আগের পর্ব [১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭] [৮] [৯] [১০]
পিন্নাওয়ালা থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে এসেছি। পথের ধারে ছোট্ট দোকান। শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় স্ট্রিটফুড কত্তুরুটি তৈরির ঝনঝনানি শব্দ। লাঞ্চ সেরে বেলা একটা নাগাদ আবার যাত্রা শুরু হল। পথের দুধারে প্রচুর স্পাইস গার্ডেন। পিলিমাথালাওয়া পৌঁছে ক্যান্ডি-কলম্বো রোড ছেড়ে ডানদিকের পথ ধরে খানিক এগিয়ে গাদালাদেনিয়া পৌঁছলাম।
বিশাল চত্বরের মাঝখানে পাথরের বর্গাকার মন্দির। চারদিকে চারটে প্রবেশপথ। ১৩৪৪ সালে রাজা চতুর্থ ভুবনেকবাহুর পৃষ্ঠপোষকতায় এই বৌদ্ধ বিহারটি নির্মিত হয়েছিল। দক্ষিণ ভারতীয় স্থপতি গণেশ্বরচারী হিন্দু শৈল্পিকশৈলী অনুসরণ করে দ্রাবিড়ীয় স্টাইলে স্থাপত্যটি ডিজাইন করেছিলেন। মূল মন্দিরে বুদ্ধের ৮ ফুট উঁচু একটি মূর্তি রয়েছে।
ঘড়ির কাঁটা জানান দিচ্ছে বেলা আড়াইটে। গাদালাদেনিয়া থেকে বেরিয়ে এলাম। বড্ড ক্লান্ত লাগছিল। কিং কোকোনাটে গলা ভিজিয়ে এবার চললাম ৪ কিলোমিটার দূরে আর একটি বৌদ্ধ বিহার লঙ্কাতিলকে দর্শনে। লঙ্কাতিলকে পৌঁছে মনে হল সূর্য যেন একটু নিস্তেজ। আকাশে বিক্ষিপ্তভাবে ছাইরঙা মেঘ। পরিবেশটাও চমৎকার। পাহাড় আর অরণ্যের সহাবস্থান। এই মন্দিরটিও রাজা চতুর্থ ভুবনেকবাহুর নির্মাণ। মন্দিরের নকশা করেছিলেন সাথপতি রায়ার নামে একজন দক্ষিণ ভারতীয় স্থপতি।

তথ্য অনুসারে, মূল মন্দিরটি চারতলাবিশিষ্ট প্রাসাদ হিসাবে তৈরি হয়েছিল, কিন্তু আজ মাত্র ৩টি তলা দেখা যায়। ধ্যানস্থ বুদ্ধমূর্তি ছাড়াও দেওয়াল এবং সিলিং জুড়ে কান্দিয়ান যুগের চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্য শোভা পেয়েছে। স্কুল থেকে শিক্ষামূলক ভ্রমণে আসা একদল ছাত্রছাত্রী মন্দিরে বসে প্রার্থনা করছে।
এবার গ্রাম্য কাঁচা পথ ধরে পথ চলা। হলুদ-সবুজ ধানখেতের নেপথ্যে সবুজ পাহাড়, মাঝে মাঝে কলা বাগান। অনবদ্য ল্যান্ডস্কেপ। এই মনোরম যাত্রাপথ শেষ হল এমবেক্কে দেবালয় প্রাঙ্গণে।
তেরোশো শতকের মাঝামাঝি রাজা তৃতীয় বিক্রমবাহু এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। ‘স্কন্দকুমার’ অর্থাৎ ‘কার্তিক’ (ওদেশে কাটারাগামা নামে পরিচিত) এখানে পূজিত হন। সামনে কাঠের পিলার দেওয়া লম্বা অলিন্দ, তারই পিছনে মূল মন্দিরের অন্দরে কার্তিকের মূর্তি আছে। আবার অন্য ঘরে বুদ্ধদেবও অধিষ্ঠান করছেন। হিন্দু ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির সুন্দর সংমিশ্রণ ঘটেছে। মন্দির চত্বরে একটা প্রাচীন শস্যগোলাও আছে। তবে, দ্রাবিড়ীয় আর্কিটেকচারে নির্মিত মন্দিরটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল এর কাঠের কারুকার্যময় লম্বা অলিন্দ। পিলারের গায়ে, ছাদের সিলিং-এ খোদিত আছে নর্তকী, পদ্মফুল, শিশু কোলে মা, যোদ্ধা, বংশীবাদক, ময়ূর– আরও কত কী! অসামান্য এই শিল্পকর্ম দেখে অবাক হয়ে গেলাম।

বিকেল ৪টে নাগাদ যাত্রা শুরু হল। ১৭ কিলোমিটার চলার পর তালাওয়াতুরা পৌঁছে এবার নুয়ারা এলিয়ার পথে। আকাশে বাদল মেঘের আনাগোনা। গাড়ি একের পর এক পাহাড়ি বাঁক পেরিয়ে ছুটছে। দূরে ঢেউ খেলানো পাহাড়ের বিস্তার। প্রাকৃতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়াও পাল্টে গেছে। শীতল হাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি।
পুস্সেল্লাওয়ার পর থেকে পথের সঙ্গী হল চা বাগান। পথের ধারে শীর্ণকায়া রামবোডা ফল্স। রামবোডা পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে কয়েকটা শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছে বটে, কিন্তু জল প্রায় নেই বললেই চলে। পুরাণ মতে, রামায়ণের লঙ্কাকাণ্ডের সময় এই পাহাড়েই রামসেনাদের শিবির ছিল। তাই পাহাড়ের এরূপ নামকরণ।
৭ কিলোমিটার এগিয়েই ঢুকে পড়লাম নুয়ারা এলিয়া জেলায়। পাইন বন আর চোখ জুড়ানো চা বাগানের দৃশ্য। এখানকার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট চা তৈরি হয় ডমরো চা বাগানে। পরিকল্পনামাফিক, শহরে পৌঁছানোর আগেই চা বাগান আর ফ্যাক্টরি দেখে নেওয়ার কথা। কিন্তু বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা সেই প্ল্যানে জল ঢেলে দিল। আপাতত স্থগিত রেখে এগিয়ে চললাম শহরের দিকে।
আধঘণ্টা চলার পর শ্রীলঙ্কার ‘লিটল্ ইংল্যান্ড’ নুয়ারা এলিয়া পৌঁছলাম। শহরের চেহারায় ঔপনিবেশিক ছাপ সুস্পষ্ট। মধ্যভাগে গ্রেগরি লেককে ঘিরেই তৈরি হয়েছে শহরটি। ১৮৭৩ সালে বৃটিশ গভর্নর স্যার উইলিয়াম গ্রেগরির আমলে এই কৃত্রিম সরোবরটি তৈরি হয়।

সন্ধ্যা নামতে বেশি দেরি নেই। জমজমাট বাজার এলাকাকে পাশ কাটিয়ে লেকের ধার ঘেঁষে সোজা ২ কিলোমিটার চলার পর লেকের প্রায় শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। মাঠের মতো একটা জায়গায় এসে গাড়ি থামল। সেখানে অনেকগুলো ক্যারাভ্যান দাঁড়িয়ে আছে। তারই এক পাশে টুক্টুক্ (আমাদের দেশের অটো) নিয়ে অপেক্ষমাণ মঞ্জুলা সামানা কুমারা। এ শহরে তার বাড়িতেই আমাদের দুদিনের নিশিযাপন। মুশকিল হল, চড়াই পথ ধরে পাহাড়ের অনেকটা ওপরে উঠে পৌঁছতে হবে গন্তব্যে। রাস্তা এতটাই সরু যে, গাড়ি যেতে পারবে না। মঞ্জুলার টুক্টক্ই ভরসা।
কাল সকালে সময়মতো সে গাড়ি নিয়ে এখানেই অপেক্ষা করবে– এমনটাই আশ্বাস দিয়ে সাহান গাড়ি নিয়ে মার্কেট প্লেসের দিকে চলে গেল আস্তানার খোঁজে। আমরা মঞ্জুলার টুক্টুকে চেপে চলে এলাম লেক ভিউ হলিডে হোমে। খুব সাধারণ হোম-স্টে। কিন্তু, স্বামী-স্ত্রীর আন্তরিক আতিথেয়তায় কোনও ত্রুটি নেই। চটপটে হাসিখুশি যুবক মঞ্জুলাকে যখন বললাম, আমাদের দেশে ‘মঞ্জুলা’ মেয়েদের নাম– তখন সে কিঞ্চিৎ লজ্জা পেল।
দোতলায় থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। এখান থেকে পাখির চোখে ধরা দেয় নীল গ্রেগরি লেক। লেকের অপর পাড়ে পাহাড়ি ঢালে ধাপে ধাপে উঠে গেছে চা বাগান। মঞ্জুলার বাড়িটা যথাযথভাবেই লেক ভিউ পয়েন্ট। এর অবস্থানগত সৌন্দর্য্য মুগ্ধ করে দিল।
৬,২০০ ফুট উচ্চতায় সুন্দর এ শহরের গোড়াপত্তন হয়েছিল ব্রিটিশদের হাত ধরেই। নুয়ারা এলিয়া কথার অর্থ ‘সিটি অব লাইট’। সন্ধ্যাবেলার বারান্দায় বসে সসেজ খেতে খেতে আলো ঝলমলে শহরকে দেখছিলাম। তুলনামূলকভাবে, এদিকটা তেমন ঘিঞ্জি নয়। শান্ত পরিবেশ। কয়েক পশলা বৃষ্টি আবহাওয়ার পারদকে বেশ কিছুটা নামিয়ে দিয়েছে। বেশিক্ষণ বাইরে বসা গেল না। রাতে এগ ফ্রায়েড রাইস আর শ্রীলঙ্কান চিকেন কারি দিয়ে ডিনার সেরে বিশ্রাম।
জানালার ফ্রেমে ধরা দিয়েছে লেক আর চা বাগানের এক টুকরো ছবি, বিছানায় শুয়ে শুয়ে এই তৃপ্তিটুকু নিয়েই নতুন দিনের শুভ সূচনা হল। মঞ্জুলার সঙ্গে ছাদে চলে এলাম। এবারে ঘন নীল রঙের গোটা লেকটার ল্যান্ডস্কেপ। চারপাশ পাহাড়ে ঘেরা। সামনে, পিছনে যে দিকেই তাকাই শুধু ঢেউখেলানো চা-বাগান। দূরে পিদুরুতালাগালা পাহাড়। বাঁদিকে ঘন সন্নিবিষ্ট ঘরবাড়ি। আশপাশের প্রায় প্রতিটি স্থানীয় বাড়ির লাগোয়া উঠানে সবজি চাষ হয়েছে। মঞ্জুলাও তার এক চিলতে বাগানে শাক ফলিয়েছে।
সাহান যথাসময়েই হাজির। পথের দুধারে ধাপচাষের ছবি দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম চার কিলোমিটার দূরে সীতা এলিয়া গ্রামে। এখানেই রামায়ণের গল্পকথা নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘সীতা আম্মান মন্দির’, যাকে ঘিরে ভারতীয় আবেগ। রাস্তার ধারে রংবাহারি মন্দিরের পিছনে ইউক্যালিপটাসের ঠাসবুনট। এটাই সেই রামায়ণে বর্ণিত অশোকবন, যেখানে রাবণ সীতাকে বন্দি করে রেখেছিলেন, এমনটাই প্রচারিত। যদিও অশোক গাছের চিহ্নমাত্র নেই। রাস্তা থেকে সিঁড়ি নেমে গেছে পুরনো মন্দিরে। সেখানে রাম, সীতা, লক্ষ্মণ ও হনুমানের মূর্তি আছে এবং নিয়মিত পূজার্চনা হয়।
বিশ্বাসের ব্যাখ্যা, এখানেই হনুমান রামের আংটি নিয়ে এসে সীতার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ করেছিল। এই ঘটনাকে প্রতীকী রূপ দিয়ে মূর্তিও তৈরি করা আছে। মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে সরু জলধারা। এই শীর্ণ ঝোরাতেই নাকি সীতা স্নান করতেন। এর পাশেই বড় প্রস্তরখণ্ডে ছোট-বড় কয়েকটা গর্ত, যেগুলো হনুমানের পদচিহ্ন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কলিযুগের হনুমানদের লাফালাফি, উৎপাত থেকে বাঁচতে মন্দির চত্বর থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এলাম। রাস্তা থেকেই দেখা যায় হাক্গালা পাহাড়। অনেকের মতে, এখানেই ছিল রাবণের প্রাসাদ যা দেখে হনুমান বিস্মিত হয়েছিল। দু কিলোমিটার দূরে হক্গালা বোটানিক্যাল গার্ডেন, যা নাকি রামায়ণ-বর্ণিত ‘গন্ধমাদন’ পাহাড়– এমনই ধারণা। দুষ্প্রাপ্য কিছু ভেষজ গাছ আছে এখানে।

টিপ্টিপ্ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফিরে এলাম লেকের ধারে। বোটিং, ওয়াটার স্কুটার চলছে। ‘ইন্ডিয়ান সামার রেস্টুরেন্ট’ থেকে কিশোর কুমারের হিন্দি গানের সুর ভেসে আসছে। যদিও রেস্তোরাঁয় ইন্ডিয়ানদের বদলে পশ্চিমীদের ভিড় বেশি। চিকেন বিরিয়ানি খেতে গিয়ে বেমালুম বোকা বনে গেলাম। বিরিয়ানির স্বাদ ভুলে যাওয়ার অবস্থা। নরম সোফায় গা এলিয়ে খেতে খেতে লেকের শোভাটুকুই যা পাওনা।
গতকাল বৃষ্টি বাধ সেধেছিল। ফেলে আসা পথ ধরেই দুপুরে চললাম ডম্রো চা বাগানের উদ্দেশে। শহর ছেড়ে বেরোতেই, সঙ্গী শুধু চা বাগান। পথের ধারে সবজি আর স্ট্রবেরি বিক্রি হচ্ছে। বাড়ি-ঘর বিশেষ চোখে পড়ছে না। ডমরো টি গার্ডেনে পৌঁছে চা বাগানের বিস্তার দেখে মনে হল সবুজের সাম্রাজ্যে এসে পড়েছি। নীচে পাহাড়ি রাস্তায় হেয়ারপিন বাঁকের মনোরম দৃশ্য। মহিলারা চা পাতা তোলায় ব্যস্ত। কারখানার সঙ্গে আছে বিক্রয়কেন্দ্র কাম রেস্তোরাঁ। চা কেনার পদ্ধতিটা বেশ মজার। বিভিন্ন দামের ও মানের গ্রিন টি থেকে শুরু করে পাতা চা, গুঁড়ো চা সবই পাওয়া যায়। তবে, তার আগে রেস্তোরাঁয় বসে বিনামূল্যে চা-বিস্কুট খেয়ে পরখ করে পছন্দসই চা-পাতা কেনা যাবে। আবার চা খেয়ে পছন্দ না হলে, ক্রেতা নাও কিনতে পারে।
অভিজাত ক্যাফেটেরিয়ার স্টাইলে সাজানো। সামনের লনেও বড় ছাতা পেতে বসার ব্যবস্থা। কিছু পর্যটক চা টেস্ট করার নামে কফিশপে আড্ডা দেওয়ার মতো কাপের পর কাপ চা পান করে যাচ্ছে। দুরকম চা টেস্ট করে দেখলাম, স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। এ দেশে চায়ের মান সত্যিই খুব ভালো, তা সে পথের ধারে ঝুপড়ি স্টল হোক বা অভিজাত রেস্তোরাঁ।

চা পাতা কিনে ফিরে এলাম শহরে। সাহেব আমলের বাড়ি-ঘর, পোস্ট অফিস অতীতের সাক্ষ্য বহন করছে। পোস্ট অফিসের কাছেই একদিকে গলফ ক্লাব, অপরদিকে ভিক্টোরিয়া পার্ক। পার্কে সুন্দর ফুলের বাগান, সবুজ ঘাসের লন, ছোটদের খেলার জায়গা… হাঁটতে বেশ লাগে। গলফ ক্লাবটা আবার এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো গলফ ক্লাবগুলির মধ্যে অন্যতম। শ্রীলঙ্কার তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতেই ব্রিটিশরা পাহাড়ের ওপর এই মনোরম স্থানকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিজেদের বাসযোগ্য করে তুলেছিল।
বিকেলের দিকে চলে এলাম সিটি সেন্টারে। দোকানপাট, রেস্তোরাঁ, সুপার মার্কেট নিয়ে জমজমাট এলাকা। দার্জিলিং, গ্যাংটক, মুসৌরির চেনা ছবি। রাস্তার ওপর ঢেলে বিক্রি হচ্ছে গরম চাদর, কম্বল, সোয়েটার। বেশ কিছু মোগলাই ও সাউথ ইন্ডিয়ান খাবারের দোকান আছে। কিছু দোকানে হিন্দিতেও বাক্যালাপ চলে।
লেকের ধারে বেঞ্চে এসে বসলাম। বেশ হাওয়া। আমাদের দেশে ঝালমুড়ি, ফুচকা, আলুকাবলির মতো চিক পিস আর শিঙাড়া বিক্রি হচ্ছে। এ দেশেও শিঙাড়ার নাম সামোসা। লোকে ভালোই ভিড় জমিয়ে খাচ্ছে। ৩০ এল.কে.আর (প্রায় ১২ টাকা) দিয়ে ছোট এক বাটি চিক পিস কিনে ফেললাম। সেদ্ধ কাবলি ছোলা, লেবুর রস আর ভাজা মশলা দিয়ে মাখানো… মজাদার, চটপটি স্বাদ।
সন্ধ্যায় মঞ্জুলা মার্কেটে গিয়েছিল। রাতে খাওয়ার জন্য চিকেন রোস্ট নিয়ে এসেছে। ওর স্ত্রী কারিপাতা দিয়ে এগ ফ্রায়েড রাইস বানিয়েছে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় ডিনারটা জমে গেল।
সকালে মঞ্জুলার বাড়ির সামনের রাস্তাটা ধরে পায়ে হেঁটে পাহাড়ের অনেকটা উঁচুতে পৌঁছলাম। নীল আকাশ, নীল হ্রদ আর সবুজ চা বাগানের কোলাজ যেন প্রকৃতির ক্যানভাসে রং ছড়িয়েছে। আজ বেরোনোর বিশেষ তাড়া নেই। মাত্র ৫৫ কিলোমিটার দূরে এল্লা গ্রামে রাত্রিবাস। অনলাইনে ঘর বুকিংও সেরে রেখেছি। মঞ্জুলার বাচ্চাটার জ্বর হয়েছে। তাই তার স্ত্রীকে দুপুরের রান্না করা থেকে বিরত রাখলাম। পথেই খেয়ে নেব। বেলা দেড়টা নাগাদ মঞ্জুলা ও তার পরিবারকে বিদায় জানিয়ে এল্লার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লাম।
*ছবি সৌজন্য: লেখক
দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ সংক্রান্ত লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। ভ্রমণ, আনন্দবাজার ই-পেপার, ভ্রমী পত্রিকার নিয়মিত লেখক। এছাড়া যারা-যাযাবর, তথ্যকেন্দ্র, লেটস্-গো, আজকাল, প্রতিদিন, গণশক্তি প্রভৃতি পত্র-পত্রিকায় ভ্রমণকাহিনি প্রকাশিত। ট্র্যাভেল রাইটার্স ফোরাম ইন্ডিয়ার সদস্য। প্রধান শখ ও নেশা বেড়ানো আর ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফি।