Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

পুরুষরা ডাক্তার দেখাতে চান না কেন?

ঋতুপর্ণা রায়

সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯

Doctor Treating Male Patient Suffering With Depression
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

মা বা বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া আর ভগবানের দেখা পাওয়া বোধহয় সমান। বাড়ির সকলের খেয়াল রাখেন এঁরা, কিন্তু নিজেদের বেলায় ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাব। মাদের যদি বা বুঝিয়েসুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, বাবারা তো ডাক্তারের নাম শুনতেই আগ্রহী নন। পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক না কেন, ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা বললে, তাঁরা সব সময় কোনও না কোনওভাবে তা এড়িয়ে যায়। ‘কোনও ব্যাপার না’, ‘ঠিক হয়ে যাবে’ বা ‘আমার ওসব রক্ত পরীক্ষা করতে ভাল লাগে না’—হাজারটা অজুহাত তৈরিই থাকে।

সম্প্রতি ১০০০জন পুরুষের উপর গবেষণা করে দেখা গেছে যে প্রায় ৮০% অংশগ্রহণকারী নিজের প্রথম গাড়ির কথা পরিষ্কারভাবে মনে রেখেছেন, কিন্তু শেষ কবে ডাক্তারের কাছে গেছিলেন, তা বলতে পারেননি। ব্যাপারটা শুনতে সহজ মনে হলেও আসলে কিন্তু খুবই বিপজ্জনক। কারণ এমন অনেক অসুখ আছে, যা বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায় না। নিয়মিত চেক-আপই একমাত্র সেগুলো নির্ণয় করার রাস্তা। এবার পুরুষরা যদি ডাক্তারের কাছে নাই যান, তা হলে চেক-আপটা হবে কী করে বলুন তো!

ক্লেভল্যান্ড ক্লিনিকে এই বিষয়ে আরও একটি সার্ভে করা হয়েছে। ডাক্তারের কাছে যাওয়া নিয়ে পুরুষদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। দেখা গেছে যে প্রায় ৭২% পুরুষ ডাক্তারের কাছে যাওয়ার চেয়ে বাড়ির কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন। ৬৫% অংশগ্রহণকারী স্বীকার করেছেন যে, যতটা সম্ভব তাঁরা ডাক্তারের কাছে যাওয়া ঠেকিয়ে রাখেন। ২০% বলেছেন যে তাঁরা রোগের উপসর্গ নিয়ে সত্যি কথা বলেন না আর ৩৭% মেনেছেন যে তাঁরা ডাক্তারকে সমস্ত সমস্যা বলতে চান না, সব তথ্য তাঁদেরকে দেন না।

অনেকে সময়ের অজুহাত দেখিয়ে চেক-আপ এড়িয়ে যান। ‘অর্ল্যান্ডো হেলথ সার্ভে’ অনুযায়ী অংশগ্রহণকারীদের ২৪% মনে করেন, ডাক্তার দেখানো মানে সময় নষ্ট করা। তাঁদের নাকি অন্য অনেক কাজ আছে। কিন্তু ব্যপারটা হচ্ছে সময় থাকলেও তাঁরা ডাক্তারের কাছে যেতে চান না কারণ প্রায়োরিটি লিস্টে চেক-আপ যে তাঁরা রাখতেই পছন্দ করেন না।

 অনেকে আবার ভাবেন ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি কোনও গুরুতর অসুখের কথা বলবেন। সেই ভয়ে ডাক্তারের কাছে না যাওয়াই ভাল। বেশিরভাগ পুরুষই মনে মনে জানেন যে তাঁরা অসংযত জীবন যাত্রা করেন। ডাক্তার তা শুধু ধরেই ফেলবেন না, শুধরোতেও বলবেন, এই আশঙ্কায় তাঁরা শারীরিক অসুবিধে হলেও খুলে বলতে চান না। কারণ তাঁরা যে ভুল করছেন, তা মেনে নিতে তাঁদের অহংবোধে লাগে।

মেডিক্যাল চেক-আপে পুরুষদের ভীষণ অনীহা কারণ তাঁরা মনে করেন যে ডাক্তারের কাছে যাওয়া মানে পৌরুষের অপমান। কারণ তাঁরা তো পুরুষ, ফলে তাঁরা দুর্বল হতেই পারেন না। পুরুষরা মনে মনে বিশ্বাস করেন যে তাঁরা সুপারহিরো। সব কিছু সামলানোর ক্ষমতাই তাঁদের আছে। ডাক্তারের কাছে গেলে তো তাঁরা তাঁদের দুর্বলতা প্রকাশ করে ফেলবেন। সেই ভয়ে চেক-আপ করানো থেকেই তাঁরা বিরত থাকেন।

দেখা গেছে অনেক সময় ডাক্তারের কাছে না যাওয়ার ফলে অনেক কঠিন অসুখ সময়ে ধরা পড়ে না । প্রি ডায়াবিটিস বা প্রসটেট ক্যানসারের মতো অসুখের সেরকম কোনও লক্ষণ থাকে না। কিন্তু নিয়মিত চেক-আপ করালে, তা সময়ে ধরা পড়তে পারে। ফলে চিকিৎসাও তাড়তাড়ি শুরু করা যায়। সুতরাং, ডাক্তারদের এড়িয়ে যাওয়াটা কিন্তু মোটে বুদ্ধির পরিচয় দেয় না। বুঝতে পারেছন তো?

Picture of ঋতুপর্ণা রায়

ঋতুপর্ণা রায়

Picture of ঋতুপর্ণা রায়

ঋতুপর্ণা রায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস