাগ্র ভাবে হিংসে করেন। দেশের বাড়িটা উনি বড় হওয়ার পর ছোট হয়ে গেছে বলে, আর আমির খান এক বার কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন— সে কাগজ হারিয়ে গেছে বলে, জেনুইন কষ্ট পান। এক বার ঈগলের রাজকীয় উড়ান আগাগোড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন।
Picture of সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় হাসিখুশি, এমনকী যখন সেই মোড-এ থাকেন না, নিজেকে ঠেলে হিঁচড়ে হিহিহোহো’তেই ল্যান্ড করানোর চেষ্টা করেন। জাপটে ভালবাসেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সিরিয়াল, গান, রাস্তায় নেড়িবাচ্চার লটরপটর কান। পড়াশোনার সময় ফিল্ড করেছেন, হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভেঙেছেন, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়েছেন, এক বার পাহাড় থেকে অনেকটা হড়কে পড়ে মুচ্ছো গেছিলেন, উঠে দেখেন, কবর! এক বার ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অঙ্গ হিসেবে চিন গেছিলেন, রাত্তির দুটোয় সাংহাইয়ের রাস্তায় হারিয়ে গিয়েও কাঁদেননি। ফিউজ সারাতে পারেন, পাখার কার্বন বদলাতে পারেন, কাগজের চোঙ পাকিয়ে গাড়িতে পেট্রল ঢালতে পারেন, চিনেবাদাম ছুড়ে দিয়ে মুখে নিপুণ লুফতে পারেন। ব্যাডমিন্টন খেলার ইচ্ছে খুব, কিন্তু জায়গা ও র‌্যাকেট নেই। অরোরা বোরিয়ালিস যারা দেখেছে, তাদের একাগ্র ভাবে হিংসে করেন। দেশের বাড়িটা উনি বড় হওয়ার পর ছোট হয়ে গেছে বলে, আর আমির খান এক বার কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন— সে কাগজ হারিয়ে গেছে বলে, জেনুইন কষ্ট পান। এক বার ঈগলের রাজকীয় উড়ান আগাগোড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন।

3 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস