আত্মপ্রতিকৃতি
শ্যামল শ্যামল ,আমি আজ
বৃষ্টিতে স্তম্ভিত
মরা
বজ্রাহত গাছ
তবু দেখ মন সেই আশ্চর্য বালক
যে দেখেছে
এমনকী সে গাছেও পাতাজন্ম…
ফুলজন্মঝোঁক
একলাপন
পথ এত কুয়াশাতন্ময়
পথ এত চৈত্রমাস
পথ এত পলাশ-পলাশ
সকাল পেরিয়ে পথ
দুপুরের
রৌদ্র-বালুচরি,
তোমাকে দুচোখে নিয়ে
শুয়ে আছি সারাদিন
আমি আর শালের মঞ্জরী

নেই
হারাবার ভাষা
বীতশোক
তবু কোনো জ্যোতির্ময়লোক
আমাকে টেনেছে ঘোর
সুগন্ধী রাস্তায়
দূরে দূরে
ট্রাক-আলো যায় …
তুমি জানো
অর্থহীন
কীভাবে পেরোয় রাত
কীভাবে পেরিয়ে যায় দিন
গাছ, পাখি অথবা মাটি
গাছ ঘুমিয়েছে নীচে
মাটির ভিতরে
পাখি তবু ওড়ে
স্তনের মাধবীলতা শুঁকে
জিভের সম্মুখে
নেয় নুন
তারপর হস্তমৈথুন
ছবি
সামনে জানলা-আলোমুখে
নগ্ন, খুলে আছ
অসম্ভব
দীর্ঘ
ঘন চুল
পাখি উড়ে বসেছে যেখানে
কোমড়ে জরুল
তুমি কার তীব্র উপাসনা
তুমি যার
রজোরক্ত লাল জবাফুল

শারীরিক
দুটি সাপ লেপ্টে আছে …
স্তন
ভাবে: কতক্ষণ
আর কতক্ষণ
দু-হাতের মাপে
ছিঁড়ে বিকেলের আলো
কীভাবে কে খোঁপায় জড়ালো
আহা
জেনো
শমীবৃক্ষে অস্ত্র আছে
আমারও, লুকানো
ফুরানো, অলৌকিক
বসন্তে আবীরলাল
তুই
কাল
ফের পাতা ঝরে যাবে
উদাসীন,
তোমার মৃত্যুতে কেউ
দুঃখ পাবে না কোনওভাবে
নিরুদ্দেশ
আমার মনের মধ্যে
পেরেকের মতো ঠুকে ঠুকে
কে এমন গেঁথে দিল
অন্যমনস্কতা
বাক্য ভুল হয়ে যায়
কথায় জড়িয়ে যায় কথা
চৈতালী শোনো না
এই যে শুকনো পাতা হরিদ্রাভ,
এভাবে আমি কি আমাকে পাব?
দিন
এখনও কি মায়াবি হরিণ?
*ছবি সৌজন্য: Pexels, Peonyandparakeet
কুন্তল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৭৬৷ পেশা শিক্ষকতা। পড়াশোনা ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে। মূলত কবিতাই আগ্রহের বিষয়। ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতার বই “দুখীরামের গোপন জার্নাল” সিগনেট, আনন্দ থেকে। ২০১৮ সালে একটি কবিতাপুস্তিকা প্রকাশিত হয় তবুও প্রয়াস থেকে। নাম: অন্য এক অন্ধকার। ২০১৯ সালে ভাষালিপি থেকে প্রকাশিত হয় “নির্জনতা, এগারো মাইল”। ২০২০ সালে একটি গদ্যের বই প্রকাশিত হয় তাঁর। নাম: এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে ও অন্যান্য গদ্য।
2 Responses
প্রত্যেকটা কবিতা সুন্দর। পড়ে এক মুহুর্তের জন্য সময় নষ্ট হয়েছে বলে মনে হয়নি। বরং আবার পড়তে ইচ্ছা করছে।
সবুজ শিশিরে কয়েকটি শেফালির আত্মনিবেদনের মুহূর্ত জানার দূরত্বে দেখা।চিরন্তন উচ্চারণ।