কবি এখন কারখানায় যাচ্ছে
কবি এখন কারখানায় যাচ্ছে
এই উঁচু নিচু বাঁকের মুখে তার সাইকেলের ঘণ্টি অনেকেই শুনতে পাবে
কবিকে একটা ঝিমিয়ে পড়া লেদ মেশিন ডাকে
একটা মিলিং কাটারের দাঁতে সারারাতের ময়েশ্চার জমেছে
দপ্তরখানার লাল হলুদ সবুজ আলো
পোড়া কার্বনের ভারি বাতাস, কবিকে গত জন্মের সরাইখানায় নিয়ে যায়।
কোক ওভেনের পাশে কালো জলের নদী, কোন শোচনীয় পরাজয়ের মতো
ক্রেনের বদলে ক্যাঙ্গারুর পেট থেকে লাফিয়ে নামছে ইনগট
লোহা টলমলে পায়ে হাঁটা, হাঁটতে হাঁটতে বিবর্তন
টাটা হৌসের পাঁচিল ফুঁড়ে উঁচিয়ে ধরা র্যাম্পার্ট
হুটারের বদলে গার্হস্থ্য শালিখের শব্দতরঙ্গে ভেসে ওঠা ঢেউ
কবিকে কারখানা দিয়েছে ভারি বুট
মাটি থেকে ছ’ ইঞ্চি ওপরে
টুকরো লোহা, ভাঙা মেশিনের দাঁত বাতাসে বাতাসে অস্পষ্ট কার্বন
কবিকে কাছে পেতে চায়
কবিকে কাছে পেতে চায় ঢালাই মিস্ত্রির সংযম
বন থেকে বেরিয়ে আসা ওয়াগন বোঝাই লোহাপাথর
(Poetry)
সহজ হাঁড়িয়া প্রস্তুত প্রণালী
হাঁড়িয়া এক ধরনের ভাত পচানো দিশি মদ।
সাঁওতাল যুবতীরা শাল বনের হাওয়ায় ভাতগুলি মেলে দিয়ে
ঝরনায় জল আনতে যায়
এরা ষোল থেকে কুড়ি, প্রোষিতভর্তৃকা হলে কিছু শিথিলতা কিম্বা কষি রাঁড়
অতি ব্যবহৃত স্তন, যৌনদেশ রহস্য হারিয়ে শ্লথ হয়
ঢিলে লটপটে সেই রমণীরা কূট ও তর্জমাকারী, হাঁড়িয়ার লাবণ্য তারা ছুঁতেই পারে না
এ্যালকোহলে মজা-স্রাব তৈরী করে ফেলে।
হাঁড়িয়া এক ধরনের সোমরস
যুবতী সাঁওতাল হেসে ডুলুংএর জলে স্নান করে
সোনালী রূপোলী রেখায় মেটে হাঁড়ি ভরে যায়
তখন ডুবাং-এর জন্য দুর্মর ঘূর্ণির মত ছিন্নবিচ্ছিন্ন যুবতীরা
তখন ভারী গদগদে চাঁদ ধামসার শব্দে টাল খায়
তখন রাগী পুরুষেরা পাহাড়ে আগুন দিয়ে ফেরে
তখন কুমারীরা, যুবতীরা, রমণীরা হাঁড়িয়ার জন্য
ঈশ্বরের কাছে নত হয়
পাহাড়ী গুলাচ স্তব্ধ বনভূমি, বনবিড়ালী হিংস্র লাফ মেরে ভুবন পেরোয়
অনেক প্রাচীন আত্মা, কিছু ভালোবাসা
সিংবোঙ্গা বুক চিরে দুফোঁটা রক্ত ফেলে দেয়
মদ তৈরী হয়
হাঁড়িয়ার জালাগুলি কোনদিন শূন্য থাকে না
আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অস্বীকার করছি।
হায় বাঙ্গালী
বিশাল কাঁচের বাক্সে, কতদিন সাঁতরে সাঁতরে
মৃত্যু-পিরানহা টু গোল্ডফিস!
প্রেম থেকে নিস্প্রেমে!
খেলা জমিয়ে দিচ্ছে, বন্দুক, রাইফেলবাজ, কাল্টু
দেড় হাত ঝল্লা কানপুরী!
দুটো ফাইল ঘাঁটলেই একটা আকবরী-কয়েন!
হেড, দাউ দাউ চিতা
টেল, ফুরফুরে কবর!
হায়!
একটা বাঙ্গালী, একটা নৈরাজ্য!
একটা বাঙ্গালী, একটা হতাশা!
একটা বাঙ্গালী, নাক কেটে যাত্রা পথ লাল!
একটা বাঙ্গালী, আংটি, জ্যোতিষী, তাবিজ!
একটা বাঙ্গালী, হুড়কো লোহার-ফাটক!
একদিকে মাঠ-যা-হাওয়া, নীল-ফাঁসি-নারী
মলিন দু হাত ভরা কুটকুটি-ভাঙা-পিস্তল
অন্য দিকে রক্তমাখা ঠ্যাং, থুতু নদের নিমাই জং
ঠাকুরমার ঝুলি, হালকা গা ছমছম ভূত!
সব রক্ত মানুষের নয় ! কিছু ধর্ষণের রেখা এঁকেবেঁকে
ভাটিয়ালি নাও!
বাঙ্গালীর স্থাপত্য, আহা, টেরাকোটা-প্রেত!
বাঙ্গালীর একটা মাত্র ঠোঙা, ভিতরে বাদাম ভাজা
বাইরে রাজা, ইঁটের পাঁজরে!
বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।