ফিলাডেলফিয়া-র দুর্গাপুজো অর্থাৎ প্রগতির পুজো । ২০১৯ অর্থাৎ চলতি বছরে তার সাতচল্লিশতম আয়োজন। শুরু হয়েছিল ‘৬০ এর শেষ এবং ‘৭০ এর দশকের শুরুর দিকে সেই সব বাঙালিদের হাত ধরে যাঁরা আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বতটে এসে পৌঁছেছিলেন ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে কিন্তু, বাঙালি সংস্কৃতির আঁচল ছাড়েননি। বাঙালিরাও এখানে এসে খুঁজতে চেয়েছিলেন নিজেদের আপনজন, দেশের মাটির গন্ধ, একটু বাংলার সংস্কৃতি-চর্চা, আর মাতৃভাষার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নিবিড় আনন্দ। আর সেখান থেকেই জন্ম হয় প্রগতির।

দীর্ঘ সাতচল্লিশ বছর পর প্রগতি আজও মাতৃভূমি ছেড়ে আসা বাঙালিদের দিয়ে চলেছে সেই বাড়ির পুজোর আনন্দ। সারা বছর সবাই নিজের কাজে ব্যস্ত থাকলেও পুজোর আয়োজন চলতেই থাকে। কারণ দুর্গা পুজোর আয়োজন বাঙালির মনে এনে দেয় এক অদ্ভুত রকম বেঁচে থাকার অনুভূতি! এর বর্ণনা হয় না। এখানে ছুটির অভাবে পূজো হয় মাত্র দু’দিনে। শনিবার ও রবিবার। কিন্তু মণ্ডপ সাজানো, মালা, গাঁথা, ঠাকুর এনে বসানো হয় শুক্রবারই এবং তার জন্য যে হইচই, যা উৎসাহ, তা ঠিক লিখে বোঝাতে পারা যায় না।

ভারতবর্ষ থেকে আসা নামকরা শিল্পীরা আসেন প্রবাসে থাকা বাঙালিদের সেই বাঙলার পুজোর আনন্দ দিতে। এ বার প্রগতিতে প্রথম দিনে, অর্থাৎ অক্টোবরের ৫ তারিখে আসছেন জলি মুখার্জী এবং দ্বিতীয় দিনে অর্থাৎ অক্টোবরের ৬ তারিখে জীমুত। থাকবে এখানকার বাঙালিদের তৈরি করা নাটক এবং আরও অনেক অনুষ্ঠান। বাঙালি পুজো মানেই পেট-পুজো অর্থাৎ থাকবে দুদিন ধরে এলাহি খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। সব কাজ ভুলে মিলবো সবাই এক ছাতের নীচে, চলবে অনেক আড্ডা, উঠে আসবে ইতিহাসের কথা, ছোটবেলার মজা, আর পরের প্রজন্মকে কিছুটা হলেও সেই সংস্কৃতির কিছু ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা। এ ভাবেই দুর্গা পুজোর মাধ্যমে পুরনো প্রজন্মর সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে জুড়ে দেবার কাজে হাত লাগাই আমরা সকল ফিলাডেলফিয়াবাসী বাঙালিরা।
One Response
Very well written Nilanjana! Your article reflects our feelings for Durga Pujo so well!??