







(Charak Puja) চড়ক পূজা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোক উৎসব। প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিতে বা চৈত্রের শেষ দিনে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। চৈত্র মাসে পালিত শিবের গাজন এই উৎসবের একটি অঙ্গ। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে যা চড়ক সংক্রান্তির মেলা নামে পরিচিত।
রাঢ়বঙ্গের শৈব-সংস্কৃতির একটি বিশেষ অঙ্গই হচ্ছে ‘গাজন’। গাজন অর্থে (গাঁ= গ্রাম, জন= জনগণ) অর্থাৎ এককথায় গ্রামের জনগণের নিজস্ব উৎসব। বাংলা ‘গাজন’ শব্দটি এসেছে গর্জন থেকে। এই উৎসবে অংশগ্রহণকারী সন্ন্যাসীরা প্রচণ্ড গর্জন করেন বলে উৎসবের এইরূপ নামকরণ।
চড়কের দিন সন্ন্যাসীরা বিশেষ বিশেষ ফল, ফুল নিয়ে বাদ্য সহকারে নানা ভঙ্গিমায় শিবপ্রণাম করে। এছাড়া, দেবতার অবিচল ভক্তি ও নিষ্ঠা প্রদর্শনের জন্য তারা ধারালো বঁটি, গাছের কাঁটার উপর ঝাঁপ দেন কিংবা পা’দুটি উপরে মাথা নিচের দিকে রেখে ঝুলে থাকেন।
এগুলি যথাক্রমে ‘বঁটি-ঝাঁপ’, ‘কাঁটা-ঝাপ’ ও ‘ঝুল-ঝাঁপ’ নামে পরিচিত। আরও আত্মনির্যাতনের জন্য আড়াই থেকে চার-পাঁচ ইঞ্চি লম্বা একটি লৌহশলাকা সারাদিন জিভে বিদ্ধ করে রেখে সন্ধ্যার আগে পুকুরে গিয়ে সেটি খুলে ফেলে দেওয়া হয়, এর নাম ‘বাণ-সন্ন্যাস’।
আর চড়ক গাছটি চড়কতলায় পুঁতে তার মাথায় আরেকটি কাঠের টুকরো মাঝখানে ছিদ্র করে স্থাপন করা হয়, যাতে চড়কগাছকে কেন্দ্র করে কাঠের টুকরোটা শূন্যে বৃত্তাকারে ঘুরতে পারে। এর একপ্রান্তের ঝোলানো দড়িতে একজন সন্ন্যাসী কোমরে গামছা বা কাপড় বেঁধে ঝুলে থাকেন, অপরপ্রান্তে কাঠের টুকরোকে চক্রাকারে চরকির মত ঘোরানো হয়; এই প্রক্রিয়াটির নাম ‘বড়শি সন্ন্যাস’। (Charak Puja)
এই সমস্ত প্রকার নিয়মের মধ্যে দিয়েই পালিত হয় চৈত্র সংক্রান্তির মেলা অথবা চড়ক মেলা। (Charak Puja)
নেশা ও পেশা ফটোগ্রাফি। ডকুমেন্টারি স্টোরি টেলিং, স্ট্রিট ও ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফিতে আগ্রহী।