Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

এক গৃহবাসিনীর চোখে গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক

আলপনা ঘোষ

এপ্রিল ২, ২০২৫

Gayatri Chakravorty Spivak
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
(Gayatri Chakravorty Spivak)

“আমি একজন সুখী বৃদ্ধা”, এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছিলেন পণ্ডিত, লেখক, অনুবাদক এবং অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। সময়টি ছিল তাঁর ৮০ বছরের জন্মদিন। খুব আশ্চর্য হয়েছিলাম। তবে তিনি গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক- এক অনন্যা প্রতিভাশালী, যশস্বী বাঙালি নারী যিনি অতি সম্প্রতি মানববিদ্যার গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ২০২৫ সালের নরওয়ের হলবার্গ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এই পুরস্কারকে বলা হয় সমাজবিজ্ঞানের নোবেল।

গায়ত্রী তাঁর উপরোক্ত উক্তি প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তিনি যে এতদিন বেঁচে আছেন এই পৃথিবীতে, সেই উপলব্ধি তাঁকে আনন্দিত করে। এই সানন্দ উপলব্ধি তাঁকে তাঁর জীবনের পথে নিঃশঙ্ক ভাবে চলতে সাহায্য করে। তিনি মনে করেন, জীবনে যা কিছু সমস্যা, বিপদ, বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন তিনি তা অনায়াসে অতিক্রম করে চলতে সক্ষম এবং এইসব অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনে চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। (Gayatri Chakravorty Spivak)

গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক- এক অনন্যা প্রতিভাশালী, যশস্বী বাঙালি নারী যিনি অতি সম্প্রতি মানববিদ্যার গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ২০২৫ সালের সুইডেনের হলবার্গ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের জন্ম কলকাতায় ১৯৪২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি। তাঁর মতে তাঁর শৈশব ছিল পরিপূর্ণ। স্নেহ, ভালোবাসায় ভরা এক জীবন। পরিবারে ছিল না কোনও ধর্মান্ধতা। বাবা-মা ছিলেন তাঁদের সন্তানদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল এবং কর্তব্যপরায়ণ। গায়ত্রী, বার্নাড উইলিয়ামসের ‘নৈতিক সৌভাগ্য’ বলে একটি ধারণার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। তিনি মনে করেন জীবনে এই রকম বাবা-মাকে পাওয়া তাঁর ‘নৈতিক সৌভাগ্য’।

Alpana Ghosh_Probondho_Gayetri Chakraborty_2.4.2025_AG (4)

তাঁর জন্মের অব্যবহিত পরেই আসে দেশের স্বাধীনতা, দেশ বিভাগ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। তাঁর বাবা শ্রী পরেশ চক্রবর্তী ছিলেন একজন সৎ, মানবদরদী মানুষ এবং লব্ধপ্রতিষ্ঠ চিকিৎসক। গায়ত্রীর স্মরণে আছে  সেই ভয়াবহ দিনগুলিতে তাঁর বাবা নিজেদের প্রাণের পরোয়া না করে পাশের এক বস্তির সমস্ত মুসলমানদের আশ্রয় দিয়েছিলেন তাঁর স্বল্প আয়তনের গৃহে। তিনি জানতেন এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময়ে তাঁরা আক্রান্ত হতে পারেন। শুধুমাত্র মুসলমান প্রতিবেশীদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে। যদিও পরেশ চক্রবর্তী ছিলেন একজন অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়, অহিংস প্রকৃতির মানুষ, কিন্তু সেদিন ঐ দুর্গত মানুষদের রক্ষা করতে তিনি কীভাবে যেন একটি দো’নলা বন্দুক জোগাড় করে রেখেছিলেন, যদিও বন্দুকচালনার কোনও শিক্ষাই তাঁর ছিল না। সেই আর্ত প্রতিবেশীদের বন্দুক দেখিয়ে সেদিন তিনি এই বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন যে যতক্ষণ তাঁর দেহে প্রাণ আছে, তাঁদের কেশাগ্র কেউ স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারবে না। (Gayatri Chakravorty Spivak)

আরও পড়ুন: সন্‌জীদা খাতুন (১৯৩৩-২০২৫): সহজ কঠিন দ্বন্দ্বে ছন্দে

(Gayatri Chakravorty Spivak) কলকাতার ডায়োসেসান স্কুলে গায়ত্রীর পড়া ছিল এক চমৎকার অভিজ্ঞতা। এখানকার ছাত্রীরা সবাই ছিল উচ্চবর্ণের হিন্দু বা স্বচ্ছল মুসলমান পরিবারভুক্ত। শিক্ষিকারা ছিলেন ধর্মান্তরিত বাঙালি খ্রিস্টান সমাজের নিচু তলা থেকে উঠে আসা মানুষ। তাঁরা সবাই নিঃসন্দেহে ছিলেন অসাধারণ। সেসব দিনে সমাজে উচ্চ বর্ণের হিন্দুরা ছিলেন সর্বেসর্বা। তাঁরা খ্রিস্টানদের প্রায় ঘৃণার চোখে দেখতেন। সমাজে তাঁদের কোনও সম্মান ছিল না। গায়ত্রী এই সামাজিক বৈষম্য সম্বন্ধে অবহিত ছিলেন। শিক্ষকরা কিন্তু হিন্দু/মুসলমান ছাত্রীদের পড়াতেন অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে। তাঁর বুঝতে অসুবিধা হত না যে তাঁরা যেন জীবন বাজি রেখে পড়াতেন তাঁদের সবটুকু দিয়ে।

ওঁদের প্রতি গায়ত্রী আজও শ্রদ্ধাবান। প্রধান শিক্ষিকা, মিস চারুবালা দাসের কথাও ভোলেননি তিনি। ছিলেন অসাধারণ ব্যক্তিত্বময়ী। মিস দাস ছিলেন সব ছাত্রীদের আদর্শ। আজও গায়ত্রী বিশ্বাস করেন তাঁর পূর্ণতা, তাঁর এভাবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ডায়োসেসানের অবদান অনেকটাই। (Gayatri Chakravorty Spivak)

Alpana Ghosh_Probondho_Gayetri Chakraborty Spivak_2.4.2025_AG (2)

বিদ্যালয়ের পাঠ সসম্মানে শেষ করার পরে গায়ত্রী ভর্তি হন লেডি ব্র্যাবোর্ন কলেজে। তৃতীয় বর্ষে তিনি প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হন কারণ সেই বছরই প্রথম প্রেসিডেন্সি কলেজে ছাত্রীরা প্রবেশাধিকার পেয়েছিল। ব্র্যাবোর্ন কলেজেও গায়ত্রী পেয়েছিলেন সুকুমারী ভট্টাচার্যের মতো শিক্ষাদানে নিবেদিত প্রাণ মহান সব অধ্যাপিকাকে। সুকুমারী ভট্টাচার্যের কাছে ইংরেজি শেখার অভিজ্ঞতা আজও স্মরণীয় হয়ে আছে আশি বছর পেরনো গায়ত্রীর মনে। শুধু পড়ানো নয়, তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ ছিলেন তিনি। গায়ত্রীর ইংরেজি বলাতে পারদর্শিতা, বুদ্ধিমত্তা সুকুমারীদির অজ্ঞাত ছিল না। কলেজের প্রতিনিধি করে তিনি পাঠালেন গায়ত্রীকে তাঁর জীবনের প্রথম বিতর্ক সভায় অংশ নিতে। অধ্যাপকদের হতাশ না করে জিতে ফিরলেন গায়ত্রী। পুরস্কার পেলেন একটি কফি টেবিল বই। আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে সেদিন তিনি বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন সেই বই। (Gayatri Chakravorty Spivak)

সুকুমারী ভট্টাচার্যের কাছে ইংরেজি শেখার অভিজ্ঞতা আজও স্মরণীয় হয়ে আছে আশি বছর পেরনো গায়ত্রীর মনে। শুধু পড়ানো নয়, তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ ছিলেন তিনি।

(Gayatri Chakravorty Spivak) এরপর গায়ত্রী তৃতীয় বর্ষে ভর্তি হলেন প্রেসিডেন্সিতে। তিনি ছিলেন বিজ্ঞানের ছাত্রী। পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হতে চেয়েছিলেন। প্রবেশিকা পরীক্ষায় পদার্থ বিজ্ঞানে পাশ করলেও, তিনি গণিতে বাধা পেলেন। ফলে ভর্তি হতে পারলেন না। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষাতে ইংরেজিতে তিনি প্রথম হয়েছিলেন। মনে পড়ে গেল সুকুমারীদির কাছে ইংরেজি শিক্ষার কথা। গায়ত্রী স্নাতকে ভর্তি হয়ে গেলেন ইংরেজি অনার্স নিয়ে আর মাত্র কয়েক দিন ক্লাস করার পরে তাঁর মনে হল ইংরেজিই তাঁর বিষয়। 

প্রেসিডেন্সি কলেজে গায়ত্রী পেয়েছিলেন বিদগ্ধ সব অধ্যাপককে। তাঁদের মধ্যে তারক সেন, অমল কুমার ভট্টাচার্যর কথা তাঁর মনে আছে। তাঁরা ছিলেন বিরল অধ্যাপক। মনে আছে সুবোধ সেনগুপ্তর কথা যিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী। তিনি বার্নার্ড শ ও অন্যান্য বিষয় পড়াতেন। তারাপদ মুখোপাধ্যায় পড়াতেন শেক্সপীয়ার। ছাত্রছাত্রীরা মুগ্ধ হয়ে শুনতেন, এত চমৎকার ছিল তাঁর পড়ানোর ধরন। (Gayatri Chakravorty Spivak)

Gayatri Chakravorty Spivak_Article_Alpana Ghosh_2.4.2025

প্রেসিডেন্সি কলেজের সেই সব অসামান্য শিক্ষকদের কাছে পাঠ নেওয়ার স্মৃতি আজও মহা মূল্যবান গায়ত্রী স্পিভাকের কাছে। কিন্তু একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আজও তাঁর মনে কাঁটার মতো বিধে আছে। এই কলেজেই  প্রথম তিনি লিঙ্গ অবজ্ঞা এবং বৈষম্যের সম্মুখীন হন। তাঁর সতীর্থরা সর্বক্ষণ তাঁকে নিয়ে নানা সমালোচনা করতেন। তাঁরা তাঁকে শুনিয়ে বলতেন যে তিনি মেয়ে এবং তার উপরে সুন্দর। আর তাই অধ্যাপকরা গায়ত্রীকে বেশি পছন্দ করেন। পরীক্ষাতে তাঁর বেশি নম্বর পাওয়া বা মেধা তালিকায় তাঁর নাম প্রথমে আসা, তা নিয়েও মারাত্মক সব বিদ্রুপাত্মক কথা শুনতে হত। বলা হত যে একজন সত্যিকারের মেধাবী ছাত্র থাকা সত্ত্বেও গায়ত্রী নাকি শুধুমাত্র মেয়ে এবং সুন্দর হওয়ার কারণে সুবিধে ভোগ করছেন। এই ধরনের অভিজ্ঞতা তাঁর পক্ষে মোটেই সুখকর হয়নি। একটা নিরাপত্তাহীনতার বোধ তাঁকে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। হাস্যকর মনে হলেও আজও গায়ত্রী সেই নিরাপত্তাহীনতা থেকে মুক্তি পাননি। (Gayatri Chakravorty Spivak)

বলা হত যে একজন সত্যিকারের মেধাবী ছাত্র থাকা সত্ত্বেও গায়ত্রী নাকি শুধুমাত্র মেয়ে এবং সুন্দর হওয়ার কারণে সুবিধে ভোগ করছেন।

(Gayatri Chakravorty Spivak) ১৯৫৯ সালে গায়ত্রী প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজি ও বাংলা উভয় সাহিত্যে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত হয়ে স্নাতক হন। এর পরে ৫২০০ ডলার ধার করে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং এখানে তিনি ইংরেজিতে এমএ এবং তুলনামূলক সাহিত্যে পিএইচডি করেন। সেই শুরু। শিক্ষাক্ষেত্রে কত যে মহতী কাজ করেছেন গায়ত্রী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতি ক্ষেত্রেই গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটেছে এমন মাপকাঠিতে যার অনেকটাই আমার মতো সাধারণ বাঙালির জীবনের খাতায় না পড়াই থেকে গিয়েছে। তিনি বর্তমানে কী কী বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন, তার ব্যাপ্তি কতটা প্রসারিত, তার সব চেয়ে বেশি পরিচয় দেয় যে প্রবন্ধ ‘ক্যান দ্য সাবল্টার্ন স্পিক?’ বা তাঁর রচিত সব গ্রন্থ, সমালোচনা, অনুবাদ, তাঁর সমাজসেবা ইত্যাদি নিয়ে কত লেখালিখি চলছে! এসবের উপরে গায়ত্রীর পরিচয়…
একজন সংস্কার বিরোধী নারী হিসেবে যিনি নারীবাদ আন্দোলনকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। 

গায়ত্রী নিজের পরিচয় দেন, “Practical Marxist- Feminist-Deconstructionist” হিসেবে। তিনি পশ্চিমী তত্ত্বকে অবলম্বন না করে, তিনি ভারতীয় নারীদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। শুধু তাই নয়, “সাবল্টার্ন” বা প্রান্তিক নারীদের তিনি টেনে এনেছেন সাহিত্য তত্ত্বের জগতেও। তিনি শ্বেতাঙ্গদের দেওয়া নারীবাদকে সরিয়ে রেখে, সেই সব দেশের নারীদের কথা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন যেখানে আজও রয়েছে ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি, পিতৃতন্ত্র এবং অর্থনৈতিকভাবে পরনির্ভরশীল, নির্যাতিতা নারীরা। (Gayatri Chakravorty Spivak)

আরও পড়ুন: শ্রদ্ধাভরে শেষকৃত্য করান ‘শ্মশান বন্ধু’ টুম্পা দাস

(Gayatri Chakravorty Spivak) এতসব কর্মকাণ্ডের পরেও তিনি বাংলা ভাষাকে ভুলে যাননি। তাঁর আফসোস এখন, আর বিশেষ বাংলা লেখা ও বলার সুযোগ হয় না। তবে এই তো ক’বছর আগে অনুষ্টুপ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হল গায়ত্রীর প্রথম বাংলা প্রবন্ধের সংকলন ‘অপর’।

গায়ত্রী স্পিভাকের পণ্ডিত সব গুণগ্রাহীদের বিচারে তাঁর বিশাল কর্মকাণ্ডের মধ্যে তুলনামূলকভাবে যে  কাজটি নিয়ে সব চাইতে কম আলোচনা হয়েছে, তা হল স্বদেশের ভূমিহীন প্রান্তিক মানুষদের সাক্ষর করার তাঁর একক প্রচেষ্টা। ১৯৮৬ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের সীমান্তে ভূমিহীন নিরক্ষরদের শিক্ষাদানের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন তিনি। এই কাজের জন্য তাঁর বন্ধু লোর মেটজগার, গ্রামীণ শিক্ষার কাজে গায়ত্রীকে সাহায্য করার জন্য ১০,০০০ ডলার রেখে যান। এর মাধ্যমে গায়ত্রী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ‘পরেশচন্দ্র অ্যান্ড শিবানী চক্রবর্তী মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ফর রুরাল এডুকেশন’। শুধু তাই নয়, এখানে তিনি তাঁর কিয়োটো পুরস্কারের বেশির ভাগ অর্থই দান করেছিলেন। তিনি বলেছেন যে ব্যবহারিক কাজে তাঁর এই নিরন্তর প্রচেষ্টা তাঁকে উচ্চ তত্ত্বের সীমা আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে। প্রান্তিক মানুষজন বিশেষ করে ভূমিহীননিরক্ষর প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের জন্য এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা তিনি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন যা ছিল এক অকল্পনীয় বিষয়। (Gayatri Chakravorty Spivak)

গায়ত্রী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ‘পরেশচন্দ্র অ্যান্ড শিবানী চক্রবর্তী মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ফর রুরাল এডুকেশন’। শুধু তাই নয়, এখানে তিনি তাঁর কিয়োটো পুরস্কারের বেশির ভাগ অর্থই দান করেছিলেন।

(Gayatri Chakravorty Spivak) পুরুলিয়ার সব চেয়ে পিছিয়ে পড়া জনজাতি শবরদের কল্যাণে সেই মধ্য আটের দশকে গায়ত্রী শুরু করেছিলেন তাঁর কাজ। এই কল্যাণকর কাজে তিনি সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন শিক্ষাকে। তিনি গড়ে তুলেছিলেন একাধিক নন ফর্মাল বিদ্যালয়। তবে শবরদের ‘মা’ বলে খ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীই প্রথম গায়ত্রীকে ওই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। প্রতি বছর শীতকালে গায়ত্রী আসতেন পুরুলিয়ার রাজনোয়াগড়ে। শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষাদানের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতেন। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে জেনে নিতেন তাদের সমস্যা। প্রয়োজনে শিশুদের ক্লাসও নিতেন। শবরদের আর্থিক দুরবস্থা সম্বন্ধে অবহিত ছিলেন গায়ত্রী। তাই তিনি নিজের খরচে মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করেন ছাত্রদের জন্য। তাঁর আশা ছিল এতে ছাত্রদের ক্লাসে উপস্থিতির সংখ্যা বাড়বে। গায়ত্রী নিজে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতেন কীভাবে শবর শিশুদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়াতে হবে। তাঁর শেখানো পদ্ধতি খুবই ফলপ্রসূ হয়েছিল। এসবের ফলে শিশুদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। (Gayatri Chakravorty Spivak)

Alpana Ghosh_Probondho_Gayetri Chakraborty_2.4.2025_AG (3)

সম্প্রতি গায়ত্রী স্পিভাকের পুরস্কার প্রাপ্তিতে ভারি খুশি পুরুলিয়ার শবররা। গত শতকের ৮০র দশকে তাঁদের দিদিমণির কর্মকাণ্ডের কথা বারবার স্মরণে উঠে আসছে। প্রান্তিক গোষ্ঠীর মহিলা এবং শিশুদের জন্য তিনি যা করে গেছেন, সে কথা পুরুলিয়ার শবর জনগোষ্ঠী আজও ভোলেনি।

তাঁর প্রচেষ্টাতে শবর শিশুদের বিদ্যালয়ে আসার এবং পড়াশুনোতে যে আগ্রহ দেখা গিয়েছিল তা আজও বজায় আছে। শবরদের মধ্যে অনেকেই আজ উচ্চশিক্ষিত এবং জীবনে প্রতিষ্ঠিত। এসবই সম্ভব হয়েছে তাদের দিদিমণি গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের ঐকান্তিক চেষ্টার কারণে। যে শিক্ষার আলো তিনি শবর গোষ্ঠীর মধ্যে জ্বালিয়েছিলেন তা আজও দেদীপ্যমান। (Gayatri Chakravorty Spivak) 

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া

Author Alpana Ghosh

পেশা শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতা দিয়ে। পরে নামী ইস্কুলের বাচ্চাদের দিদিমণি। কিন্তু লেখা চলল। তার সঙ্গে রাঁধা আর গাড়ি চালানো, এ দুটোই আমার ভালবাসা। প্রথম ভালবাসার ফসল তিনটি ব‌ই। নানা রাজ্যের অন্নব্যঞ্জন, মছলিশ আর ভোজনবিলাসে কলকাতা।

Picture of আলপনা ঘোষ

আলপনা ঘোষ

পেশা শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতা দিয়ে। পরে নামী ইস্কুলের বাচ্চাদের দিদিমণি। কিন্তু লেখা চলল। তার সঙ্গে রাঁধা আর গাড়ি চালানো, এ দুটোই আমার ভালবাসা। প্রথম ভালবাসার ফসল তিনটি ব‌ই। নানা রাজ্যের অন্নব্যঞ্জন, মছলিশ আর ভোজনবিলাসে কলকাতা।
Picture of আলপনা ঘোষ

আলপনা ঘোষ

পেশা শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতা দিয়ে। পরে নামী ইস্কুলের বাচ্চাদের দিদিমণি। কিন্তু লেখা চলল। তার সঙ্গে রাঁধা আর গাড়ি চালানো, এ দুটোই আমার ভালবাসা। প্রথম ভালবাসার ফসল তিনটি ব‌ই। নানা রাজ্যের অন্নব্যঞ্জন, মছলিশ আর ভোজনবিলাসে কলকাতা।

2 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com