Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

জন্মশতবর্ষে প্রবাদপ্রতীম মদনমোহন

সঞ্জয় সেনগুপ্ত

ডিসেম্বর ৬, ২০২৪

Sanjay Sengupta_Prabandha_Madan Mohan Kohli_5.12.2024_SC
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

সুরকার মদনমোহন কোহলির সঙ্গীতযশের প্রায় সমস্তটা জুড়ে রয়েছে তাঁর হিন্দি গানের সম্ভার। দেশি ও বিদেশী সুরের নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং বাণিজ্যিক সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও তাঁর বিভিন্ন ধরনের গবেষণাধর্মী ভাবনা-চিন্তার প্রয়োগ পরম্পরা। গোটা পঞ্চাশ, ষাট বা সত্তর দশকে নিজের সৃষ্ট সঙ্গীতে মদনমোহন তুলে ধরেছিলেন স্বকীয় এক বৈশিষ্ট্য। আর সেই বৈশিষ্ট্য হল এমন কোনও নির্দিষ্ট নিয়মবিধি অনুকরণ না করা যাতে শ্রোতারা সেই সঙ্গীত শুনেই বলতে বা বুঝতে পারেন, সেটা ‘টিপিক্যালি মদনমোহন’। (Madan Mohan)

আরও পড়ুন: সবরকম ভালো গানের সমঝদার ছিলেন তিনি

একটা নির্দিষ্ট ধারার গানের জনকের ক্ষুদ্র সত্তায় নিজেকে আবদ্ধ করে রাখার কোনও আগ্রহ ছিল না তাঁর। আর সেই কারণেই তাঁর প্রতিটি সৃষ্টির মধ্যেই ফুটে উঠেছিল নব নির্মাণের আনন্দ ও উচ্ছ্বাস। অর্কেস্ট্রার উপাদান বেশি করে ধরা পড়েছে মদনমোহনের গানে। বৃহত্তর অর্থে, গানের মধ্যে অর্কেস্ট্রার এই ব্যবহারকে এক অসাধারণ উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শুধু মূল গান নয়, সেইসঙ্গে প্রিলিউড এবং ইন্টারলিউডের পর্বগুলিতে যন্ত্রসঙ্গীতের ব্যবহারে সুরসংযোজনার ক্ষেত্রেও কল্পনার অসাধারণ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছিলেন মদনমোহন। (Madan Mohan)

তাঁর প্রতিটি সৃষ্টির মধ্যেই ফুটে উঠেছিল নব নির্মাণের আনন্দ ও উচ্ছ্বাস। অর্কেস্ট্রার উপাদান বেশি করে ধরা পড়েছে মদনমোহনের গানে।

সুরসম্রাট মদনমোহন জন্মেছিলেন ইরাকের বাগদাদ শহরে ২৫জুন, ১৯২৪ সালে। পিতৃদেব রায় বাহাদুর চুনিলাল ইরাকি পুলিশ বাহিনীর সাথে কর্মরত ছিলেন হিসাবরক্ষক জেনারেল হিসেবে। তাঁর পরিবার ১৯৩৩ সালে ফিরে আসে ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের চাকওয়ালে। পরবর্তীকালে, তাঁরা লাহোরে বসবাস শুরু করায়, যুবক মদনমোহন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাঠ গ্রহণ করেছিলেন গুরু কর্তার সিং-এর প্রশিক্ষণে। ১৯৪৩ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট পদে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে চাকরি ছেড়ে তিনি সঙ্গীতের টানে ফিরে আসেন মুম্বাই শহরে। সাংগীতিক জগতে তাঁর পুরোপুরি প্রবেশ ঘটে আকাশবাণীর লখনউ কেন্দ্রে প্রোগ্রাম অ্যসিসট্যান্ট রূপে ১৯৪৬– এ। এখানে তিনি ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁ, বেগম আখতার, ওস্তাদ আলি আকবর খাঁ, তালাত মেহমুদের মতো প্রথিতযশা শিল্পীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। (Madan Mohan)

Sanjay Sengupta_Prabandha_Madan Mohan Kohli_5.12.2024_SC

মদনমোহন নিজে গান গাইতে ভালবাসতেন এবং প্লেব্যাক শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন ছিল মনে। বন্ধুবর, প্রখ্যাত কবি ও গীতিকার কৈফি আজমি “The Mirror” পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন – “Madan Mohan was very fond of and excelled in singing. In 1947, he got his first chance to record two ghazals penned by Behzad Lucknawi – Aane Lagaa Hai Koi Nazar Jalwaa Gar Mujhe / Is Raaz Ko Duniya Jaanti Hai (Record No. N 26941). Soon after, in 1948 he recorded two more private ghazals penned by Deewan Sharar – Wo Aaye Toh Mehfil Mein Ithlaate Huye Aaye / Duniya Mujhe Kahti Hai Ki Main Tujhko Bhoola Doon (Record No. N 35165)”. এক সময় মদনমোহন হিন্দি ছবির নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চেয়েছিলেন। তাঁর প্রথম ছবি “পর্দা” মুক্তি পায়নি। পরবর্তীতে যে সকল ফিল্মে তাঁকে দেখা গিয়েছিল সেগুলি “শহীদ” (১৯৪৮), “আসুঁ” (১৯৫৩) এবং “মুনিমজি” (১৯৫৫)। শরীরচর্চা করতেন এবং খেলাধুলোর প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল তাঁর। বিলিয়ার্ড খেলতেন নিয়মিত এবং নামকরা বক্সার ছিলেন মদনমোহন। তবে প্রিয় খেলা ছিল ক্রিকেট এবং ১৯৫০ সালে অল্পের জন্য রাজ্য রঞ্জি ট্রফি দলে জায়গা হয়নি অসুস্থতার কারণে। সাঁতারেও আগ্রহ ছিল যুবক মদনমোহনের। (Madan Mohan)

আরও পড়ুন: সুরের সলিল ঢেউ: শতবর্ষের দিকে

লতা মঙ্গেশকরের বহুমুখী সঙ্গীত আহরণ, তাঁকে যেমন সাবলীল স্বতঃস্ফূর্ত গায়কী দিয়েছিল, তেমনই করে তুলেছিল সঙ্গীত পরিচালকদের ভরসাস্থল। কিন্তু ধাপে ধাপে ঘটে এই উত্থান এবং হিন্দি গানের সম্রাজ্ঞীর আসনটি অর্জন করতে প্রথম রেকর্ড থেকে তাঁকে বেশ কয়েকবছর প্রতীক্ষা করতে হয়েছে। তবে এই পর্বে লতা ছিলেন সতত সক্রিয় এবং ক্রমিক উৎকর্ষের দিশারি। গত শতাব্দীর চারের দশক থেকে লতা মঙ্গেশকরের যে জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল তা পাঁচ, ছয় এবং সাতের দশকেও অব্যাহত ও ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ১৯৫১ সালে এক নতুন সুরের কান্ডারির সঙ্গে লতা মঙ্গেশকরের দীর্ঘমেয়াদি যোগাযোগের সূত্রপাত ঘটে। তিনি মদনমোহন। (Madan Mohan)

শরীরচর্চা করতেন এবং খেলাধুলোর প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল তাঁর। বিলিয়ার্ড খেলতেন নিয়মিত এবং নামকরা বক্সার ছিলেন মদনমোহন।

তাঁর সুরে লতার গাওয়া প্রথম জনপ্রিয় গানটি আমরা পেয়েছিলাম ১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “ভাই ভাই” ছবিতে। “কদর জানে না মোরা বালম বেদর্দী” লিখেছিলেন মরমী গীতিকার রাজেন্দ্রকৃষ্ণ। “দেখ কবিরা রোয়া” (১৯৫৭) ফিল্মের “মেরি বীণা তুম বিন রোয়ে” এক অনবদ্য সংযোজন নিঃসন্দেহে। কালিদাস বটব্যাল পরিচালিত ছবি “আদালত” (১৯৫৮)–এ লতা কণ্ঠে পরিবেশিত “ইয়ুঁ হসরতোঁ কে দাগ মহব্বত মেঁ ধো লিয়ে” এক যুগান্তকারী নিবেদন হিসেবে থেকে যাবে চিরকাল। এছাড়া, লতা-মদনমোহন জুটির শ্রেষ্ঠ গানের রত্নভাণ্ডার উন্মোচিত হলে পাওয়া যাবে হিরে জহরতের সম্ভার। (Madan Mohan)

Sanjay Sengupta_Prabandha_Madan Mohan Kohli_5.12.2024_SC

সেই বিবিধ মূল্যবান মণিমুক্তগুলি যথাক্রমে– “হাম প্যায়ার মে জ্বলনেওয়ালোঁ কো” (জেলর, ১৯৫৮), “ব্যরন নিঁদ না আয়ে” (চাচা জিন্দাবাদ, ১৯৫৯), “ও ভুলি দাস্তান লো ফির ইয়াদ“ (সংযোগ, ১৯৬১), “আপ কি নজরোঁ নে সমঝা“ (আনপড়, ১৯৬২), “ম্যায় তো তুম সঙ্গ ন্যন মিলাকে“ (মনমৌজি, ১৯৬২), “অগর মুঝসে মহব্বত হ্যায়“ (আপ কি পরছায়িয়াঁ, ১৯৬৪), “নগমা ও শের কি সৌগাত“ (গজল, ১৯৬৪), “জরা সি আহট হোতি হ্যায়“ (হকিকত, ১৯৬৪), “লগ যা গলে কি ফির“ (ও কৌন থি, ১৯৬৪), “তু যাঁহা যাঁহা চলেগা“ (মেরা সায়া, ১৯৬৬), “না তুম বেওয়াফা হো“ (এক কলি মুস্কাই, ১৯৬৮), “বইয়াঁ না ধরো“ (দস্তক, ১৯৭০), “মিলো না তুম তো“ (হীর রাঞ্ঝা, ১৯৭০), “তুমসে বিছড় কে চ্যন“ (মহারাজা, ১৯৭০), “রসম-এ-উলফৎ কো“ (দিল কি রাহেঁ, ১৯৭৩), “বেতাব দিল কি তামান্না“ (হঁসতে জখম, ১৯৭৩), “হ্যায় তেরে সাথ মেরি“ (হিন্দুস্তান কি কসম, ১৯৭৩), “সাকিয়া করিব আ“ (প্রভাত, ১৯৭৩), “রুকে রুকে সে কদম“ (মৌসম, ১৯৭৫), “মুস্কিল হ্যায় জীনা“ (সাহেব বাহাদুর, ১৯৭৭), “রাত উজিয়ারি দিন আন্ধেরা“ (চালবাজ, ১৯৮০)। (Madan Mohan)

সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর ও মদনমোহনের প্রথম পরিচয় হয় ১৯৪৮ সালে, ফিল্মিস্তান-এর “শহীদ“ ছবির রেকর্ডিং-এ।

সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর ও মদনমোহনের প্রথম পরিচয় হয় ১৯৪৮ সালে, ফিল্মিস্তান-এর “শহীদ“ ছবির রেকর্ডিং-এ। মাস্টার গুলাম হায়দারের সুরে “পিঞ্জরে মে বুলবুল বোলে“ তৎকালীন দিনের জনপ্রিয় নিবেদন। ভাই ও বোনের মধুর সম্পর্কের এই গানটি পরে ফিল্ম থেকে বাদ পড়লেও এক চিরকালীন বন্ধনে জড়িয়ে পড়েন এই দুই কিংবদন্তি। মদনমোহনের সুরে লতা প্রথমবার মাইক ধরলেন ১৯৫১ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত দেবেন্দ্র গোয়েল পরিচালিত, শেখর ও রেহানা অভিনীত “অদা“ ফিল্মের জন্য। “প্রীতম মেরি দুনিয়া মে দো দিন“, “আঁখো, আঁখো মে উনসে প্যার হো গ্যয়া“ সঙ্গীতপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছিল। রেকর্ডিং –এর আগে লতা, সুরকারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। পরে তিনি ইংরেজি ভাষায় প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন– “I had some misgivings about Madan Mohan and that’s why I did not sing for him earlier. I am really sorry for that. I shouldn’t have believed those mischievous people who tried to spoil his name“। (Madan Mohan)

আরও পড়ুন: পান্থজনের সখা

লতা-মদনমোহন জুটির ২২৭– টি গানের সাম্রাজ্যে আমরা পেয়েছি মন কেড়ে নেওয়া অসাধারণ মেলোডি সমৃদ্ধ রচনার পাশাপাশি কিছু অল্পশ্রুত নাগমার ডালি যা আমাদের স্মৃতিমেদুর করে তোলে। বেস গিটার, স্ট্রিংস, পিয়ানো, ঢোলক ও ঘটম সম্বলিত গানের তালিকায় একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক – “হমারে বাদ অব ম্যাহফিল মেঁ“ (বাগী, ১৯৫৩), “মেরে পিয়া সে কোই যা কে“ (আশিয়ানা, ১৯৫২), “বড়ি বরবাদিয়াঁ লে কর“ (ধুন, ১৯৫৩), “কাল জ্বলেগা চাঁদ সারি রাত“ (নির্মোহি, ১৯৫২), “চাঁদ মধ্যম হ্যায় আসমান চুপ হ্যায়“ (রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম, ১৯৫৫), “কহে জিয়া কি উমঙ্গ ছায়ে“ (অ্যহসান, ১৯৫৪), “চল দিয়া দিল মেরা তোড় কে“ (ফিফটি-ফিফটি, ১৯৫৬), “ছোড় মুঝে না জানা“ (মদহোশ, ১৯৫১) ইত্যাদি। (Madan Mohan)

Sanjay Sengupta_Prabandha_Madan Mohan Kohli_5.12.2024_SC

পুরুষ গায়কদের মধ্যে মহম্মদ রফির গায়কী বিশেষ পছন্দ করতেন সুরকার মদনমোহন। এই অমর জুটি শুরু হয় ১৯৫০ সালের ফিচার, গোয়েল সিনে কর্পোরেশন –এর “আঁখে“ থেকে। “হাম ইশক্ মেঁ বরবাদ হ্যায়ঁ, বরবাদ রহেঙ্গে“ লিখেছিলেন প্রখ্যাত গীতিকবি রাজা মেহেদি আলি খান। মজার কথা, এই ছবিতে স্বয়ং মদনমোহন একটি দ্বৈত গান পরিবেশন করেন শামশাদ বেগমের সাথে। কোরাস সহ একটি চমৎকার আলেখ্য পেশ করেছিলেন পরবর্তীকালের নামজাদা পরিচালক, রাজ খোসলা। মহেশ কৌল নির্দেশিত “আখরি দাও“ ছবিতে রফি কণ্ঠ নিঃসৃত “তুঝে ক্যয়া সুনাউঁ ম্যায় দিলরুবা“ (লিখেছিলেন মজরুহ্) এক অনবদ্য শৈল্পিক সৃষ্টি। রফি ও আশার ডুয়েট “জমিঁ সে হামেঁ আসমাঁ পর বিঠা কে গিরা তো না দোগে“, “আদালত“ ফিল্মটিকে সাফল্যের এক উচ্চ তারে বেঁধে দিয়েছিল। “দো ঘুটঁ চাহে পি অউর স্যয়ের দুনিয়া কি“, প্রমোদ চক্রবর্তী পরিচালিত “সংযোগ“ ছবির এক অসাধারণ সংযোজন। (Madan Mohan)

পুরুষ গায়কদের মধ্যে মহম্মদ রফির গায়কী বিশেষ পছন্দ করতেন সুরকার মদনমোহন। এই অমর জুটি শুরু হয় ১৯৫০ সালের ফিচার, গোয়েল সিনে কর্পোরেশন –এর “আঁখে“ থেকে।

এছাড়া, “ম্যায় নিগাহেঁ তেরে চেহেরে সে হটাউঁ ক্যয়সে“ (আপ কি পরছায়িয়াঁ), “রঙ্গ অউর নুর কি বারাত“ (গজল), “ম্যায় ইয়ে সোচকর উসকে দর সে“ (হকীকৎ), “কভি না কভি কহিঁ না কহিঁ“ (শরাবী), “তু মেরে সামনে হ্যায়“ (সুহাগন), “আখরি গীত মহব্বত কা“ (নীলা আকাশ), “এক হসীন শাম কো দিল মেরা“ (দুল্হন এক রাত কি),“ আপকে পেহেলু মে আকর রো দিয়ে“ (মেরা সায়া), “তুমহারি জুলফ্ কে সায়ে মে“ (নৌনিহাল), “তেরি আখোঁ কে সিবা দুনিয়া“ (চিরাগ), “তুমসে কহুঁ ইক বাত“ (দস্তক), “ইয়ে দুনিয়া ইয়ে ম্যাহফিল “ (হীর রাঞ্ঝা), “ তুম যো মিল গয়ে হো“ (হঁসতে জখম, সঙ্গে লতা), “ইয়ে দুনিয়া নহিঁ জাগির” (চৌকিদার), “বরবাদ-এ-মুহব্বত কি দুয়া” (ল্যায়লা মজনু), “ক্যায়সে কাটেগি জিন্দগি তেরে বগ্যার“ (জাহাঁ তুম ওয়াঁহা হাম) গানগুলো এই সফল জুটির রত্নখচিত মণি-মালা। কিশোরকুমারের সঙ্গে মদনমোহনের অসাধারণ মেলবন্ধনের ফলস্বরুপ আমরা পেয়েছি বেশ কিছু চমকপ্রদ সাংগীতিক সম্ভার। উল্লেখযোগ্য, “আশিয়ানা“, “ইলজাম“, “মাস্তানা“, “ভাই-ভাই“, “মেম সাহিব”, “চাচা জিন্দাবাদ“, মনমৌজি“, “লড়কা লড়কি“, “পারওয়ানা“, “এক মুঠ্ঠি আসমান“, “সাহিব বাহাদুর“, “রেহনুমা“ ফিল্মের গানগুলি। এছাড়াও মুকেশ, মান্না দে, হেমন্তকুমার কেও চমৎকার ভাবে ব্যবহার করেছেন সুরের যাদুকর তাঁর ছবিতে। (Madan Mohan)

মদনমোহনের সুরের জাদুতে একসময়ে ভারতবর্ষের আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে উঠেছিল। স্বাধীন ভারতের সমাজ ও রাজনৈতিক জীবনে নানাসময় সমস্যা এসেছে নানারকম। তার মধ্যেও হিন্দি ছায়াছবির গানে ভারতীয়দের মন মজে ছিল। ছিল অগণিত সুরকারের সমাবেশ। মানুষের হৃদয়ে পাকা আসন করে নিয়েছিলেন তাঁরা সবাই। এঁদের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল হলেন মদনমোহন কোহলি। সেই পঞ্চাশের দশক থেকে যিনি আমাদের সুরের জাদুতে আবিষ্ট করে রেখেছেন। ১৯৭৫ সালে চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। কিন্তু সে তো তাঁর নশ্বর দেহমাত্র। শেষ হয়েছিল জাগতিক নিয়মে। (Madan Mohan)

আরও পড়ুন: সংগীত-যোগে হেমন্তকুমার ও কিশোরকুমার

তাঁর মতো কিংবদন্তি সুরকারের কি সত্যিই মৃত্যু হয়? তিনি তাঁর গানে অমর, অক্ষয়। বারে বারেই মনে হয়, মদনমোহনের মতো অবিস্মরণীয় সুরশিল্পীদের অন্তর থেকে ঝরে পড়া সুরের আজ বড় প্রয়োজন, যা স্নিগ্ধতাকে আমন্ত্রণ জানায়, বিশ্ব চরাচরকে আনন্দে ভরিয়ে তোলে। পঁচিশ বছরের ওপর কাজের ফসল হিসেবে তিরানব্বইটি মুক্তিপ্রাপ্ত ফিল্মে প্রায় সাড়ে ছয়শত গান আমাদের স্বর্গীয় আনন্দে ভরিয়ে রেখেছে। এছাড়া, এই মহান সুরকারের ঝুলিতে রয়েছে বারোটি ছবি যা মুক্তি পায়নি। সঙ্গে আছে তথ্যচিত্র “আপ কি সম্পত্তি“ (১৯৭০)–এ সুরপ্রদান। (Madan Mohan)

Sanjay Sengupta_Prabandha_Madan Mohan Kohli_5.12.2024_SC

গুরু কর্তার সিং-এর তালিমে সমৃদ্ধ রাগসঙ্গীত থেকে ভজন এবং নানা ধরনের মেলোডি নির্ভর গানে দক্ষতার পরিচয় তিন দশক ধরে দিয়ে গিয়েছেন ভারতের কৃতি সন্তান মদনমোহন। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সাথে ছিল তাঁর নাড়ির যোগ। এই লেখায় প্রবাদপ্রতীম সুরের কাণ্ডারির সুরসৃষ্টি নিয়ে স্বল্পপরিসরে আলোচনা করা হল। এই চির জনপ্রিয় শিল্পীর মৃত্যু নেই। প্রতিটি রুচিশীল মানুষের মননে, শয়নে, স্বপনে উনি চিরকাল সম্রাটের মতো বিরাজ করবেন। জন্মশতবর্ষে ওনার পাদপদ্মে আমার আন্তরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করলাম। (Madan Mohan)

ছবি ঋণ: অন্তর্জাল

Author Sanjay Sengupta

বিশিষ্ট গ্রামোফোন রেকর্ড সংগ্রাহক সঞ্জয় সেনগুপ্ত, গান বাজনা-র জগতে এক বিস্ময়কর নাম। কলকাতায় জন্ম হলেও ছেলেবেলা কেটেছে ওড়িশায়। দীর্ঘদিন এইচ.এম.ভি-র মতো ঐতিহ্যশালী সাঙ্গীতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন কৃতিত্বের সঙ্গে। তাঁর অনবদ্য কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে আছে প্রায় ১২০০ বই ও পত্র-পত্রিকায়, দেশ বিদেশ জুড়ে। সঙ্গীত ছাড়াও আগ্রহ নানা বিষয়ে। খেলাধূলা, মূলত ক্রিকেট ও সিনেমা সংক্রান্ত লেখায় তাঁর পান্ডিত্য ঈর্ষণীয়।

Picture of সঞ্জয় সেনগুপ্ত

সঞ্জয় সেনগুপ্ত

বিশিষ্ট গ্রামোফোন রেকর্ড সংগ্রাহক সঞ্জয় সেনগুপ্ত, গান বাজনা-র জগতে এক বিস্ময়কর নাম। কলকাতায় জন্ম হলেও ছেলেবেলা কেটেছে ওড়িশায়। দীর্ঘদিন এইচ.এম.ভি-র মতো ঐতিহ্যশালী সাঙ্গীতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন কৃতিত্বের সঙ্গে। তাঁর অনবদ্য কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে আছে প্রায় ১২০০ বই ও পত্র-পত্রিকায়, দেশ বিদেশ জুড়ে। সঙ্গীত ছাড়াও আগ্রহ নানা বিষয়ে। খেলাধূলা, মূলত ক্রিকেট ও সিনেমা সংক্রান্ত লেখায় তাঁর পান্ডিত্য ঈর্ষণীয়।
Picture of সঞ্জয় সেনগুপ্ত

সঞ্জয় সেনগুপ্ত

বিশিষ্ট গ্রামোফোন রেকর্ড সংগ্রাহক সঞ্জয় সেনগুপ্ত, গান বাজনা-র জগতে এক বিস্ময়কর নাম। কলকাতায় জন্ম হলেও ছেলেবেলা কেটেছে ওড়িশায়। দীর্ঘদিন এইচ.এম.ভি-র মতো ঐতিহ্যশালী সাঙ্গীতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন কৃতিত্বের সঙ্গে। তাঁর অনবদ্য কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে আছে প্রায় ১২০০ বই ও পত্র-পত্রিকায়, দেশ বিদেশ জুড়ে। সঙ্গীত ছাড়াও আগ্রহ নানা বিষয়ে। খেলাধূলা, মূলত ক্রিকেট ও সিনেমা সংক্রান্ত লেখায় তাঁর পান্ডিত্য ঈর্ষণীয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com