১
তোমাকে চিনি না যুবক, অতলের ডাকটি ভাসাও …
প্রতিটি মুহূর্ত যেন ঘন, গভীর
মরুপ্রদেশ থেকে ভেসে আসা গোলাপ, আতর
এ শরীর নেশাচ্ছন্ন…
এ শরীর তাহাকেই চায় যার নাম শোনেনি দিগন্ত প্রান্তর
এই ডাক একা ও ব্যক্তিগত
গভীর রজনীকালে আমাকেই হত্যা করে যায়
২
তোমার গভীর ঠোঁট আমাকেই আয়ু দিয়ে যায়
ধীরে ধীরে লিখে ফেলি জন্ম, মৃত্যু, সামান্য সংসার
শরীরে অধিক ক্ষত। মৃত বলে ভাবে না জীবন
এখানে সন্দেহাতীত ভাব ও ভাবনা
এখানেই গোলাপ, বাসর
জিন আসে, পরী আসে
আসে সেই নবীন যুবক
রাত অন্ধকার, চাকু তীব্র ঝকমক করে ওঠে
৩
যুবক, এ কাহিনি তোমাকেই লেখা
আমি কথিকা শেহরাজাদ
কতকাল বিনিদ্র কেটেছে রাত
নিদ্রাতুর চোখে সুরা আর লোহার শেকল
পারস্য সকাল জানে
প্রতিটি গোলাপ কেন টকটকে লাল!
মৃত্যুর অধিক ক্লান্ত এই বাহুডোর, প্রেম ও প্রত্যাখ্যান
সূর্য নিভে যাবে এই জেনে অসূর্যস্পর্শা আমি,
শেহরিয়ার, রক্তপাত দাও
তোমাকে প্রেমের ফাঁসে মারি!
৪
রজনী বিনিদ্র হলো, কাকে দেব ডাক!
পারস্যের পথ ভেঙে চলে যায় বণিক ও বানিজ্যের রথ
শহরের প্রতিটি কবিতা আজ মৃত
গোলাপের বনে সেই কদাকার জিন, ষড়যন্ত্র
পানশালায় শুয়ে আছে একা সেকেন্দর
তীক্ষ্ণ, জিঘাংসাপ্রবণ
এ প্রেম মাংসাশী বড়, দু-টুকরো শরীর দিও তাকে!
*ছবি সৌজন্য: istock
বেবী সাউ মূলত কবিতা এবং প্রবন্ধ লেখেন। জন্ম পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলায়। বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর শহরে থাকেন। জামশেদপুর আকাশবাণীতে কর্মরত। কবি বেবী সাউ-এর "কাঁদনাগীত: সংগ্রহ ও ইতিবৃত্ত" বইটি 'কৃত্তিবাস মাসিক পুরস্কার ২০১৯' এবং 'বাংলা একাদেমি তাপসী বসু স্মারক সম্মান ২০২০' পুরস্কারে পেয়েছে। তাঁর কবিতার বইগুলিও একাধিক সম্মান পেয়েছে। যেমন- রাঢ় বাংলা রোদ্দুর সম্মান, বইতরণী পুরস্কার, শব্দপথ যুব সম্মান এবং 'এখন শান্তিনিকেতন' পদ্য সম্মান।
One Response
অসাধারণ লাগল।