অপ্রচলিত এক অজানা পথের নাম ‘কুণ্ঠখাল’ (Kunthhakhal)। ২১শে জুন, ১৯৩১ ব্রিটিশ পর্বতারোহী ফ্রাঙ্ক এস স্মইথ (Frank S. Smythe) , এরিক শিপটন (Eric Shipton) এবং আর এল হোল্ডসওয়ার্থ (R. L. Holdsworth) কামেট (Kamet) শৃঙ্গ অভিযান সেরে ভুল পথে নেমে আসেন ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্সে’ (Valley of flowers)। তারপর কুণ্ঠখালের পথ ধরে নেমে আসেন বদ্রিনাথ (Badrinath) হনুমান চটির নিকট। সেই থেকেই ফুলের উপত্যকার সঙ্গে মানুষের সংযোগ এই পথেই। ১৯৭০ সালে গোবিন্দঘাট, ঘাংঘারীয়া হয়ে খুলে যায় ফুলের উপত্যকায় প্রবেশের সহজতম পথটি। স্বভাবতই ব্রাত্য হয়ে পড়ে দুর্গম কুণ্ঠখালের ওই পথ। এরপর কেটে যায় ৪৫টি বছর। ২০১৫ তে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে পুনরায় খোলা হয় সেই পরিত্যক্ত পথ। ২০২১ সালে প্রায় ৫০ বছরের অব্যবহারে অপ্রচলিত সেই পথে পা রাখা অনুসন্ধিৎসু মনের টানে।
‘দি ইনস্টিটিউট অফ এক্সপ্লোরেশন’ (The Institute Of Exploration) -এর সাত সদস্য পৌঁছে যাই পুষ্পবতীর কোলে ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স। এই পর্যন্ত পথ সহজ ও স্বাভাবিক। এরপরই অপ্রচলিত পথের শুরুয়াত। সকল প্রকার পাহাড়ি রোমাঞ্চকর সম্ভবনা মজুত রয়েছে এই পথে। মাথা ছাপিয়ে যাওয়া পলিগোনাম ও কাঁটা গাছের জঙ্গলে পথ হারানো, খরস্রোতা নালা, ধস, বোল্ডার টপকে ওভার-হ্যাং পাথের তলায় রাত্রিবাস। সৌন্দর্যেও কিছু কম যায় না সে পথ। ব্রহ্মকমল সহ রকমারি ফুল, পাতা, গুল্মের বাহার, অপূর্ব দর্শন সব মস, ফার্ন, রঙিন ছত্রাকের সমাহার। নীলগিরি, গৌরী, দেওবন নর-পর্বতের রূপলাবণ্য। অনামি অপূর্ব সব ঝরনাধারা। পাখপাখালির উপস্থিতি। এক কথায় চমৎকার ও রোমঞ্চকর।
ভ্রমণ ভাবনায় “বেদুইন”। দীর্ঘ ৩০ বছরের সখ্যতা সাগর, জঙ্গল, মরু ও পাহাড়ি পদাতিক পথের সাথে। কলমের যোগ বিভিন্ন ভ্রমণ মুলক পত্রিকায়। প্রিয় ফুটবলের হাত ধরে ময়দানে পা রাখা। বাংলার প্রতিনিধিত্ব করে পূর্ব রেলে পেশায় প্রবেশ। ভালবাসায় ফটোগ্রাফি, সাইক্লিং ও সঙ্গীত। ট্র্যাভেল রাইটার্স ফরামের সদস্য।
One Response
Enchanting story of a magical place.A visual treat.