বিশিষ্ট চিত্রসাংবাদিক (Photo Journalist) শ্রী জয়ন্ত সাউয়ের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল অ্যানালগ ফটোগ্রাফির (Analog Photography) মাধ্যমে। পেশার প্রয়োজনে এখনও ডিজিটাল ফটো (Digital photo) তুললেও পাশাপাশি আগেকার অ্যানালগ ফটোগ্রাফির যুগে নিজেকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাও তিনি চালাচ্ছেন । বর্তমান প্রজন্মের সামনে ফটোগ্রাফির প্রাচীন ইতিহাসকে প্রদর্শিত করাও তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য। ২০১৯ সালে তাঁর হাতে আসে প্রথম প্লেট ক্যামেরাটি (Plate camera), তারপর ক্রমে আরও দুটি। পুরোটাই কাঠ এবং পিতল দিয়ে তৈরি। এগুলি লার্জ ফটোগ্রাফি ফরম্যাটের (Large photography format) অন্তর্গত। অ্যাপারচার (Aperture) থাকে বটে, এই ক্যামেরাগুলিতে কোনও শাটার (Shutter) থাকে না। সময় নির্ধারণ করা হয় মুখে গুনে। এই ক্যামেরাগুলি জয়ন্তবাবু সংগ্রহ করেন খুব খারাপ অবস্থায়। ধীরে ধীরে কলকাতা থেকেই মেরামত করেন সেগুলি। কিন্তু তারপর চলে আসে কোভিড-যুগ। কোভিড যুগ শেষ হবার পর ২০২২ সাল থেকে তিনি আবার এই ক্যামেরাগুলি দিয়ে ছবি তোলা শুরু করেন। বিশ্ববরেণ্য রঘু রাই (Raghu Rai) থেকে শুরু করে ভারতের বিভিন্ন মানুষের পোট্রেট (Portrait) তিনি তুলে যাচ্ছেন – যা পরে একটি বই আকারে প্রকাশিত হবে। গত ৩০শে সেপ্টেম্বর,২০২৩ শোভাবাজার রাজবাড়ির ঠাকুরদালানে প্রাক – পুজো বাঙালিয়ানার আড্ডায় জ্বলে উঠেছিল ঐতিহাসিক ঝাড়বাতি। আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দরা পুরনো দিনের রাজসিক বেশে বাঙালি সাজে এসেছিলেন। জয়ন্তবাবু সেখানে উপস্থিত থেকে রাজবাড়ির বধূ সুস্মিতা দেব, কেয়া শেঠ ও অন্যান্য বনেদি বাড়ির সদস্যদের ছবি তুলছিলেন। এই বনেদি বাড়িগুলোতে এই ধরণের ক্যামেরায় সেই যুগে ছবি তোলা হত। ঘড়িতে বা ক্যালেন্ডারে যে সময় বা দিনই দেখাক না কেন, শোভাবাজার রাজবাড়ির ঠাকুরদালান যেন সেদিন পিছিয়ে গিয়েছিল প্রায় একশো বছর।
সিদ্ধার্থ পালের গল্প এবং ছবি অনেকটা গল্পের মতো। ছবি তোলার ব্যকরণ তিনি মন দিয়ে শিখেছেন, তবে তা নিয়ম ভাঙবার জন্যই। আলো-ছায়া, মানব-শরীর, নিয়ে তিনি নিরন্তর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিছুদিন আগে চোখের এক মারাত্মক অসুখ তাঁর দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দিয়ে ছবি তোলায় বাধা হয়ে দাঁড়ালেও, তিনি কম আলোয় ছবি তোলা চালিয়ে গেছেন এবং বহু আকর্ষণীয় ছবি তুলেছেন।