Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

এক অন্য জ্ঞানপ্রকাশের কথা

Jnan Prakash Ghosh
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
(Jnan Prakash Ghosh)

বলা হয়, ফারুকাবাদ ঘরানার ছাত্র এবং শিক্ষকও তিনি। ফারুকাবাদ ঘরানার স্বনামধন্য উস্তাদ মসিত খানের শিষ্য। আবার উস্তাদ মসিত খাঁর পুত্র তথা তাঁর ঘরানার অন্যতম সেরা তবলিয়া কেরামতুল্লা খাঁর সতীর্থও তিনি। তাঁর হাতেই স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলায় ধারাবাহিক হয়েছে ফারুকাবাদ ঘরানার বাদনরীতি। তাঁর হাতে তৈরি হয়েছেন নিখিল ঘোষ, শ্যামল বসু, শঙ্কর ঘোষ, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, অভিজিৎ ব্যানার্জি। সমকালীন বাংলার প্রায় সকলেরই গুরু বা পরমগুরু, পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ। সাধারণভাবে এই ফারুকাবাদ ঘরানার উত্তরসূরি তাঁকে বলা হলেও, তিনি নিজে কোন ঘরানার শিল্পী জিজ্ঞাসা করায় একটি ঘরোয়া সাক্ষাৎকারে নাকি বলেছিলেন: ‘আমি যাঁর কাছে একদিনও শিখেছি, তাঁকেও গুরু বলে মানি।’ সেই হিসেবে তাঁর বক্তব্য: ‘আমার পক্ষে কোনো নিজস্ব ঘরানার কথা বলা ঠিক হবে না, কারণ আমি শ’তিনেক গুরুর কাছে শিখেছি, তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার অন্তর্গত ছিলেন।’ (Jnan Prakash Ghosh)

স-বর্ণ সত্যজিৎ: যুক্তিপট আর যুক্তিপথ: শুভেন্দু দাশমুন্সী

তিনি তবলার বোলে কথা বলতে পারতেন, গানে সুরারোপ করেছেন, সুরারোপ করেছেন চলচ্চিত্রের আবহ সংগীতে, নিজে গান লিখেছেন– আদ্যন্ত এই গানের মানুষটি একসময় লেখালিখিও করেছেন। ততখানি পরিচিত নয় তাঁর লেখকসত্তা, কিন্তু লিখেছেন অল্পস্বল্প। (Jnan Prakash Ghosh)

নিজের জন্মদিনটি গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনের সঙ্গে এক বলে, তা নিয়েই সকুণ্ঠভাবে ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭-তে, বৃদ্ধ বয়সে আপনমনে খসড়া খাতায় লিখেছিলেন একটি কবিতা। সেখানে তিনি লিখেছেন: ‘‘রবীন্দ্রনাথ জন্মেছিলেন পঁচিশে বৈশাখ/ সেই দিন না হোক, সেই তারিখে/ আমারো জন্মে বেজেছিল শাঁখ/ পঁচিশে বৈশাখ।/ কোথায় রবীন্দ্রনাথ!/ ভালোবেসে মূঢ় আত্মীয়বন্ধু গূঢ়/ ভেবেছিল আমারো বা/ বুঝি সেই ধাত।/ কোথায় রবীন্দ্রনাথ!’ (Jnan Prakash Ghosh)

Jnan Prakash Ghosh
জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ

তাঁর সুযোগ্যা শিষ্যা পূর্ণিমা সিংহকে দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর এক ডায়ারি। সেই ডায়ারি কপি করে রেখেছিলেনে পূর্ণিমা। পরে তাঁর গুরুজির সেই ডায়ারির পাতা থেকে উল্লেখ করে তিনিই জানিয়েছিলেন, তাঁর গুরুজি একদিন তাঁর সেই ডায়ারিতে লিখেছিলেন: ‘তবলা শেখানোর ব্যাপারে আমি বলি যে, আমি যখন ওস্তাদের কাছ থেকে পাখোয়াজ বা তবলা শিখেছি এবং নানা বর্ণ সম্বলিত শব্দ-বাণীর ব্যবহার রচনা করেছি, তখন শুধু আঙ্কিক চিন্তার দ্বারা আমার রচনাকে গঠিত বা গ্রথিত করিনি। আমার রচনার মধ্যে প্রধান লক্ষ্য চিরকালই শব্দ-বাণী-ধ্বনির আক্ষরিক উৎকর্ষ এবং তার থেকে উদ্ভূত আনন্দের দিকেই থেকেছে।’ (Jnan Prakash Ghosh)

জ্ঞানপ্রকাশ সুর বেঁধেছেন, গান লিখেছেন, কিন্তু ডায়ারির পাতায় বিশে সেপ্টেম্বর ১৯৮৭-তে একটি কবিতায় লিখেছিলেন: ‘কবিতা তো ছন্দের রানি/ গদ্য কিন্তু তার রাজা/ আমি জানি।’ (Jnan Prakash Ghosh)

এই গদ্য-লেখক জ্ঞানপ্রকাশ স্বল্পপরিচিত। তিনি দুটি চমৎকার বই লিখেছিলেন আজিব মজলিসি ঢঙে। তাঁর একটি বই পাওয়া যায়, নাম ‘তহজীব-এ-মৌসিকী’– উর্দু শব্দ, যার মানে ‘সংগীত সংস্কৃতি’।

এই গদ্য-লেখক জ্ঞানপ্রকাশ স্বল্পপরিচিত। তিনি দুটি চমৎকার বই লিখেছিলেন আজিব মজলিসি ঢঙে। তাঁর একটি বই পাওয়া যায়, নাম ‘তহজীব-এ-মৌসিকী’– উর্দু শব্দ, যার মানে ‘সংগীত সংস্কৃতি’। জ্ঞানপ্রকাশ সারা জীবনে যেসব ওস্তাদ সংগীত-গুণীদের সান্নিধ্যে এসেছেন, তাঁদের বিষয়ে এ এক অনন্য স্মৃতিকথা। তাঁর ঠাকুরদা দ্বারকানাথ ঘোষ ছিলেন বাংলায় হারমোনিয়ম সৃষ্টি ও তার বাণিজ্যিকীকরণের মূল হোতা। তাঁর পিতামহের নাম দ্বারকানাথ থেকেই কোম্পানির নাম ‘ডোয়ার্কিন’। তাঁর বাবা কিরণচন্দ্র ঘোষ কলকাতায় প্রথম করলেন রেডিয়ো-র বিখ্যাত বিরাট দোকান। নিজের শৈশবে এইভাবে এক প্রকাণ্ড গানের আবহে বেড়ে ওঠা থেকে নানা গুণিজনের কথা শোনালেন তিনি। তাঁদের কথা মানে তাঁদের কাছে গান শেখার নানা খুঁটিনাটি প্রসঙ্গ থেকে অ্যানেকডোট-গোছের ছোটোখাটো জীবনের গল্পগাছাও। বড়ে গোলাম আলি খাঁ, আমির খাঁ সহেবের কথা এখানে যেমন আছে, তেমনই আছে রবিশঙ্কর, আলি আকবর, বিলায়েত খাঁ প্রসঙ্গ। আছে ভীমসেন যোশী, জ্ঞান গোস্বামী, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের সাংগীতিক প্রতিভার আলোচনার পাশাপাশি কখনও বাদ্যযন্ত্রের কথা, কখনও গানেরই নানা ধারা বা ঘরানার পরিচয়। তবলা- হারমোনিয়মের ইতিবৃত্ত একদিকে, তো অন্যদিকে ধ্রুপদ- খামারের ইতিবৃত্ত। বাংলাতে কুমারপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত ‘কুদরত রঙ্গিবিরঙ্গী’-র প্রায় সমকালীন হলেও, জ্ঞানপ্রকাশই এই ধরনের লেখার পূর্বসূরি। (Jnan Prakash Ghosh)

গানের তকনিকি কারিকুরি একদিকে আর তার পাশাপাশি গানের জগতের নানা ‘কচালি’ আর খুচখাচ পরচর্চাও! সেই কচালিতে তাঁর গুরু আজিম খাঁ-র রাগের মাথায় মানুষ খুন করে জেলে যাওয়ার কথাও আছে। আছে, মূল অনুষ্ঠানে সংগত চলাকালীন যাতে গায়কের চলনের কাছে ইচ্ছে করে তবলিয়া হার মেনে নেন তাই ব্যাকস্টেজে গায়ক বা বাজিয়েদের পক্ষ থেকে তবলিয়ার পকেটে মোটা-টাকা গুঁজে অন্যায় আবদারের কেচ্ছাও। লুকোছাপা না করে জ্ঞানপ্রকাশ স্পষ্টত অনেকেরই নাম করে বলে গিয়েছেন সেই কলহ-কাজিয়ার সাতকাহন। আসলে গানের গল্প মানে যে তার শিল্পকথার সঙ্গে এই রসময় পশ্চাৎপটটিও ওতপ্রোত, তা বিলক্ষণ জানতেন জ্ঞানপ্রকাশ– আর তাই তাঁর ‘তহজিব-এ-মৌসিকী’ বা সংগীত-সংস্কৃতির পাতায় এই দুই ধারার অনায়াস ‘যুগলবন্দি’! (Jnan Prakash Ghosh)

বদলের বিভিন্ন মাত্রা: রবীন্দ্রনাথ: শুভেন্দু দাশমুন্সী

তাঁর আরেকটি বই, বস্তুত সেটিই তাঁর লেখা প্রথম বই, এখন যা সাধারণ পাঠকের চোখের আড়ালে। সেই বইটি ছিল তাঁর ১৯৫৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন, পোল্যান্ড আর চেকোশ্লোভাকিয়া ভ্রমণের কথামালা। তাঁর নিজস্ব দিনপঞ্জিতে লেখা তথ্যাবলি থেকে সে-লেখা গল্পের মতো করে তিনি লিখলেন পাঠকের আবদারে। নভেম্বর ১৯৫৪-তে দেশে ফিরে, বছর দেড়েক পরে প্রকাশিত হল সেই ভ্রমণকথা। নাম: ‘এলেম নতুন দেশে’। রবীন্দ্রনাথের গানের বাণী থেকে ধার করে নেওয়া বইয়ের নামটি এক ভ্রমণকথার নাম হিসেবে ভারী চমৎকার। বইটি প্রকাশিত হয়েছিল সেকালের অভিজাত প্রকাশনালয় দিলীপকুমার গুপ্ত-র সিগনেট প্রেস থেকে। প্রচ্ছদ আর ভিতরের আখ্যাপত্র এঁকেছিলেন সত্যজিৎ রায়। কী ঝরঝরে মজাদার মজলিশি জ্ঞানপ্রকাশের ভাষা। কে বলবে, দিনপঞ্জি থেকে তথ্য নিয়ে তিনি লিখছেন তাঁর ভ্রমণকথা? যাত্রার শুরুতে রবিশঙ্করের সঙ্গে নিতান্ত অপ্রস্তুত অবস্থাতেই হঠাৎ সংগত করার গল্পই হোক বা তাঁদের সদলবলে এরোপ্লেন চড়ার গল্পই হোক, ভাষাটি তাঁর প্রাঞ্জল। (Jnan Prakash Ghosh)

যেমন, নিজে উড়োজাহাজে চড়তে ভালোবাসেন না তেমন, এটা বোঝাতে গিয়ে গুরুজি লিখছেন: ‘নিজের কথা বলতে গেলে, প্লেনে-চড়া আমি একদম পছন্দ করি না। এ ব্যাপারে স্বনামধন্য বড়ে গোলাম আলি খাঁর সঙ্গে আমার খুব মতে মেলে। তিনি বলেন: মানুষকে আকাশে ওড়ানো যদি খোদার মর্জি হত, তাহলে নিশ্চয় তিনি তাদের ডানা গজিয়ে দিতেন, তা যখন তিনি দেননি, তখন নিশ্চয় মানুষ আকাশে উড়ুক এ তিনি চান না।’ তার সঙ্গে মজলিশি গল্পের ছলে শুনিয়ে দিলেন সেই রাজার গল্প, যিনি হাতির পিঠ থেকে নেমে পড়েছিলেন, তাঁর হাতে লাগাম ছিল না বলে। রাজা দাপটের সঙ্গে বলেন: ‘সওয়ার হুঁ মৈঁ, ঔর লাগাম মেরে হাথ নঁহি। লানৎ হৈ ঐসী সওয়ারি পর।’ এই যে এক গপ্পো থেকে আরেক গপ্পে যাওয়া, এটাই তো আড্ডাধারীর গপ্পো বলার কেতা। (Jnan Prakash Ghosh)

রাশিয়ায় লোকের মুখে এতদিন শোনা ভডকা-পানের সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা থেকে হোটেলে জল-ছড়িয়ে একাকার করে কোনওরকমে কেটে পড়ার অকপট গপ্পোগাছা শুনিয়ে তিনি শুরু করলেন তাঁদের রাশিয়া দেখার আর সেখানে নানা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের কথা।

রাশিয়ায় লোকের মুখে এতদিন শোনা ভডকা-পানের সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা থেকে হোটেলে জল-ছড়িয়ে একাকার করে কোনওরকমে কেটে পড়ার অকপট গপ্পোগাছা শুনিয়ে তিনি শুরু করলেন তাঁদের রাশিয়া দেখার আর সেখানে নানা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের কথা। নানা স্থান দেখা বলতে বলশয় থিয়েটার, রাশিয়ান সার্কাস দেখা যেমন আছে, তেমনই আছে লেনিন ও স্তালিনের সংরক্ষিত শবদেহ দর্শন-প্রসঙ্গ। মস্কো, লেনিনগ্রাদ একের পর এক শহরের নানা উল্লেখযোগ্য স্থানগুলি দেখার অভিজ্ঞতার সঙ্গেই চলছে তাঁদের অনুষ্ঠানের রিহার্সাল আর সেইসব অনুষ্ঠানের বর্ণময় বর্ণনা। তিনি শিশুদের বড় করে তোলার ব্যাপারে এখানকার সচেতন উদ্যোগ, এক মিউজিয়ম দেখে, বা খনিশ্রমিকদের স্বাস্থ্যোদ্ধারের জন্য এক-একটি জায়গা কীভাবে তৈরি করা হয়েছে দেখে বিস্মিত হচ্ছেন, লেখক হিসেবে জানাচ্ছেন তাঁর বিস্ময়। অন্যদিকে তাঁদের অনুষ্ঠানগুলি যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, বিদেশি অতিথি শিল্পীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে স্থানীয় মানুষ আর কর্মকর্তাদের আন্তরিকতাও মুগ্ধ করছে তাঁকে। সব কথাই লিখছেন। (Jnan Prakash Ghosh)

Jnan Prakash Ghosh
এলেম নতুন দেশে-বইটির প্রচ্ছদ

খনিশ্রমিকদের স্বাস্থ্য আবাসটি দেখে তিনি উচ্ছ্বসিত। সেখানে চার হাজার শ্রমিক থাকতে পারে বছরে আঠাশ দিন করে। যেমন সুন্দর এর স্থাপত্য, তেমন সুন্দর বন্দোবস্ত। থাকার জায়গা, খোলা আকাশের নীচের থিয়েটার, গান শোনার আর চলচ্চিত্র দেখার ব্যবস্থা সবই আছে, আছে নানা যন্ত্রপাতি, যা তাদের কাজের দক্ষতা আর আগ্রহও বাড়াবে, আবার আছে উন্নত চিকিৎসার সকল আধুনিক ব্যবস্থা। সেখানে উপস্থিত শ্রমজীবীদের জন্য সংগীত পরিবেশন করেছিলেন তাঁরা। তা শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা। (Jnan Prakash Ghosh)

একের পর এক শহর দেখার আর সেখানে তাঁদের অনুষ্ঠানের রিহার্সাল আর পারফরম্যান্সের কাহিনি বলে চলেছেন। জ্ঞানপ্রকাশের বলার গুণে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সব ঘটনাবলি। তার সঙ্গে কখনও লেখেন, তাঁদের গাওয়া আর বাজানো ভারতীয় সংগীতের সঙ্গে কানে-শোনা পশ্চিমি সংগীতের তুলনা-প্রসঙ্গ। লিখলেন: ‘আজ নতুন করে উপলব্ধি করলাম— সংগীত উপভোগ করতে গিয়ে মাথা খাটাবার দরকার নাও হতে পারে। মননের ক্রিয়া যদি বন্ধ থাকে, তাহলেও শরীরের স্নায়ুতন্ত্রে সংগীত এমন এক মূর্চ্ছনা জাগাতে পারে যার ফলে মানুষ মুগ্ধ না হয়ে পারে না। এদের সঙ্গে আমাদের সংগীতের বেশ খানিকটা মিল রয়েছে। খানিকটা রাগ-ভাবও আছে। চালটা ভারতীয় না হলেও বিলিতি মাইনর স্কেলে আমাদেরই কাফি, পিলুর কাছাকাছি স্বরবিন্যাসে ও স্বর-পরম্পরায় যেন এক স্বর্গীয় সুষমা গড়ে উঠেছে।’ (Jnan Prakash Ghosh)

পরে পৌঁছলেন উজবেকিস্তানের একটি গান-শেখার ইশকুলে। সেখানে সংগীতের উচ্চশিক্ষা দেওয়া হয়। চমৎকার সেখানকার ব্যবস্থা। দশ বছর সাধারণ বিদ্যালয়ে পড়ানোর পরে এই গানের ইশকুলে পাঁচ বছর শেখানো হয় গান।

পরে পৌঁছলেন উজবেকিস্তানের একটি গান-শেখার ইশকুলে। সেখানে সংগীতের উচ্চশিক্ষা দেওয়া হয়। চমৎকার সেখানকার ব্যবস্থা। দশ বছর সাধারণ বিদ্যালয়ে পড়ানোর পরে এই গানের ইশকুলে পাঁচ বছর শেখানো হয় গান। গান লেখা থেকে সুর দেওয়া আবার পিয়ানো, লোকসংগীতের বাদ্যযন্ত্র বাজানো থেকে অর্কেস্ট্রা পরিচালনা সবটাই শেখানো হয় এই পাঁচ বছরে। মানে শুধু গান-গাওয়া নয়, এখানে গানের ইশকুল মানে গানের সমস্ত কিছুর শিক্ষা। তাদের বাদ্যযন্ত্র শুনে জ্ঞানপ্রকাশ লিখছেন: ‘লোকসংগীতের বাদ্যযন্ত্রে এমন সব পরিবর্তন আনা হয়েছে, যাতে করে এখন সিম্ফনি পর্যন্ত বাজানো চলে।’ আর তাদের গান শুনে তিনি লিখলেন: ‘লোকসংগীতের প্রাচীন ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখে রসিকদের কাছে রসোত্তীর্ণ করাই এঁদের লক্ষ্য। তার জন্যে লোকসংগীতের মধ্যে যেখানে দরকার হারমনি, যেখানে দরকার সিম্ফনি, তা আমদানি করতে তাঁরা দ্বিধাবোধ করেন না।‘ভ্রমণকাহিনির সঙ্গে গানের ভ্রমণ আর চলনের এক বৃত্তান্ত রচনা করেন জ্ঞানপ্রকাশ এই বইতে।
এখন আর জ্ঞানপ্রকাশের এই বইটি সাধারণ্যে পাওয়া যায় না। ফলে অনেকেই আর চেনেন না লেখক জ্ঞানপ্রকাশকে। গানের জ্ঞানপ্রকাশকে মনে রেখেছে উত্তরকাল, ভুলে গিয়েছে গদ্যকার সংগীতগুণী মানুষটিকে। (Jnan Prakash Ghosh)

গ্রন্থপঞ্জি
১। ‘এলেম নতুন দেশে’, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, সিগনেট।
২। ‘তহজিব-এ- মৌসিকী’, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, বাউলমন প্রকাশন।
৩। ‘কুদরত রঙ্গিবিরঙ্গী’, কুমারপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, আনন্দ।
৪। ‘সতত সৃজনশীলসংগীতগুরু জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ: প্রজ্ঞা ও প্রযুক্তি’, পূর্ণিমা সিংহ, পরবাস, ৫৪-৫৫ সংখ্যা, ২০১৩।

ছবি সৌজন্য- লেখক

Subhendu Dasmunshi

শুভেন্দু দাশমুন্সী
অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়। বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, গবেষক, সত্যজিৎ রায় বিশেষজ্ঞ। চিত্রনাট্যকার। গুপ্তধন সিরিজের সোনাদা চরিত্রের স্রষ্টা। গীতিকার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রকাশিত সার্ধশতবার্ষিক রবীন্দ্র রচনাবলীর সম্পাদক।

Picture of শুভেন্দু দাশমুন্সী

শুভেন্দু দাশমুন্সী

শুভেন্দু দাশমুন্সী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়। বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, গবেষক, সত্যজিৎ রায় বিশেষজ্ঞ। চিত্রনাট্যকার। গুপ্তধন সিরিজের সোনাদা চরিত্রের স্রষ্টা। গীতিকার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রকাশিত সার্ধশতবার্ষিক রবীন্দ্র রচনাবলীর সম্পাদক।
Picture of শুভেন্দু দাশমুন্সী

শুভেন্দু দাশমুন্সী

শুভেন্দু দাশমুন্সী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়। বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, গবেষক, সত্যজিৎ রায় বিশেষজ্ঞ। চিত্রনাট্যকার। গুপ্তধন সিরিজের সোনাদা চরিত্রের স্রষ্টা। গীতিকার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রকাশিত সার্ধশতবার্ষিক রবীন্দ্র রচনাবলীর সম্পাদক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com