কলকাতা সেজে উঠছে। সেজে উঠছে পশ্চিমবঙ্গের অন্য সব শহরও। পুজো মানে তো সাজেরই সময়। মানুষ যেমন সাজে, সেজে ওঠে প্যান্ডেল, শহরের রাজপথ থেকে গলি। কিন্তু আলোর নীচে অন্ধকারের নিয়মেই সেই সাজসজ্জার আড়ালে, অনেক সময় আড়ালে নয়, একেবারে সামনেই, দগদগ করে শ্রীহীনতার অসংখ্য চিহ্ন। মহানগরীর আলো-ঝলসানো সমৃদ্ধ শপিং মল থেকে বাইরে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে বিকট আওয়াজ, ফুটপাত জোড়া রকমারি স্ট্রিট ফুডের বেসাতি, গোটা রাস্তাটাই যেন একটা অন্তহীন খাবারের দোকান, সেই খাবারের প্যাকেট, পাত্র এবং উচ্ছিষ্ট ছড়িয়ে থাকে ডাইনে বাঁয়ে সর্বত্র। শহরের ফুটপাত ধরে হাঁটার কোনও উপায় নেই কোথাও, হাজার রকমের দখলদারি, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রকট দুটি জিনিস: খাবারের দোকান আর আবর্জনার স্তূপ। আর তার সঙ্গে আছে জীর্ণ শীর্ণ গাছ, তাদের শিকড়ের চারপাশ বেদী দিয়ে বাঁধানো। সমস্ত পথচারী ফুটপাত ছেড়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটেন, কারণ তাঁদের অন্য গতি নেই।অনেকেই বাঙালি সম্পর্কে একটা কথা বলেন। শহুরে বাঙালি নিজের বাড়ির ভেতরটা সাজিয়ে রাখেন, সমস্ত নোংরা অকাতরে বাইরে ফেলেন, যে দিকে দুচোখ যায় সেদিকেই ফেলে দেন। কথাটা ভুল নয় বোধহয়। যাঁরা অনেক খরচ করে, অনেক দিনের অনেক পরিশ্রমে এবং চিন্তাভাবনায় এত সুন্দর সুন্দর পুজোর আয়োজন করেন, তাঁরা কেন তাঁদের মণ্ডপ এবং সেই মণ্ডপে যাওয়ার পথটুকু সাজিয়ে তুলেই এত সন্তুষ্ট হয়ে যান, সেটা এক বিস্ময়ের ব্যাপার। অন্তত পুরসভার সঙ্গে, বা পাড়ার ক্লাবগুলির সঙ্গে কথা বলে গোটা এলাকার চেহারাটা আর একটু সাফসুতরো করা যায় না কি? কোথাও কোথাও তেমন উদ্যোগ করা হয়, আর তার ফলে সেই সব পুজোর কল্যাণে অঞ্চলের মুখশ্রীও পাল্টে যায়। সেগুলি ব্যতিক্রম, কিন্তু সেই ব্যতিক্রমই তো প্রমাণ করে— ইচ্ছে থাকলে আর সেই ইচ্ছে অনুযায়ী একটু উদ্যোগে শান দিলে কী সম্ভব, কতটা সম্ভব।কেউ বলতে পারেন, কেবল পুজোর সময় কেন, সারা বছরই তো এমন শহর সাফ রাখা দরকার। নিশ্চয়ই। দরকারই তো। কিন্তু আর কিছু না হোক, বছরের এই সময়টুকু, যখন শহরে অতিথি আসেন, রাজ্যের অন্য জায়গা থেকে, দেশের অন্য রাজ্য থেকে, এমনকি পৃথিবীর অন্য দেশ থেকেও— সেই সময়টুকু কি চেষ্টা করা যায় না? মা দুর্গার কল্যাণে এভাবেও যদি আস্তে আস্তে সুঅভ্যাস তৈরি হয়, যদি শহরের, শহরগুলোর চেহারা একটু পাল্টায়।
সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় হাসিখুশি, এমনকী যখন সেই মোড-এ থাকেন না, নিজেকে ঠেলে হিঁচড়ে হিহিহোহো’তেই ল্যান্ড করানোর চেষ্টা করেন। জাপটে ভালবাসেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সিরিয়াল, গান, রাস্তায় নেড়িবাচ্চার লটরপটর কান। পড়াশোনার সময় ফিল্ড করেছেন, হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভেঙেছেন, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়েছেন, এক বার পাহাড় থেকে অনেকটা হড়কে পড়ে মুচ্ছো গেছিলেন, উঠে দেখেন, কবর! এক বার ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অঙ্গ হিসেবে চিন গেছিলেন, রাত্তির দুটোয় সাংহাইয়ের রাস্তায় হারিয়ে গিয়েও কাঁদেননি। ফিউজ সারাতে পারেন, পাখার কার্বন বদলাতে পারেন, কাগজের চোঙ পাকিয়ে গাড়িতে পেট্রল ঢালতে পারেন, চিনেবাদাম ছুড়ে দিয়ে মুখে নিপুণ লুফতে পারেন। ব্যাডমিন্টন খেলার ইচ্ছে খুব, কিন্তু জায়গা ও র্যাকেট নেই। অরোরা বোরিয়ালিস যারা দেখেছে, তাদের একাগ্র ভাবে হিংসে করেন। দেশের বাড়িটা উনি বড় হওয়ার পর ছোট হয়ে গেছে বলে, আর আমির খান এক বার কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন— সে কাগজ হারিয়ে গেছে বলে, জেনুইন কষ্ট পান। এক বার ঈগলের রাজকীয় উড়ান আগাগোড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন।