আগের পর্বের লিংক: [১] [২] [৩] [৪] [৫]
– তোমারে এইবার বড়ো ইস্কুলে দিমু৷ দুইতলা পাকা বিরাট বাড়ি৷ শহরের মধ্যে৷ বড়োরাস্তার উপর৷
বালকের পিতৃদেব সকালের প্রথম দফার চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বলল৷ মা বিছানা তুলছিল৷ চট আর শতরঞ্জির ওপর পাতা কাঁথাগুলো ভাঁজ করে তক্তপোশের একপাশে গুছিয়ে রাখছিল৷
– নীহার, কিছু কও না ক্যান? তোমার তো সব থেইকা বেশি খুশি হওনের কথা৷ আমারে খালি দোষ দাও৷ পোলাটার ল্যাখাপড়া হইল না৷ ভালো খবর দিলাম, তাতে সাড়া দিবা তো৷
মা হয়তো বলেছিল,
– ইস্কুলে তো আগেও দিছিলা৷ বইখাতা পায় নাই৷ ইস্কুলের বেতন দেওয়া হয় নাই৷ তাই তো…
চায়ের কাপ মাটিতে রেখে, নাম্বার টেন সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে বাবা বলল,
– হেরম্ববাবুর লগে কথা হইছে৷ হেরম্ব চক্রবর্তী৷ বরিশালের মানুষ৷ ফ্রিডম ফাইটার৷ তেনার বাবা নামজাদা স্কলার আছিলেন৷ এই ইস্কুলেই আছেন বিজয় কাঞ্জিলাল৷ ইংরাজি পড়ান৷ আমাগো নারানগঞ্জের মানুষ৷ কইছেন, নিয়া আসেন পোলারে৷ আলাদা কইরা দেখুম আমি৷ আফটার অল, সান অফ দা সয়েল৷ দ্যাশের পোলা৷
মা রান্নাঘরে এসে বসল৷ দ্বিতীয় দফার চায়ের হুকুম হবার আগেই কাপ ধুয়ে নিল৷ একচালার নীচে শোবার খাবার পড়বার ঠাকুর-দেবার দশ বাই আটহাতের ঘরের গায়ে তিনইঞ্চি ইটের গাঁথনিতে আলাদা-করা তিনহাত বাই পাঁচহাত একটা জায়গা। এটা রান্নাঘর, কয়লা গুল ঘুঁটে বাসন-কোসন, শিল-নোড়া, হাঁড়ি গামলা বালতি উনুন এবং আরো কিছুর মধ্যে পিঁড়িতে বসে মা৷
– বুঝলা নীহার, তোমার পোলায় বড়ো ইস্কুলে যাইব৷ নতুন প্যান্ট-জামা তো লাগে৷
পাকা দোতলা বাড়ি৷ রাস্তার ওপর৷ বাড়ি বড়োই৷ তবে পুরনো৷ বসতবাড়ি ছিল৷ ছাদে ওঠা বারণ৷ ছাদের সিঁড়ি যে কোনও সময় ধসে পড়তে পারে৷ কাঠের যে সিঁড়ি, বাড়ির মূল গাঁথনি থেকে আলাদা, বারান্দার চওড়া থামের গা ঘেঁষে পরে বসানো, সেটাই বেশি ব্যবহার করে ছেলেরা৷ শহরের মধ্যে, মানে শেয়ালদা আর কলেজ স্ট্রিটের মাঝখানে৷ রাস্তার নাম আগে ছিল মির্জাপুর স্ট্রিট, এখন সূর্য সেন স্ট্রিট৷ স্কুলের নাম আদর্শ বিদ্যামন্দির৷ বেশি দূরে নয়। পশ্চিমে মধ্য কলিকাতা বালিকা বিদ্যালয়, আর-একটু এগোলে মিত্র ইনস্টিটিউশন, ‘পূরবী’র মোড়ে৷ লিন্টন স্ট্রিট স্টপেজ থেকে বাসে উঠতে হয়৷ ১০ নম্বর বা ৩৩ নম্বর৷ দোতলা বাস৷ ১০ নম্বর বালিগঞ্জ থেকে হাওড়া স্টেশন৷ ৩৩ নম্বর চেতলা থেকে পাইকপাড়া৷ একতলা বাস ছিল একটা৷ ১৬ নম্বর৷ গোলপার্ক থেকে শিবপুর ট্রামডিপো৷

ফিলিপসের মোড় থেকে বাঁদিকে বেঁকে মৌলালির মোড়, এরপর ডানদিকে ঘুরে বউবাজার হয়ে শেয়ালদা৷ সব বাস সরকারি৷ খাকি উর্দির কন্ডাক্টররা প্রায় সবাই রিফিউজি৷ এঁদের অনেকেই মধ্যবিত্ত ভদ্র ঘরের, লেখাপড়া-জানা যুবক৷ নামতে হয় ‘ছবিঘর’ সিনেমা বা ডিমপট্টি স্টপে৷ সেখান থেকে বৈঠকখানা বাজারের ভেতর দিয়ে বা সরস্বতী প্রেস ও আমিনিয়া হোটেলের পাশ দিয়ে হেঁটে স্কুলবাড়ি৷ বাসভাড়া ৯ নয়া পয়সা৷ ইংলন্ডের রাজা-রানির মুন্ডুর ছাপওলা, এমনকী মাঝখানে ছেঁদাওলা পয়সা-আনা-সিকি-টাকা তখন হারিয়ে যাচ্ছে৷ ৬৪ পয়সায় আর একটাকা নয়৷ ১০০ নয়া পয়সায় টাকা৷ নতুন মুদ্রার গায়ে ধানের শিষ আর অশোকস্তম্ভের ছাপ৷
দু’পিঠের বাসভাড়া ১৮ নয়া পয়সা আর টিফিন ৩ নয়া পয়সা, মোট ২১ নয়া পয়সা গুণে গুণে হাতে দেয় বাবা৷ বাবার আয় সম্ভবত আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। ছ’ আনা বা আট আনা সের মোটা চালের জায়গায় দশ আনা সের সরু চাল আসছে ঘরে। সপ্তাহে অন্তত একদিন মাছ, দু-দিন ডিম ফাটিয়ে আটা দিয়ে গুলে ওমলেট বা ডিমের বড়া কিংবা তিনফালি কাটা ডিমের ঝোল। বই-খাতা কেনা হচ্ছে, স্কুলের বেতন দেওয়া হচ্ছে একমাস-দুমাস অন্তর। নতুন জামা-প্যান্ট এসেছে একজোড়া, বহুদিন পর জুতো-মোজাও। বাড়িভাড়া দেওয়া হচ্ছে প্রায় নিয়মিত, বাবাকে রাস্তায় পাকড়াও করে বকেয়া ভাড়া আদায় করবে বলে দাঁড়িয়ে থাকে না বাড়িওলা, ঘর থেকে উৎখাত করার হমকি-নোটিস নিয়ে আসে না পাড়ার উকিলমশাই৷ শোবার ঘর আর রান্নাঘরের মাঝখানে যে সবেধন আলোমণি ৪০ ওয়াটের বালবটা জ্বলত, সেটা ৬০ ওয়াট হয়েছে, বিদ্যুৎখরচা বাবদ মাসে বাড়তি একটাকা দেবার কড়ারে৷ মা বলেছিল, এত অল্প আলোয় পড়তে চোখে লাগে৷ রান্নাঘরে বসলে তবু আলো বেশি পায়৷ লাইটের নীচে হয়৷ তক্তপোশ অব্দি আলো যা যায় মুছা মুছা৷ ২০ ওয়াট বেশি আলো পাবার জন্য বালককে একটা শর্তে যেতে হল৷ স্কুল থেকে ফেরার বাসভাড়া আর পাওয়া যাবে না৷ কমবেশি দু মাইল পথ৷ তাই সই৷ হেঁটে ফেরায় আলাদা মজা খুঁজে পায় বালক কিছুদিনের মধ্যে৷ সেই মজা থেকে সে বেরোতে পারেনি প্রৌঢ় বয়সেও৷

শেয়ালদা মোড়ের কাছাকাছি এসে স্টেশনের গায়ের দোকানঘরগুলোর পাশ দিয়ে হাঁটার সময় সে পায় কাঠের গন্ধ, বার্নিশের গন্ধ, ওমলেট-ঘুগনির গন্ধ, ধূপধুনোর গন্ধ, পাখিদের নানারকম ডাক, লাল-নীল-সবুজ রঙের বরফজল। বৌবাজারের কাছে ট্রামগুমটি থেকে পেচ্ছাবের তীব্র গন্ধ, ক্যাম্পবেল হাসপাতালের ফুটপাত জুড়ে অসুখ-অসুখ গন্ধ, আর ওপরে এদিক ওদিক তাকালে উত্তম সুচিত্রা সৌমিত্র মাধবী বিশ্বজিৎ ছবিবিশ্বাস অনুপকুমার ভানুব্যানার্জি জহররায় ভ্রান্তিবিলাস অভিশপ্ত চম্বল পলাতক অতলজলেরআহ্বান আরো কত হোর্ডিং৷ পূরবী অরুণা ছবিঘর প্রাচী হলে ঢোকার মুখে কাচের ফ্রেমে ‘চলিতেছে’ ও ‘আসিতেছে’ ছবির স্থিরচিত্রাবলি৷ চারপাশ দেখার সঙ্গে সঙ্গে বালকের সিনেমাদর্শন এভাবেই৷ স্থিরচিত্র দেখে হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে নিজের মতো গল্প বানিয়ে তোলা৷
হ্যারিসন রোডে, অধুনা এমজি রোডের ওপর ছ’ফুট মতো লম্বা বিশাল ঝরনাকলম দাঁড়িয়ে থাকত রোজ৷ ‘ধর কোম্পানি’র কলমের দোকান৷ তার পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে বালকের৷ মৌলালি পেরিয়ে সুরেশ সরকার রোডে ঢুকে একটু এগোলেই ব্যাপটিস্ট মিশন বালিকা বিদ্যালয়ের উলটোদিকে ‘জলসা’ দেখতে পাওয়া তো এই হাঁটার সুবাদেই৷ সিনেমার মাসিকপত্র৷ একতলার ছোট্ট ঘরের সামনে ছাপা কাগজের লাট দেখে তার আগ্রহ হয়েছিল৷ পরে জেনেছে ওই ছাপা কাগজের লাটকে বলে ‘ফর্মা’৷ জানালার নীচে টিনের প্লেটে লেখা ছিল ‘জলসা দপ্তর’৷ বাড়িউলির মেয়ে, গড়িয়াহাটে মুরলীধর গার্লস কলেজে আইএ পড়ছে তখন, খবরটা জেনে বলে, আমাকে এনে দিবি? লুকিয়ে৷ মা-দাদা যেন টের না পায়৷ জীবনে প্রথম নিষিদ্ধ কাজটা করার সুযোগ এনে দিয়েছিল সেই পদাতিক ফেরা৷ তারপর, পুরনো স্কুল মথুরানাথ আর বিশাল কাঠবাদাম গাছের পাশ দিয়ে, আচারের গন্ধের ভেতর দিয়ে ঘরে ফেরা৷ মা, এসে গেছি৷
আদর্শ বিদ্যামন্দির কি ভালো লেগেছিল? লাগার কথা নয়৷ মাঠ নেই, উঠোন নেই, ছাদে ওঠা বারণ৷ ছেলেরা ক্লাসের মধ্যে বেঞ্চে বেঞ্চে লাফিয়ে খেলে, ঝগড়া করে, মারামারি করে৷ ক্লাস সেভেনের ঘরের মাথায় অ্যাসবেস্টস৷ দুপুরে গরম নামে ঘাড়ে মাথায়৷ বৈঠকখানা পাটোয়ারবাগান মানিকতলা রাজাবাজারের গলতা এলাকা থেকে ছেলেরা আসে৷ লেখাপড়া ওদের মোটে পছন্দের নয়৷ বিশেষ করে রেলকলোনির ছেলেদের৷ ওরা কেমন যেন ব্যবহার করে, বাজে কথা বলে, মারধরও করে৷ বালকের চেয়ে বয়সে বড়ো প্রায় সবাই৷ ক্লাস সেভেনের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েই সে ঢুকে পড়ল গোবরা তিন নম্বর কবরস্থানে৷ সারাদিন গাছে গাছে পুকুরে পুকুরে৷ জামরুল কালোজাম সবেদা যত খুশি খাওয়া৷ বাঁধানো কবরের ওপর ঘুমিয়ে পড়া৷ এটাই যেন তার ঠিকঠাক জায়গা৷ ছায়া, গাছের শব্দ, নির্জনতা, একা-হয়ে-যাওয়া, বকুলবীজ (এই নামেই সে জেনেছে, নারকেল কুলের মতো দেখতে, সবেদার মতো খেতে) নিয়ে একা একা টিপ-মারা খেলা৷ তার চোখে, তার মনে সবুজ যে জড়িয়ে গেল, সে তো এই কবরস্থান থেকে৷ গাছের জীবনীশক্তি জানল মৃতদের শান্তিধাম থেকে৷ উলটোদিকে লেপ্রোসি হসপিটালে নিঝঝুম দুপুর কেঁদে ওঠে কোনও রোগী বা রোগিনীর কাতর আর্তনাদে৷

ক্লাস এইট প্রায় পুরোটাই এভাবে কেটে গেল৷ মা জানত, ছেলে স্কুলে যায়, বাবাও৷ হঠাৎই বিজয় কাঞ্জিলাল স্যার জানালেন, ও তো স্কুলে আসে না অনেকদিন৷ কোথায় যায়? বাবা খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারল, স্কুলে যাবার নাম করে বেরিয়ে কবরস্থানে যায়৷ একদিন বাবা গিয়ে ধরে নিয়ে এল৷ কাঞ্জিলাল স্যার বাড়ি এসে বোঝালেন৷ সমস্যা কোথায়? বালক কী বলবে৷ তার যে কিছুই ভালো লাগে না স্কুলে৷ শেষ পর্যন্ত সাদা ধুতি-পাঞ্জাবির ছোটখাটো মানুষ কাঞ্জিলাল স্যার মন-ছোঁয়া হাসি আর নরম কথা দিয়ে জিতে নিলেন বালককে৷ হেডস্যারকে ভালো লাগে না৷ হাতের বেত টেবিলে রেখে, পান-খাওয়া জিভের জড়ানো উচ্চারণে ‘রাইট এ লেটার টু দা এডিটর’ ভালো লাগে না৷ ইতিহাসের নেপালস্যার বই নিয়ে রিডিং পড়েন৷ ভালো লাগে না৷ ক্যাংঠাস্যারের (নাম মনে নেই) ইকনমিকস-সিভিকস মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়৷ সংস্কৃতস্যার শ্যামলবাবু অবশ্য ভালো পড়ান৷ ভালো পড়ান বাংলার শুভাশিস গোস্বামী৷ ক্লাস টেন-এ বালক ‘আদর্শ বিদ্যালয়’ নিয়ে বসে লেখো প্রতিযোগিতায় ক্লাস ইলেভেন-এর দুই দাদাকে হারিয়ে ফার্স্ট হয়৷ পুরস্কার দেবে বলেছিল স্কুল, দেয়নি৷ তবে সেই ঘটনার পর থেকে সে পড়ায় ফিরেছে৷
ক্লাস টেন-এ পড়বার সময় এনসিসি ট্রেনিং আবশ্যিক হল৷ ভারত-চিন সীমান্ত বিবাদের জের দেশ জুড়ে৷ স্কুলে এনসিসি রুম৷ প্রতি রোববার প্যারেড হয় ক্লেম ব্রাউন ইনস্টিটিউটের মাঠে৷ এনসিসি স্যার বুঝিয়ে দিয়েছেন, দেশ মানে দেশের মাটি, মানে দেশের সীমানা৷ দেশভক্ত যুবকদের এই সীমানা রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে৷ তোমাদের অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যেতে হবে৷ বেশ ঘোর লাগে, অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যাচ্ছে বালক৷ বালক তখন আর বালক নয়৷ প্যারেডের পর গোটা ডিম আর দুটো কলা৷
মা হাঁসের একটা ডিমকে সেদ্ধ করে সুতো দিয়ে তিন টুকরো করে৷ আধখানা বাবার আর বাকি আধখানা দু-ভাগ হয়ে মা আর ছেলের৷ কিংবা আটা দিয়ে গুলে ডিমের বড়া৷ বেলা দশটা-সাড়ে দশটার রোদে ঘাসে বসে খোলস ছাড়িয়ে গোটা ডিম আর দুটো কলা খেতে পাবার মূলে দেশপ্রেম৷ বালক উজ্জীবিত৷ খাকি উর্দি পরে ঘোড়ার খুরের নাল লাগানো জুতোয় কুচকাওয়াজ করতে করতে ঘরে ফেরে৷ খাকি জামার কাঁধে পেতলের এনসিসি৷ জামার হাতায় সাদা V চিহ্ন৷ পথের পাশের লোকজন লোহার নালের খটখটানি শুনে বালককে দেখে৷ সে তখন যুদ্ধে যাবে বলে দ্রুতপায়ে প্রস্তুত হচ্ছে৷ তার শরীর জুড়ে বাজছে কুচকাওয়াজ৷ (চলবে)
পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ২৭ জুন ২০২২
ছবি সৌজন্য: Reckontalk, Pinterest
মধুময়ের জন্ম ১৯৫২ সালে পূর্ববঙ্গের ময়মনসিংহে, কিশোরগঞ্জে। লেখাপড়া কলকাতায়। শৈশব-যৌবন কেটেছে স্টেশনে, ক্যাম্পে, বস্তিতে। গল্প লিখে লেখালেখি শুরু। পরে উপন্যাস। বই আখ্যান পঞ্চাশ, আলিঙ্গন দাও রানি, রূপকাঠের নৌকা। অনুসন্ধানমূলক কাজে আগ্রহী। পঞ্চাশের মন্বন্তর, দাঙ্গা-দেশভাগ, নকশালবাড়ি আন্দোলন নিয়ে কাজ করেছেন। কেয়া চক্রবর্তী, গণেশ পাইন তাঁর প্রিয় সম্পাদনা। প্রতিমা বড়ুয়াকে নিয়ে গ্রন্থের কাজ করছেন চার বছর। মূলত পাঠক ও শ্রোতা।