তিনি নানা পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁকে নিয়ে ইতিমধ্যে চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। নামী তারকা তাঁর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। আনন্দ কুমারের কাছে খ্যাতি আজ আর কোনও অজানা ব্যাপার নয়। কিন্তু তাঁর জীবনে সে দিনের অনুষ্ঠানটির একটা বিশেষ মর্যাদা ছিল। সেটা এই কারণে নয় যে, তাঁকে সম্বর্ধনা দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মার্কিন দুনিয়ায়, ক্যালিফর্নিয়ার সান হোসে শহরে। অন্য সব কিছু ছাপিয়ে এই সম্বর্ধনার গুরুত্ব এইখানে যে, পুরস্কারের নাম ‘এডুকেশন এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড’, অর্থাৎ শিক্ষা উৎকর্ষ সম্মান।
আনন্দ কুমার গত আঠারো বছর ধরে পাটনা শহরে তাঁর ‘সুপার থার্টি’ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বছর তিরিশ জন ছাত্রছাত্রী বেছে নেন তিনি, এক বছর তাদের তৈরি করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি-র প্রবেশিকা পরীক্ষা আইআইটি-জেইই-র জন্য। খুবই কঠিন পরীক্ষা, তাই তার প্রস্তুতি প্রচণ্ড পরিশ্রম এবং মনোযোগ দাবি করে। এবং দাবি করে ভাল প্রশিক্ষণ। সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সুপার থার্টি প্রকল্পে।
আর তার ফল মেলে হাতে হাতে। সেই ২০০২ থেকেই প্রতি বছর তিরিশ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অন্তত আশি শতাংশ প্রবেশিকা পরীক্ষায় ভাল ফল করে আইআইটিতে পড়ার সুযোগ পায়। অনেক বছরই সাফল্যের অনুপাত নব্বই শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, কখনও কখনও একশো শতাংশ প্রতিযোগী সফল হয়েছে, মানে তিরিশে তিরিশ।
কিন্তু এই সাফল্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাত্রাটি অন্য। শুরু থেকেই সুপার থার্টিতে সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেই সব পড়ুয়াকে যাদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। এখানকার ফি-ও এই ধরনের কোর্সের বাজারচলতি খরচের তুলনায় অনেক কম। তার ফলে কেবল অনেক অসচ্ছল ছাত্রছাত্রী জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়নি, আরও অনেকে সেই দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়েছে। আনন্দ কুমারের কাছে সেটাই এই প্রকল্পের আসল মানে। শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই তাঁর এত দিনের উদ্যোগ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফাউন্ডেশন ফর এক্সেলেন্স (এফএফই) প্রতিষ্ঠান তাঁদের পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আনন্দ কুমারকে এ বারের সম্মানটি অর্পণ করলেন। অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণে তিনি একটি কথা বিশেষ ভাবে বলেছেন। মার্কিন দুনিয়ায় যে ভারতীয় বা ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষরা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, তাঁদের ভারতের শিক্ষার প্রসারে সহযোগিতা করতে আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, সেটাই হবে স্বভূমিকে প্রতিদান দেওয়ার শ্রেষ্ঠ উপায়।
বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।