
কোভিড: ছোটগল্প
এতক্ষণে তার চোখের জলের ধারা বেয়ে সমস্ত দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক ছাপিয়ে যেন বেরিয়ে আসতে চাইছে অভিমান। কিশোরী মেয়ের দুর্মর অভিমান। একবারও কি তার জন্য কেউ ভাবতে পারে না?
এতক্ষণে তার চোখের জলের ধারা বেয়ে সমস্ত দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক ছাপিয়ে যেন বেরিয়ে আসতে চাইছে অভিমান। কিশোরী মেয়ের দুর্মর অভিমান। একবারও কি তার জন্য কেউ ভাবতে পারে না?
‘… অসুখ আমায় রাখলে দূরে নিজেকে আর কীভাবে দিই দোষও / হাতের পাতা সমান্তরাল, সেই তো আমার রুলটানা কাগজ।’
কোভিড-দিনের কথা, কবিতায় কলমের আঁচড়ে ফুটিয়ে তুললেন শ্রীজাত।
রোগের প্রকোপে তছনছ সমাজ-অর্থনীতি-পরিবার। কোভিড নয়, অন্যরকম আতঙ্ক ক্রমে গ্রাস করছে পৃথিবীকে। লিখলেন দেবজ্যোতি।
করোনায় কাহিল পুরো দেশ। লকডাউনে স্তব্ধ। তার মধ্যেই জন-বিস্ফোরণ ঘটল দিল্লিতে। বাস স্ট্যান্ডে জড়ো হলেন হাজার হাজার মানুষ। ওঁরা সবাই শ্রমিক। দিল্লিতে এসেছিলেন ভিন রাজ্য থেকে কাজ করতে। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে লিখলেন চাণক্য।
এটা সত্যি, যে কোভিড আমাদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের বাধ্য করেছে যাপন নিয়ে নতুন করে ভাবতে, ঘরে বসে কাজ, শিক্ষা, বিনোদনের হরেক উপায় হাতড়ে বের করতে। কিন্তু সত্যিই কি তাতে আমরা ভুলে গিয়েছি এ সবের আসল মানে? প্রতি পদে ডিজিটাইজেশন সত্যিই কি আমাদের জীবনযাত্রা চিরতরে উলটে পালটে দেবে? উত্তর খুঁজলেন অনুব্রত।
করোনার আগমনে গিয়াছে দেশ ছেয়ে! সঙ্গে সানাইয়ের পোঁ হিসেবে এন্ট্রি নিয়েছে মাস্ক! কিন্তু সৃজনশীল ভারতবাসী, ফাঁকিবাজ ভারতবাসী, বেপরোয়া ভারতবাসী মাস্ক পরার বিষয়টিকে প্রায় শিল্পের উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন! মাস্ক পরি না না-পরি, নাউ দ্যাট ইজ় দ্যা কোয়েশ্চেন! উত্তরের আশায় অম্লানকুসুম চক্রবর্তী!…
নভেল করোনাভাইরাসের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর হার যত বাড়ছে, তত শোনা যাচ্ছে একটি অপরিচিত শব্দবন্ধের ব্যবহার। কো-মর্বিডিটি। এবং এই কো-মর্বিডিটি
করোনা ভাইরাস এসে নতুন করে ছাদকে করে তুলেছে বঙ্গজীবনের অঙ্গ! বিকেল হলেই চার দেওয়ালের কংক্রিটে আটকা পড়া শহরবাসী মানুষ ছাতমুখো হচ্ছেন। একটু আকাশ, একটু সবুজ, একটু মানুষের মুখ দেখতে ছাদই এখন বাঙালির অক্সিজেন সিলিন্ডার! ….
স্টেইনলেস স্টিলের স্পুন আর ফর্ক দিয়ে সেরামিকের প্লেটে ঠুংঠাং হাল্কা ঠুংঠাং আওয়াজ করার মধ্যে একটা দৈব আনন্দ আছে, এটা আমরা বুঝি। তবে করোনাভাইরাসের থাবা থেকে বাঁচতে ও বাঁচাতে এমন আওয়াজ এখন করবেন না।…
নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বা গবেষণা কেন্দ্রের একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে দেখতে চাইতেন। অথচ একজন দক্ষ পরিচালকের মতোই তিনি ছিলেন পক্ষপাতের উর্দ্ধে ।
মহামারীর সময়ে সদ্ভাব সম্প্রীতি বিরল কেন? আসলে মহামারীর প্রকোপের সামনে মানুষ বড় অসহায়। অন্তত যতক্ষণ না বিজ্ঞান তার মোকাবিলা করতে পারছে। তাই বোধহয় ভয়, রাগ, চিন্তা সেইসময় মানুষকে –বা বলা ভালো অনেক মানুষকে – গ্রাস করে। সে একদিকে যেমন আশ্রয় খোঁজে ঈশ্বর ও অলৌকিক নানা শক্তির কাছে, অন্যদিকে শত্রু খোঁজে ক্ষোভ উগরে দেওয়ার জন্য।
কে রুখবে অপ্রতিরোধ্য বসন্তের হাওয়া? চারিদিকের এই মহেঞ্জোদাড়োর শূন্যতার মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দুরন্ত ম্যাগনোলিয়া। দু’মিটারের দূরত্ব বজায় রেখে সন্তর্পণে পাড়ায় হাঁটছি আলেকজান্দ্রা প্যালেসের দিকে। মার্চের প্রথম বাসন্তী রোদ গায়ে মেখে। মনে পড়ে যাচ্ছে বোকাচ্চিওর দশ বন্ধুর কথকতা। মহামারী প্রবল অন্ধকারের বুক থেকে ড্যাফোডিল আলো ছিনিয়ে এনে হালকা হাসিতে তারা ছড়িয়ে দিয়েছে বিংশ শতাব্দির করোনার কলোনিতে। এ সময় ভয়ের। এ সময় নির্ভীকতার। এ সময় সামাজিক দূরত্বে দাঁড়াবার। এ সময় ভীতিপ্রদ রক্তচক্ষুর দিকে সরাসরি তাকিয়ে থাকবার।
আপনি বাঁচলে বাপের নাম— এখন আর নয়। এখন সবাই বাঁচলে নিজের বাঁচার একটা সম্ভবনা আছে। সুতরাং বাধ্য হয়ে সবার কথা ভাবতে হবে। কেবল নিজের হাত ধোওয়ার ব্যবস্থা পাকা করলেই হবে না। অন্যের জন্য হাত ধোওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক ডজন স্যানিটাইজ়ার কিনে ঘরে মজুত রাখলে বাঁচা যাবে না। অন্যের জন্য দোকানে স্যানিটাইজার ছাড়তে হবে। আবেগে ভেসে গিয়ে থালা বাজিয়ে মিছিল করলে হবে না। মনে রাখতে হবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জানলায় বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে থালা বাজাতে। যে ভাবে অন্যান্য দেশ নিজের মতো করে স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করছে। রাস্তায় বেরিয়ে নয়। ঘরে থেকে।
আচ্ছা এতে রাখঢাকের কী আছে মশাই? রোগ হলে হবে, হয়েছে। স্বীকার করুন। সবার বাড়িতে আমাদের বুড়োমানুষেরা আছেন, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিসে ভোগা প্রচুর মানুষ রয়েছেন। আমাদের লিফট ইত্যাদি পরিষ্কার করা হচ্ছে সর্বক্ষণ। কিন্তু সেই ছেলেগুলি গায়ের জোরে আবার ঢুকে পড়বে না তো? সারাক্ষণ স্যানিটাইজেশন চলছে। পেপারওয়ালা, পুজোর ফুল, দোকান থেকে কয়েন ফেরত নেওয়া, স্যুইপার, মালি, ড্রাইভার সব বন্ধ করে আমরা হোম কোয়ারান্টাইনে রয়েছি। কিন্তু অবোধ এই বালকেরা? এরা এত অবাধ্য? প্লিজ কথা শুনুন সবাই। রোগ লুকোবেন না। রোগ ছড়াবেন না।
© Copyright 2019-20 | Celcius Technologies Pvt. Ltd. All Rights Reserved
Unauthorized copying or representation of any content, photograph, illustration or artwork from any section of this site is strictly prohibited.
Unauthorized copying or representation of any content, photograph, illustration or artwork from any section of this site is strictly prohibited.
Contact us: