Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

গুরু দত্ত— ক্ষণজন্মা প্রতিভা শেষ হয় নেশা, নৈরাশ্য আর নারীসঙ্গে 

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

জুলাই ৯, ২০২৩

Guru Dutt his life work and controversies
Guru Dutt his life work and controversies
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

‘জানে ও ক্যায়সে
লোগ থে জিনকে,
প্যায়ার কো প্যায়ার মিলা…’

 

তিনি বাঙালি ছিলেন না। কিন্তু তাঁর নামটা শুনলেই বাঙালি মনে হয় আজও। তরুণ বয়সেই তিনি একাধারে সফল পরিচালক,অভিনেতা ও প্রযোজক হয়ে ওঠেন বম্বে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির। তাঁর অভিনীত ও নির্মিত ক্লাসিক ছবিগুলি আজও ফিল্ম শিক্ষার পাঠ্যবই হতে পারে। 

তাঁর নাম হয়ে গেছিল তাঁর পদবি এবং পরবর্তীতে তাঁর স্ত্রী, ছেলেমেয়েরাও নিজেদের পদবি হিসেবে ব্যবহার করেছেন সেই নাম। ব্যাপারটা বেশ অভাবনীয়।

আজ যার কথা বলব তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রবাদপ্রতিম নায়ক, নির্মাতা গুরু দত্ত (Guru Dutt)। তাঁর নামের মহিমা থেকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন-যৌবন সবই বড় রোমাঞ্চকর। 

গুরু দত্তের আসল নাম ছিল বসন্ত কুমার শিবশঙ্কর পাদুকোন। কিন্তু ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। তাতে বাড়ির লোকের মনে হয় বসন্ত কুমার শিবশঙ্কর নামটা অশুভ। তাই তাঁর নতুন নামকরণ করা হয়— গুরুদত্ত। অর্থাৎ গুরু প্রদত্ত। ‘গুরুদত্ত’ এখানে এক কথা। কিন্তু ফিল্ম জগতে এসে গুরু আর দত্ত তিনি আলাদা করে নেন। কৈশোরে বেশ কিছুদিন কলকাতায় ছিলেন গুরু দত্ত। তাই বাংলা পরিস্কার বলতে পারতেন, বাঙালি সংস্কৃতিও পছন্দ করতেন। অনেকেই মনে করেন, বাঙালিদের দত্ত পদবি অনুসারেই নিজের নামের শেষ অংশটিকে পদবি হিসাবে ব্যবহার শুরু করেন গুরু দত্ত। তাঁর পিতৃদত্ত পদবি ছিল পাদুকোন। বাঙালি-প্রীতি থেকেই গুরু দত্ত বিয়ে করেছিলেন এক স্বনামধন্য বাঙালি গায়িকাকে— তিনি সংগীতের রানি গীতা রায়, বিয়ের পর যিনি পরিচিত হন গীতা দত্ত নামে।

Guru Dutt
গুরু দত্ত

গুরু দত্ত দক্ষিণ ভারতের মানুষ। জন্ম ৯ জুলাই, ১৯২৫। তাঁর বাবা প্রথমে ছিলেন স্কুলের হেডমাস্টার, পরে হন ব্যাংককর্মী। মা ছিলেন গৃহবধূ কিন্তু তাঁর কবিতা, ছোটগল্প লেখার হাত ছিল ভালো। স্বাবলম্বী মহিলা ছিলেন তিনি, স্বামীর একার রোজগারে সংসার টেনেটুনে চলত, তাই তিনি নিজের লেখা বিক্রি করেও অর্থোপার্জনের চেষ্টা করতেন। তাঁর যখন ১৬ বছর বয়স তখন গুরুর জন্ম। গুরু দত্তর তিন ভাই আত্মারাম, দেবীদাস ও বিজয় এবং এক বোন ললিতা। তবে বাবা মায়ের সম্পর্ক ভাল ছিল না। গুরু দত্তের মামারা প্রায়ই অশান্তি বাঁধাতেন তাঁদের সংসারে। ছোটবেলা থেকে বারবার বাবা-মায়ের ভয়ংকর ঝগড়ার সাক্ষী হয়েছেন গুরু, ফলে শিশু বয়স সুখের ছিল না তাঁর। তবে মায়ের এক ভাইয়ের সঙ্গে গুরুর ভালো বন্ধুত্ব ছিল। তাঁকে গুরু বলতেন ‘বকুট মামা’। তাঁর আসল নাম বালকৃষ্ণ বেনেগল। তিনি সিনেমার পোস্টার আঁকতেন। তাঁর মুখে সিনেমার গল্প শুনেই চলচ্চিত্রের প্রতি অনুরাগ জন্মায় গুরুর। এই বকুট মামার ছোট ভাইয়ের ছেলেই পরবর্তীকালের বিখ্যাত পরিচালক শ্যাম বেনেগল।

কৈশোরে কিছুদিন কলকাতার ভবানীপুরে থেকে পড়াশোনা করেন গুরু দত্ত। কিন্তু বাবার দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে কলকাতায় পড়াশোনা এগোয় না। তারপর সেসব ছেড়ে গুরু এসে ভর্তি হন আলমোড়ার উদয় শংকর ডান্স অ্যাকাডেমিতে। পুরুষ হয়ে নাচ শিখে সে যুগে ‘পুরুষদের নাচ না শেখার’ মিথ ভাঙেন তিনি, যদিও এ ব্যাপারে উদয় শংকর ছিলেন পথিকৃৎ। এখানে নাচের মাধ্যমে কাহিনি তুলে ধরার তালিমও হয়ে যায় গুরু দত্তর। কিন্তু ফিল্মে শাম্মি কাপুরের মতো ডান্সার হিরো হিসেবে গুরু দত্তকে দেখা যায়নি। বরং উল্টোটাই হয়েছে, রুপোলি পর্দায় গুরু মানেই ভাবগম্ভীর চরিত্রের নায়ক।

কৈশোরে কিছুদিন কলকাতার ভবানীপুরে থেকে পড়াশোনা করেন গুরু দত্ত। কিন্তু বাবার দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে কলকাতায় পড়াশোনা এগোয় না। তারপর সেসব ছেড়ে গুরু এসে ভর্তি হন আলমোড়ার উদয় শংকর ডান্স অ্যাকাডেমিতে। পুরুষ হয়ে নাচ শিখে সে যুগে ‘পুরুষদের নাচ না শেখার’ মিথ ভাঙেন তিনি, যদিও এ ব্যাপারে উদয় শংকর ছিলেন পথিকৃৎ। এখানে নাচের মাধ্যমে কাহিনি তুলে ধরার তালিমও হয়ে যায় গুরু দত্তর।

 উদয় শঙ্কর ইন্ডিয়া কালচারাল সেন্টার থেকে গুরুকে বার করে দেওয়া হয় মহিলাঘটিত কারণে, যা ছিল গুরুর চরিত্রের দোষ। ডান্স আকাডেমির এক মহিলা নৃত্যশিল্পীকে নিয়ে গুরু পালিয়ে যাবার ছক কষেন। ব্যাপারটা জানাজানি হতেই গুরুকে সরে আসতে হয় আকাডেমি থেকে। তিনি কাজ নেন টেলিফোন অপারেটরের। কিন্তু সৃষ্টিশীল গুরুর বেশিদিন মন টেঁকেনি সে কাজে। অতঃপর মামার সাহায্যে তিন বছরের চুক্তিতে যোগ দেন প্রভাত ফিল্ম কোম্পানির কাজে। এখানেই তাঁর জীবনের বাঁকবদল ঘটে। প্রভাত ফিল্ম কোম্পানিতে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় দেব আনন্দের। জীবনের শেষদিন অবধি গুরুর সঙ্গে দেবের বন্ধুত্ব অটুট ছিল। এই ফিল্ম কোম্পানিতে তৎকালীন পরিচালক অমিয় চক্রবর্তী ও জ্ঞান মুখার্জির সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান, পরিচালনার পাঠ শেখেন এখানেই।

Guru Dutt & Madhubala

প্রভাত ফিল্মের সঙ্গে চুক্তি শেষ হলে দশ মাস কর্মহীন ছিলেন গুরু। তখন দেব আনন্দ তাঁর নবকেতন ফিল্ম কোম্পানিতে গুরুকে পরিচালক করে আনেন। নবকেতন থেকে মুক্তি পায় গুরু দত্তের কালজয়ী ছবি ‘বাজি’। দেব আনন্দ-গীতা বালি জুটির ‘বাজি’ সুপারহিট করে। এই ছবিতেই গান গাইতে এসেছিলেন বিখ্যাত কোকিলকণ্ঠী বাঙালি গায়িকা গীতা রায়। গীতা রায়ের কণ্ঠে গীতা বালির লিপে সুপার ডুপার হিট হয় ‘তদবির সে বিগড়ি হুয়ি তকদির’ গানটি। গীতার গানের মাদকতায় ভেসে যায় সারা দেশ। ঝড় ওঠে গুরু দত্তের মনেও। গীতার প্রেমে পড়েন গুরু। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গুরু দত্তের সঙ্গে এরই মাঝে আরও দুই মহিলার সম্পর্ক হয়েছিল। লোকমুখে শোনা যায়, যথেষ্ট অন্তরঙ্গ ছিল সেসব সম্পর্ক। কিন্তু সব পিছুটান, নারীসঙ্গ ফেলে গুরু ছুটে এলেন গীতার বুকে। 

গীতা রায় ছিলেন ফরিদপুরের জমিদার বংশের মেয়ে। কিন্তু দেশভাগ আর ভাগ্যবিপর্যয়ে কলকাতা তারপর বম্বের এক কামরার ঘরে এসে ওঠে গীতার পরিবার। খুব ছোট বয়স থেকেই গীতা প্লে-ব্যাকে নাম করেন। গুরু যখন গীতার প্রেমে পড়ছেন, গীতা ততদিনে সুপারস্টার গায়িকা। বরং গুরুই নবাগত। গুরুর পৌরুষে আকৃষ্ট হলেন গীতা, ভেসে গেলেন প্রেমের জোয়ারে। গীতার গানের জন্যই গুরুর ছবি রিলিজ হবার আগে থেকেই হিট হয়ে যেত। গুরুর কাছে গীতা ছিলেন তুরুপের তাস। তবে দুই পরিবার চায়নি এই বিয়ে হোক। গুরুর পরিবার ছিল গোঁড়া সারস্বত ব্রাহ্মণ, গীতা-গুরুর অসবর্ণ বিয়েতে তাঁদের একেবারেই মত ছিল না। অন্যদিকে গীতা ছিলেন তাঁর পরিবারে সোনার ডিম পাড়া হাঁস, স্বভাবতই গীতার বিয়ে দিয়ে টাকার উৎস খোয়াতে চাননি গীতার বাড়ির চান। এই সব বাধা অতিক্রম করে সাত পাক ঘুরলেন গীতা-গুরু। সেই বিয়ের সেলিব্রেশন ছিল দেখার মতো। বাঙালি মতে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের— গীতা পরেছিলেন লাল বেনারসি আর গুরু শ্বেতশুভ্র ধুতি-পাঞ্জাবি, মাথায় টোপর। এই হেভিওয়েট বিয়ের সব দায়িত্ব সামলান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্টারেরা। কনে সাজানোর দায়িত্ব নেন গীতা বালি। এই গীতা বালি-ই পরে শাম্মি কাপুরকে বিয়ে করেন। বিয়ের আসরে আনন্দে মেতে লতা মঙ্গেশকর মুখ ভেংচে মজাদার এক্সপ্রেশন দেন ফটোগ্রাফারদের। স্ত্রী-আচার সামলেছিলেন কিশোর কুমারের স্ত্রী রুমা গুহঠাকুরতা। বহুদিন চর্চায় ছিল বলিউডের এই গ্র্যান্ড বিয়ে। 

Guru Dutt-Geeta Dutt wedding
গীতা পরেছিলেন লাল বেনারসি আর গুরু শ্বেতশুভ্র ধুতি-পাঞ্জাবি

গুরু যত বড় পরিচালক, যত বড় অভিনেতা, চারিত্রিক গুণাবলীতে ততটা মহৎ ছিলেন না। নিজের ছবিতে রোজগেরে নায়িকাদের গল্প বলেছেন, সংসার পেরিয়ে নারীবাদের জয়গান গেয়েছেন গুরু। অথচ নিজের ঘরে তাঁর চরিত্র ছিল একদম বিপরীত। গীতার বাইরে গান গাওয়া বন্ধ করে দেন গুরু। শুধুমাত্র গুরুর ছবিতেই গীতা গাইবেন এমন শর্ত আরোপ করেন। গীতা বলেন “বছরে তোমার কটা ছবি হবে? তাতে গান গেয়ে আমার কেরিয়ারের কী হবে?” বিয়ের আগের রূপ আর বিয়ের পরের রূপে বদলে যান গুরু দত্ত। গুরুকে নায়করূপে কাস্ট করেন গীতা বালি তাঁর নিজের প্রোডাকশনের ‘বাজ’ ছবিতে। গুরু দত্তের নায়কোচিত পৌরুষময় অভিনয়ে সিনেমা হিট করে। কিন্তু গুরু নিজেকে অভিনেতা হিসেবে ভালো মনে করতেন না। তাই নিজের প্রোডাকশনের ছবিতে দিলীপ কুমারকে নায়ক চরিত্রে ভেবেছিলেন। দিলীপ না করায় গুরু নিজেই নায়করূপে ছবিতে আসেন। ইতিমধ্যে ‘সিআইডি’ ছবির জন্য গুরু দক্ষিণ ভারত থেকে খুঁজে আনেন এক নতুন নায়িকা ওয়াহিদা রেহমান।

এরপর গুরু দত্তর আইকনিক ছবি ‘পিয়াসা’। নায়ক গুরু নিজেই, দুই নায়িকা মালা সিনহা আর ওয়াহিদা রেহমান। গুরু তাঁর জীবনে পেলেন নতুন চাঁদ, ওয়াহিদা। আর সেই চাঁদের উদয়ে গীতার সংসারে ঘনালো চন্দ্রগ্রহণ। নারীসঙ্গ-দুর্বল গুরু বাঁধা পড়লেন ওয়াহিদার আঁচলে। ‘পিয়াসা’ ছবিতে গীতার গান কতটা কার লিপে থাকবে এই নিয়ে ওয়াহিদা নির্দেশ দিতেন। কেউ প্রতিবাদ করলে বলতেন গুরুর নির্দেশ। গুরুর সব সমর্থন ছিল ওয়াহিদার প্রতি। কিন্তু মালা যেহেতু কলকাতার নায়িকা ছিলেন, গীতার পক্ষ নিয়েই সবসময় কথা বলতেন। অথচ গীতার গান ছাড়া তখনও ওয়াহিদার ক্যারিশমা শূন্য।

গুরুকে নায়করূপে কাস্ট করেন গীতা বালি তাঁর নিজের প্রোডাকশনের ‘বাজ’ ছবিতে। গুরু দত্তের নায়কোচিত পৌরুষময় অভিনয়ে সিনেমা হিট করে। কিন্তু গুরু নিজেকে অভিনেতা হিসেবে ভালো মনে করতেন না। তাই নিজের প্রোডাকশনের ছবিতে দিলীপ কুমারকে নায়ক চরিত্রে ভেবেছিলেন। দিলীপ না করায় গুরু নিজেই নায়করূপে ছবিতে আসেন। ইতিমধ্যে ‘সিআইডি’ ছবির জন্য গুরু দক্ষিণ ভারত থেকে খুঁজে আনেন এক নতুন নায়িকা ওয়াহিদা রেহমান।

পিয়াসা ছবিতে গীতা দত্তকে দিয়ে হিন্দিতে কীর্তন গাওয়ালেন শচীন দেব বর্মণ। আবহে গীতার গান ‘আজ সাজন মুঝে অঙ্গ লাগা লে’ আর পর্দায় ওয়াহিদা প্রেমরসে কাতর হয়ে ছুটে আসছেন সিঁড়ি দিয়ে ছাদে, গুরু দত্তকে একবার পাওয়ার জন্য। গুরু পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে, ঠোঁটে সিগারেট। গীতার সেই গানে গুরুর প্রতি প্রেম যেন উপচে পড়ছিল, অথচ সেই গান তাঁর ঘর ভাঙছে যে সেই ওয়াহিদার লিপে। ‘পিয়াসা’ স্থান করে নিল ক্লাসিক ছবির তালিকায়। প্রতিটি গান হিট।

Pyaasa poster

ওয়াহিদাকে শুধুমাত্র দোষের ভাগী করা যায় না। কারণ গুরু ভুল নারীসঙ্গে বাস করতেন। বহুগামিতা ছিল তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। ওয়াহিদা তখন নতুন অভিনেত্রী, তিনি গুরুর মতো পরিচালক প্রযোজককে তাঁর কেরিয়ারের পথে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। সেসময় একের পর এক গুরুর ছবি সাইন করেন ওয়াহিদা।

অন্যদিকে গীতার সংসারে পরকীয়ার ঘুণ ধরল। গুরু দত্তের প্রযোজনায় বেশ কিছু ছবির পরিচালনা করেন রাজ খোসলা বা আব্রার আলভী। এই আব্রার আলভী ছিলেন ‘সাহেব বিবি গুলাম’-এর মতো কালজয়ী ছবির ডিরেক্টর, কিন্তু তাঁর স্বভাব ছিল মন্থরার মতো। গুরুর বন্ধু সেজে গুরু আর গীতা দুজনের কানেই দুজনের নামে বিষ ঢালতেন। গীতা একবার ওয়াহিদার নাম ভাঁড়িয়ে গুরুকে ডেটও করেন। গুরু এসে হাজির হতেই গীতা তাঁকে তীব্রভাবে অপমান করেন।

গীতার গানের মতোই তাঁর সংসার সংগীতে বাজল বিষাদ সুর— ‘মেরা সুন্দর সপনা বীত গয়া’ । অমন যার মিষ্টি গানের গলা সেই গীতার সংসারের মতো তাঁর গানের কেরিয়ারও পুড়ছিল। গীতাকে বাদ দিচ্ছিলেন বাকি মিউজিক ডিরেক্টররা। গীতার জায়গা নিচ্ছিলেন লতা মঙ্গেশকর আর আশা ভোঁসলে। দুই বোনের প্লেব্যাক কেরিয়ার গড়ে দিচ্ছিল গীতার অনুপস্থিতি। ‘হাওড়া ব্রিজ’ ছবিতে নায়িকা মধুবালার লিপে জায়গা পেলেন আশা। ও পি নাইয়ারের কাছের মানুষ হয়ে আশা ভোঁসলেও একের পর এক গান পেলেন নায়িকার লিপে। শক্তি সামন্তর ‘হাওড়া ব্রিজ’-এও তাই হল। কিন্তু গীতা নর্তকীর লিপে গাইবেন শুনে ও পি নাইয়ার গীতাকে বললেন “আপনাকে এমন গান দেব যে গানে গীতা দত্তকে পৃথিবীর লোকে আজীবন মনে রাখবে”। তাই হল। সুপার ডুপার হিট করল হেলেনের লিপে গীতার কণ্ঠে— “মেরা  নাম চিন চিন চু”। এই গানের বয়স বাড়বে না কোনদিনও। আশা ক্যাবারে-কুইন হলেও এই গানের পরিপূরক হতে পারেননি। 

এরপর গুরু দত্ত বানালেন ‘কাগজ কে ফুল’। ছবির প্লট যেন গীতা, গুরু আর ওয়াহিদার গল্পই পর্দায় নিয়ে এল। ছবি সেভাবে সাফল্য পেল না বক্সঅফিসে, তবে গীতার আকুতি ভরা কণ্ঠের গান— “ওয়াক্ত নে কিয়া কেয়া হাসি সিতম’ দুলিয়ে দিল সারা ভুবন।

অভিনেতা হিসেবে গুরু দত্তর আরেকটি উল্লেখযোগ্য ছবি ‘সতেলা ভাই’। এটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বৈকুণ্ঠের উইল’ অবলম্বনে হিন্দি চলচ্চিত্র। বাঙালি চরিত্রে বারবার ফিরে এসেছেন গুরু। এই রোল পরে বাংলা ছবিতে দুবার জহর গাঙ্গুলি, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় করেছিলেন।

গুরুর আরও কটি ছবি— ‘আর পার’, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস ৫৫’ , ‘চৌধভি কা চাঁদ’ ছবিতে ওয়াহিদা রহমানের বিপরীতে গুরু দত্তের অভিনয় ভারতীয় সিনেমায় আজও মাস্টারপিস।

এরপর গুরু দত্ত বানালেন ‘কাগজ কে ফুল’। ছবির প্লট যেন গীতা, গুরু আর ওয়াহিদার গল্পই পর্দায় নিয়ে এল। ছবি সেভাবে সাফল্য পেল না বক্সঅফিসে, তবে গীতার আকুতি ভরা কণ্ঠের গান— “ওয়াক্ত নে কিয়া কেয়া হাসি সিতম’ দুলিয়ে দিল সারা ভুবন।

এরপর গুরু প্রযোজনা করলেন ‘সাহেব বিবি গুলাম’। এই ছবি বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রবেশাধিকার পেল। গীতা আর গুরুর সঙ্গে বার্লিন সফরে গেলেন ওয়াহিদাও। তবে বিদেশি ফিল্ম সমালোচকেরা এ ছবির বাঙালি সেন্টিমেন্ট বুঝতে অপরাগ হলেন। তাঁরা বললেন, বাড়ির ছোট বউ সুরাপান করলে সেটা কেন অপরাধ হবে? কেনই বা স্বামীকে ঘরে আটকে রাখতে স্ত্রীকে মদ খেতে হবে? আসলে সাহেবদের কাছে মহিলাদের মদাসক্তি ছিল খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। 

Satela Bhai

ওয়াহিদার সঙ্গে গীতার সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল। এসময় গুরু দত্তর প্রোডাকশনের বাইরে ওয়াহিদার লিপে গীতার কাছে গান গাইবার অফার এলে গীতা পত্রপাঠ ‘না’ করে দেন। 

চমকপ্রদ বিষয়, ওয়াহিদা কিন্তু তখন দেব আনন্দের-ও নায়িকা। দেব আনন্দ, সেই সুরাইয়া থেকে জিনাত আমন পর্যন্ত তাঁর সমস্ত নায়িকাদের সঙ্গেই সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বা ফ্লার্ট করতেন। কিন্তু কখনও ভুলেও ওয়াহিদার ঘনিষ্ঠ হননি দেব আনন্দ। দেব আনন্দের বন্ধু ছিলেন যে গুরু দত্ত, তাই ওয়াহিদার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতেন দেব।

Chowdhabi ka Chand guru-Wahida
গুরুর জীবনে নতুন চাঁদ, ওয়াহিদা

গুরু দত্ত যত বড় প্রতিভাধর ছিলেন সেভাবে কিন্তু পুরস্কৃত হননি। এসব নিয়ে নৈরাশ্য ঘিরে ধরতে থাকে তাঁকে। পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন তখন সারা ইন্ডাস্ট্রির চর্চার বিষয়, যা তাঁর কেরিয়ারের বাধা হয়ে দাঁড়াল।

গীতা আর গুরুর তিক্ততা চরমে উঠলে, তিন সন্তান— দুই শিশুপুত্র আর এক শিশু কন্যাকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছাড়লেন গীতা। কিন্তু গুরুকে ডিভোর্স দিলেননা। স্ত্রী, সন্তান, কেরিয়ার হারানো গুরু ওয়াহিদার স্পর্শ চাইলেন। কিন্তু সেদিন ওয়াহিদা গুরুকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন গীতাকে ডিভোর্স না দিলে তিনি গুরুর জীবনের ‘আদার ওম্যান’ হয়ে বাঁচবেন না। গুরুকে একরকম তিরস্কারই করলেন ওয়াহিদা। গুরু দত্তের জীবনতরী যেন ভরাডুবি হতে থাকল।

অবশ্য গীতার সঙ্গে সম্পর্ক ফেরাতে গীতাকে নায়িকা করে অনেক আগেই বাংলা ছবি ‘গৌরী’ করতে চলেছিলেন গুরু। ‘গৌরী’ তিনটি ভাষার ছবি চর্চিত থাকলেও গৌরী ছিল বাংলা ছবি। গীতা দত্ত বলেছিলেন, “আমার হিন্দি সংলাপ অত দর ছিল না,তাই বাংলাতেই ‘গৌরী’ ছবিটি নির্মাণ করছিলেন নির্মাতা গুরু দত্ত’।  কয়েকটা গানের দৃশ্য শ্যুট হলেও সেই ছবির কাজ আর এগোয়নি পরে। ‘গৌরী’র সুরকার ছিলেন শচীন দেব বর্মণ। ছবিতে গীতার জন্য সুর করা গান পরবর্তীকালে শচীন দেব নিজের গলায় বেসিক রেকর্ড করলেন— ‘বাঁশি শুনে আর কাজ নাই, সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি’। 

Guru Dutt-Geeta Dutt
সুখী দাম্পত্যের স্মৃতি--- গুরু ও গীতা দত্ত

গুরু দত্তকে একবার বাংলা ছবির নায়ক হিসাবে ভেবেছিলেন কানন দেবী এবং তাঁর স্বামী হরিদাস ভট্টাচার্য। শরৎচন্দ্রের ‘অভয়া ও শ্রীকান্ত’ অবলম্বনে গল্প। উত্তমকুমারের সঙ্গে তখন হরিদাসের সম্পর্ক তিক্ততায় ভরে উঠেছে। তাই উত্তমকুমার না করায় ঐ সময়ে বম্বের এক নম্বর হিরো গুরু দত্তকে শ্রীকান্তর চরিত্রে ভাবা হল। কিন্তু গুরু তখন যেনতেনপ্রকারেণ তাঁর জীবনে গীতাকে ফেরাতে চান। তিনি হরিদাস ভট্টাচার্যকে বললেন, “আমি শ্রীকান্ত করলে অভয়ার রোলে গীতা দত্তকে নিতে হবে।” গীতার অভিনয়ক্ষমতা দেখাতে হরিদাসকে সেই ‘গৌরী’ ছবির কিছু রিল দেখালেন গুরু। কিন্তু সেগুলো শুধু গানের দৃশ্য, যা দেখে তেমন প্রভাবিত হননি হরিদাস। তাই তাঁরা গীতাকে নিতে পারবেন না জানিয়ে দেন। ফলতঃ বাংলা ছবি করা থেকে সরে দাঁড়ান গুরু দত্তও। শেষ অবধি শ্রীকান্তের ভূমিকায় বসন্ত চৌধুরীকে নেন হরিদাস। আর প্রযোজক কানন দেবী অভয়ার চরিত্র করতে নায়িকা হিসাবে আনলেন বম্বে থেকে গুরুর ‘পিয়াসা’ ছবির নায়িকা মালা সিনহাকে। বসন্ত ও মালার শ্রেষ্ঠ অভিনয় হয়ে থাকল ‘অভয়া ও শ্রীকান্ত’ ছবি। কানন দেবীর শ্রীমতী প্রোডাকশনের শেষ ছবি ছিল এটি। গুরু দত্তর আর বাংলা ছবি করা হয়নি। তবে গুরু দত্তর মৃত্যুর পর টাকা রোজগারের জন্য ‘বধূবরণ’ নামে এক বাংলা ছবির নায়িকা হয়েছিলেন গীতা। সে-ছবিতে গীতা প্লে ব্যাকও করেন। ‘বধূবরণ’ ছিল রাখী (বিশ্বাস) গুলজারের প্রথম ছবি।

গুরু দত্তর জীবনের সব আলো যেন এক এক করে নিভে যাচ্ছিল। গুরু বলতেন, সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে দিতে চাইতেন না গীতা। আসলে গীতা চাননি নেশাতুর বাবার কাছে শিশু সন্তানদের পাঠাতে। নিজের বাড়িতে একাকীত্বে দিন কাটছিল গুরু দত্তের। ভালবাসার কাঙাল গুরু দত্ত তাঁর বুক ভরা হাহাকার মেটাতে এসময় যথেচ্ছ মদ্যপান শুরু করেন। হয়তো এটাই তাঁর ভবিতব্য ছিল। ওয়াহিদা আলাদা পথ দেখে নিলেও সত্যিই গুরুকে ভালবেসে জ্বলেপুড়ে যান গীতা। বাংলা ছবিতেও একসময় সুচিত্রা সেন,মালা সিনহাদের লিপে গীতার গান ছিল সুপারহিট। কিন্তু সেখানেও একে একে রেকর্ডিং-এর ডেট ফেল করতে লাগলেন গীতা।

এক রাতে গুরু দত্ত সুরা পান করে গীতাকে ফোন করে বাচ্চাদের পাঠাতে বললেন তাঁর কাছে। গীতা জানিয়ে দিলেন ”বাচ্চারা ঘুমোচ্ছে ওরা কাল সকালে যাবে।” কিন্তু রাগান্বিত গুরু গীতাকে বললেন “বাচ্চাদের না পাঠালে আমার মরা মুখ দেখবে!” এরকম কথা তো গীতার কাছে নতুন কিছু ছিল না। গুরু দত্ত গীতার গায়ে হাত অবধি তুলতেন। ঠিক একইরকম পজেসিভ গুরু দত্ত ওয়াহিদার ওপরও ছিলেন। ওয়াহিদাকে শেষদিকে অন্য পরিচালকদের ছবিতে কাজ করতে বারণ করতেন গুরু, যা মেনে নেননি ওয়াহিদা— এখানেই গীতা আর ওয়াহিদার পার্থক্য। তবে গীতা দত্তর গানে লিপ দিয়ে আর গুরু দত্তর পরিচালনায় একের পর এক ছবিতে নায়িকা হিসাবেই ওয়াহিদার উত্থান, এ কথা মানতেই হবে।

গীতা সে রাতে বাচ্চাদের পাঠাননি। ফোন ছেড়ে গুরু দত্ত আকণ্ঠ মদ্যপান করেন। তাতেও তাঁর ঘুম না আসায় সে রাতে অত্যধিক ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন তিনি। নেশা আর ঘুমের ওষুধ এক হয়ে গুরু দত্তের জীবনপ্রদীপ নেভে  ১০ অক্টোবর, ১৯৬৪, ভোর রাতেই। অনেকের মতে, গুরু দত্ত আত্মহনন করেছিলেন। কারণ তিনি আগেও দুবার আত্মহননের চেষ্টা করেন। যদিও এ ব্যাপারে গুরু দত্তর ছেলেরা অরুণ দত্ত ও তরুণ দত্ত বলেছিলেন “বাবার সুইসাইড করার মতো কারণ তো ঘটেনি। মা তো বলেছিলেন আমাদের সকালে পাঠাবেন। আগে যে কবার সুইসাইডের চেষ্টা বাবা করেছিলেন কোনও সুইসাইড নোট লিখে রেখে যেতেন। মৃত্যুর দিন তেমন কোনও নোট তিনি লিখে যাননি।”

সকালে গুরুকে মৃত অবস্থায় পান বন্ধু পরিচালক আব্রার আলভী। গীতা খবর পেয়ে ছুটে যান সজল চোখে। হাউহাউ করে কাঁদতে থাকা গীতাকে সামলাতে কেউ পারেনি সেদিন। গীতাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন ‘সাহেব বিবি গুলাম’ ছবির ছোট বৌঠান মীনা কুমারী। ভালবাসার কাঙালিনী মীনা, গীতাদের জীবন ‘সাহেব-বিবি গুলাম’-এর ছোট বৌঠানের মতো শেষ হবে যৌবনেই সুরায়-সুরায়, কে জানত!

Family album
সপরিবার গুরু দত্ত

নায়ক হিসেবে গুরু দত্তর শেষ ছবি ছিল ‘বাহারে ফির ভি আয়েগি’। এই ছবির প্রযোজকও গুরু দত্ত। ছবিতে গুরুর শ্যুট করা কিছু দৃশ্য ছিল। তখন বাকিরা ঠিক করেন গুরুর অংশ রাখতে গেলে ছবি রিলিজ করা যাবে না। অনেক রোল নায়কের বাকি। নতুন নায়ক লাগবে। সেসময়কার কোনও নায়ক মরা নায়কের জায়গায় অভিনয় করতে চাননি। শেষ অবধি স্ট্রাগল করা নায়ক ধর্মেন্দ্র নায়ক হন মালা সিনহা আর তনুজার। তিনজনকেই অপূর্ব মায়াবি লেগেছিল ছবিতে। 

গুরুর রহস্য মৃত্যু সারা দেশে আলোড়ন তুলেছিল। প্রতিটি সংবাদপত্রের পাতায় গীতা-গুরু-ওয়াহিদার চর্চা। 

ঘরে-বাইরে কেচ্ছার কালি গীতার সংগীতজীবন শেষ করে দিচ্ছিল। তবু সন্তানদের মুখ চেয়ে ফাংশন করতেন গীতা দত্ত। কলকাতায় একবার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে গান করতে উঠলেন মদাসক্ত গীতা। মাঝপথে হারমোনিয়ামের ওপর মাথা রেখেই ঢলে পড়লেন গীতা। দর্শক সামলাতে হেমন্ত একাই গাইলেন তাঁদের বিখ্যাত ডুয়েট গান ‘নীড় ছোট ক্ষতি নেই আকাশ তো বড়’। কানু রায়ের সুরে গুলজারের কথায় বাসু ভট্টাচার্য র ‘অনুভব’ ছবিতে গীতা গাইলেন জীবনের শেষ অশেষ গান ‘মেরি জান, মুঝে জান না কাহো মেরি জান’। গুরু দত্তকে কিছুতেই ভুলতে পারেননি গীতা। ততদিনে প্লেব্যাকে গীতার জায়গা হয়েছে নায়িকা থেকে সহনায়িকার লিপে। নেশার কবলে ফুরিয়ে গেলেন গীতা। সিরোসিস অফ লিভার ধরা পড়ল। গীতা বুঝে গেলেন সময় শেষ। শেষদিনগুলোয় গুরুর উপহার দেওয়া কাচের চুড়ি একটা একটা করে ভেঙে ফেলতে লাগলেন গীতা। আর নিজের একটা গানই রেকর্ড প্লেয়ারে চালিয়ে বারবার শুনতেন— “কত গান হারালাম তোমার মাঝে, আজ কেন গো বলো সেই গান দোলা দেয় সকাল-সাঁঝে।” গীতা দত্ত সুরলোকে পাড়ি দেন ২০ জুলাই, ১৯৭২। গুরু-গীতার তিন সন্তান তরুণ, অরুণ, নীনাকে মানুষ করেছিলেন গীতার ভাই মুকুল রায়।

 

 

*তথ্যঋণ- গুরু দত্তর পরিবার ও সহকর্মীদের সাক্ষাৎকার এবং অন্তর্জাল মাধ্যম

*ছবি সৌজন্য: লেখক, Wikipedia, Facebook

Subhadip Bandyopadhyay

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।

Picture of শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।
Picture of শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বর্তমান সময়ে বাংলা ছায়াছবি ও বিনোদন জগতের লেখালিখিতে জনপ্রিয় নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন বাংলা ছবি সংক্রান্ত গবেষণায় ব্রতী রয়েছেন শুভদীপ। তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন। একাধিক সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা। শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'সুরের জাদুকর হেমন্ত' এই সময়ের বেস্টসেলার বই। লতা মঙ্গেশকরের বাংলা গান তৈরির গল্প নিয়ে শুভদীপের লেখা 'গানে গল্পে বাঙালির লতা' বইটি প্রকাশের পথে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com