Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

তারামোতি

রিমি মুৎসুদ্দি

সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪

Rimi Mutsuddi
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

এক

পাহাড়ের ঢাল বেয়ে সূর্যটা কখন যে আবার উঠবে তার জন্যই সারা রাত্রি জেগে অপেক্ষা করে আছে তারাবাঈ। এখানে জেনানা মহল নেই। এইরকম যুদ্ধ-তাঁবুর মধ্যে থাকার অভিজ্ঞতাও তার নেই। সারারাত দুশ্চিন্তায় ঘুম আসেনি। সেই ফতেপুর সিক্রি ছাড়ার পর থেকেই তারাবাঈ প্রায় প্রতিটা রাত জেগেই কাটায়। রাতের শব্দ শোনে। কখনও দূরে শৃগালের চিৎকার। এখন প্রহরীদের আনাগোণাও একটু কমে এসেছে। (Historical Novel)
-ওরা যে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেনি, তাই জন্য মা অম্বেকে ধন্যবাদ জানাই।

কথাটা নিজের মনেই বলে ওঠে তারাবাঈ। তারপর সাহসে ভর করেই তাঁবু থেকে বেরিয়ে আসে। আকাশের শেষ তারাটাও মিলিয়ে গেলে প্রহরীদের রদবদল হবে। কিন্তু এখন যুদ্ধ শেষে খুব একটা সতর্ক পাহারা নেই বোধহয়। নাহলে ওই তো সেপাইটা ঘুমাচ্ছে কেন? পাঠান প্রহরীর মুখের দিকে ভাল করে তাকিয়ে দেখে তারাবাঈ। রতন সিং-এর কথা মনে পরে। এত কাঁদে চোখের জল তবু শুকায় না কেন?

রতন সিং রাজপুত। আর এই ঘুমন্ত সেপাইটা পাঠান। পাঠানরা এমনিই খুব বোকা হয়। কিন্তু মন খুব ভাল হয় ওদের। রতন সিং-এর বন্ধু ছিল মীর আহমেদ। মীর আহমেদ শাহি সর্-ই-ফিলগির। হাতিদের দেখাশোনা করে। কিল্লার মোরি দরওয়াজা দিয়ে তারাবাঈ আর রতন সিং-কে পালিয়ে যেতে মীর আহমেদই সাহায্য করেছিল। কী জানি তার কী শাস্তি হয়েছে? সে বেঁচে আছে? শাহেনশাহ জানতে পেরে বোধহয় মীর আহমেদকে হাতির পায়ে পিষিয়ে মেরে ফেলেছে। হাতিশালের সব হাতিই অবশ্যই মীর আহমেদের বশে। বাদশাহ কি মীর আহমেদকে মারতে পূব দিক থেকে জঙ্গি হাতি নিয়ে এসেছেন? অথবা অন্য কোনও উপায়? শাহি হুকুমতে কোনওকিছুই কি অসম্ভব?
হাতির অসুখ করলে মীর আহমেদ কেমন করে হাতির শুঁড়ের ভেতর হাত ঢুকিয়ে ওষুধ দিত একবার তারাবাঈ দেখেছে। পাঁচমহলের অলিন্দে গালিচায় পাতা একটা তাকিয়ায় বসেছেন স্বয়ং বাদশাহ। তাঁকে ঘিরে বসেছে মেহেফিল। বাদশাহ আর মেহমানদের জন্য তরমুজের শরাব নিয়ে যাচ্ছিল তারাবাঈ ও আরও কয়েকজন বাঁদী। মীর আহমেদকে ব্যস্ত হয়ে হাতিশালের দিকে যেতে দেখে।

তোমার বচপনের গল্প আরেকদিন শুনব। গজমুক্তার শরীর খারাপ। ওষুধ দিতে হবে। বাদশাহের সবথেকে প্রিয় হাতি। এই হাতির মেজাজও বাদশাহের মতো। আমাকেও খুব একটা পাত্তা দেয় না। একমাত্র বাদশাহের কাছেই সে বশে।

সর্-ই-ফিলগির খুব ব্যস্ত বুঝি আজ?
-মুঘল শাহিতে কার ফুরসৎ আছে গো তারাবিবি?
-আমি তারাবিবি নই, তারাবাঈ। যোধপুর কি তারাবাঈ। সেই কোন ছোটবেলায় আমেরের হাভেলীতে আসি।
-তোমার বচপনের গল্প আরেকদিন শুনব। গজমুক্তার শরীর খারাপ। ওষুধ দিতে হবে। বাদশাহের সবথেকে প্রিয় হাতি। এই হাতির মেজাজও বাদশাহের মতো। আমাকেও খুব একটা পাত্তা দেয় না। একমাত্র বাদশাহের কাছেই সে বশে।

খবরটা বাদশাহের কানেও গিয়েছিল। পাঁচমহলে আর যেতে হয়নি সেদিন তারাবাঈকে। দূর থেকেই দেখার চেষ্টা করছিল মীর আহমেদের শুশ্রুষা। হস্তিদানব একটু সুস্থ হতে বুঝি বাদশাহ তার মাথায়, শুঁড়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। তাই বোধহয় শুঁড় তুলে একবার সে ডাকও ছাড়ে।
এই এতসব কি তারাবাঈ আদৌ দেখেছে? শাহী পিলখানা থেকে সে এতদূরে ছিল যে অতবড় হাতিকেও খুব ছোট্ট মনে হয়েছিল ওর। তবু বাদশাহের উষ্ণীষে ঝলমল করা হীরের দ্যুতিতে দূর থেকে ও টের পেয়েছিল বাদশাহের উপস্থিতি।

মীর আহমেদের কথা মনে আসাতে তারাবাঈ কিছুটা অবাক হল। এই সময়ে তো রতন সিং-এর কথা মনে আসা উচিত। এ কদিন ধরে এত মৃত্যু দেখতে দেখতেই কি তারাবাইয়ের মন এরকম নির্লিপ্ত হয়ে গেছে। কাছেই অসুস্থ জানোয়ারের ডাক শোনা যাচ্ছে। যুদ্ধে আহত হাতি আর ঘোড়াদের ডাক। কয়েকটা উজবেক কুকুরও রয়েছে মনে হয় কাছেপিঠে কোথাও। কান্না না আর্তনাদ বুঝতে পারে না তারাবাঈ। তবে সব জানোয়ারদের ডাকই মিলেমিশে একটা অদ্ভুত করুণ সুর তুলেছিল সারারাত। আজ এখন আজানের শব্দ ভেসে আসতেই যেন মিঁইয়ে পড়েছে অসুস্থ ক্লান্ত সব জানোয়ারগুলো। বিষাক্ত তীরের ঘায়ে অথবা তরোয়ালের কোপে কত মানুষ, জানোয়ার যে মরল, তার হিসাব কি তারাবাঈয়ের জানা আছে? সারারাত তারাবাঈ কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করছিল। এই আর্তনাদে কি মানুষের কান্নাও মিশে আছে?

কান্না না আর্তনাদ বুঝতে পারে না তারাবাঈ। তবে সব জানোয়ারদের ডাকই মিলেমিশে একটা অদ্ভুত করুণ সুর তুলেছিল সারারাত। আজ এখন আজানের শব্দ ভেসে আসতেই যেন মিঁইয়ে পড়েছে অসুস্থ ক্লান্ত সব জানোয়ারগুলো।

একটু দূরেই আরেকটা তাঁবুর ভেতর বাদশাহের প্রিয় হাতি গজমুক্তা রয়েছে। সেদিকে একটু একটু করে এগিয়ে যায় তারাবাঈ। ভৈ আর মেঠ বোধহয় জল আনতে গেছে। গজমুক্তাকে অন্য জানোয়ারদের থেকে আলাদা রেখেছে। বোধহয় সে বেশি চোট পেয়েছে। তাছাড়া গজমুক্তা তো শাহেনশাহের খুব খাস। পেয়ারের হাতি। তাকে তো আলাদা রাখতেই হবে।

-তারাবাঈ? হায় আল্লা, তোমাকে এখানে দেখব? এখানে মুলাকাত হল তোমার সাথে?
মীর আহমেদের গলায় বিস্ময়, আনন্দ দুটোই যেন একসাথে খেলা করে যায়। তারাবাঈয়েরও চোখ ভিজে গেছে। উত্তেজনায় থরথর করে কেঁপে ওঠে সে। তাহলে কি রতন সিংও বেঁচে আছে?
-আপনি বেঁচে আছেন?
কথাটা মুখ দিয়ে বেরিয়েই যায়।
-আল্লার মেহেরবানি তারাবিবি। আল্লার রেজা ছাড়া একটা পাতাও যে হিলতে পারে না। এই শাহী, তখৎ, হুকুমত এইসব তাগদের থেকেও জানবে তাঁর ইচ্ছেই সবথেকে শক্তিমান। আল্লা চেয়েছেন, তাই বেঁচে আছি।
একটু কিছুক্ষণ থেমে মীর আহমেদ আবার বলে,
-এই পাহাড়ে যুদ্ধের রাস্তায় তোমার সঙ্গে দেখা হল তারাবিবি? এও আল্লার রেজা।
এরপর দুহাত তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে সে বলে, ‘ইয়া আল্লা তেরি রেজা।’
-ঠাকুর তোমার কৃপা।
দু’হাত জোর করে মাথায় ঠেকিয়ে তারাবাঈ বলে,
-তুমি ঠিক বলেছ। উপরওয়ালার ইচ্ছে ছাড়া গাছের একটা পাতাও নড়ে না। কিন্তু উপরওয়ালা তো খুব দয়ালু। এই এত রক্ত চারিদিকে, মানুষের, জানোয়ারের, এগুলোও কি উপরওয়ালার মর্জি?
কিছুটা স্বগতোত্তির মতো শোনায় তারাবাঈয়ের কথাগুলো। মীর আহমেদও বুঝি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
-তারাবাঈ, এই পাহাড় দেখছ। আল্লাহ্‌পাকের কী অদ্ভুত সৃষ্টি দেখো! এখানে মাটি হলুদ, পাহাড়ের তলায় বালিগুলো দেখো, সব হলুদ। কী বিচিত্র এই দুনিয়া। একেক জায়গায় একেক রকম। এইসবের মালিকানা কার বলো তো তারাবিবি? মানুষের? বাদশাহের?
-না। পর্বতেগার সব বাদশাহেরও বাদশাহ। এই জমিন, আসমান, পাহাড়, পর্বত, নদী সব তাঁরই মালিকানা।
মীর আহমেদ যেন একটা ঘোরের মধ্যে কথাগুলো বলে যাচ্ছে। এই প্রথম সে যুদ্ধে এসেছে। যুদ্ধে হাতি খুব বড় সম্পদ। যুদ্ধে আহত শেরগির হাতিদের চিকিৎসার জন্য মীর আহমেদ আজ এই পার্বত্য গিরিপথে। সেনাপতি মানসিংহের সেনাদলে।

-আমাদের মতো ছোট ইনসানদের এইসব ভাবনা ভেবে কী লাভ বলো? যুদ্ধে যে কারোরই জয় হোক, আমাদের মতো বাঁদী বা আম আতারফদেরই বা কী প্রয়োজন?
একটু হেসেই তারাবাঈ বলে,
-আমাদের জীবনেরই বা কী প্রয়োজন তাই ভাবি? গরিবী নিয়েও যে কোনওমতে পরিবার নিয়ে সংসার করবো তার উপায় আছে? শাহি হুকুমতে আমাদের ঘরের মানুষকে যেকোনও সময়ে সেপাইরা ধরে নিয়ে যুদ্ধে পাঠিয়ে দেবে। কখনও সরাসরি যুদ্ধে। কখনও বেগার খাটতে।
-তুমি আমের থেকে আগ্রায় এসেছিলে কেন তারাবাঈ?
তারাবাঈয়ের মনের ওপর দিয়ে এ কদিন ঝড় বয়ে গেছে। শরীরের ধকলও কম যায়নি। মীর আহমেদ যেই আমের থেকে আগ্রা আসার কথা বলল, ওর দুর্বল মন আর সামলাতে পারল না। ওর অসুস্থ মা হীরাবাঈয়ের ঘোলাটে চোখদুটো মনে পড়ে গেল। আগ্রা যাওয়ার আগে মা বলেছিল,
-মনে রাখিস, তোকে তো জওহরে যেতে হচ্ছে না। এটাই তোর ভাগ্য। রাজকুমারী যোধা যদি মুঘল হারেমে যেতে পারেন, তাহলে তোর কিসের বাধা?

তারাবাঈয়ের মনের ওপর দিয়ে এ কদিন ঝড় বয়ে গেছে। শরীরের ধকলও কম যায়নি। মীর আহমেদ যেই আমের থেকে আগ্রা আসার কথা বলল, ওর দুর্বল মন আর সামলাতে পারল না।

প্রবল জ্বরের ধাক্কায় কাহিল হীরাবাঈয়ের গলা কাঁপছিল। হাঁপ ধরে যাচ্ছিল কথা বলতে বলতে। তবু মেয়েকে বোঝাতে সে বলেছিল-
-রাণীসা যা বলছেন আমাদের মেনে নিতেই হবে। রাণীসা যদি জওহরে যেতে বলতেন, তাই যেতে হত আমাদের। এইটা মনে রাখিস। রাজাসাও খুব দয়ালু। কচ্ছোওয়ারা বাঁচতে চায়। তাই মুঘল শাহির সঙ্গে দোস্তি করেছে।
হাঁপাতে হাঁপাতেই হীরাবাঈ বলে যায়,
-কাল হাটে ব্যাপারীরা বলছিল। রাজা ভারমল যদি মুঘলদের ঘরে মেয়ে না দিত, তাহলে এই আমের কেল্লায়ও শিশোদিয়া রাজপুতানা দুর্গের মতো জওহর ব্রত হত। রাণী, রাজকুমারী, বাঁদী সবাইকে পুড়ে মরতে হত।
তারাবাঈ মায়ের কথা অবাক হয়ে শুনতে থাকে।

-শিশোদিয়া মানে মেবারের কথা বলছ মা? মেবারের রাণীরা তো দেবী। রাণী পদ্মাবতী, রাণী কর্ণাবতী এরা তো মা অম্বেরই অংশ।
একবুক কান্না গিলে তারাবাঈ মাকে বোঝাতে চেষ্টা করেছিল।
-যবনের হাতে নিজেকে সঁপে দেওয়ার থেকে জওহরই অনেক সম্মানের মা।
হীরাবাঈ মেয়ের কথা শুনে অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল।
-চুপ কর পোড়ামুখী। ও কথা মুখে উচ্চারণও করবি না।

হীরাবাঈয়ের ভেতরটা যেন কেঁপে উঠেছিল। হীরাবাঈয়ের মা সতী হয়েছিল। হীরাবাঈয়ের এখনও স্পষ্ট মনে আছে সব। ভয়ে মা কাঁপছিল। পায়ে ধরছিল সবার। ওকে ছেড়ে দিতে বলছিল। মায়ের কান্না দেখে পণ্ডিতজি থেকে সবাই কী ধমক দিয়েছিল। সতীকুণ্ডের আয়োজন যেখানে হচ্ছিল, সেই চিতার সামনে আর ওর মায়ের চারিদিকে লাঠি, বল্লম হাতে কয়েকজন পাহাড়া দিচ্ছিল। মা যাতে পালিয়ে না যেতে পারে। হীরাবাঈ এত ভয় পেয়ে গিয়েছিল যে কাঁদতেও পারেনি। জ্ঞানও বেশিক্ষণ ছিল না ওর। এইকথা মনে পড়ে যেতেই গা পাক দিয়ে ওঠে হীরাবাঈয়ের। হরহর করে বমি করে ফেলে সে। মা’কে আরও অসুস্থ হয়ে যেতে দেখে তারা ভয় পেয়ে যায়। তাড়াতাড়ি বলে ওঠে,
-তুমি চিন্তা করো না মা। রাণীসা যা বলবেন আমি তাই করবো। আমরা নৌকর, চাকর আদমি। আমাদের রাজাজ্ঞা পালন করাই কর্তব্য, ধর্ম। তোমার মেয়ে ধর্ম পালন করবে।

-হ্যাঁ। এটা তুই ঠিক বলেছিস। আমাদের এত ভেবে কাজ কী? তুই যা রাজকুমারী যোধার সঙ্গে আগ্রা। রাণীসার তাই ইচ্ছে। আমাদের ভগবান দাসী করে পাঠিয়েছেন। রাজা রাণীর মর্জি মতো চলার জন্য। আমাদের নিজেদের কোনও ইচ্ছে থাকতে নেই রে। তাছাড়া, ধর্ম তো আমেরের রাজকুমারীও সারাজীবন পালন করতে পারবেন। বাদশাহ স্বয়ং এই কথা দিয়েছেন যোধাবাঈকে।

মা বোন আর কোলের ভাইটাকে ছেড়ে আগ্রা আসতে তারার কতটা কষ্ট হয়েছিল সে খবর রাখার আমের বা আগ্রার কোনও মানুষেরই প্রয়োজন পড়েনি।

মা বোন আর কোলের ভাইটাকে ছেড়ে আগ্রা আসতে তারার কতটা কষ্ট হয়েছিল সে খবর রাখার আমের বা আগ্রার কোনও মানুষেরই প্রয়োজন পড়েনি। যন্ত্রবৎ যোধাবাঈয়ের বিয়ে থেকে আগ্রা যাওয়া আবার আমেরে ফিরে আসা। সবটাই সে করেছে। যেরকম প্রয়োজন পড়েছে। দ্বিতীয়বার আগ্রা ফেরার সময়ও সে হাসিখুশিই ছিল। বাদশাহের হুকুমে আগ্রা থেকে ফতেপুরসিক্রির প্রাসাদেও সে যোধাবাঈয়ের সঙ্গেই এসেছে। যোধামহল সাজিয়ে তুলতে তারাবাঈয়ের কম মেহনত ছিল না। তাই তো যোধারাণী তারাবাঈকে চোখে হারাত। কত বিপদ থেকে, হারেমের কত ঝঞ্ঝাট থেকে যোধারাণীসা বাঁচিয়েছে তাকে। রহমদিল যোধাবাঈয়ের কথা মনে পড়লে তারাবাঈয়ের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে।

তারাবাঈকে চুপ মেরে যেতে দেখে মীর আহমেদ বলে,
-এখুনি সেপাইদের আনাগোণা শুরু হবে। তুমি ফিরে যাও বাঁদীদের তাঁবুতে। কাজে হাত লাগাও বিবি।
তারাবাঈ ফিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। রতন সিং-এর কথা যে কিছুই জানা হল না। একটা ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার মনে।
-একটু দাঁড়াও তারাবিবি। তোমাকে একটা জিনিস দেখাই। তাড়াতাড়ি এসো আমার সঙ্গে।

মীর আহমেদ পা বাড়ায়। তারাবাঈ দেখে মীর আহমেদ নিমেষে অনেক দূর চলে গেছে। যে পথে ও এসেছিল সেই পথেই। তারাবাঈ মীর আহমেদের লম্বা লম্বা পায়ের চলার সাথে তাল মেলাতে পারে না। শরীরটাও যুতে নেই। হাঁপ ধরে যায় এই পাহাড়ি রাস্তায় একটু হাঁটলেই। আসলে অনেকদিন ভাল করে খায়নি ও। খাবার যে ওকে দেয়নি কেউ, তা নয়। কিন্তু খাবার মুখে তুলতেই বড় কষ্ট ওর। আপাতত কষ্ট ভুলে মীর আহমেদের সঙ্গে পা মেলায় তারাবাঈ।

 (ক্রমশ)

অলংকরণ – আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়

Author Rimi Mutsuddi
রিমি মুৎসুদ্দি

আনন্দবাজার, বর্তমান, প্রতিদিন, এই সময়, আজকাল, একদিন, স্টেটসম্যান বাংলা ইত্যাদি বাংলার প্রায় প্রত্যেকটি খবরের কাগজেই নিবন্ধ লেখেন। দেশ, সানন্দা, সাপ্তাহিক বর্তমান, কৃত্তিবাস, কথাসোপান, পরিচয় ইত্যাদি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত।
আনন্দমেলা, জয়ঢাক ইত্যাদি ছোটোদের পত্রিকায় গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত।
প্রকাশিত বই সাতটি। একটি উপন্যাস, দুটিগল্পগ্রন্থ, তিনটে কবিতার বই ও একটি ছোটোদের উপন্যাস গ্রন্থাকারে প্রকাশিত।
উপন্যাস- ’১৫ নিমতলা ঘাট স্ট্রিট’, ইতিকথা প্রকাশনী (২০২৩)
গল্প-সংকলন- ‘ছাতা হারানোর পরে’-হাওয়াকল প্রকাশনী (২০২২)
-‘দময়ন্তীর জার্ণাল, সৃষ্টিসুখ প্রকাশনী(২০১৯)
কবিতার বইগুলি-
‘পরজন্মের মুদ্রণপ্রমাদ’- সিগনেটপ্রেস (২০২২)
‘মালিনীর দ্রোহকাল’- পরম্পরা প্রকাশনী(২০২০)
‘মিথ্যে ছিল না সবটা’, কলিকাতা লেটার প্রেস(২০১৮)
ছোটোদের উপন্যাস-
‘বাড়ি ফেরার তাড়া’- বরানগর দর্পণ প্রকাশনী (২০২৪)

Picture of রিমি মুৎসুদ্দি

রিমি মুৎসুদ্দি

আনন্দবাজার, বর্তমান, প্রতিদিন, এই সময়, আজকাল, একদিন, স্টেটসম্যান বাংলা ইত্যাদি বাংলার প্রায় প্রত্যেকটি খবরের কাগজেই নিবন্ধ লেখেন। দেশ, সানন্দা, সাপ্তাহিক বর্তমান, কৃত্তিবাস, কথাসোপান, পরিচয় ইত্যাদি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত। আনন্দমেলা, জয়ঢাক ইত্যাদি ছোটোদের পত্রিকায় গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত। প্রকাশিত বই সাতটি। একটি উপন্যাস, দুটিগল্পগ্রন্থ, তিনটে কবিতার বই ও একটি ছোটোদের উপন্যাস গ্রন্থাকারে প্রকাশিত। উপন্যাস- ’১৫ নিমতলা ঘাট স্ট্রিট’, ইতিকথা প্রকাশনী (২০২৩) গল্প-সংকলন- ‘ছাতা হারানোর পরে’-হাওয়াকল প্রকাশনী (২০২২) -‘দময়ন্তীর জার্ণাল, সৃষ্টিসুখ প্রকাশনী(২০১৯) কবিতার বইগুলি- ‘পরজন্মের মুদ্রণপ্রমাদ’- সিগনেটপ্রেস (২০২২) ‘মালিনীর দ্রোহকাল’- পরম্পরা প্রকাশনী(২০২০) ‘মিথ্যে ছিল না সবটা’, কলিকাতা লেটার প্রেস(২০১৮) ছোটোদের উপন্যাস- ‘বাড়ি ফেরার তাড়া’- বরানগর দর্পণ প্রকাশনী (২০২৪)
Picture of রিমি মুৎসুদ্দি

রিমি মুৎসুদ্দি

আনন্দবাজার, বর্তমান, প্রতিদিন, এই সময়, আজকাল, একদিন, স্টেটসম্যান বাংলা ইত্যাদি বাংলার প্রায় প্রত্যেকটি খবরের কাগজেই নিবন্ধ লেখেন। দেশ, সানন্দা, সাপ্তাহিক বর্তমান, কৃত্তিবাস, কথাসোপান, পরিচয় ইত্যাদি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত। আনন্দমেলা, জয়ঢাক ইত্যাদি ছোটোদের পত্রিকায় গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত। প্রকাশিত বই সাতটি। একটি উপন্যাস, দুটিগল্পগ্রন্থ, তিনটে কবিতার বই ও একটি ছোটোদের উপন্যাস গ্রন্থাকারে প্রকাশিত। উপন্যাস- ’১৫ নিমতলা ঘাট স্ট্রিট’, ইতিকথা প্রকাশনী (২০২৩) গল্প-সংকলন- ‘ছাতা হারানোর পরে’-হাওয়াকল প্রকাশনী (২০২২) -‘দময়ন্তীর জার্ণাল, সৃষ্টিসুখ প্রকাশনী(২০১৯) কবিতার বইগুলি- ‘পরজন্মের মুদ্রণপ্রমাদ’- সিগনেটপ্রেস (২০২২) ‘মালিনীর দ্রোহকাল’- পরম্পরা প্রকাশনী(২০২০) ‘মিথ্যে ছিল না সবটা’, কলিকাতা লেটার প্রেস(২০১৮) ছোটোদের উপন্যাস- ‘বাড়ি ফেরার তাড়া’- বরানগর দর্পণ প্রকাশনী (২০২৪)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com