আগের পর্ব [১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭]
সিগিরিয়ায় গাড়ি ঢুকল রাত প্রায় পৌনে নটায়। এদেশে গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র রাত আটটা নাগাদ দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যায়, এমনকী খাবারের দোকানও। বড় রাস্তার ধারে পরপর অনেকগুলো রেস্তোরাঁ। বেশিরভাগই বন্ধ হয়ে গেছে, খোলা আছে গুটিকয়েক। হয় বেজায় ভিড়, নয়তো ডিনার পর্ব চুকিয়ে এঁটোকাঁটা পরিষ্কার করে ঝাপ বন্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। বড় রাস্তা থেকে ডানহাতে সরুপানা অন্ধকার গলি। সাহানের গাড়ি সেই গলি দিয়ে কোনওমতে ঢুকেছে। অনুরা হোমস্টে। মালিক ভদ্রলোক শান্ত, ভালোমানুষ গোছের। চেহারাটা গোলগাল। তবে ওঁর স্ত্রীর মুখ দেখে মনে হল, আমাদের আসাতে উনি বেশ অখুশি। ভাবটা এমন, ‘রাতবিরেতে আপদগুলো জ্বালাতে এসেছে।’
ঘর সাদামাটা হলেও পরিপাটি করে গোছানো। জিজ্ঞেস করলাম,
– রাতে খাবার কী পাওয়া যাবে?
একটু অপেক্ষা করতে বলে গৃহকর্তা ঘরের ভেতর ঢুকে গেলেন। ঘর থেকে ভেসে এলো উচ্চৈস্বরে চেঁচামেচি। দাম্পত্য কলহ একে বলা যাবে না। একক নারীকণ্ঠের শব্দবাণ ছুটছে। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছি। ফিরে এসে কর্তা জানালেন,
– রাতে কিছু পাওয়া যাবে না, বড় রাস্তায় চলে যান, অনেক রেস্তোরাঁ আছে।
তবে পরদিন সকালে কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট পাওয়া যাবে– এই আশ্বাসটুকু পাওয়া গেল। ভাষা না বুঝলেও, মেজাজ বিগড়নোর কারণটা যে আমাদের আগমন এবং ‘এখন আমি রান্না করতে পারব না’ গোছের ব্যাপার, সেটা বেশ বোঝাই যাচ্ছে। দোষটা তো আমাদেরই। বিকেলের দিকেই ফোন করে ডিনারের অর্ডারটা দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। তার ওপর রাস্তা ভুল করে রাতও অনেক বেড়ে গেছে। বড় রাস্তায় যে অনেক রেস্তোরাঁ আছে, সে তো আসার সময়ই দেখলাম। যেগুলো খোলা ছিল, এতক্ষণে হয়তো শাটার বন্ধের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। তাছাড়া, ১৬০ কিলোমিটার জার্নির ধকল, ঘেমে-নেয়ে, পা পুড়িয়ে পোলোন্নারুয়া দর্শন… সবমিলিয়ে বড় রাস্তা পর্যন্ত ঠেঙিয়ে ডিনার করতে যেতে ইচ্ছা করছিল না। খুবই ক্লান্ত। তেমন হলে কেক-বিস্কুট খেয়ে শুয়ে পড়ব। তাতে পরিপাকতন্ত্রের চাহিদা-যোগানের ভারসাম্য না থাকলেও, একেবারে উপোসী থাকতে হবে না। তবু একটু চেষ্টা করে দেখা যাক, এই ভেবে বললাম,
– আপনাদের কিচেনটা একটু ব্যবহার করতে পারি? তাহলে নিজেরাই কিছু বানিয়ে নেবো।
আপত্তি করলেন না। ভাঁড়ার থেকে রসদ মিলল। গরম ভাতের গন্ধ, ডিম-আলুসেদ্ধ, নুন, কাঁচালঙ্কা আর একটু মাখন।

পরদিন খুব সকালে উঠে পড়লাম। বাড়ির পিছনদিকের উঠোনটায় হরেক ফুল আর সবজির বাগান। সেখান থেকেই দেখা যাচ্ছে, সিগিরিয়ার বিখ্যাত ‘লায়ন রক’। সাহান বলেছিল, সাতটার মধ্যে রেডি থাকতে। ব্যাগে জলের বোতল, ওআরএস-এর প্যাকেট আর কিছু শুকনো খাবার নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। কাছেই, মাত্র দু কিলোমিটার পথ। সাড়ে সাতটার মধ্যে টিকিট কাউন্টারের সামনে পৌঁছে দেখি লম্বা কিউ। টিকিট মূল্য ৩০ ডলার, ভারতীয় ছাড় ১৫ ডলার। টিকিট কাউন্টারের পাশেই মিউজিয়াম। সেখানেই আগে ঢুকলাম। চারটে প্রবেশদ্বার। বেরনোর সময় এদিকে আর আসব না। অন্য গেট দিয়ে বেরিয়ে যাব। সেখানে পার্কিংলটে সাহান গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করবে। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের প্রাচীনত্ব সাজানো আছে মিউজিয়ামে। পাথরের অস্ত্রশস্ত্র, বাসনকোসন, কঙ্কাল ইত্যাদির পাশাপাশি পরবর্তীকালে টেরাকোটার মূর্তি, চাষের সরঞ্জাম, অস্ত্র, অলংকার, বুদ্ধমূর্তি, ফ্রেসকো পেইন্টিং, রাজারানির মডেল প্রভৃতি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। সকাল আটটা। মাইকে বেজে উঠল জাতীয় সংগীত। এখানেও বাংলার সঙ্গে একটা যোগসূত্র আছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুপ্রেরণায় এই গানটির স্রষ্টা তাঁর বিশ্বভারতীর ছাত্র আনন্দ সামারাকুন। তিনিই জাতীয় সংগীতের কথাকার ও সুরকার। ভিন্নমতে, গানটি কবিগুরুই লিখেছেন, সামারাকুন সিংহলী ভাষায় অনুবাদ করেছেন। তবে বিতর্ক যাই থাক, গানটি শুনলেই বোঝা যায় রবীন্দ্র প্রভাবিত।
ভাষা না বুঝলেও, মেজাজ বিগড়নোর কারণটা যে আমাদের আগমন এবং ‘এখন আমি রান্না করতে পারব না’ গোছের ব্যাপার, সেটা বেশ বোঝাই যাচ্ছে। দোষটা তো আমাদেরই। বিকেলের দিকেই ফোন করে ডিনারের অর্ডারটা দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। তার ওপর রাস্তা ভুল করে রাতও অনেক বেড়ে গেছে। বড় রাস্তায় যে অনেক রেস্তোরাঁ আছে, সে তো আসার সময়ই দেখলাম। যেগুলো খোলা ছিল, এতক্ষণে হয়তো শাটার বন্ধের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে।
মিউজিয়াম থেকে বেরিয়ে সবুজ ঘাসে ঢাকা লন ধরে হাঁটতে লাগলাম। সিগিরিয়ার পূর্ব নাম ছিল সিংহগিরি। মুখ্য আকর্ষণ আগ্নেয়শিলায় তৈরি সিগিরিয়া পাহাড়, যাকে ‘লায়ন রক’ বলা হয়। শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তৈরি বিরাট পরিখা সিগিরিয়া পাহাড়কে চারদিক থেকে ঘিরে আছে। একে বলে ‘ইনার মঠ’। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছের দল খেলে বেড়াচ্ছে পরিখার জলে। ঢোকার মুখেই চেকিং। প্লাস্টিক ফ্রি জোন। ব্যাগ খুলে খাবারের প্যাকেটগুলো আর জলের বোতল বের করল। সর্বনাশ! এগুলো সব জমা রেখে দেবে নাকি! খিদে সহ্য করা যাবে। কিন্তু, ঘর্মাক্ত গরমে ১২০০ সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হবে পাহাড়ের মাথায়। জলের কী হবে! চেকার ভদ্রলোকটি এক টান মেরে জলের বোতলের গায়ের প্লাস্টিকটা খুলে ফেললেন। তারপর সব দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়ে ওগুলো ফেরত দিয়ে বোর্ডের দিকে ইশারা করে বললেন, “ডাস্টবিনে ফেলবেন, নইলে ফাইন।” পশ্চিম গেট দিয়ে ঢুকেছি। খুব সুন্দর মিনিয়েচার ওয়াটার গার্ডেন। জলে পরিপূর্ণ। কিন্তু এর উৎস আজও অজানা। সিগিরিয়া পাহাড়ের কোন গুপ্ত প্রস্রবণ এই জলের উৎস, এমনই অনুমান।
সুবিশাল টিলা। ৬০০ ফুট খাড়া উঠে গেছে। আর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ১১৪৪ ফুট। সিগারিয়ার গঠনশৈলীতে অদ্ভুত একটা নাটকীয়তা আছে। প্রবেশপথের শুরুতেই দুটো বড় পাথরের মাথা জুড়ে একটা গুহামুখ। এর মধ্য দিয়েই উঠে গেছে সিঁড়ি। প্রাগৈতিহাসিক এই গুহাটি খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ শতক থেকেই সাধু-সন্ন্যাসীদের আশ্রম ছিল। অনুরাধাপুরার রাজা ধাতুসেনার সিংহাসনের দাবিদার ছিলেন তাঁর উত্তরাধিকারী মোগল্লানা। ধাতুসেনার অবৈধ সন্তান কাশ্যপ (৪৭৭-৪৯৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন অত্যন্ত ক্ষমতালোভী। তিনি ধাতুসেনাকে বন্দি করে হত্যা করেন, মোগল্লানাকে দেশ ছাড়া করেন। এতগুলো অপরাধ করার পর আতঙ্ক তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছিল। কাশ্যপ বুঝতে পেরেছিলেন, মোগল্লানা প্রতিশোধ নিতে ফিরে আসবেন। ভাই মোগল্লানার হাত থেকে বাঁচার জন্য কাশ্যপ পালিয়ে আসেন এখানে। রাজধানী অনুরাধাপুরা থেকে স্থানান্তরিত হয় সিগিরিয়ায়। নিরাপত্তার কারণে পাহাড়ের উপর তৈরি করেন দুর্গ, যা সত্যি বিস্ময়কর। বিশাল এলাকাটি পরিখা আর প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেন।

মোগল্লানা রাজা কাশ্যপকে যুদ্ধে হারানোর পর রাজধানী আবার অনুরাধাপুরাতেই ফিরে যায়। পরবর্তীকালে এটি বৌদ্ধমঠে পরিণত হয়। ১৪ শতক পর্যন্ত বৌদ্ধমন্দির হিসেবেই ব্যবহৃত হত। এরপর এই স্থান পুরোপুরি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে ছিল। ১৮৯৮ সালে ব্রিটিশরা আবিষ্কার ও সংস্কারসাধন করে। বর্তমানে এই ঐতিহাসিক স্থানটি ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের মর্যাদা অর্জন করেছে। কয়েক ধাপ ওঠার পরই গরমে ক্লান্ত হয়ে বসে পড়লাম। আমার পাশে একজন অস্ট্রেলিয়ান দিদিমা এসে বসলেন। তীব্র গরমে তার সাদা চামড়ার ভেতর থেকে লাল আভা ফুটে বেরোচ্ছে। বয়স আশির কাছাকাছি হবে। তবু ১২০০ সিঁড়ি ভাঙায় পিছপা নন। তার দলবল এগিয়ে গেছে। অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন। সঙ্গী গাইড জাপানি পাখা দিয়ে হাওয়া করছে। আমাকে রুমাল দিয়ে ঘাম মুছতে দেখে তিনি তার গাইডকে বললেন, “গিভ ইট টু মাই ফ্রেন্ড”। তার গাইড তখন আমাকেও হাওয়া করতে শুরু করলো। ক্ষণিকের দেখা, পথের বন্ধু হয়ে গেলাম!
কিছুটা পাথুরে সিঁড়ির পর রেলিং দেয়া লোহার সিঁড়ি। এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। এর পরই গতি মন্থর হয়ে যাচ্ছে সকলের। কারণ, পেঁচানো সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। লম্বা লাইন, জ্যাম হচ্ছে। তারপর একটা বিস্ময় অপেক্ষা করছিল। পাহাড়ের গায়ে চিত্রিত অসাধারণ ফেস্কো পেইন্টিং। আনুমানিক ১৬০০ বছর আগে সৃষ্ট এই অনবদ্য ফ্রেস্কোয় ফুটে উঠেছে কিছু নারী চরিত্র। ফ্রেস্কোর মহিলাদের পরিচয়টা একটা জল্পনা-কল্পনার বিষয়। ইতিহাসবিদদের মতে, এরা ছিলেন রাজা কাশ্যপের হারেমের রানি এবং উপপত্নী। হাতে ফুল, সমৃদ্ধ অলঙ্করণ, পরিশীলিত পোশাক, প্রাণবন্ত চেহারা। মিউজিয়ামে এই ফ্রেসকোগুলোর নকল কিছু পেইন্টিং ডিসপ্লে করা আছে, দেখেছিলাম বটে। রঙের ব্যবহার, মুখের এবং শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের অনবদ্য উপস্থাপনা… এককথায়, ‘ওয়াও’। ছবি তোলা যাবে না, বেশিক্ষণ দাঁড়াতেও দেবে না। “হারি আপ! হারি আপ!” করতে করতে হটিয়ে দিল।

পাশেই তিন মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট দেওয়াল টানা চলে গেছে অনেকটা। এই দেওয়াল খুবই চকচকে ও মসৃণ ছিল এককালে। রাজা পাশ দিয়ে যেতে যেতে নিজের প্রতিবিম্ব দেখতে পেতেন এই আয়না দেওয়ালে। বলাই বাহুল্য, রাজা কাশ্যপ বেশ সৌখিন মানুষ ছিলেন। চার ভাগের তিন ভাগ প্রায় উঠে পড়েছি। একটা বড় চত্বর। পাহাড়ের এদিকটায়, উত্তর প্রান্তে পাথরের তৈরি সিংহের বিশাল দুটি থাবা। মাঝখান দিয়ে সিঁড়ি উঠে গেছে। দুর্গের প্রবেশদ্বার বলা যেতে পারে। পঞ্চম শতাব্দীতে নির্মিত সিংহটি লুপ্ত হয়ে গেছে, কেবলমাত্র তার থাবাটুকু রয়ে গেছে। সিংহটি ভগবান বুদ্ধের প্রতীক যিনি একসময় শাক্যসিংহ নামেও পরিচিত ছিলেন। শাক্যসিংহ অর্থাৎ শাক্যগোষ্ঠীর সিংহ। ভক্তদের বিশ্বাস অনুসারে, শাক্যসিংহের কথিত সত্যসমূহ সিংহের গর্জনের মতোই তীব্র এবং শক্তিশালী।
আরো বেশ কিছু ধাপ সিঁড়ি ভাঙার পর পৌঁছে গেলাম পাহাড়ের শীর্ষে। ঘণ্টাখানেক সময় লাগল। উপরিভাগটা প্রায়সমতল, অনেকটা টেবিলটপ ধরনের। সৌধের ভিতগুলো ছাড়া বাকি সব ধ্বংসপ্রাপ্ত, লুপ্তপ্রায়। বোর্ড দেখে দেখে বোঝা গেল রিসেপশন হল, পশ্চিমের প্রাসাদ, সেন্টার হল ইত্যাদি। স্নানের জন্য কৃত্রিম একটা জলাশয়ও আছে।মনে করা হয়, পাহাড়ের মাথায় বৃষ্টির জল ধরে রেখে জল সরবরাহ করা হত। একটু ফাঁকা জায়গা দেখে বসলাম। হনুমানের উপদ্রব সামলে, খুব সন্তর্পণে, সঙ্গে আনা শুকনো খাবারগুলো দিয়ে প্রাতরাশ পর্বটা সেরে নিলাম। যতদূর চোখ যায় সবুজ উপত্যকার দৃষ্টিনন্দন শোভা, বিস্তৃত অরণ্য ও সরোবর। দূরে দেখা যাচ্ছে পিদুরাঙ্গালা রক। আকারে লায়ন রকের থেকে অনেকটাই ছোট। এই পাহাড়ের মাথায় উঠলে দেখতে পাওয়া যায় সিগিরিয়া পাহাড়ের শোভা। সময়, এনার্জি কোনওটাই নেই। পিদুরাঙ্গালা বিহারে একটি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির আছে। পূর্বে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা সিগিরিয়া পাহাড়ের গুহায় ধ্যান করতেন। রাজা কাশ্যপ এখানে দুর্গ বানাবেন, তার অনুরোধে সন্ন্যাসীরা পিদুরাঙ্গলা চলে আসেন ও বৌদ্ধ-মঠ গড়ে তোলেন।

দক্ষিণপ্রান্ত দিয়ে নীচে নেমে এলাম। এদিকটায় বড় বড় পাথর ও বেশ কিছু গুহা আছে, যার মধ্যে একটা খুবই আকর্ষণীয় ‘কোবরা কেভ’। গুহার মাথাটা একটা গোখরো সাপের ফনার মতো দেখতে। সামনেই পাইথন নিয়ে বসে আছে এক ব্যক্তি। অর্থের বিনিময়ে গলায় পাইথন ঝুলিয়ে পর্যটকরা ছবি তুলছেন। এদিকেই পার্কিংলটে সাহান গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিল। প্রায় বেলা বারোটা নাগাদ হোমস্টেতে ফিরে এলাম। গৃহকর্ত্রীর আজ খুশি খুশি মুড। ঘরে ঢুকতেই বললেন,
– আপনাদের কম্প্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট রেডি করছি।
ব্রেড, জ্যাম, বাটার, কলা, তরমুজ, নারকেল রুটি, অমলেট। বেলা একটার সময় এত খাবার অবশ্যই ব্রেকফাস্ট নয়, লাঞ্চ। গৃহস্বামী ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে গেছেন। তাই বিদায় বেলায় তার সঙ্গে আর দেখা হলো না। বেলা দেড়টা নাগাদ রওনা দিলাম ডাম্বুল্লার পথে। (চলবে)
*পরবর্তী পর্ব ১২ নভেম্বর ২০২২
*ছবি সৌজন্য: লেখক
দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ সংক্রান্ত লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। ভ্রমণ, আনন্দবাজার ই-পেপার, ভ্রমী পত্রিকার নিয়মিত লেখক। এছাড়া যারা-যাযাবর, তথ্যকেন্দ্র, লেটস্-গো, আজকাল, প্রতিদিন, গণশক্তি প্রভৃতি পত্র-পত্রিকায় ভ্রমণকাহিনি প্রকাশিত। ট্র্যাভেল রাইটার্স ফোরাম ইন্ডিয়ার সদস্য। প্রধান শখ ও নেশা বেড়ানো আর ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফি।