Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

মারি ক্যুরি: এক অদম্য জেদের নাম

বাংলালাইভ

নভেম্বর ৭, ২০২২

Marie Curie
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

‘বিজ্ঞান মেয়েদের জন্য নয়। তুমি বরং রান্না শেখার ক্লাসে যোগ দাও।’
অস্ট্রিয়ার ক্রাকো বিশ্ববিদ্যালয়ের সচিব একদিন এভাবেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বিজ্ঞানবিভাগের উচ্চশিক্ষার ক্লাসে যোগ দিতে আসা এক প্রতিভাময়ী তরুণীকে। আকাটা হিরে চিনতে ভুল হয়েছিল সেদিন, ভবিষ্যৎ জবাব দিয়েছিল একটু অন্যরকমভাবে। সেই তরুণীই একদিন পদার্থ (Physics) ও রসায়নবিদ্যায় (Chemistry) নজিরবিহীনভাবে দু’দুবার (১৯০৩ এবং ১৯১১) নোবেল পুরস্কার জয়ী হন। আজ তাঁর জন্মদিন।

তিনিই আমাদের মাদাম মারি ক্যুরি।
রেডিয়াম ও পোলোনিয়ামের আবিষ্কারক। পুরো নাম Marie Salomea Skłodowska–Curie। জন্ম ৭ নভেম্বর ১৮৬৭। তীক্ষ্ণ মেধার অধিকারিণী, প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা অধ্যাপক।

কিন্তু গোলাপ-বিছানো ছিল না এই বিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞান-সাধিকার জীবন। দারিদ্র আর অনিশ্চয়তা ছিল নিত্যসঙ্গী। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোটো মারি ছেলেবেলা থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী আর জেদি। পদার্থবিদ্যা আর অঙ্কের অধ্যাপক বাবা ভাদিশ্লাভ স্কেলাডােভস্কি আর স্কুলশিক্ষিকা ও পিয়ানোবাদক মা নী বগুস্কার ছত্রছায়ায় শুরু হয়েছিল তাঁর শৈশবের লেখাপড়া। সমকালীন রাজনৈতিক চাপানউতোরে বাবা মা দুজনেই চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে যান একসময়। দারিদ্র্যের অক্টোপাস নির্মমভাবে ঘিরে ফেলে পুরো পরিবারকে। মা আক্রান্ত হন যক্ষ্মায়। তাঁর চিকিৎসা আর সন্তানদের পড়াশোনার জন্য টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতেন অসহায় বাবা। কিন্তু মারির অভিধানে অসম্ভব ও পরাজয় বলে কোনও শব্দ ছিল না। তিনি বলতেন:

শুদ্ধতার জন্য ভয় পেলে কখনও তা অর্জন করা সম্ভব হবে না।… জীবনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, জীবনকে বুঝলে ভয়কে জয় করা যায়।… 

আমি এগোতে শিখেছিলাম ঠিকই, কিন্তু দ্রুত কিংবা সহজে নয়।’ সেইসময় পোল্যান্ড ছিল রাশিয়ার অধীনে। স্বেচ্ছাচারী জারের শাসন তো ছিলই, তার পাশাপাশি তখন পোল্যান্ডের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে একদিকে জার্মানি, অন্যদিকে রাশিয়া। মেয়েদের উচ্চশিক্ষার সব পথ বন্ধ। মারি ক্যুরি লুকিয়ে ভর্তি হন ফ্লাইং ইউনিভার্সিটিতে। পড়াশোনা ও সংসারের খরচ চালানোর জন্য তাঁকে বিভিন্ন ধনী রুশ পরিবারে পড়ানোর কাজ নিতে হয়। তারই মধ্যে চলে বিজ্ঞান নিয়ে নিজের পড়াশোনা। 

Marie Curie
বিদূষী মারি ক্যুরি

দু বছরের বড় দিদি ব্রনিয়া বা বরিন্সলাও ছিলেন বোনের মতোই মেধাবী। দুজনেরই ইচ্ছে ছিল ডাক্তারি পড়ার। কিন্তু পোল্যান্ডে বসে তা সম্ভব নয়। তার জন্য যেতে হবে প্যারিসে। কিন্তু অত টাকা কোথায়? ছোট বোন মারি বরিন্সলাকে জানায়, তুমি মেডিক্যাল পড়ার জন্য প্যারিসে যাও। আমি তোমাকে যেভাবে হোক টাকা পাঠাব। তারপর পাশ করে তুমি রোজগার শুরু করলে তোমার টাকায় আমি ভার্সিটিতে পড়ব। বোনের এই প্রস্তাবে রাজি হলেন বরিন্সলা। এই সময় ওয়ারশ থেকে ৮০ কি.মি দূরে এক পরিবারে ন্যানির কাজ নেন মারি। এক কাপড়ের ব্যবসায়ীর সদ্যোজাত সন্তানের দেখাশোনার কাজ করতে হবে তাঁকে। সেইসঙ্গে ঐ পরিবারের ছোট মেয়েকে পড়াতেও হবে। সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর গভীর রাতে অঙ্ক, পদার্থ বিজ্ঞান আর রসায়নের বই খুলে পড়তে বসতেন মারি। অবসর সময়টুকুও নষ্ট করতেন না। গ্রামের গরিব বাচ্চাদের পোলীয় ভাষা পড়াতেন।  মারি যে বাড়িতে কাজ করতেন সেই পরিবারের বড় ছেলে ক্যাসিমি ছিল ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ক্রমশ তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। অঙ্ক, পদার্থ-বিজ্ঞানের নানান তত্ত্ব নিয়ে আড্ডা জমত দুজনের। ছুটি পেলেই দুজনে হাঁটতে বের হতেন পাহাড়ে। একদিন ক্যাসিমি মারিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আপত্তি ছিল না মারিরও। কিন্তু এক গরিব গৃহশিক্ষিকাকে বিয়ে করবে তাঁদের ছেলে, এটা ক্যাসিমির বাবা মা মেনে নিতে পারেননি। গুরুজনের কথা অগ্রাহ্য করলে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতে হবে, এই ভয়ে পিছিয়ে যায় প্রেমিক ক্যাসিমিও। বিষণ্ণ ও হতাশ মারি মনে মনে আত্মহত্যার কথা ভাবতেন সেই সময়। তবু নিরুপায় হয়ে মাথা নীচু করে চাকরি করে যেতে হয় আরও কিছুদিন। একসময় দিদির পড়া শেষ হয়। বরিন্সলা ততদিনে বিয়ে করেছেন এক ডাক্তারকে।  

আরও পড়ুন: অভিজিৎ সেন- জনতার অর্থনীতিবিদ

 এরপর মারি গেলেন উচ্চশিক্ষার পাঠ নিতে। উঠলেন দিদির বাড়িতে। কিন্তু সে বাড়িতে বড্ড হুল্লোড়। পড়াশোনার পরিবেশ নেই। বাধ্য হয়ে মারি তাঁর ইউনিভার্সিটির কাছে একটা ছোট্ট চিলেকোঠা ঘর ভাড়া নিলেন। সেই ঘর গরমকালে চুল্লি, আর শীতকালে বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে থাকত। ঘরভাড়া দিয়ে তারপর পেট চালানোর মতো টাকাও থাকত না মারির কাছে। এক এক সময় একটা শুকনো রুটি আর কয়েকটা চেরি ফল খেয়েই দিন কাটত তাঁর। লাইব্রেরিতে পড়তে পড়তে মাঝে মাঝেই মাথা ঘুরে পড়ে যেতেন। দিদি আর দিদির ডাক্তার স্বামীর টাকা নিতে তাঁর আত্মসম্মানে লাগত। ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি সাফসুতরো করে সামান্য কিছু রোজগার হত। বাকি সারা দিন-রাত শুধু ডুবে থাকতেন পড়াশোনা আর গবেষণায়। এভাবেই পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে এল। ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোলে চমকে উঠলেন অধ্যাপক ও সহপাঠীরা। দেখা গেল, প্রতিটা বিষয়েই দারুণ ফলাফল করে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন মারি ক্যুরি। এর কিছুদিন পর মারির সঙ্গে পরিচয় হয় বিখ্যাত অধ্যাপক বিজ্ঞানী পিয়ের ক্যুরির। পরিচয় গড়াল প্রেমে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ২৬ বছরের মারি বিয়ে করলেন ৩৫ বছরের পিয়েরকে। এ যেন বিজ্ঞানের পৃথিবীতে এক আশ্চর্য মণিকাঞ্চনযোগ। ১৮৯৫ সালে উইলিয়াম রন্টজেন ‘এক্স রে’ বা ‘রঞ্জন রশ্মি’ আবিষ্কার করেন। এক্স রে’র থেকেও আর কোনও শক্তিশালী রশ্মি পাওয়া যায় কি না তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী গবেষণা শুরু হয়ে যায়। ফরাসি বিজ্ঞানী হেনরি বেকরেল পিচব্লেন্ড নামে একটি খনিজ পদার্থ থেকে ইউরেনিয়াম যৌগ আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারের প্রতি আকৃষ্ট হন মারি ও পিয়ের। তাঁরা অনুমান করেন যে, পিচব্লেন্ডে ইউরেনিয়াম ছাড়াও আরও শক্তিশালী কোনও পদার্থ মিশে থাকতে পারে। কিন্তু পিচব্লেন্ড নিয়ে গবেষণার জন্য যে পরিমাণ টাকা দরকার তা তাঁদের ছিল না। পাশে দাঁড়াল ভিয়েনার বিজ্ঞান পরিষদ। পিয়ের আর মারিকে তাঁরা কয়েক টন টাটকা পিচব্লেন্ড উপহার দেন। দিন রাত এক করে শুরু হয় গবেষণা। কয়েক বছরের মধ্যে সাফল্যও মেলে। ১৮৯৮ সালে তাঁরা পিচব্লেন্ড থেকে প্রথমে একটি তেজস্ক্রিয় আদি বস্তুর সন্ধান পেলেন। মারি কুরি তাঁর জন্মস্থান পোল্যান্ডের নামে সেই সদ্য আবিষ্কৃত পদার্থের নাম রাখলেন ‘পোলোনিয়াম (Polonium)’। এরপর ১৯০২ সালে আরেকটি নতুন মৌলিক পদার্থ নিষ্কাশন করলেন তিনি, যার নাম ‘রেডিয়াম (Radium)’। এই রেডিয়াম এমনই এক মৌলিক, যা তেজস্ক্রিয়তার দিক থেকে ইউরেনিয়ামের চাইতে প্রায় দশ লক্ষ গুণ বেশি ক্ষমতাধর। রেডিয়ামের আবিষ্কার বিশ্বের বিজ্ঞান জগতে বিপুল আলোড়ন সৃষ্টি করল। এই উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারের ফলে ১৯০৩ সালে যুগ্মভাবে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেলেন পিয়ের ও মারি কুরি। সে বছর তাঁদের সঙ্গে নোবেল ভাগাভাগি করেছিলেন হেনরি বেকরেল। ১৯১১ সালে রেডিয়াম ক্লোরাইড থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণ করে রেডিয়াম মৌল তৈরি ও তার পারমাণবিক ওজন নির্ণয়ের জন্য মারি কুরি দ্বিতীয়বার নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার বছর কয়েক আগেই ১৯০৬ সালে এক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন পিয়ের কুরি। সেই শোক সামলেও একা হাতে দুই মেয়ে আইরিন ও ইভকে মানুষ করেছেন মারি, চালিয়ে গিয়েছেন নিজের গবেষণার কাজও। নিজের লক্ষ্যে, জেদে বরাবরই অবিচল ছিলেন তিনি। 

Pierre and Marie Curie
বিজ্ঞানী দম্পতি- পিয়ের ও মারি

পিয়ের ক্যুরির মৃত্যুর কিছুদিন পর বয়সে ছোটো এক বিজ্ঞানীর সঙ্গে বিতর্কিত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মারি। তিনি পদার্থবিজ্ঞানী পল লঁজেভঁ। পল ছিলেন পিয়েরের ছাত্র। বিবাহিত এবং চার সন্তানের বাবা হলেও পলের দাম্পত্যজীবন সুখের ছিল না। ফলে তাঁরা পরস্পরকে আঁকড়ে ধরে নতুন করে বাঁচতে চেয়েছিলেন। ১৯১০ সালের জুন মাসে মারি পলকে লিখেছিলেন: ‘প্রিয় পল, গতকাল সন্ধে এবং রাত শুধু তোমার কথা ভেবেছি। মনে পড়েছে আমাদের এক সঙ্গে সময়-যাপনের স্মৃতি। যা আমার কাছে বড় সুখের। আমি এখনও দেখতে পাচ্ছি তোমার সুন্দর আর নরম চোখ দুটো। কেবলই ভাবছি কবে আবার তোমার উপস্থিতির মিষ্টি মুহূর্তগুলো পাব।’ পলের প্রতিশোধপরায়ণ স্ত্রী জেনি মারির লেখা এইসব প্রেমপত্র খুঁজে বের করে তুলে দেন সাংবাদিকদের হাতে। মারিকে খুনের হুমকি দেন। খবরের কাগজে তাঁকে ‘ডাইনি’ ও ‘খারাপ চরিত্রের মহিলা’ বলে অপপ্রচার শুরু হয়। মারির ঘর ভাঙচুর করা হয়। ভয় দেখানো হয় তাঁর শিশুকন্যাদেরও। পলের স্ত্রী ও শাশুড়ির সাক্ষাৎকার ছাপা হয় বিভিন্ন কাগজে। ক্রুদ্ধ পল একদিন এক সাংবাদিকের সঙ্গে পিস্তল নিয়ে প্রকাশ্যে ডুয়েল লড়েন। সেই সাংবাদিকের নাম গুস্তাভ টেরি। তিনি বলেছিলেন, মারি এক চরিত্রহীন বিধবা, যাঁর খপ্পরে পড়ে লঁজভঁ ফেঁসে গিয়েছেন। কুৎসিত ভাষায় তিনি লিখেছিলেন: ‘মারি আর পারবেন না স্কার্টের আড়ালে তাঁর প্রেমিককে লুকিয়ে রাখতে।’ কাগজে কাগজে এই নোংরা কাদাঘাঁটার খেলায় অভ্যস্ত ছিলেন না মারি। অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, খোদ নোবেল কমিটি পর্যন্ত চিঠি লিখে মারিকে জানায়, আপনি পুরস্কার নিতে না এলেই ভালো হয়। মারি জানান, তিনি নোবেল পেয়েছেন তাঁর আবিষ্কারের জন্য। তার সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের কোনও সম্পর্ক নেই। কারও বিরুদ্ধে কুৎসা তাঁর গবেষণার মূল্যায়নে ছায়া ফেলবে কেন? 

Marie Curie with her daughters
দুই মেয়ের সঙ্গে

তবু প্রতিদিন কাগজে ছাপা হতে লাগল তাঁদের রগরগে পরকীয়ার কাহিনি। বলা হল, মারি ইহুদি। খাঁটি ফরাসি নন। বলা হল, পল ও মারির প্রেমের খবর জেনেই পিয়ের আত্মহত্যা করেছেন। লেখা হল, মারির গর্ভে রয়েছে পলের অবৈধ সন্তান। গভীর হতাশায় সেই সময় আত্মহত্যার দিকেও ঝুঁকে পড়েছিলেন মারি। সেই দুঃসময়ে কেউ ছিল না তাঁর পাশে। কেবল বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ছাড়া। একটি চিঠিতে তিনি মারিকে প্রিয় বন্ধুর মতো গভীর সহানুভূতি-ঋদ্ধ ভাষায় লিখেছিলেন: পরম শ্রদ্ধেয় মিসেস ক্যুরি, তেমন মূল্যবান কিছু বলার নেই, তবু লিখছি বলে আমার ওপর হাসবেন না। কিন্তু জনগণ আপনার সঙ্গে বর্তমানে যেভাবে আচরণ করবার সাহস করছে, তাতে আমি এতই রেগে আছি যে আমার অনুভূতি আপনাকে জানাতেই হল।…  আমি এটা না বলে পারছি না– আপনার মেধা ও মননে আমি যে কী পরিমাণ মুগ্ধ! এবং আপনার সঙ্গে ব্রাসেলস-এ ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হয়ে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। ঐ সব ঘৃণ্য সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীগুলো ছাড়া যে কোনও ব্যক্তিই আনন্দিত হবে আপনার এবং পল লঁজেভঁর মত ব্যক্তিত্বদের আমাদের মধ্যে পেয়ে। আপনাদের মত খাঁটি মানুষ যাদের সান্নিধ্যই বড় ধরনের প্রাপ্তি বলে আমি মনে করি। যদি নিম্নশ্রেণির এসব কথায় আপনার মন খারাপ হয়, তাহলে ওসব ছাইপাশ না পড়লেই হয়। বরং যাদের রুচির জন্য মেরুদণ্ডহীনেরা এসব অতিরঞ্জিত এবং মনগড়া কথা ছড়িয়েছে, এগুলো তাদেরকেই পড়তে দিন। আপনাকে, লঁজেভঁকে, আর পেরিনকে বিনীত শ্রদ্ধাসহ… আপনাদেরই একান্তএ. আইনস্টাইন(প্রাগ, ২৩ নভেম্বর ১৯১১)

দ্বিতীয়বার নোবেল পুরস্কার গ্রহণের পর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন মারি। দিনের পর দিন তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করার ফলে দুরারোগ্য অসুখে আক্রান্ত হন তিনি। আসলে রেডিয়োঅ্যাক্টিভিটি বা তেজস্ক্রিয়তার বিষে আক্রান্ত হয়েছিলেন পিয়ের এবং মারি দুজনেই। একদিকে সামাজিক কলঙ্কের বিষ, অন্যদিকে তেজস্ক্রিয়তার বিষ মারির জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। এরপর শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। আহত ফরাসি সেনাদের চিকিৎসার জন্য সেইনসুস্থ শরীরেও গাড়িতে এক্স-রে মেশিন নিয়ে মারি ছুটে বেড়ালেন রণাঙ্গনে। আহত সৈনিকদের চিকিৎসার জন্য মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত এক করে কাজ করলেন। ১৯৩৪-এর ৪ঠা জুলাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চলে সেই সেবাযজ্ঞ। মারি ক্যুরি ততদিনে হয়ে উঠেছেন দেশ-বিদেশের সেলেব্রিটি। দুরারোগ্য লিউকিমিয়া নিয়েও তিনি বেঁচে ছিলেন ৬৬ বছর। তাঁর মৃত্যুর পর মেয়ে আইরিন এবং জামাতা ফ্রেডেরিখ নোবেল পুরস্কার পান সেই রেডিয়োঅ্যাক্টিভিটি গবেষণার সূত্রেই। সেই সুখের দিন অবশ্য তিনি দেখে যেতে পারেননি। মারি ক্যুরির পরিবার যেন আক্ষরিক অর্থেই এক নোবেল পরিবার।

ছবি সৌজন্য: britannica.com

Banglalive.com Logo

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।

Picture of বাংলালাইভ

বাংলালাইভ

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।
Picture of বাংলালাইভ

বাংলালাইভ

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস