(California Wildfires)
সময়টা জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষদিক, খবরের কাগজের পাতায় একটি ছবি দেখে প্রাথমিকভাবে ইজরায়েলের বোমা বর্ষণে বিধ্বস্ত প্যালিস্তাইন মনে হয়েছিল। সে দৃশ্য দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে পারমানবিক বোমায় আক্রান্ত হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরের ছবির সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ন। কিন্তু ভুল ভাঙল ছবির নীচে লেখা বিবরণ দেখে। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে লস এঞ্জেলেসের জঙ্গলে জানুয়ারি ৫ থেকে এই দাবানাল শুরু হয়েছিল। এখন তা জঙ্গলের পাশে শহরের অনেকাংশে ছড়িয়ে বসতি এলাকার বাড়ি, গাড়ি, দোকান, বাজার মিলে অন্তত ১০ হাজার নির্মাণকে ধ্বংস করেছে। শহরের একাংশকে ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। ১৫ দিনের বেশি সময় জুড়ে জঙ্গলসহ প্রায় ৫০ হাজার একর এলাকা জুড়ে চলেছে দাবানলের এই ধ্বংসলীলা। মৃতের সংখ্যা প্রায় ২০ ছাড়িয়ে গেছে। আশেপাশের যেসব এলাকায় দাবানলের আগুন পৌঁছায়নি সেসব এলাকা ধোঁয়া-ধুলায় দূষণ, জল ও বিদ্যুতের অভাবে বাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। মানুষ সামায়িকভাবে সেসব এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। (California Wildfires)

আমরা জানি গ্রীষ্মমণ্ডলীয়, নাতিশীতোষ্ণ ও বোরিয়াল বনাঞ্চলে প্রাকৃতিক উপায়ে এবং মানুষের দ্বারা অনিচ্ছাকৃত ও ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগার ফলে দাবানলের সৃষ্টি হয়ে থাকে। বোরিয়াল অঞ্চল যেহেতু শুষ্ক হয়, প্রাকৃতিক উপায়ে সেখানে দাবানলের সৃষ্টি হয় বেশি। মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে চাষবাস ও অন্যান্য কাজে বনাঞ্চলকে ব্যবহারের জন্যে আগুন লাগিয়েও বন ধ্বংস করে থাকে। বনাঞ্চলের প্রকৃতি ও ঘনত্বের উপরে দাবানলের সংখ্যা ও তীব্রতা এবং ধ্বংসাত্মকতার পরিমাণ নির্ভর করে। বনাঞ্চলে প্রাকৃতিক উপায়ে আগুন লাগলে তার নিয়ন্ত্রণ করা অনেক ক্ষেত্রেই খুব মুশকিলের হয়। বাতাসের গতির তীব্রতা ও দিকের উপরে এই নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই নির্ভর করে। (California Wildfires)
আরও পড়ুন: পরিকাঠামো: ডিজিটাল পরিকাঠামো ও বিশ্বায়ন
পরিবেশ, বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র্য, বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপত্য, জল-মাটি সহ সার্বিক বাস্তুতন্ত্রের উপরে জঙ্গলের এই দাবানলের প্রভাব পরে। কাছাকাছি কোনও জনবসতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি হয়। মানুষ ও প্রাণীর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। দাবানল সাধারণত একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধিজনিত বিশ্ব উষ্ণানয়ের ফলে অথবা আবহাওয়ার তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে গত ১০০ বছর ধরে দাবানলের সংখ্যা, তীব্রতা ও বিস্তৃতি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইনস্টিটিউট ২০২৩ সালের ২৯শে আগস্ট একটি রিপোর্টে উল্লেখ করছে ২০ বছর আগের তুলানায় দাবানলের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন হয়েছে। মেরীল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিককালের একটি গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে ২০০১ সালের তুলনায় পৃথিবীতে এখন প্রতি বছর প্রায় গড়ে ৩০ লক্ষ হেক্টরের বেশি বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে। ২০২১ সালে দাবানলের সংখ্যা বহুল বৃদ্ধি পায়, ২০০১ সালের তুলনায় প্রায় ৯৩ লক্ষ হেক্টর বেশি জঙ্গল ধ্বংস হয়। মজার বিষয়, যা প্রায় বেলজিয়াম দেশের আয়তনের সমান। ২০০১ থেকে ২০২১ এই ২০ বছরে দাবানলের কারণে পৃথিবীর প্রায় এক-চতুর্থাংশ বনাঞ্চলের হ্রাস ঘটেছে। যদিও ২০২২ সালে বনাঞ্চল ধ্বংসের পরিমাণ ২০২১ সালের তুলনায় ৬৬ লক্ষ হেক্টর বেশি হয়। (California Wildfires)
২০২৩ সালে কানাডা ও হাওয়াইয়ে রেকর্ড দাবানলের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য অংশের দাবানল যুক্ত হয়ে আগেকার সমস্ত রেকর্ড ভেঙে ফেলে। ২০২১ সালের পরে তিন বছর ধরে কানাডার ব্রিটিশ কলোম্বিয়ার লিট্টনে বনাঞ্চলে দাবানলের সৃষ্টি হয়ে কয়েকটি গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। ২০২৩ সালের জুন– জুলাই মাসে কানাডার বিধ্বংসী দাবানলের কারণে আমেরিকায় নিউ ইয়র্ক শহর সহ অন্যান্য কয়েকটি শহরে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়, সেই কারণে ঐ অঞ্চলগুলিতে কমলা সতর্কতা জারি করা হয় এবং বলা হয় মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বেরোবেন না। ২০২১ সালে শুধু প্রাকৃতিক কারণের দাবানলের জন্যেই এই ধ্বংস হয়নি, ব্রাজিলের তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি বোলসোনারো আমাজনের জঙ্গল ধ্বংস করে পাম চাষ, রাবার চাষ ও অন্যান্য কৃষিজ পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের আর্থিক উন্নয়নের পরিকল্পনা করার জন্যেও বিশাল এলাকার জঙ্গল আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করে। (California Wildfires)

ব্রাজিলে এখনও পর্যন্ত আগুন লাগানোর সেই ধারা বজায় রয়েছে। ২০২৪ সালে আমেরিকা, কানাডা, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, পর্তুগাল, অষ্ট্রেলিয়া, জার্মানি, রাশিয়া সহ আরওো অনেক দেশে তাপপ্রবাহের কারণে যে হারে দাবানলের সংখ্যা ও এলাকা বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে ২০২৩ সালের বনাঞ্চলের ধ্বংসের পরিমাণকে ছাড়িয়ে গেছে। মূলতঃ যেসব দেশে শীতের সময় দীর্ঘ হয় ও বনাঞ্চল শুষ্ক থাকে অর্থাৎ বোরিয়াল জঙ্গল থাকে সেখানে প্রাকৃতিক কারণে দাবানল বেশি দেখা যায়। ২০২৪ -এর জুলাই মাসের শেষ ও আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ায় তাপপ্রবাহের জন্যে প্রায় ৫ লক্ষ একর অরণ্য দাবানলের জন্য ধ্বংস হয়ে গেছে, ঐ জুলাই মাসেই আমেরিকায় ১০২টি যায়গায় বনাঞ্চলে বড় দাবানলের সৃষ্টি হয়েছে। (California Wildfires)
আরও পড়ুন: বিজ্ঞানে মিলায় বস্তু : জন্মদিনে বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে
গ্রীষ্মমণ্ডলীয়(ট্রপিক্যাল) অঞ্চলে দাবানলের মূল কারণ হচ্ছে মানুষের দ্বারা বনাঞ্চল ধ্বংস করে কৃষি কাজের প্রসারণ। গত ২০ বছরে প্রায় প্রতি বছর গড়ে ৩৬০০০ হেক্টর করে বনাঞ্চল দাবানলের কারণে হ্রাস পাচ্ছে, যা সারা পৃথিবীর বনাঞ্চল ধ্বংসের প্রায় ১৫ শতাংশ। ঐতিহাসিকভাবে নাতিশীতোষ্ণ(টেম্পারেট) ও উপক্রান্তীয়(সাব-ট্রপিক্যাল) দাবানলের দ্বারা বনাঞ্চল হ্রাসের পরিমাণ বোরিয়াল ও গ্রীষ্মমন্ডলীয় (ট্রপিক্যাল) অঞ্চল থেকে অনেক কম। এই দুটি অঞ্চলে ২০০১ থেকে ২০২২ পর্যন্ত দাবানলজনিত বনাঞ্চল ধ্বংসের পরিমাণ পৃথিবীর মোট পরিমাণের মাত্র প্রায় ১৬ শতাংশ। এই অঞ্চলগুলিতেও আস্তে আস্তে ধ্বংসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভৌগোলিক জলবায়ু অঞ্চল বিশেষে দাবানলের সংখ্যা ও চরিত্র নির্ভর করে। দাবানলের কারণে পৃথিবীতে যত বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে তার মধ্যে ৭০ শতাংশ বোরিয়াল বনাঞ্চলে ধ্বংস হয়েছে। (California Wildfires)
জলবায়ু পরিবর্তন সারা পৃথিবী জুড়ে দাবানল বৃদ্ধির অন্যতম মূল কারণ। ১৫০ বছর আগের তুলনায় তাপপ্রবাহ ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যৎ বাণী করছেন যে তাপপ্রবাহের সংখ্যা ও তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবী আরো গরম হবে। এই উত্তপ্ত পৃথিবী বর্তমানের থেকে আরো অনেক সংখ্যায় বনাঞ্চলে দাবানল সৃষ্টির সহায়ক। সারা পৃথিবী জুড়েই তাপপ্রবাহের কারণে বনাঞ্চলে দাবানলের সংখ্যা বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন ঋতুর পরিবর্তন, বৃষ্টিপাতের চরিত্রের পরিবর্তন এবং ঝড়ঝঞ্জা, বন্যা, খরা ইত্যাদি বৃদ্ধি পেয়ে জলবায়ুর পরিবর্তন দ্রুতহারে ঘটছে। ফলে কৃষি উৎপাদনকে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘের “খাদ্য ও কৃষি সংস্থা” ২০২৪ সালের জুলাই মাসে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে উল্লেখ করেছে ২০২৩ সালে পৃথিবীতে দাবানলের জন্য প্রায় ৬৬৮৭ মেগাটন কার্বন- ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়েছে। বনাঞ্চলে দাবানলজনিত গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের ফলে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়ে দাবানলের সৃষ্টি করছে যা আবার গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন করছে – এই চক্রব্যূহে সারা পৃথিবী আক্রান্ত। (California Wildfires)

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই মূলতঃ গত একশো বছর ধরে সমস্ত অঞ্চলেই কমবেশি দাবানালের সংখ্যা ও এলাকার বৃদ্ধি ঘটছে তাতে কোন সংশয় নেই। ২০২৪ সালে আগেকার সমস্ত রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাপপ্রবাহের সংখ্যা ও তীব্রতা দ্রুত হারে বাড়ছে। সুইডেন, নরওয়ে, আইসল্যান্ড সহ বেশিরভাগ স্কান্ডিনেভিয়ান দেশ, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, বেলজিয়াম-এর মতো ইউরোপের দেশগুলি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা, নিউ মেক্সিকো, নেভাদা সহ অনেক প্রদেশে এবং মেক্সিকোর বেশির ভাগ অঞ্চলের তাপমাত্রা গত কয়েক বছর ধরে জুন-জুলাই মাসে অনেকদিন ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রীর মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে যা অতীতের সমস্ত রেকর্ডকে অনেকগুণ ছাপিয়ে গেছে। (California Wildfires)
আরও পড়ুন: চুম্বক আবিষ্কারের কাহিনী
স্পেন, সুইডেন, জার্মানী, পোল্যান্ড, ডেনমার্ক সহ ইওরোপের দেশে সাধারণতঃ ডিসেম্বরের শীতে যে তাপমাত্রা থাকে তার থেকে অনেক বেশি তাপমাত্রা ২০২৪ এর ডিসেম্বরে বিরাজ করেছে যা নজিরবিহীন। ভারতবর্ষেও একই প্রবণতা দেখা গেছে। গত ৪ বছর ধরেই জুন-জুলাই মাসে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৫০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে যা উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকের থেকে প্রায় ১৫০ গুণ বেশী। চীনে তাপপ্রবাহের সংখ্যা প্রায় ৫০ গুণ বৃ্দ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশ সহ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও এই বছর ২০২৪ সালে তাপপ্রবাহের সংখ্যা ও তীব্রতা বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আমরা পশ্চিমবঙ্গেও অনুভব করেছি। (California Wildfires)
আজ পৃথিবীর অস্তিত্বই সংকটের মুখে। রাষ্ট্রসংঘের জেনারেল সেক্রেটারি আন্তেনিও গুতারেস ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই একটি সভায় উল্লেখ করেছিলেন “বিশ্ব উষ্ণায়নের যুগ সমাপ্ত এবং ফুটন্ত বিশ্বের যুগ শুরু”। ২০২৪ সালের সবকটি মাসের তাপমাত্রা প্রাক-শিল্পবিপ্লবের শুরুর সময়ের (১৭৫০ সাল) তুলানয় ১.৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বেশি ছিল যা পূর্বে যত ভবিষ্যৎ বাণী বা আশংকা করা হয়েছিল তাকে সম্পূর্নভাবে নস্যাৎ করে দিয়েছে। সমস্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে গত ৩ – ৪ বছরে পৃথিবীর ইতিহাসে সমস্ত নির্দিষ্ট মাসই ছিল আগের সমস্ত নির্দিষ্ট মাসের থেকে উষ্ণতম। (California Wildfires)

ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আই পি সি সি) অভিমত যদি বর্তমান গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধির হার বজায় থাকে তাহলে একবিংশ শতাব্দীর শেষে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রী সেন্টিগেড বা তারও বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আগেকার সমস্ত চুক্তি বা সিদ্ধান্ত ব্যার্থ হওয়ার পরে গত ২০১৫ সালে প্যারিসে একটি সম্মেলনে সমস্ত দেশ মিলে চুক্তি করে যে সবাই নিজের দেশে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের জন্য জরুরি ভিত্তিতে কর্মসূচী গ্রহণ করবে যাতে ২১০০ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাক শিল্পবিপ্লব অর্থাৎ ১৭৫০ সালের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি না পায়। কিন্ত ৭৭ বছর আগেই অর্থাৎ ২০২৪ সালেই পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা শিল্প বিপ্লবের তুলনায় ১.৫৫ ডিগ্রী সেন্টীগ্রেড ছাড়িয়ে গেছে, যা পৃথিবীর ইতিহাসে পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষেত্রে একটি মাইলস্টোন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। (California Wildfires)
১৯৭২ সালের জুন মাসে সুইডেনের স্টকহোমে প্রথম বিশ্ব পরিবেশ সম্মেলন থেকে গত ৫৩ বছর ধরে পরিবেশের সর্বক্ষেত্রে আর্ন্তজাতিক সম্মেলনগুলিতে যে সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল তা যদি সমস্ত দেশ পালন করত তাহলে আজ পরিবেশগত কারণে সমগ্র পৃথিবী যে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে তাকে প্রত্যক্ষ করতে হত না। আর্ন্তজাতিক ও জাতীয় স্তরে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে পরিবেশ দূষণ রোধে এবং বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যেসব পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় তাকে বাস্তবায়নে বাধ্য করার জন্য বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমদের দেশে ও রাজ্যে প্রশাসনিক স্তরে যে সমস্ত পরিবেশ বিরোধী কর্মসূচী নেওয়া হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে ও পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা গ্রহণ করানোর জন্য প্রশাসনকে বাধ্য করাতে হবে। সরকারি সমস্ত স্তরসহ সব অংশের মানুষকে যুক্ত করে সঠিকভাবে রূপায়নের মাধ্যমেই সার্বিক পরিবেশ রক্ষা সম্ভব। (California Wildfires)
পরিবেশ বিজ্ঞানী, দীর্ঘদিন ধরে জনবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও প্রাক্তন সম্পাদক। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি।