(Mishti Doi)
সাদা দইয়ের মধ্যে একটি গন্ধরাজ লেবুর পাতা উঁকি মারছে। কয়েকটি পাতা অর্ধেক ডুবে আছে দইয়ের মধ্যে। এক একটি দইয়ের ভাঁড়, একেক রকম দেখাচ্ছে ওই সবুজ গন্ধরাজ লেবুর পাতার জন্য। (Mishti Doi)
মনোহরপুকুর রোডের শ্রীকৃষ্ণ সুইটসে এরকম দই চাখার পর একটি প্রশ্ন ঘিরে ধরে আবার। যে প্রশ্নটা বহুদিন ধরেই ঘোরাঘুরি করে মনের ভেতরে। মাঝে মাঝে ভুলে যাই। নতুন করে সেই প্রশ্নটি জেগে উঠল গন্ধরাজ লেবুর দই খাওয়ার পর। গন্ধরাজ দই এখন মিলছে বলরাম মল্লিকের দোকানেও। চিনিপাতা সাদা মিষ্টি দই কি কলকাতা থেকে উঠেই গেল প্রায়? (Mishti Doi)
আরও পড়ুন: আমেরিকার ‘মেসি এফেক্ট’, সৌদির ‘রোনাল্দো এফেক্ট’
এই গন্ধরাজ দই একেবারে সাদা। কিন্তু যখনই আপনি সে দোকানে সাধারণ মিষ্টি দই চাইবেন, সেখানে সাদা রং উধাও। ফিরে এসেছে লাল ও গোলাপি ভাব। কলকাতায় মিষ্টি দই মানেই এখন হয়ে উঠছে লাল দই। অনিবার্যভাবে। (Mishti Doi)
বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতার সেরা দই খুঁজতে বেরিয়েছিলাম একবার। তখনই সাদা দই প্রায় পাইইনি। বরং দেখেছি, দইয়ের মাঝে লাল এবং গোলাপি রং-এর বিবর্তন। শ্যামবাজারের কাছে ফড়িয়াপুকুরে অমৃত যে অমৃত, কলকাতার মিষ্টি দই বলতেই একদা যাকে বোঝাত, সেই দইয়েও গোলাপি আভা। সিঁথির মোড়ে একটি দোকানের দই বিখ্যাত শুনে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, সেই দই এতটাই গোলাপি-লাল, মুখে দিতে ইচ্ছে হবে না। কী করা যাবে, অনেকের কাছে সেটাই খুব পছন্দের। (Mishti Doi)

তখন একে ছিল অমৃত। দুইয়ে যাদব চন্দ্র দাস। তিনে বউবাজারের ভীম নাগ। প্রথমটি সাদা, গোলাপির মাঝামাঝি। দ্বিতীয়টা সাদা ধবধবে, চিনি পাতা দই। তৃতীয়টা লাল। (Mishti Doi)
সেবার ঘুরতে ঘুরতে দেখেছি, সাদা দই বলতে দোকানদারদের কাছে একটাই মানে ছিল। সেটা টক দই। সাদা দই মানেই তাঁদের অধিকাংশের কাছে টক দই। মিষ্টি দই সাদা, এমন নাকি হতেই পারে না। খুঁজতে খুঁজতে যাদব চন্দ্র দাসের দোকানে সাদা দইয়ের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। চিনি পাতা দই যাকে বলে। আর সাদা মিষ্টি দইয়ের অস্তিত্ব টের পাওয়া গিয়েছিল পার্ক সার্কাস ও গড়িয়াহাটের মিঠাইয়ে। সব জায়গাতেই মিষ্টি দই মানে একটু লালচে একটু গোলাপি রঙের দই। কোথাও একটু বেশি লাল, কোথাও কম। কোথাও আবার উপরটা অনেকটা সাদা, ভেতরটা একেবারে অনেকটা লাল। শেষ উদাহরণ বাঞ্ছারাম। অমৃতের দই আবার অনেকটা ক্ষীরের মতো খেতে। (Mishti Doi)
“গড়িয়াহাটে সাম্প্রতিককালে অন্তত তিনটি অতীব জনপ্রিয় মিষ্টির দোকান উঠে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান সুইটস, গিরীশ দে নকুড় নন্দী এবং সেন মহাশয়। বালিগঞ্জে পাঠভবন স্কুলের গায়ে শৈল সুইটসও বন্ধ হয়ে গিয়েছে হঠাৎ।”
আজকের কলকাতায় অধিকাংশ দোকানেই দই বিপ্লব ঘটেছে অন্যভাবে। প্রচুর দোকানে এখন রাখা হচ্ছে নবদ্বীপের দই। তার কিছু হয়তো আসছে সত্যিই নবদ্বীপ থেকে। কিছু নবদ্বীপের দই আবার বানানো হচ্ছে কলকাতাতেই। এর পাশাপাশি শুকনো দইয়ের ভাঁড় পাবেন প্রচুর। সেটা উল্টে ধরলেও কিছু পড়বে না।
অনেক দোকানে সেই দইগুলোকে বলা হয় সর দই। কোথাও বলা হবে ক্ষীর দই, কোথাও বেকড দই, কোথাও ভাপা দই। অনেকে চালান নবদ্বীপের দই বলে। আসলে এটা গঙ্গারামপুরের দইয়ের সংস্করণ। গঙ্গারামপুরের নয়া বাজারে দু’তিন রকম দই পাওয়া যায়। তার একটা এইরকম শক্ত। যা মোটামুটি শিলিগুড়ি বা মালদার মতো উত্তরবঙ্গের অনেক শহরে ছেয়ে গিয়েছে। কলকাতাতেও তার আবির্ভাব ঘটেছে জাঁকিয়ে। মাঝে দইওয়ালা নামে একটি মিষ্টি ব্র্যান্ডের আবির্ভাব হয়েছিল বঙ্গরাজধানীতে। যেখানে তিন চার রকম দই মিলত। মিলত বহরমপুরের বিখ্যাত ঝুড়ি দই। সেই ব্র্যান্ড আস্তে আস্তে স্তিমিত হতে শুরু করেছে। কেননা সেখানেও দই ওই থোড়বড়ি খাড়া, খাড়াবড়ি থোড়। একটা নামী দোকানে আবার দেখলাম কেশরী মিষ্টি দই। (Mishti Doi)

কোন যাদব চন্দ্র দাসের দোকানে সাদা মিষ্টি দই পাবেন, প্রশ্ন তুলতে পারেন। যাদবের দোকান রয়েছে উত্তর কলকাতার ঝামাপুকুরে এবং দক্ষিণ কলকাতার ট্র্যাঙ্গুলার পার্কে। ঝামাপুকুরে থাকার সুবাদে শ্রীরামকৃষ্ণ এই যদু ময়রার দোকানের মিষ্টি খুব তৃপ্তি করে খেতেন বলে শোনা যায়। তিলোত্তমায় এখানেই চিনিপাতা সাদা দই মেলে। মাঝে মাস তিনেকের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ট্র্যাঙ্গুলার পার্কের পুরোনো দোকানটি। খোলেই না খোলেই না, এই পরিস্থিতিতে মিষ্টিপ্রেমীদের কাছে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল।
গড়িয়াহাটে সাম্প্রতিককালে অন্তত তিনটি অতীব জনপ্রিয় মিষ্টির দোকান উঠে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান সুইটস, গিরীশ দে নকুড় নন্দী এবং সেন মহাশয়। বালিগঞ্জে পাঠভবন স্কুলের গায়ে শৈল সুইটসও বন্ধ হয়ে গিয়েছে হঠাৎ। এবং সেটা অনেক দিনই। যাদব দাসের দোকানের ঝাঁপ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্বাভাবিক প্রশ্ন ছিল, এটাও কি হারিয়ে গেল? শেষ পর্যন্ত সেই দোকান অনেকদিন পরে আবার খুলেছে। (Mishti Doi)
আরও পড়ুন: রাজেশ খান্না, শশী কাপুরের প্রথম নায়িকা সেই বাঙালিনী
সাদা দই বাদে যাদবের দোকানে আরেকটি মিষ্টি রয়েছে, যা ওটা কলকাতাতেই হারিয়ে যেতে বসেছে। লেডিকেনি! লেডিকেনি তৈরি করেছিলেন ভীম নাগ! লেডি ক্যানিং এর জন্য! সেই ভীম নাগের দোকানেও এখন লেডিকেনি হারিয়ে গিয়েছে অবাঙালিদের গোলাপজামুন, পান্তুয়ার চক্করে। ছানা নয় সেখানে ক্ষীরই হয়ে যায়, লাল মিষ্টি বানানোর প্রধান হাতিয়ার। লেডিকেনির ভিতরে যে ছোট এলাচ থাকা বাধ্যতামূলক সেটাই আর থাকে না। যাদবের দোকানে আগের মতো আর ভাল লেডিকেনি হয় না, তবুও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে টিকে রয়েছে কিছুটা।
শেষ যেবার চিনি পাতা দই খেলাম যাদবে, সেবারও দেখলাম, ওপরে সাদা থাকলেও নিচের অংশটা অনেকটাই গোলাপি হয়ে এসেছে। দোকানদার বহু পুরোনো মানুষ। চেনা। একটু অস্বস্তির হাসি হেসে বললেন, চিনির পাকটাতেই হয়তো একটু গোলমাল হয়ে গিয়েছে। চিনি লাল হলে আর কিছু করার থাকে না। এই করতে করতে মিঠাইদের দোকানের দইয়ের সাদা ভাবটি উধাও হয়ে গিয়েছে। সেখানেও হাজির হয়েছে গোলাপি আভা। (Mishti Doi)
কলকাতায় ফিউশনের মিষ্টির বাজারে সর দই, ক্ষীর দইয়ের পাশাপাশি ব্লুবেরির দইও পাবেন এখন। আম দই তো বটেই। বালিগঞ্জ স্টেশনের কাছে আশীর্বাদ সুইটসে আগে আমের আঁশ পাওয়া যেত দইয়ের মধ্যে। প্রচলিতভাবে আমের এসেন্স দিয়ে দই তৈরি হত না। এখন সেই দইও হারিয়ে যেতে বসেছে। ব্রাঞ্চ হয়েছে অনেক। স্বাদ হারিয়ে গিয়েছে। অনেক দোকানে এই শীতের সময় পাবেন বরং নলেন গুড়ের দই।
“কলকাতা যেন দিন দিন ভরে যাচ্ছে নবদ্বীপে। এবং সেখানে হারিয়ে যাচ্ছে ঘরের কাছের মোল্লার চকের দই। জয়নগরের দিকে মগরাহাট পেরিয়ে মোল্লার চক।”
কলকাতার বাইরে বাংলার অন্য শহরের দই কেমন বিখ্যাত, এটা জানতে চাইতে পারেন। সবার আগে নবদ্বীপ ও গঙ্গারামপুরের দইয়ের কথা আসবে। নবদ্বীপের লাল দইয়ের আবির্ভাব শুনি ৯৫ বছর হয়ে গেল। ১৯৩০ সালে শহরের ফাঁসিতলায় কালীপদ ঘোষ নামক এক ব্যবসায়ীর হাত ধরে সূত্রপাত। অনেকে বলেন কালী মোদক। কালী এবং তাঁর ভাই হরি মিলে এই দই শুরু করেছিলেন মহিষের দুধ নিয়ে। (Mishti Doi)
ক্ষীর দই বলে কেউ, কেউ চাক্কু দই। অত শক্ত দই সাধারণত চাকু মানে ছুরি ছাড়া কাটা মুশকিল হয়ে যায় মাঝে মাঝে। ওই দইয়ের মাঝে অবধারিতভাবে ছুরি ঢুকে যাবে। নবদ্বীপে একটি দোকান রয়েছে, নাম লক্ষ্মী নারায়ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। বয়স একশো পেরিয়ে গিয়েছে। অনেকে বলেন, দোকানের বয়স নাকি দেড়শো। সেখানকার দই খুব বিখ্যাত। প্রশ্ন হল, কালীপদবাবুর আগেও কি তা হলে এখানে লাল দই হত, না বছরের হিসেবে কোনও গণ্ডগোল রয়েছে?

মোল্লার চকের দই নিয়ে অতীতে লেখালেখি হত প্রচুর। এখন আগের সেই রমরমা আর নেই। কলকাতা যেন দিন দিন ভরে যাচ্ছে নবদ্বীপে। এবং সেখানে হারিয়ে যাচ্ছে ঘরের কাছের মোল্লার চকের দই। জয়নগরের দিকে মগরাহাট পেরিয়ে মোল্লার চক। (Mishti Doi)
তপন সিংহের বিখ্যাত হারমোনিয়াম ছবিতে সন্তোষ দত্তের মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। সেখানে খাওয়া দাওয়া চলছে। কালী বন্দ্যোপাধ্যায় দই চেটেপুটে খেয়ে বলে দিলেন, ‘এ নিশ্চয়ই মোল্লার চকের দই।’ সন্তোষ দত্তের স্বগতোক্তি তখন, ‘ওই মোল্লার চকেই আমার ছগাছা চুরি চলে যাবে।’ মোল্লার চকের দইকে বলা হত পোয়াদি দই। দই খেলে হাত না ধুলে চলত না। দই তৈরিতে জল কাজে লাগানো হত না। সেই দই আজ অতীতের পর্যায়ে। এখন শুধুই নবদ্বীপ। পদ্মাপারে যেমন জায়গাটা বগুড়া, যশোর বা ভোলার দই।
আরও পড়ুন: ঘোড়াদের গ্রামে ঘটনার ঘোর ঘনঘটা
উত্তরবঙ্গে সেই জায়গাটা নিয়েছে গঙ্গারামপুর এবং পার্শ্ববর্তী নয়াবাজার। সেখানে চাররকম দই মেলে। ক্ষীর দই, নালি ক্ষীর দই, লাল খাসা দই, সাদা খাসা দই। ক্ষীর দই শক্ত, জমাট। নালি ক্ষীর দই কিছুটা তরল। লাল খাসা দই কলকাতার দইয়ের মতোই। সাদা খাসা দই আবার চিনি পাতা দইয়ের মতো। সেই সাদা মিষ্টি দই জনপ্রিয় হয় না কেন, প্রশ্ন করলে উত্তর শুনে অবাক হতে হয়। ওই সাদা দই সাধারণত শ্রাদ্ধবাড়িতে খাওয়া হয়। সংস্কারবশতই সেই দই বিয়ে বাড়িতে খাওয়া হয় না। গঙ্গারামপুরের দইয়ের তুলনায় নবদ্বীপের দই একটু বেশি শক্ত। রংও একটু কালচে। চিনি বেশি পোড়ানো হয় বলে। (Mishti Doi)
এবং গঙ্গারামপুরকে প্রতিযোগিতায় ফেলতে পারে শুধু কোচবিহারের জামালদহ এবং কিছুটা বানেশ্বর। চ্যাংড়াবান্ধা থেকে যে রাস্তাটা রেললাইনকে পাশে নিয়ে মাথাভাঙার দিকে এগোল, সেখানে পড়বে জামালদহ। সেখানকার বাসস্ট্যান্ডে রামকৃষ্ণ সুইটসের আম দই এক বিস্ময়কর আবিষ্কার। মাস ছয়েক আগে সেখানে গিয়ে দেখি, বড়সড় মিষ্টির দোকান ভরে আছে নানা মিষ্টিতে। একদিকে আবার চানাচুর তৈরি হচ্ছে। তার মধ্যে লোকে খেয়ে যাচ্ছে আম দই।
“মালদায় একটা সময় সিঙ্গাবাদ ও মিহাহাটের দই ছিল বিখ্যাত। বনেদি বাড়িতে বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠান হলে সেখানে আসত সেখানকার দই।”
এখানকার আম দই বিস্ময়কর একটা দিক দিয়ে। দই অনেকটাই তরল। এবং সেই দইয়ে আমের আঁশ মেশানো থাকে অতি মসৃণভাবে। ফ্রিজের মধ্যে না রাখলেও খাওয়া যায় একদিন পরে। ওটা নিয়ে পরে আসছি। আগে বাণেশ্বরের দইয়ের কথা বলে নিই। বুদ্ধদেব গুহের ‘ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে’ বইয়ে বানেশ্বরের দইয়ের কথা আছে। (Mishti Doi)
আরে, ওইটা আবার কী পদ?
ঋজুদা জিজ্ঞেস করল।
কই? কোনটার কথা কন? ওঃ। ওইটা হইল গিয়া এক্কেরে শ্যাষে খাওনের। রুসগুল্লার লগ্যে খাইবেন অনে।
আরে জিনিসটা কী তা বলবে তো!
ইটা আমাগো বাণেশ্বরের দই।
বাণেশ্বরটা কোথায়?
এতরকম পদের মধ্যে রীতিমতো দিকভ্রান্ত হয়ে ঋজুদা বলল।
কুচবিহার জেলাতে পড়ে।
তাই?
ইয়েস। (Mishti Doi)

মাঝে ময়নাগুড়ির ঝর্ণা হোটেলে খেলাম বাণেশ্বরের দই। বিশেষ অর্ডার দিয়ে আনা হয়। খেতে বেশ ভাল। গঙ্গারামপুর বা নবদ্বীপের দইয়ের মতোই। কিন্তু ক্ষীরের ভাবটা, চাঁছির ভাবটা কম। স্টিলের হাতা নিয়ে স্বচ্ছন্দে কেটে নেওয়া যায় কলকাতার দইয়ের মতো।
আরও পড়ুন: ভেজ বনাম নন ভেজ ফুডের রাজনীতি
জামালদহের দই সেখানে একেবারে পাতলা ক্ষীরের মতো। ওপর থেকে দেখায় সম্পূর্ণ সাদা। সামান্য একটু কাটলে আবার ভিতরের রংটা পাল্টে যায়। আমের রং হয়ে যায়। আগের সঙ্গে মিল থাকে না কোনও। এটা যেন এক ম্যাজিক। ওপর থেকে খেলে অন্যরকম স্বাদ। ভিতরে অন্য রকম। এ জায়গায় গঙ্গারামপুরের সঙ্গে মিল। (Mishti Doi)
মালদায় একটা সময় সিঙ্গাবাদ ও মিহাহাটের দই ছিল বিখ্যাত। বনেদি বাড়িতে বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠান হলে সেখানে আসত সেখানকার দই। দুই জায়গারই দই সাম্রাজ্য একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বরং শহরে সেই জায়গাটা নিয়েছে এখন সন্তোষের দই। মালদার বিখ্যাত বৃন্দাবনী আমগাছের কাছে, বড় রাস্তার ওপরে রয়েছে সন্তোষ দই ভাণ্ডার। সেখানে শুধু দই, লস্যি এবং ঘি মেলে। কোনও মিষ্টি নেই। শুধু দই। এবং এই দই একেবারে ধবধবে সাদা। চিনি পাতা দই। বেশিক্ষণ পড়ে থাকে না। দ্রুত শেষ হয়ে যায়। অনেকবার ফিরে আসতে হয়, না পেয়ে। শিলিগুড়ির বিধান রোডে কোয়ালিটি সুইটসেও সাদা দই মেলে লাল দইয়ের পাশে। এবং সেটা যথেষ্ট ভাল। মেদিনীপুর জেলা যে এখন তিনটি ভাগ হয়ে গিয়েছে, সেখানেও মিষ্টি দই মানে এখনও সাদা। লাল মিষ্টি দইয়ের সেভাবে অতটা অস্তিত্ব নেই এখন। এসব শোনার পরে মনে হয়, চিনি পাতা সাদা দই এখনও সম্রাট হয়েই রয়েছে। তার জায়গা নেওয়া এখনও কঠিন। (Mishti Doi)
মুদ্রিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
i
বিশিষ্ট সাংবাদিক। এই সময় সংবাদপত্রের প্রাক্তন সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদক। উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সম্পাদক। আনন্দবাজার পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে কভার করেছেন একাধিক বিশ্বকাপ ফুটবল ও অলিম্পিক গেমস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, খেলা, গান, সিনেমা, ভ্রমণ, খাবারদাবার, মুক্তগদ্য— বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতে ভালবাসেন।
