Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

প্রতিহিংসাপরায়ণ কাক রোজই আক্রমণ করে মধ্য প্রদেশের শিবা কেওয়াতকে

ঋতুপর্ণা রায়

সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯

Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

অ্যালফ্রেড হিচককের ‘দ্য বার্ড’ সিনেমাটির কথা মনে আছে? হঠাৎ একটি শহরের মানুষদের পাখিরা কেমন আক্রমণ করতে শুরু করেছিল। টানটান উত্তেজনায় আর রোমহর্ষক সমস্ত মুহূর্ত মনে পড়লে এখনও গায়ে কাঁটা দেয়। ঠিক এমন ঘটনাই বাস্তবে ঘটেছে। তবে এখানে গোটা শহর নয় পাখিদের আক্রমণের লক্ষ্য একজনই। বিশ্বাস হচ্ছে না তো? তা হলে খুলেই বলি।

ঘটনাটা ঘটেছে মধ্য প্রদেশে। শিবা কেওয়াত সামান্য দিন শিবপুরীর সুমেলা গ্রামের বাসিন্দা শিবা প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেরবার সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন। না! ঈশ্বরকে প্রার্থনা করার জন্য নয়। দেখার জন্য ঠিক কোন দিক থেকে আজকে ওঁর উপর আক্রমণ ধেয়ে আসবে!কারণ গত তিন বছর ধরে ঠিক এমনই হচ্ছে। আর আক্রমণকারীরা সকলেই কাক। শিবা বাড়ি থেকে বেরবার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন পাল পাল কাক ওঁকে তাড়া করে, ধাওয়া করে, ঠুকরাতে চায়। কখনও কখনও আবার একা কাকও আসে সঙ্গী-সাথী ছাড়া। উদ্দেশ্য একটাই শিবাকে কোনওভাবে আহত করা।

কিন্তু কেন একজনকের উপর কাকেদের এত আক্রোশ? স্থানীয়দের কাছেও বিষয়টা ভারী রহস্যজনক। তাঁরাও প্রতিদিন সকালে, যে সময়টা শিবা বাড়ি থেকে বেরয়, ওঁর বাড়ির কাছে এসে জড়ো হয় ঘটনাটার সাক্ষ্মী হতে। এবং প্রত্যেকেই জানিয়েছেন ঘটনাটি প্রতিদিন ঘটে। এর মধ্যে কোনও গুজব নেই।

কেওয়াত জানিয়েছেনে যে তিন বছর ধরে প্রতিনিয়ত তাঁকে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আসলে তিন বছর আগে উনি লোহার জালে আটকে থাকা একটি বাচ্চা কাককে বাঁচাবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কাকের বাচ্চাটি তার হাতের উপরই মারা যায়। তার পর থেকেই নাকি কাকেরা তাঁকে আক্রমণ করা শুরু করে। কাকেদের হয়তো ধারণা যে কেওয়াত বাচ্চাটিকে মেরে ফেলেছেন। তারই প্রতিশোধ নিতে তারা প্রতিদিন ওঁকে আক্রমণ করে। কেওয়াতের আক্ষেপ একটাই যে কোনওভাবে উনি যদি কাকগুলোকে বোঝাতে পারতেন যে তাদের বাচ্চাটির মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী নন।

শিবা কেওয়াত

কেওয়াতের সারা শরীরে আক্রমণের চিহ্ন স্পষ্ট। মাথায় একধিকবার আঘাত পেয়েছেন। কাকেরা নাকি তাঁকে দেখলে ফাইটার প্লেনের গতিতে উড়ে আসে। ব্যপারটা যে কতটা ভয়াবহ তা নিশ্চয় আন্দাজ করতে পারছেন। হাতি বা সাপের প্রতিশোধ নেওয়ার গল্প শোনা যায়, কিন্তু কাকরাও যে এতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ হতে পারে তা কেওয়াত ভাবতেই পারেননি।

কাকরা নাকি মানুষের মতোই তীক্ষ্ণ বোধ সম্পন্ন। অন্তত ‘সিয়াটেল ইউনিভার্সিটি’-র এক গবেষণা তাই বলছে। ‘ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন’-এর প্রধান গবেষক জন মারজলুফ অনেক দিন আগেই বলেছিলেন, “মানুষ এবং অন্যান্য স্তনপায়ী প্রাণীদের মতোই কাকেদের মস্তিষ্ক কাজ করে। যখন তারা চেনা কোনও মুখ দেখতে পারে, তখন তাদের মস্তিষ্ক অ্যাক্টিভ হয়ে যায়। আর যদি কোনও কারণে কেউ তাদের ক্ষতি করে, তা হলে তার মুখও তাদের মনে থেকে যায়। পরবর্তীকালে তাকে দেখলে, তাদের ব্রেনের অ্যামিগডালা অংশ (নেতিবাচক স্মৃতির ভাণ্ডার) উত্তেজিত হয়ে যায়, এবং তাদের আচরণে এর প্রভাব পড়ে। এমনকী তারা অন্যান্য কাকেদের ডেকে দল পাকিয়ে সে ব্যক্তির ক্ষতি করার চেষ্টা করতে পারে।”

কেওয়াত-এর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঠিক তাই। তফাৎ একটাই যে কেওয়াত যা করেননি, তার শাস্তি তাঁকে খামোখাই ভোগ করতে হচ্ছে। তবে এত কিছুর পরও কেওয়াতের মনে কিন্তু কাকেদের প্রতি কোনও রাগ বা ক্ষোভ নেই। তিনি প্রতিদিন বেরবার সময় সঙ্গে লাঠি রাখলেও কোনও কাককে আহত করেন না। শুধু নিজেকে বাঁচাতে লাঠি ঘোরান, যাতে কাকেরা ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। তিনি আশাবাদী যে কাকগুলো এক দিন ঠিক বুঝতে পারবেন যে তিনি কোনও অপরাধ করেননি এবং তাঁকে আর আক্রমণ করবে না।

Picture of ঋতুপর্ণা রায়

ঋতুপর্ণা রায়

Picture of ঋতুপর্ণা রায়

ঋতুপর্ণা রায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়

সংস্কৃতি

আহার

শমিতা হালদার
অমৃতা ভট্টাচার্য
শ্রুতি গঙ্গোপাধ্যায়

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

শক্তিপদ ভট্টাচার্য
নির্মাল্য চ্যাটার্জি
নির্মাল্য চ্যাটার্জি

উপন্যাস

মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়
মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়
মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়